২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গ্রন্থ নিষিদ্ধকরণ ও সাম্রাজ্যবাদী খাসলত!

-

ব্রিটিশ বংশজাত লেখক জর্জ বেঞ্জামিন ওয়াকারের জন্ম হয় ১৯১৩ সালে, কলকাতায়। পড়াশোনা করেন কলকাতা বয়েজ স্কুলে, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ধর্ম ও দর্শন বিষয়ে লেখালেখি করে নাম কুড়িয়েছিলেন। তার মৃত্যু হয়েছে ২০১৩ সালে। লম্বা জীবনই পেয়েছিলেন। ইসলাম প্রশ্নে তার মন ছিল অসহিষ্ণু। সেই অসহিষ্ণুতার স্বাক্ষর তিনি রেখে গেছেন লেখাজোখায়। ফাউন্ডেশন অব ইসলাম তার এমন এক গ্রন্থ, যেখানে তিনি ইসলামকে ব্যক্ত করতে গিয়ে বারবার ক্ষুব্ধ হয়েছেন, ধৈর্য হারিয়েছেন, লুকিয়ে রাখতে পারেননি ঘৃণা। ওয়াকার দাবি করেছেন, ইসলামে ইনকুইজিশন রয়েছে। যদিও এটি না আছে ইসলামের ব্যবস্থায়, না ছিল মুসলিম সভ্যতার চর্চায়।
তিনি শেষাবধি ফিরে এসেছেন সালমান রুশদির বিদ্বেষ-বিষাক্ত স্যাটানিক ভার্সেসের মতো গ্রন্থ নিষিদ্ধ করার মতো ঘটনার দিকে। যেন আধুনিক দুনিয়ায় গ্রন্থ নিষিদ্ধকরণকে জারি রাখার দায় ইসলামের। ইসলাম হেইটের গড়পড়তা মানসিকতা থেকে বেরিয়ে আসতে না পারলে যা ঘটে আর কী!
কারেন আর্মস্ট্রং (জন্ম ১৯৪৪) তার বিখ্যাত গঁযধসসধফ অ ইরড়মৎধঢ়যু ড়ভ ঃযব ঢ়ৎড়ঢ়যবঃ বইয়ে লিখেছেন, সালমান রুশদির দ্য স্যাটানিক ভার্সেসে উপস্থাপিত মুহাম্মদ সা:-এর কাল্পনিক বিবরণের প্রতি মুসলিমদের উগ্র প্রতিক্রিয়ার কারণ অনুধাবন করা পশ্চিমের জনগণের জন্য দুঃসাধ্য ছিল। কোনো উপন্যাস যে এমন প্রবল ঘৃণার উদ্রেক করতে পারে, বিশ্বাস করা কঠিন হয়ে ওঠে এবং এই প্রতিক্রিয়াকে ইসলামের দুরারোগ্য অসহিষ্ণুতার প্রমাণ হিসেবে দেখা হয়েছে।
গ্রন্থ নিষিদ্ধ করা এবং সালমান রুশদির (জন্ম ১৯৪৭) স্যাটানিক ভার্সেস প্রসঙ্গে মুসলিমদের প্রতিক্রিয়াকে পশ্চিমা সমালোচকরা নিজেদের স্পর্শকাতর অনুভূতিগুলোর সাথে মিলিয়ে দেখতে পারতেন। ১৯৩৬ সালে ব্রিটিশ সরকার নিষিদ্ধ করে সাজ্জাদ জাহির, আহমেদ আলী, রশিদ খান ও মাহমুদ উজ জাফরের ছোটগল্প সঙ্কলন আঙ্গারায়। কারণ এতে সরকারের প্রতি ক্ষোভের প্রকাশ ছিল। এরিক মারিয়া রেমার্কের (১৮৯৮-১৯৭০) অষষ ছঁরবঃ ড়হ ঃযব ডবংঃবৎহ ঋৎড়হঃ গ্রন্থটি জার্মানিতে নিষিদ্ধ হয় ১৯২৯ সালে। এটি একটি যুদ্ধবিরোধী উপন্যাস। ভেরমাখট (দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হিটলারবিরোধী জার্মান বাহিনী) সম্পর্কে অপমানমূলক বক্তব্য থাকায় গ্রন্থটি নিষিদ্ধ হয়। এডাম পারফ্রের (১৯৫৭-২০১৮) অঢ়ড়পধষুঢ়ংব ঈঁষঃঁৎব একটি প্রবন্ধ সঙ্কলন। রাশিয়ায় বইটি নিষিদ্ধ। ২০০৬ সালে জুলাইয়ে মাদকে প্ররোচনার দায়ে রাশিয়ার আদালত বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। রাশিয়ায় মুদ্রিত বইটির সব কপি ধ্বংস করে ফেলা হয়। ২০০৮ সালের আগস্টে কোরিয়ান সামরিক বাহিনীতে নিষিদ্ধ করা হয় ২৩টি গ্রন্থ। যার অন্যতম হচ্ছেÑ হা-জুন চাংয়ে (জন্ম ১৯৬৩) ইধফ ঝধসধৎরঃধহং : ঞযব গুঃয ড়ভ ঋৎবব ঞৎধফব ধহফ ঃযব ঝবপৎবঃ ঐরংঃড়ৎু ড়ভ ঈধঢ়রঃধষরংস. এডলফ হিটলারের (১৮৮৯-১৯৪৫) গবরহ কধসঢ়ভ ইউরোপে নিষিদ্ধ।
এলিজাবেথ স্মার্টের (১৯১৩-৮৬) আত্মজীবনীমূলক কবিতা ইু এৎধহফ ঈবহঃৎধষ ঝঃধঃরড়হ ও ঝধঃ উড়হি ধহফ ডবঢ়ঃ কানাডায় নিষিদ্ধ হয় ১৯৪৫ সালে। ২০০৯ সালে থমাস রাথস্যাকের (জন্ম ১৯৬৭) আত্মজীবনী বই শৎরম সবফ বষরঃবহ ২০০৯ নিষিদ্ধ করে ডেনমার্ক। প্রভোস্লাভ ভুইজসিকের (চৎাড়ংষধা ঠঁলপরপ ) (জন্ম ১০৬০) কবিতা ঈধংঃৎধঃরড়হ ড়ভ ঃযব ডরহফ যুগোস্লাভিয়ায় নিষিদ্ধ হয় ১৯৮৫ সালে। রুবেম ফনসেকার (১৯২৫-২০২০) কল্পকাহিনী ঐধঢ়ঢ়ু ঘবি ণবধৎ ১৯৭৫ সালে নিষিদ্ধ করে ব্রাজিল। যিভার্ড স্টয়কোভিকের (জন্ম ১৯৪২) প্রবন্ধ গ্রন্থ অনড়ঁঃ ধ ঝরষবহপব রহ খরঃবৎধঃঁৎব ১৯৫১ সালে নিষিদ্ধ হয় যুগোস্লাভিয়ায়। জোসেফ হেলারের উপন্যাস ঈধঃপয-২২ ১৯৭৬ সালে নিষিদ্ধ হয় আমেরিকার ওহাইয়োতে, ১৯৭৪ সালে ডালাসে, ১৯৭৯ সালে টেক্সাস ও ওয়াশিংটনে। এডনা ও ব্রায়ানের উপন্যাস ঞযব ঈড়ঁহঃৎু এরৎষং আয়ারল্যান্ডে নিষিদ্ধ হয় ১৯৬০ সালে। এডউইন এফ গিলটের থ্রিলার ঞযব ঈড়াবৎ-ঁঢ় এবহবৎধষ নেদারল্যান্ডে নিষিদ্ধ হয় ২০১৪ সালে, আদালতের আদেশে। জন ম্যাকগারনের উপন্যাস ঞযব উধৎশ অশ্লীলতার অভিযোগে নিষিদ্ধ হয় ১৯৬৫ সালে, নিষিদ্ধ করে আয়ারল্যান্ডের আদালত। ইয়ান গিবসন রচিত জীবনীগ্রন্থ ঞযব উবধঃয ড়ভ খড়ৎপধ স্পেনে নিষিদ্ধ হয় ১৯৭১ সালে। মিলোস মস্কভেলভিচর অভিধান উরপঃরড়হধৎু ড়ভ গড়ফবৎহ ঝবৎনড়-ঈৎড়ধঃরধহ খধহমঁধমব নিষিদ্ধ হয়েছে যুগোস্লাভিয়ায়, ১৯৬৬ সালে। বরিস পাস্তেরনাকের উপন্যাস উড়পঃড়ৎ তযরাধমড় রাশিয়ায় নিষিদ্ধ হয় ১৯৫৫ সালে। ১৯৮৮ সাল অবধি ছিল নিষিদ্ধ। ঐড়হড়ৎল্ক ফব ইধষুধপ-এর ছোটগল্প উৎড়ষষ ঝঃড়ৎরবং কানাডায় নিষিদ্ধ হয় ১৯১৪ সালে। হেডি ল্যামারের আত্মজীবনী ঊপংঃধংু ধহফ গব ১৯৬৭ সালে নিষিদ্ধ হয় অস্ট্রেলিয়ায়। সিনক্লেয়ার লুইসের উপন্যাস এলমার গ্যান্ট্রি নিষিদ্ধ হয় আমেরিকায়। ইরউইয়িন স্নিফের গ্রন্থ ঞযব ঋবফবৎধষ গধভরধ নিষিদ্ধ হয় আমেরিকায়। ক্যাথলিন উইনসরের উপন্যাস ঋড়ৎবাবৎ অসনবৎ ১৯৪৫ সালে নিষিদ্ধ হয় অস্ট্রেলিয়ায়।
জর্জ অরওয়েলের (১৯০৩-৫০) রাজনৈতিক উপন্যাস অহরসধষ ঋধৎস। ১৯৪৩ সালে এর প্রকাশ আটকে দেয়া হয় যুদ্ধকালে ব্রিটেনের সহযোগী ইউএসএসআরের বিরুদ্ধে সমালোচনার কারণে। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে বইটি যেই প্রকাশিত হলো, ইউএসএসআরসহ বহু কমিউনিস্ট দেশে নিষিদ্ধ হলো বইটি। এখনো উত্তর কোরিয়ায় এটি নিষিদ্ধ এবং ভিয়েতনামে সেন্সরকৃত। ড্যান ব্রাউনের (জন্ম ১৯৬৪) উপন্যাস ঞযব ঠরহপর ঈড়ফব ২০০৪ সালে নিষিদ্ধ হয় লেবাননে; খ্রিষ্টধর্মের অবমাননার দায়ে। ভিএস নাইপলের (১৯৩২-২০১৮) ভ্রমণকাহিনী অহ অৎবধ ঙভ উধৎশহবংং ১৯৪৬ সালে নিষিদ্ধ করে ভারত। কারণ এতে ভারতীয় জনগণ সম্পর্কে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে। জোসেফ লেভেইল্ডের আত্মজীবনী এৎবধঃ ঝড়ঁষ : গধযধঃসধ এধহফযর ধহফ ঐরং ঝঃৎঁমমষব ডরঃয ওহফরধ ২০১১ সালে নিষিদ্ধ করে ইন্ডিয়া। প্রায় একই কারণে বার্ট্রান্ড রাসেলের (১৮৭২-১৯৭০) টহধৎসবফ ঠরপঃড়ৎু নিষিদ্ধ করে ইন্ডিয়া। আলেকজান্ডার ক্যাম্পবেলের (১৭৮৮-১৮৬৬) কল্পকাহিনী ঞযব ঐবধৎঃ ড়ভ ওহফরধ ১৯৫৯ সালে নিষিদ্ধ হয় ইন্ডিয়ায়। যশবন্ত সিংহের (১৯৩৮-২০২০) জীবনী রচনা জিন্নাহ : ইন্ডিয়া-পার্টিশন-ইন্ডিপেন্ডেন্স ২০০৯ সালে নিষিদ্ধ করে ভারত। সুনন্দা কে দত্ত রায়ের (জন্ম ১৯৩৭) ঝসধংয ধহফ এৎধন : অহহবীধঃরড়হ ড়ভ ঝরশশরস ইন্ডিয়ায় নিষিদ্ধ। স্ট্যানলি ওলপের্টের (১৯২৭-২০১৯) উপন্যাস ঘরহব ঐড়ঁৎং ঞড় জধসধ (১৯৬২) ইন্ডিয়ায় নিষিদ্ধ। জেম লাইনের (জন্ম ১৯৫০) ঐতিহাসিক গ্রন্থ ঝযরাধলর – ঐরহফঁ করহম রহ ওংষধসরপ ওহফরধ নিজেদের বীরের সম্মান রক্ষায় নিষিদ্ধ করেছে ইন্ডিয়া।
এই যখন বাস্তবতা, মুসলিমদের সম্পর্কে ঘৃণাপূর্ণ এবং তাদের বিশ্বাস সম্পর্কে আক্রমণাত্মক বই একই প্রতিক্রিয়ার শিকার হলে কেন এ জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে ইসলামকে?
ইংরেজি সাহিত্যের অন্যতম আদিকবি জিওফ্রে চসারের (১৩৪৩-১৪০০) শ্রেষ্ঠতম গ্রন্থ ঞযব ঈধহঃবৎনঁৎু ঞধষবং নিষিদ্ধ হয়েছিল প্রবল উদ্দীপনায়। ১৬৬০ সালের পরে ব্রিটেনে জন মিল্টনের (১৬০৮-১৬৭৬) সব রচনা আগুনে পোড়ানো হয়। তার অৎবড়ঢ়ধমরঃরপধ নিষিদ্ধ হয় ব্রিটেনে। নিছক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতার কারণে। তুচ্ছ কারণে কিংবা বলতে গেলে কোনো কারণ ছাড়া নিছক শাসকের অপছন্দের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছে বহু বই। ব্রিটিশ লেখক লুইস ক্যারোলের ( ১৮৩২-১৮৯৮) শিশুতোষ উপন্যাস অষরপব'ং অফাবহঃঁৎবং রহ ডড়হফবৎষধহফ চীনে নিষিদ্ধ হয় ১৮৫৬ সালে, কারণ তাতে পশুর মনের জটিল আবেগ প্রকাশিত হয়েছিল। সেটি সিদ্ধ হতে পারেনি ১৯৩১ সাল অবধি। ব্রিটিশ কথাশিল্পী জন ক্লেলান্ডের (১৭০৯-১৭৮৯) উপন্যাস ঋধহহু ঐরষষ ড়ৎ গবসড়রৎং ড়ভ ধ ডড়সধহ ড়ভ চষবধংঁৎব আমেরিকায় নিষিদ্ধ হয় ১৮২১ সালে।
প্রাচীন গ্রিক চিন্তাবিদ এরিস্টোফেনিসের (খ্রিষ্টপূর্ব ৪২৭-৩৮৬) নাটক খুংরংঃৎধঃধ (৪১১ ইঈ) ১৯৬৭ সাল থেকে গ্রিসে নিষিদ্ধ। ডানিয়েল ডিফোরের (১৬৬০-১৭৩১) উপন্যাস গড়ষষ ঋষধহফবৎং ড়ৎ ঞযব ঋড়ৎঃঁহবং ধহফ গরংভড়ৎঃঁহবং ড়ভ ঃযব ঋধসড়ঁং গড়ষষ ঋষধহফবৎং নিষিদ্ধতার কবলে পড়ে। ফ্রান্সিস ভিনসেন্ট সোসাইন্তের (১৭১৫-১৭৭২) বই খবং গড়বঁৎং ১৭৪৮ সালে ফ্রান্সে নিষিদ্ধ হয় রাষ্ট্রীয়ভাবে। থমাস পেইনের (১৭৩৭-১৮০৯) রাজনৈতিক রচনা জরমযঃং ড়ভ গধহ ব্রিটেনে নিষিদ্ধ। আলডোস হাক্সলির (১৮৯৪-১৯৬৩) উপন্যাস ইৎধাব ঘবি ডড়ৎষফ আয়ারল্যান্ডে নিষিদ্ধ হয় ১৯৩২ সালে। জেমস জয়েসের (১৮৮২-১৯৪১) বিখ্যাত টষুংংবং ১৯৩৬ সালে নিষিদ্ধ হয় ব্রিটেনে। উপটন সিনক্লের (১৮৭৮-১৯৬৮) দ্য জাঙ্গাল ১৯৫৬ সালে নিষিদ্ধ হয় জার্মানিতে। ডি এইচ লরেন্সের (১৮৮৫-১৯৩০) উপন্যাস খধফু ঈযধঃঃবৎষবু'ং খড়াবৎ নিষিদ্ধ হয় আমেরিকায়। এই যে ধারাবাহিকতা, এটি তো থামেনি কখনো!
এই তো সে দিন, ২০০৮ সালে, নোয়াম চমস্কির (জন্ম ১৯২৮) ণবধৎ ৫০১ : ঞযব ঈড়হয়ঁবংঃ ঈড়হঃরহঁবং দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীতে নিষিদ্ধ হয়! মা জিয়ানের (জন্ম ১৯৫৩) বেইজিং কোমা চীনে নিষিদ্ধ হয় ২০০৮ সালে। টেড ডাভের (জন্ম ১৯৫০) উপন্যাস ওহঃড় ঃযব জরাবৎ (২০১২) নিষিদ্ধ হয় নিউজিল্যান্ডে, ২০১৫ সালে!
আমরা স্পষ্ট দেখছি, আধুনিক কালপর্বে অমুসলিম দুনিয়ায় গ্রন্থ নিষিদ্ধ করা একটি অনস্বীকার্য ধারাবাহিকতা। অব্যাহতভাবে সেটা চলেছে, চলছে। এটি যেমন সত্য, তেমনি সত্য হচ্ছে, এই ধারা হাজার বছর ধরে চলমান। ধর্মগ্রন্থকেও নিষিদ্ধ করার ধারা জারি ছিল ইউরোপে। ফ্রান্সের রাজা নবম লুই (১২১৪-১২৭০) ইহুদি ধর্মগ্রন্থকে যিশুখ্রিষ্টের অবমাননা বলে ঘোষণা করলেন। নিষিদ্ধ করলেন একে। ইহুদিরা বলল, এটি আসলে যিশুর অবমাননা নয়, আমরা আলোচনায় বসে বিষয়টি বোঝাতে চাই।
লুই ঘোষণা করলেন, ইহুদিদের সাথে আলোচনা প্রয়োজন বটে! তবে সে আলোচনার সেরা পদ্ধতি হচ্ছে, তাদের পেটে তরবারি ঢুকিয়ে দেয়া!
দুর্বল প্রতিপক্ষের আলোচনা শোনার বদলে পেটে তরবারি ঢুকিয়ে দেয়া কিংবা তরবারি পেটে ঢুকানোকেই আলোচনা বলে ভাবা পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদের পুরনো খাসলত। সিরীয় চিন্তাবিদ মুস্তাফা আস সিবায়ি (১৯১৫-১৯৬৪) দেখিয়েছেন, সেই খাসলতের নির্দেশেই ১৪৯২ সালে মুসলিম স্পেন দখল করে শুধু এক দিনে গ্রানাডার এক ময়দানে খ্রিষ্টীয় পাদ্রি ও সমর নেতারা পুড়িয়ে দেয় মুসলিমদের লেখা ১০ লাখ বই। কিংবা ক্রুসেডাররা কেবল ত্রিপোলি দখল করেই ভস্ম করে দেয় ৩০ লাখ বই। অন্য দিকে সেই খাসলতের কারণেই কলম হাতে নিয়ে তাদের চিন্তার নেতারা গ্রন্থ নিষিদ্ধ, ধ্বংস ও ভিন্নমত সহ্য না করার দায় অন্যায্যভাবে চাপিয়ে দেন ইসলামের ওপর! হ
লেখক : কবি, গবেষক

 


আরো সংবাদ



premium cement