২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দৃষ্টিপাত : চাকরিজীবী মুক্তিযোদ্ধা

-

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে কলেজজীবনেই ছাত্রত্ব ত্যাগ করে মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মেলাগড় থেকে ভারতীয় সেনাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত বাঘমারা ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়েছিলাম। আমাকে এবং সাথের যোদ্ধাদের ফেনী-বিলোনিয়া রণক্ষেত্রে পাঠানো হয়েছিল।
দশম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের পাইওনিয়ার প্লাটুনে কমান্ডার হিসেবে দায়িত্বের সাথে যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধাবস্থায় বুলেটবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছি এবং বুলেটের চিহ্ন বুকে ধারণ করে জীবনের ৬৮ বছর অতিক্রম করছি। পরিবারে বাবা ও আমিসহ তিন ভাই মুক্তিযোদ্ধা। ৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ফেনী হানাদারমুক্ত হয়েছিল। আমরা অগ্রসর হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করেছিলাম। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হওয়ার পর ১০ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের কমান্ডারের কাছে অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দিয়ে বাড়িতে ফিরে আসি এবং লেখাপড়ায় মনোযোগী হই।
১৯৭৩ সালের ১২ এপ্রিল রাষ্ট্রায়ত্ত পূবালী ব্যাংকে চাকরিতে যোগ দিয়েছিলাম। তখন স্বাভাবিকভাবেই পাকিস্তান আমলের কর্মকর্তাদের সংখ্যা প্রতিটি অফিসেই বেশি ছিল। তাই মুক্তিযোদ্ধা হওয়া সত্ত্বেও পরিচয় গোপন রাখতে হয়েছিল। বন্ধুবান্ধব অনেকেই চাকরিতে যোগ দিয়েছিল। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় জানলে দূর-দূরান্তে বদলি করা হতো। তখন মোবাইল ছিল না। পরিচিত লোকের মাধ্যমে সংবাদ জানতে পারতাম। অফিস থেকে বের হওয়া যেত না। পরিচিত কেউ এলেও কথা বলা যেত না। সামান্য দেরি হলে পত্রের মাধ্যমে কৈফিয়ত তলব করা হতো। চাকরিতে কনফারমেশনে বিলম্ব করা হতো। পদোন্নতিতে বিলম্ব করা হতো এবং আরো অনেক কিছু।
১৯৮৪ সালে পূবালী ব্যাংক প্রাইভেট সেক্টরে হস্তান্তর করা হয়েছিল ভেন্ডরস অ্যাগ্রিমেন্টের মাধ্যমে। এ অ্যাগ্রিমেন্টে অনেক শর্ত ছিল তার মধ্যে একটি শর্ত হলোÑ সময় সময় সরকার কর্তৃক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য ঘোষিত সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন উল্লেøখযোগ্য।
১৯৮৪ সালে পূবালী ব্যাংক প্রাইভেট সেক্টরে হস্তান্তর হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করেনি, এমন উদাহরণ নেই। শুধু মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির বয়স দুই বছর বৃদ্ধির যে সিদ্ধান্ত সরকারি গেজেটে ১৩ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে পরিপত্রের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য বলা হয়েছিল, কার্যকর করেনি। আইন পাসের সময় পূবালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান জাতীয় সংসদের সংসদ হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। আইন পাস করে তিনি আইন মানলেন না; অথচ হলেন রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান। উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বর ২০১২ সালে ফের মুক্তিযোদ্ধাদের এক বছর চাকরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, যা ৯৫৮তম বোর্ড মিটিংয়ে ১৯ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে পাস এবং কার্যকর করা হয়েছিল। সরকারের তরফ থেকেও প্রক্রিয়াটি যথাযথভাবে তদারকি করা হয়েছে বলে মনে হয় না। এভাবে অনেক মুক্তিযোদ্ধা হয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত।
আগে পাকিস্তানি কর্মকর্তাদের নির্যাতন চাকরিজীবী মুক্তিযোদ্ধাদের সহ্য করতে হয়েছিল আর এখন অন্য পক্ষের কর্মকর্তাদের নির্যাতন মুক্তিযোদ্ধাদের সহ্য করতে হচ্ছে। সরকারপ্রধানের কাছে অনুরোধ, মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরির মেয়াদ বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা হয়েছে কি না একটু খতিয়ে দেখা দরকার। এ ব্যাপারে আমার গত ১২ মার্চ ২০১৯ দরখাস্তে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি, যা তার বরাবর পাঠানো হয়েছিল। হ
মো: আনোয়ারুল আলম
মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ব্যাংকার


আরো সংবাদ



premium cement
ক্রিকেট খেলতে অস্ট্রেলিয়া যাচ্ছে দেওয়ানগঞ্জের প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী শিহাব কিশোরগঞ্জে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ সাতক্ষীরা বৈদ্যুতিক খুটিতে ধাক্কা লেগে মোটরসাইকেলআরোহী নিহত বার্সেলোনাতেই থাকছেন জাভি চতুর্থ দফা ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি : এবারের তাপদাহ শেষেই বৃষ্টিপাতের আশা ফরিদপুরে বৃষ্টির জন্য নামাজে হাজারো মুসুল্লির কান্না পোরশার নোচনাহারে আগুনে ৩টি দোকান পুড়ে গেছে খুলনা বিভাগ ও ৬ জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ ‘১ টাকার কাজ ১০০ টাকায়, ৯৯ যায় মুজিব কোটে’ রাত পোহাতেই রুদ্ধদ্বার অনুশীলন শুরু বাংলাদেশের সাটুরিয়ায় প্রশান্তির বৃষ্টি চেয়ে সালাতুল ইসতিসকা আদায়

সকল