২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

স্মরণ : আবদুল হাকিম বিক্রমপুরী

-

আবদুল হাকিম বিক্রমপুরী বাংলা ১৩০০ সালের অগ্রহায়ণ মাসে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার কোর্টগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম কাজী ইব্রাহীম হোসেন ছিলেন প্রতিপত্তিশালী ভূস্বামী, জনদরদি ও শিক্ষানুরাগী। তিনি মুন্সীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িত ছিলেন। আবদুল হাকিম বিক্রমপুরী ১৯১৫ সালে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন এবং ঢাকা কলেজে শিক্ষাজীবন শেষ করে কলকাতায় গমন করেন। প্রথমে তিনি শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হকের সান্নিধ্যে এসে কৃষক প্রজা পার্টির সাথে যুক্ত হন। ১৯৩৭ সালে পার্টির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মুন্সীগঞ্জ থেকে বিপুল ভোটে অবিভক্ত বাংলার আইন পরিষদের সভ্য নির্বাচিত হন। ১৯৪৬ সালের নির্বাচনেও বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ার পর তিনি ’৫৪ সাল পর্যন্ত আইনসভার সভ্য ছিলেন। ফজলুল হক যখন মুসলিম লীগে যোগদান করে অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী হন, তখন বিক্রমপুরীও মুসলিম লীগে যোগ দেন। রাজনীতিতে সততা ও নিষ্ঠার জন্য শেরেবাংলা তাকে খুব ভালোবাসতেন। অবিভক্ত বাংলার পার্লামেন্টে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সুদীর্ঘ ১৮ বছর আইন পরিষদের সদস্য হিসেবে তিনি প্রজাস্বত্ব, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, মাদরাসা শিক্ষা, ঋণ সালিশি বোর্ড, মহাজনী উচ্ছেদ, জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ প্রভৃতি আইনসহ অসংখ্য জনকল্যাণমূলক কাজে অংশগ্রহণ করেন। তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগ কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন এবং ১৯৪৬ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত কনভেনশনে বাংলা প্রদেশের প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করেন। এ সময় ব্রিটিশ সরকার তাকে খান বাহাদুর খেতাবে ভূষিত করতে চাইলে তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। বৃহত্তর ঢাকা জেলা মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি পদে দীর্ঘকাল অধিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি ১৯৫৯ সালে মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রাদেশিক গভর্নরের উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৬২ সালে তৎকালীন মুন্সীগঞ্জ মহকুমা ও ফরিদপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত নির্বাচনী এলাকা থেকে বিপুল ভোটে পাকিস্তান পার্লামেন্টের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি পার্লামেন্টে পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে বক্তব্য রাখতেন। সুদীর্ঘ জীবনে বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা ও সাহায্যকারী ছিলেন। তিনি মুন্সীগঞ্জে কয়েকটি রিডিং ক্লাবের প্রতিষ্ঠা ছাড়াও ‘মুসলিম ইনস্টিটিউট’ নামে পাঠাগার প্রতিষ্ঠা করেন। নিজ বাড়িতেও একটি পাঠাগার স্থাপন করেন, যেখানে অনেক দুর্লভ প্রাচীন পুস্তকের সমাহার ছিল। কাজী কমরুদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় (কে কে সরকারি বিদ্যানিকেতন), কোর্টগাঁও উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, চর ডুমুরিয়া এম স্কুল তিনি প্রতিষ্ঠা করেন। নিজ গ্রামে দু’টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং মুন্সীগঞ্জ জেলায় বহু প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপনে অবদান রাখেন। তারই চেষ্টায় ও অর্থানুকূল্যে গজারিয়া ভবেরচর হাই স্কুল, চিতলিয়া এম ই স্কুল এবং সৈয়দপুর মাদরাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি মুন্সীগঞ্জ মহিলা কলেজ প্রতিষ্ঠার অন্যতম উদ্যোক্তা। এ ছাড়া তিনি চর ডুমুরিয়া ও গজারিয়ার ভবেরচরে দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
সমাজসেবায় বিশেষ অবদানের জন্য বিক্রমপুর ফাউন্ডেশন ১৯৮৩ সালে তাকে স্বর্ণপদক প্রদান করে। ১৯৮৭ সালের ৪ জুলাই বার্ধক্যজনিত রোগে পিজি হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাব আনা হয় এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরী শোক প্রস্তাব পেশ ও মুনাজাত পরিচালনা করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৪ বছর। তিনি ছিলেন চিরকুমার।হ
অধ্যক্ষ হাওলাদার আবদুর রাজ্জাক


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী

সকল