২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অ ভি ম ত : শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া উচিত

-

চীনে করোনাভাইরাসের উপদ্রব শুরু হয় গত বছরের শেষ দিকে। পরে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয়া হয় ৮ মার্চ। ওই মাসের ১৮ তারিখে প্রথম কেউ এই ভাইরাসে মারা যান। সরকার জনস্বার্থে ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। সরকার সরাসরি লকডাউন ঘোষণা না করলেও সাধারণ ছুটি লকডাউনের মতোই সারা দেশে কার্যকর করা হয়। অফিস-আদালত, বাজার, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসহ সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। যানবাহন বন্ধ করে মানুষের চলাফেরায় লাগাম টানা হয়। সবাইকে ঘরে থাকতে উৎসাহিত করা হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হয়। এর আগে ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
করোনার ভয়াবহতা এখন আগের চেয়ে কমেছে। সরকারিভাবে বুলেটিন প্রচারও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কিছু দেশে করোনার ভয়াবহতা কিছুটা হ্রাস পাওয়ার পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার পর পরিস্থিতি আবার অবনতির দিকে চলে যায়। ফলে আবার সেগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। বাংলাদেশ সরকার ওই সব দেশ থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী ৩ অক্টোবর পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
সংসদ টিভি বা এফএম রেডিওতেও সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাঠদান করা হচ্ছে। কিন্তু অনেকের ঘরে টিভি না থাকায় তারা বঞ্চিত হচ্ছে এসব ক্লাস থেকে। ফলে দেখা দিচ্ছে বৈষম্য। ভার্সিটি বা কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করতে পারলেও মাধ্যমিক এবং প্রাথমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছে কম। কারণ তাদের অধিকাংশই স্মার্টফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহারের সুযোগ পাচ্ছে না। সব কিছু বিবেচনা করে সরকার অক্টোবরের ৩ তারিখের পর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার শর্তে খুলে দিলে শিক্ষার্থীরা অন্তত নিজেদের সিলেবাসের প্রধান অংশগুলো হলেও আয়ত্ত করে এবং বর্তমান শ্রেণী পাঠের ওপর ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করে পরবর্তী শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হওয়ার সুযোগ পাবে। তা ছাড়া অনেকগুলো পাবলিক পরীক্ষা ঝুলে আছে। পরীক্ষার্থীরা হারাচ্ছে শিক্ষাবর্ষ। পিছিয়ে পড়ছে, পড়ছে সেশনজটেও। উচ্চমাধ্যমিকে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীরাও পিছিয়ে পড়ছে ক্লাস শুরু হতে দেরি হওয়ায়।
অন্য দিকে দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থীরা পূর্ব-অর্জিত পড়াগুলোও ভুলে যাচ্ছে। কলেজ-ভার্সিটি পড়–য়া শিক্ষার্থীদের মনে বাড়ছে হতাশা। বাড়ছে নানা রকম সামাজিক অস্থিরতা। শিশুশিক্ষার্থীরা টেলিভিশন, স্মার্টফোন, কার্টুন, গেম প্রভৃতির প্রতি অতিমাত্রায় আসক্ত হয়ে যাচ্ছে। এসব কিছু বিবেচনা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো অক্টোবরের ৪ তারিখ থেকে খুলে দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে পারে সরকার।

নূর আহমদ
বাসিন্দা, দক্ষিণ মাগুরী, দত্তপাড়া, লক্ষ্মীপুর
nurahmad786@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement