২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শিক্ষার লক্ষ্য

-

একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থার চূড়ান্ত লক্ষ্য হলোÑ জ্ঞাননির্ভর জাতি গঠন। শুধু কিছু মানুষকে লেখাপড়া শিখিয়ে কর্মক্ষম বানানো বা গণিত-বিজ্ঞান শিখিয়ে কিছু মানুষকে সমস্যা সমাধানের উপযোগী করে গড়ে তোলা শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য নয়। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলোÑ একটি জাতি কিভাবে চিন্তা করবে, কিভাবে জীবনযাপন করবে এবং কিভাবে রাষ্ট্রীয় ও রাজনৈতিক বিষয়াবলি সুন্দরভাবে, সুচারুরূপে ও কল্যাণময় ধারায় পরিচালনা করবে, তা শিক্ষা দেয়া। দেশের সব জনগোষ্ঠীর মধ্যে জাতি, জাতীয়তা, স্বাধীনতা, চেতনা, বিশ্বাস, নৈতিকতা প্রভৃতি বিষয় সম্পর্কে সঠিক ধারণা গড়ে তোলাই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। শিক্ষা লাভ করে একজন মানুষ যেমন যোগ্য ও দক্ষ হয়ে উঠবে, তেমনি সে হবে একজন ভালো মানুষ। এক কথায় বলতে গেলে, শিক্ষা হলো একটি জাতির ধারা-প্রকৃতি গঠনের প্রক্রিয়া।
শিক্ষার কাক্সিক্ষত ফল অর্জনের জন্য প্রয়োজন শিক্ষার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে একটি সুন্দর পরিকল্পনা গ্রহণ ও প্রক্রিয়া সাজানো। সেই পরিকল্পনায় একটি দেশ জাতীয়ভাবে তার জনগোষ্ঠীকে কিভাবে তৈরি করতে চায় বা কী হিসেবে দেখতে চায়, তার রূপরেখা থাকবে। জাতি চিন্তাশীল জাতি হবে, নাকি টেকনিক্যাল জাতি হবে, নাকি গবেষক জাতি হবে, একজন শিক্ষার্থী কখন সাহিত্য পড়বে আর কখন গণিত পড়বে, কখন বিজ্ঞানের জ্ঞান লাভ করবে, কখন রাজনীতি চর্চা করবে, কে শিল্পকলা চর্চা করবে, কখন করবে, প্রযুক্তিগত জ্ঞানে আমরা কী লক্ষ্য অর্জন করতে চাই, নৈতিকতা গঠন কিভাবে হবে ইত্যাদি বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা করে শিক্ষাব্যবস্থাকে সুবিন্যস্ত আকারে সাজানো জাতিগঠনের শিক্ষা। জাতি গঠনের শিক্ষা ও কর্মী গঠনের শিক্ষা এক নয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনামলে ভারত উপমহাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা ছিল কর্মী গঠনের শিক্ষাব্যবস্থা। সেই শিক্ষা কোনো জাতি গঠনের শিক্ষা ছিল না।
জাতি গঠনের শিক্ষা যে কী, তা বোঝার জন্য বিশ্ববিখ্যাত দার্শনিক প্লেটোর শিক্ষাদর্শন যদি আমরা বিশ্লেষণ করি তা হলে দেখব, তিনি শিক্ষাকে শিক্ষার্থীর বয়স অনুযায়ী তিনটি পর্বে ভাগ করেছেন। প্রথম স্তরে অর্থাৎ প্রাথমিক পর্যায় একজন শিক্ষার্থীর মনস্তত্ত্ব গঠনের সময়। দ্বিতীয় স্তরে বা মাধ্যমিক পর্যায়ে হবে বুদ্ধি গঠন এবং তৃতীয় অর্থাৎ উচ্চ শিক্ষার স্তরে হবে জ্ঞানার্জন। মনস্তত্ত্ব গঠনের পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থীকে শোনানো হবে গল্প ও সঙ্গীত আর শেখানো হবে সাহিত্য ও শিল্পকলা, যা তার মধ্যে সৎ সাহস, গাম্ভীর্য ও সংযম তৈরি করবে, যাতে আত্মার সাথে মানবিকতার মিলন ঘটার মাধ্যমে মানবিক ও মননশীল মনোভাব গড়ে ওঠে। পরবর্তী পর্যায় হলো বুদ্ধিবৃত্তি গঠনের পর্যায়। এ পর্যায়ে শিক্ষার্থীকে তার চিন্তাশক্তির চরম শিখরে পৌঁছানো এবং বুদ্ধির জগতে প্রবেশ করানোর জন্য শিখতে হবে গণিতশাস্ত্র, বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞান। তৃতীয় স্তর হলো জ্ঞানার্জনের স্তর। এই স্তরে শিক্ষার্থীকে দার্শনিক শিক্ষায় নিযুক্ত করতে হবে, যাতে সে শিক্ষার মূল নির্যাস ‘জ্ঞান’ অর্জন করতে পারে। শিক্ষার এই দর্শন থেকে প্রতীয়মান হয় যে, প্রাথমিক স্তরে গণিত ও বিজ্ঞান শেখানোর ধারণা সঠিক নয়। তবে গণিত ও বিজ্ঞান সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা দেয়ার প্রয়োজন মনে হলে সেটিও ওই গল্প ও সঙ্গীতের মাধ্যমে হতে পারে।
সর্বোপরি বুদ্ধি ও জ্ঞানের সমন্বয়ে অর্জিত যোগ্যতাকে কাজে লাগানোর জন্য প্রয়োজন প্রজ্ঞার। আর প্রজ্ঞা তৈরি হয় প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা অর্জনের মাধ্যমে। দার্শনিক প্লেটো এ ক্ষেত্রে সামরিক প্রশিক্ষণের কথা বলেছেন। শিক্ষার্থীদের সামরিক প্রশিক্ষণ দেয়া, সেই সাথে ম্যানেজমেন্ট বা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা রাখার যোগ্য করে গড়ে তোলা যায়। একটি দেশ বা রাষ্ট্রে বসবাসরত জনগোষ্ঠী হলো একটি জাতি। আর প্লেটোর মতে, একটি রাষ্ট্রের তিনটি দিক রয়েছে।
যেমনÑ দার্শনিক দিক, সামরিক দিক ও অর্থনৈতিক দিক। তাই এ তিনটি দিককে সামনে রেখে জাতি গঠন তথা জাতির শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন ও কর্মসূচি গ্রহণ করা জরুরি। যে কর্মসূচিতে থাকবে একটি জাতিকে জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিবৃত্তিক ও বিজ্ঞানমনস্ক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী করে গড়ে তোলার কার্যক্রম। এসব বিষয় যদি আমরা একত্রিত করে দেখি, তা হলে দেখব যে, জাতি গঠন বলতে একটি জাতির ধারা-প্রকৃতি গঠন বোঝায়। চিন্তা করলে দেখা যায়, একটি জাতির জাতীয় জীবনের তিনটি দিক রয়েছে। যেমনÑ চিন্তাধারা, জীবনধারা ও কর্মধারা। জাতীয় জীবনের এ তিনটি দিক শিক্ষার মাধ্যমে সমৃদ্ধ করার কর্মসূচিই হলো জাতি গঠনের শিক্ষা।
একটি জাতিকে সুষ্ঠু চিন্তাধারায় আনতে সামষ্টিকভাবে একটি সমন্বিত চিন্তাধারা গঠন করা প্রয়োজন। একটি দেশের চিন্তাশীল ব্যক্তিরা বা বুদ্ধিজীবী গোছের লোকেরা বিচ্ছিন্নভাবে কেউ ভাবাবাদী, কেউ ভোগবাদী, কেউ মুক্তচিন্তা, আবার কেউ বস্তুবাদী চিন্তাধারায় মগ্ন থাকলে কোনো জাতি স্বরূপ লাভ করতে পারে না। এ জন্য সমন্বিত চিন্তাধারা গঠন জরুরি। এ সমন্বিত চিন্তাধারাটির নাম দেয়া যেতে পারে ‘বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারা’ অর্থাৎ যে যে বিষয় নিয়েই চিন্তা করুন না কেন, চিন্তাটা হতে হবে বিজ্ঞানভিত্তিক। বিজ্ঞানমনস্কতা বলতে এখানে শুধু আবিষ্কার, উদ্ভাবন, পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রযুক্তি, গবেষণা তথা ভৌত বিজ্ঞানকে বোঝায় না। বিজ্ঞানমনস্কতা বলতে বোঝায় যৌক্তিকভাবে চিন্তা করা, অন্যের বিশ্বাস ও মতামতকে সম্মান করা এবং নিজের ভুল স্বীকার ও সংশোধন করতে প্রস্তুত থাকা। সেই সাথে দর্শনপ্রীয়তা, স্বাধীনচেতা, দেশপ্রেম, আধুনিকতাবাদ ও নৈতিকতা হলো বিজ্ঞানমনস্ক চিন্তাধারার সৌন্দর্য ও গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এসব উপাদানের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে কিভাবে তা অর্জন করা যায়, সেই দিকনির্দেশনা দেয়াই হলো শিক্ষা বা জাতি গঠনের শিক্ষা।
চিন্তাধারায় দার্শনিক মনোভাব না থাকলে ভোগবাদ ও বস্তুবাদের প্রবেশ ঘটতে পারে। ভোগবাদী ও বস্তুবাদী চিন্তাধারায় আত্মকেন্দ্রিকতা বাড়ায় এবং গণমুখী চিন্তাধারা গঠনে বাধা দেয়। তাই গণমুখী, সময়োপযোগী, বুদ্ধিবৃত্তিক তথা সমৃদ্ধ চিন্তাধারা গঠনে নিরপেক্ষ ও নির্মোহ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সুযোগ থাকা চাই। চাপিয়ে দেয়া কোনো ভাবধারায় চিন্তা করতে বলা হলে সঠিক চিন্তাধারা গঠিত হয় না। চিন্তা গঠনের ক্ষেত্রে দেশ, দেশের মানুষ, প্রকৃতি, পরিবেশ, জাতীয়তা প্রভৃতি বিষয় সামনে রাখতে হয়। আর এটিও স্বতঃসিদ্ধ যে, একটি জাতিরাষ্ট্র আর একটি বহুজাতিক রাষ্ট্রের চিন্তাধারা এক রকম হতে পারে না। বাংলাদেশে বসে আমেরিকার মানুষ ও সমাজব্যবস্থাকে সামনে নিয়ে শিক্ষাভাবনা গড়লে সেটি সঠিক হবে না। কারণ বাংলাদেশ একটি জাতিরাষ্ট্র আর আমেরিকা বহুজাতিক রাষ্ট্র। এ ছাড়া জাতি গঠনের শিক্ষা নিয়ে ভাবতে গেলে পরিবর্তনের ধারাটাও মনে রাখতে হবে। আগামী ৫০-১০০ বছরে সমাজে কী ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। সবার ওপর নৈতিকতা। নৈতিকতা ছাড়া সব কিছুই অর্থহীন। তাই শিক্ষার মাধ্যমে জাতি গঠনের প্রক্রিয়ায় নৈতিকতার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা দরকার।
জাতি গঠনের ক্ষেত্রে এর পরের বিষয়টি হলো জীবনধারা গঠন। জীবনধারা গঠনের প্রথমেই আসে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবন। শিক্ষার মাধ্যমে একজন মানুষকে সঠিক ও প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলাই হলো ব্যক্তি গঠন। আর এটি শিক্ষার একটি অন্যতম মূল উদ্দেশ্য একজন মানুষকে মার্জিত, ভদ্র, রুচিশীল, কেতাদুরস্ত, বুদ্ধিদীপ্ত, বোধ-বুদ্ধিসম্পন্ন দূরদর্শী, সহমর্মী ও শ্রদ্ধাশীল মানুষ হিসেবে তৈরি করাই ব্যক্তি গঠন। শান্তিপ্রিয়তা, হিতৈষী মনোভাব, গঠনমূলক চিন্তাধারা, কল্যাণকামিতা প্রভৃতি সামাজিক গুণ অর্জন এবং সমাজের প্রতিটি অঙ্গ ও অংশকে বোঝা ও সমন্বয় করে চলাই হলো সামাজিক জীবন। সমাজের মানুষের নিরাপত্তা, অধিকার, স্বাধীনতা, অন্যের প্রতি সম্মান ও মর্যাদাবোধ ইত্যাদি বিষয় অধিক গুরুত্বপূর্ণ। আত্মকেন্দ্রিকতা সামাজিক জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত ও সঙ্কীর্ণ মনোভাবের সৃষ্টি করে। সঙ্কীর্ণ মনোবৃত্তি জাতিগঠনে পশ্চাৎপদ ধারা তৈরি করে। তা ছাড়া সঙ্কীর্ণতা থেকে নানারূপ অনাচারের সৃষ্টি করে। উপযুক্ত শিক্ষার মাধ্যমে কেবল এ জায়গটি সংস্কার করা যায়। তাই জাতি গঠনের শিক্ষাব্যবস্থায় গণমুখী ধারা তৈরি করার কর্মসূচি অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। গণমুখী কর্মব্যবস্থা বা অন্তর্ভূক্তিমূলক জীবন প্রণালী গঠন তথা সহযোগিতা করা, সহমর্মী হওয়া এবং চিন্তা ও কর্মের ব্যাপক পরিসর তৈরি করাই হলো সংস্কার। এ সংস্কারের জন্য ব্যাপকভাবে সাহিত্য পাঠ ও মূল্যায়নের ব্যবস্থা শিক্ষা কর্মসূচিতে থাকা জরুরি।
একটি দেশের মানুষ বিলাসী জীবনের অধিকারী হবে, নাকি রক্ষণশীল বা মধ্যমপন্থী জীবনযাপন করবে, আয়েশি জীবন পরিচালনা করবে, নাকি পরিশ্রমী হবে তা শিক্ষার মাধ্যমে তার মধ্যে বদ্ধমূল করে দেয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে শিক্ষাব্যবস্থায়। শিক্ষার মাধ্যমে অর্জিত দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাকে কর্মদক্ষতা ও বাস্তব অভিজ্ঞতায় পরিণত করা এবং যথাযথ ক্ষেত্রে তা কাজে লাগানোর প্রক্রিয়াই হলো কর্মধারা গঠন। একজন শিক্ষার্থী পুষ্টিবিজ্ঞানে পড়ে যদি ব্যাংকে চাকরি করে তাহলে তার শিক্ষাটা বেকার হয়ে গেল, আবার কাজের দক্ষতায় সে পিছিয়ে গেল। তাই যিনি যে বিষয়ে লেখাপড়া করবেন তাকে সেই বিষয় নিয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। তাতে দক্ষতা বাড়বে, কাজের মানও বাড়বে। সুতরাং যিনি রাজনীতি করবেন, তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়ে আসবেন, যিনি সচিব হবেন, তিনি সাচিবিক বিদ্যা পড়ে আসবেন, যিনি পুলিশ হবেন অবশ্যই তিনি অপরাধবিজ্ঞান পড়ে আসবেনÑ এটিই হলো দক্ষতা ও অভিজ্ঞতাভিত্তিক কর্মধারা গঠন। কর্মগঠনের ক্ষেত্রে এই ধারা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বিষয়ভিত্তিক লেখাপড়ার গুরুত্ব বাড়বে, তখন কোনো বিষয়ই আর গুরুত্বহীন থাকবে না এবং প্রতিটি শিক্ষিত ব্যক্তিই দক্ষ হয়ে গড়ে উঠবেন। এ ছাড়া শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন নতুন বিষয় অন্তর্ভুক্ত হবে এবং জ্ঞানের নতুন নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে।
সময়ের পরিক্রমায় জীবনের পরিসর বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষের জীবনে নানামুখী প্রয়োজন ও চাহিদা তৈরি হচ্ছে। বর্ধিত চাহিদা ও প্রয়োজন পূরণের জন্য আরো বেশি গবেষণা ও সময়ের দাবি। জীবনকে স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে গিয়ে নিরাপত্তা ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে। অপরাধের নতুন নতুন ধরন তৈরি হচ্ছে। এ অবস্থায় পরিবর্তিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য ব্যাপক গবেষণার ক্ষেত্র তৈরি করা জরুরি। সে কারণে জাতি গঠনের শিক্ষা হতে হবে গবেষণাধর্মী শিক্ষা। পড়ো, মুখস্থ করো, পরীক্ষা দাও, পাস করোÑ এ ধারা চিরকাল কেন চলবে? জাতি গঠনের শিক্ষা হতে হবে পড়াকেন্দ্রিক, পরীক্ষাকেন্দ্রিক নয়। বই থাকবে শিক্ষার্থীর ঘরে, ঘাড়ে নয়।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে উদ্যোগী মনোভাব তৈরি করা জাতি গঠনের কর্মসূচির একটি অংশ। আর এ জন্য শিক্ষার্থীদের দেশের আর্থসামাজিক অবস্থা, ভবিষ্যৎ অর্থনীতির গতি-প্রকৃতি, মানুষের প্রয়োজন ও চাহিদা এবং পরিবর্তনের ধারা সম্পর্কে সম্যক ধারণা দেয়া প্রয়োজন। দেশের ভৌগোলিক অবস্থান, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের অবস্থা ও সম্ভাবনা, অভ্যন্তরীণ উৎস ও সুযোগ-সুবিধা প্রভৃতি বিষয় শিক্ষার্থীদের শেখানোর কার্যকর পদক্ষেপ নেয়াও জরুরি।
কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উদ্যোগ ও উদ্ভাবনের জন্য উন্নত বিশ্বের সফল দেশগুলোর উদাহরণ সামনে রেখে উদ্ভাবক, গবেষক ও বাজার সৃষ্টিকারী জাতি হিসেবে বাংলাদেশকে গঠন করার জন্য নতুন শিক্ষা প্রকল্প হাতে নেয়া জরুরি। মেধা পাচারকারী বা মেধা রফতানিকারী জাতি হিসেবে নয়, মেধা গঠন ও মেধার প্রয়োগকারী জাতি হিসেবে আমরা পরিচিতি লাভ করতে চাই।
শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য দক্ষ জাতি গঠন, কর্মী গঠন নয়। ঔপনিবেশিক শাসনামলের কর্মী গঠনের শিক্ষাব্যবস্থায় এখনো আমরা বলবৎ আছি। তাই আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে করনিক তৈরির শিক্ষা থেকে জাতি গঠনের শিক্ষায় রূপান্তরিত করে চিন্তা ও মননশীলতায় বিজ্ঞানমনস্ক, জীবন ধারায় বিনয়ী ও পরিশ্রমী এবং কর্মজীবনে গবেষক, উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবনকারী জাতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে চাই। হ

লেখক : শিক্ষক
abumusanna.77@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
জামালপুরে সড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে হাজার হাজার অবৈধ গাড়ি কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগে বিভেদ শরীয়তপুরে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভুট্টার আবাদ মিরসরাইয়ে ৩ দিনের ব্যবধানে কেজিপ্রতি আলুতে দাম বেড়েছে ১০ টাকা ফরিদপুরের পদ্মাপাড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ২৩ এস্কেভেটর ও ৮ ট্রাক ফেলে পালালো বালুদস্যুরা বরগুনায় দুই সাংবাদিকসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা গলাচিপায় নির্বাচনী মাঠে সম্ভাব্য প্রার্থীরা নাটোরে চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীবকে শোকজ হোসেনপুরে গ্রামের গ্রাহকরা দিনে এক ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাচ্ছেন না ঈদগাঁওতে আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় ৭ প্রার্থীকে জরিমানা গাজীপুরে স্মার্ট প্রিপেইড মিটার স্থাপন কার্যক্রম উদ্বোধন

সকল