২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`
দেশ জাতি রাষ্ট্র

এবং মেশিনগান!

-

গত ৯ এপ্রিল ২০২১ দেশে প্রায় সব জাতীয় দৈনিকে একটি ছবি ছাপা হয়েছে। ছবির ক্যাপশনটি এরকম, অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধে সিলেট মহানগরের সব ক’টি থানায় বিশেষ নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। থানা প্রাঙ্গণে বালু ও মাটির বস্তা দিয়ে তৈরি করা চৌকিতে মেশিনগান নিয়ে নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরা। এরকম দৃশ্য বিরল। বিগত পঞ্চাশ বছরে এরকম ব্যবস্থা দেখেনি দেশের মানুষ। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দৃশ্য ছিল সর্বত্র। জাতি মুক্তিযুদ্ধে রত ছিল। আর প্রতিপক্ষ পাকিস্তানি দখলদাররা গোলাবারুদ, অস্ত্রশস্ত্র ও মেশিনগান নিয়ে এ দেশকে দখলে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। অবশ্য মুক্তিযুদ্ধের আগেও পাকিস্তানের আধা ঔপনিবেশিক আমলে এ দৃশ্য বিরল ছিল না। এখন স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর পরে হানাদার বাহিনীর আদলে আমাদেরকে একই দৃশ্য দেখতে হচ্ছে। এখন তো আমরা স্বাধীন। একটি স্বাধীন দেশে মেশিনগানের অবস্থান হতে পারে বিদেশী শত্রুকে লক্ষ্য করে। কিন্তু এখন দেখছি, এ মেশিনগান তাক করা আছে এ দেশের সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে। একটি স্বাধীন দেশে স্বাধীন মানুষরা রাগ, দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশে অবশ্যই স্বাধীন। এ দেশের স্বাধীনতা এবং এ দেশের প্রণীত সংবিধান জনগণকে তার মতপ্রকাশের, সমাবেশের ও বিক্ষোভের গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা দিয়েছে। সে অধিকারকে অস্বীকার করে মেশিনগানের মাধ্যমে জনগণকে স্তব্ধ করতে চাইছে সরকার। ইতোমধ্যে গত মাসের শেষ দিকে প্রচুর রক্ত ঝরেছে। প্রাণ দিয়েছে কমপক্ষে ২০ জন মানুষ। তবুও যেন সন্তুষ্ট নয় সরকার। মেশিনগান বসানো থেকে অনুমান করা যায় যে, দেশের মানুষই এর লক্ষ্য। অথচ মিয়ানমারের মতো সামরিক বাহিনী এখানে ক্ষমতাসীন নয়। যারা ক্ষমতাসীন, তাদের গায়ে উর্দি নেই। তারা দাবি করে থাকেন গণতন্ত্রের। তারা বলতে চান, স্বাধীনতার স্বাদ ঘরে ঘরে পৌঁছে দিয়েছেন তারা।
মেশিনগানের পটভূমি সবারই জানা কথা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনের বিরোধিতা করে যে সঙ্ঘাতের সূচনা তারই ধারাবাহিকতায় এই মেশিনগান মোতায়েন। হেফাজতে ইসলামের সাধারণ প্রতিবাদকে রাজনৈতিক উপায়ে সমাধানের চেষ্টা না করে সরকার শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে জনগণকে নিগ্রহ করার যে পদক্ষেপ নেয়, তারই ধারাবাহিকতায় একের পর এক দুঃখজনক ঘটনা ঘটে যায়। হেফাজতে ইসলামের একজন কেন্দ্রীয় নেতাকে অপমানের কারণেও অঘটন ঘটে। এরপর ফরিদপুরের সালথায় ইউএনও এবং সহকারী কমিশনার ভূমির গাড়িতে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটেছে। জেলা নির্বাচন কার্যালয়সহ কয়েকটি স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। পুলিশ সদর দফতর জানায়, এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেন- ‘রাবার বুলেটে সহিংসতা দমানো না গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরো বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন অস্ত্র চালাতে হবে।’ এক সময় আইয়ুব খান অস্ত্রের ভাষায় কথা বলেছেন। এর পরিণতি তাকে দেখে যেতে হয়েছে নিজ চোখে। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে অবশেষে তাদের জনতার হাতেই পরাজিত হতে হয়। আমাদের পুলিশ কর্মকর্তারা সম্ভবত ভুলে গেছেন, তারা একটি স্বাধীন সার্বভৌম জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন। দেশটি এখন আর অধীন নয়। জনগণের বিরুদ্ধে আরো অস্ত্র শান দেয়ার অধিকার তারা কোত্থেকে পান?
তাদের ক্ষমতার উৎস ক্ষমতাসীন সরকার। জনগণের বিরুদ্ধে তাদের এই অবস্থান নতুন নয়। ২০০৮ সালে একটি প্যাকেজ ডিলের নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতাসীন হন। সাধারণভাবে স্বাভাবিক নির্র্বাচনের মাধ্যমে তারা যে নির্বাচিত হওয়ার অধিকার হারিয়েছেন সে বোধ থেকেই তারা দৃশ্যত জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের সংসদ নির্বাচন তার প্রমাণ। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বিলোপের মাধ্যমে তারা যে নির্বাচন প্রকৌশল শুরু করেছেন, তার আর শেষ নেই। তাদের অবস্থানের এতটাই অবনতি হয়েছে যে, গ্রামের নির্বাচনেও তাদেরকে কারসাজি করতে হয়। শক্তি প্রয়োগ করতে হয়। শক্তি প্রয়োগ এবং কারসাজি ছাড়া তাদের নির্বাচন বিজয় একটি দুঃস্বপ্ন মাত্র। এটা অস্ত্রের ভাষা। এটাই নিপীড়নের ভাষা। মোদিকেন্দ্রিক সহিংসতার পরপর ৪৩টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় বিএনপি এবং হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী এবং অজ্ঞাতসহ প্রায় ২০ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার ছড়াছড়ি সর্বত্র। ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, হাটহাজারী, পটিয়া, কিশোরগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ভাঙ্গা এসব জায়গায় মামলার পর মামলা ঠুকে দেয়া হচ্ছে। গ্রেফতার আতঙ্ক রয়েছে সর্বত্র। পুরুষশূন্য হয়ে যাচ্ছে এলাকাগুলো। এভাবে বিগত একযুগ ধরে বাংলাদেশে সঙ্কুচিত হয়েছে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা। এ অবস্থার প্রতিফলন ঘটছে বহির্বিশে^। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতরের প্রকাশিত মানবাধিকার-বিষয়ক প্রতিবেদনে সঙ্কুচিত স্বাধীনতার কথা উঠে এসেছে। বিশে^র বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে গত সপ্তাহে ‘২০২০ কান্ট্রি রিপোর্টস অন হিউম্যান রাইটস প্র্যাকটিসেস’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এসব তথ্য প্রকাশ করা হয়। এ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও সরকারের হয়রানি ও নির্র্যাতনের ভয়ে সমালোচনা থেকে নিজেদের অনেকটাই গুটিয়ে নিয়েছেন। ডিজিটাল ব্যাপক প্রয়োগের বিষয়টিও উঠে এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার প্রতিবেদনে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাসের মহামারী শুরুর পর সরকার তার কার্যক্রম নিয়ে করা প্রশ্ন চাপা দিতে ব্যাপকভাবে ডিজিটাল আইন ব্যবহার করেছে। প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, সরকারের সমালোচনাকারী প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমকে সরকারের চাপে থাকতে হচ্ছে। আর লাইসেন্স দেয়ার ক্ষমতা সরকারের হাতে থাকার কারণে বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলোও রা করছে না। স্বাধীন মতামত প্রকাশে বাধা দিতে ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের কথাও উঠে এসেছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদনে। মহামারীর নিষেধাজ্ঞা ব্যবহার করে শান্তিপূর্র্ণ বিক্ষোভে সরকারের বাধা দেয়ার বিষয়টিও উল্লেখ করা হয় এতে। বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার ও তার এজেন্ডা এ ধরনের বেআইনি কাজ করছে। এ সব ছাড়াও বাংলাদেশের কারাগার ও হাজতের পরিস্থিতি, নির্বিচার আটক বা গ্রেফতার, গ্রেফতার করার প্রক্রিয়া ও আটক ব্যক্তির সাথে আচরণ, বিচার প্রক্রিয়াসহ আরো কিছু বিষয় নিয়ে মার্কিন প্রতিবেদনে আলোচনা করা হয়েছে। সরকারবিরোধী বিক্ষোভ দমনে আইন ও শৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিজেদের দলীয় ক্যাডার নিয়োগের বিষয়টিও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ, সঙ্ঘাত এবং তাদের ডাকা হরতালে পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর সহায়ক হিসেবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সূত্রপাত হয়েছে। ঢাকার বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সর্বত্র হেফাজত কর্মীদের সাথে সংঘর্ষে দলীয় ক্যাডারদের নামানো হয়। এরাই বরং উসকানি দিয়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে এবং রক্তারক্তির কারণ ঘটিয়েছে। একটি দলের সপক্ষে ও বিপক্ষে রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকতেই পারে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ প্রশ্রয়ে সহিংসতা মেনে নেয়া যায় না। দেশে আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ, র্যাব এবং অবশেষে বিজিবিকেও ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়। আর সে সংঘর্ষের সময়ে প্রতিটি বাহিনীর ভূমিকা ছিল। এর পরও সহযোগী বাহিনী নামিয়ে অঘটন ঘটানোর দরকার কী? তাহলে কি মনে হতে পারে যে, আইন ও শৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর সরকারের আস্থা নেই? মানুষ যদি মনে করে, পুলিশ আর কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারছে না, তা বিপজ্জনক হতে বাধ্য। অভিযোগ রয়েছে যে, মোদিবিরোধী আন্দোলনে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ- এদের মাঠে নামানোর ব্যাপারে আইন ও শৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তার প্ররোচনা ছিল। উল্লেখ্য, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো কর্মকর্তা সরকারি দলের ভাষায় কথা বলছেন। তারা রাষ্ট্র, সরকার ও দলের মধ্যে পার্থক্য করতে অপারগ। এসব বিষয়ে সরকারি দলের বক্তব্যও রয়েছে। তাদের ভাষায়, সাম্প্রতিক এই কর্মসূচিতে হেফাজত, বিএনপি ও জামায়াত একাকার হয়ে গেছে। এমন কর্মসূচিতে জনগণ ও রাজনৈতিক শক্তি মাঠে থাকলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ভরসা পায়। হেফাজত নেতারা অভিযোগ করেছেন, ২৬ মার্চ বায়তুল মোকাররমে জুমার নামাজের পর মোদিবিরোধী মিছিলে সরকারি দল হামলা না করলে সঙ্ঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। হেফাজত বলেছে, মুসল্লিদের মিছিলে সরকারি দল হামলা করেছে, এই ভিডিও দেখে হাটহাজারীতে মাদরাসার ছাত্ররা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। সেখানে পুলিশের গুলিতে চারজন নিহত হওয়ার জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদরাসার ছাত্ররা মাঠে নামেন। সেখানে ব্যাপক সহিংসতা ঘটে। উল্লেখ্য, বায়তুল মোকাররমের সাথের ভিডিও ফুটেজে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের পাশাপাশি অবস্থান দেখা গেছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন সরকারির দলের ক্যাডারদের নামানো হলো, তার সদুত্তর দিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ব্যর্থ হয়েছেন। মোদিবিরোধী বিক্ষোভে ক্ষমতাসীন দলের লোকেরা প্রথম হামলা চালায় ২৫ মার্চের রাতে, ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়। এ সময়ে ‘প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠনগুলো’ ব্যানারে বামপন্থী ছাত্রসংগঠনগুলো মোদিবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করে। এতে সাংবাদিকসহ অনেকেই আহত হন। হেফাজতের ডাকা হরতালেও সরকারি দলের নেতাকর্মীরা সহিংস ছিলেন। হরতালের সময়ে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
উপর্যুক্ত পর্যালোচনায় আমরা দেখলাম, ক্ষমতাসীন সরকার রাজনৈতিক বিরোধিতাকে প্রত্যক্ষ শক্তি প্রয়োগে, দলীয় বাহিনী লেলিয়ে দিয়ে, মামলার পর মামলা দিয়ে এবং অবশেষে কালো আইনের মাধ্যমে উত্থিত গণরোষকে দমাতে চেয়েছে। অতীতে তারা হেফাজতে ইসলামের মতো ‘গণঅভ্যুত্থান’কে মোকাবেলা করতে যেমন চরম নিষ্ঠুরতার পরিচয় দিয়েছেন তেমনি প্রতারণা ও প্রণোদনা কৌশল অবলম্বন করেছেন। এখন মনে হচ্ছে, তাদের সব কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। তাই তারা চরম শক্তি প্রয়োগের দিকে ধাবমান। মেশিনগান মোতায়েন হয়েছে সিলেটের থানায় থানায়। হয়তো বা এ অস্ত্রের আগমন ঘটবে বাংলাদেশের প্রতিটি জনপদে। সব প্রচারণা ও প্রতারণা অতিক্রম করে মেশিনগান বুঝি শেষ সম্বল?
রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায়, এ ধরনের কার্যক্রমকে শক্তি প্রয়োগের শাসন বা ‘কোয়ার্সিভ গভর্ন্যান্স’ বলা হয়। এতে সরকার জনগণের সম্মতির বদলে শক্তি প্রয়োগকেই যথার্থ মনে করে। তারা এভাবে ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা রাজনৈতিক দলকে সংযম ও সমঝোতার মাধ্যমে মোকাবেলা না করে নিপীড়ন ও নির্যাতনের পথ বেছে নেয়। যে কর্মসূচি ও কার্যক্রমকে সরকার তাদের স্বার্থবিরোধী বলে বিবেচনা করে, সে ক্ষেত্রে আইন-কানুন ও ভদ্রতা সভ্যতার তোয়াক্কা না করে তারা শক্তিপ্রয়োগের নীতি অব্যাহত রাখে। রাষ্ট্র ও জনগণের ওপর নিরঙ্কুশ কর্তৃত্বস্থাপনে তারা নির্যাতন ও নিপীড়নকে বৈধ মনে করেন। এ ক্ষেত্রে তারা নির্মম আচরণেও ভয় পান না। কারণ শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমে ইতোমধ্যেই জবাবদিহিতা ও জনঅংশগ্রহণের সব পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। গরিষ্ঠ জনগণকে ছলে বলে ও কলে কৌশলে প্রতারিত করা হয়। বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতায় অপ্রিয় সত্য হচ্ছে, দেশের সম্ভবত ৯০ ভাগ মানুষ ১০ ভাগ সংখ্যালঘিষ্ঠ মানুষ দ্বারা শাসিত ও শোষিত হচ্ছে। ৯০ ভাগের সবটুকুই যে প্রথাগত বিরোধী দলের তা নয়, বরং রাজনৈতিকভাবে সুশাসনের অভাবে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আছে। আর মাত্র ১০ ভাগে আছে সরকারি দল ও আমলাতন্ত্র। আরো আছে সুবিধাভোগী আইন ও শৃঙ্খলা বাহিনী যারা এখন গণবিরোধী ভূমিকা পালন করছে। সরকারি দল চরম ভীতিকর অবস্থানে রয়েছে। তাই আগ্নেয়াস্ত্র তাক করতে হচ্ছে জনতার উদ্দেশে। এক সময় মেশিনগানও ভোঁতা হয়ে যায় গণবিপ্লবে- যেমনটি হয়েছে নিকট অতীতে ইরানে এবং বর্তমান মিয়ানমারে।
লেখক : অধ্যাপক, সরকার ও রাজনীতি বিভাগ
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
Mal55ju@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement