২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অ ভি ম ত : জিপিএ ৫ বনাম কোয়ালিটি এডুকেশন

-

শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হলো দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে জীবনকে আলোকিত করা এবং মনুষ্যত্ববোধ অর্জন করা। বর্তমানে আমাদের তথাকথিত শিক্ষাব্যবস্থায় কিছু মানুষ শিক্ষাকে নির্দিষ্ট কিছু মানদণ্ডের দিয়ে সীমাবদ্ধ করে রেখেছে। তার মধ্যে একটি হলো জিপিএ ৫। আমাদের সমাজব্যবস্থায় মনে করা হয় জিপিএ ৫ পাওয়াই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। জিপিএ ৫ না পেলে একজন শিক্ষার্থীকে সমাজের চোখে ছোট করে দেখা হয়। একজন শিক্ষার্থীকে জিপিএ ৫ পাওয়ার জন্য তার মা-বাবা থেকে শুরু করে ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন,পাড়া-প্রতিবেশী থেকে শুরু করে সবাই তার ওপর চাপ প্রয়োগ করে। আসলেই কি জিপিএ ৫ পাওয়াই সবকিছু? জিপিএ ৫ পেলে হয়তো একজন শিক্ষার্থী সাময়িকভাবে অনেক প্রশংসিত হয় কিন্তু আদৌ কি জিপিএ ৫ পেলেই সে জীবনে উন্নতি করতে পারে? জীবনে উন্নতি করতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে অবশ্যই নিজ দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে নিজের জীবনের লক্ষ্য অর্জন করতে হয়। জিপিএ ৫ পাওয়া মানেই কিন্তু দক্ষতার পরিচয় দেয়া নয়। জিপিএ ৫ শিক্ষাজীবনের একটা প্রাপ্তি মাত্র।
জিপিএ ৫ কখনোই গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে পারে না। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে যেগুলোতে জিপিএ ছাড়া ভর্তি নেয়া হয় না। তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি যাদের ভর্তি নেয়া হয়েছিল সবাই আবার জিপিএ ৫ নিয়েই বের হবে। কিন্তু তা হয় না। কারণ জিপিএ ৫ কখনোই কোনো শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করতে পারে না। সব দিক থেকে বিচার-বিশ্লেষণ করেই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে হয়। জিপিএ ৫ পাওয়ার পেছনে ছোটাছুটি করা একটি ব্যর্থ প্রতিযোগিতা ছাড়া আর কিছুই না। বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে জিপিএ ৫ ছাড়া অনেক শিক্ষার্থীই জীবনে সফল। শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা করে কী শিখল আর কিভাবে তা কাজে লাগাল সেটিই হচ্ছে মূল বিষয়।
আমাদের অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ প্রয়োগ করে জিপিএ ৫ পাওয়ার জন্য। এতে করে শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে এবং তারা বিভিন্ন আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য হয়। যেখানে অভিভাবকদের উচিত তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং তাদের ভবিষ্যতের জন্য সাপোর্ট দিয়ে যাওয়া। ফলে প্রতি বছর ঝরে যায় অনেক তরুণ শিক্ষার্থীর প্রাণ। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অবস্থা এতটাও উন্নত নয় যেখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থী পাস করবে কিংবা প্রত্যেকেই জিপিএ ৫ পাবে। কিন্তু এ বিষয়টা আমাদের সমাজব্যবস্থা মেনে নিতে নারাজ। তাই জিপিএ ৫ না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা সবসময় বেড়েই চলছে। পরিসংখ্যান থেকে জানা যায়, ২০১৮ সালে এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশের এক দিনের মধ্যেই ১৯ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে এবং পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়াও ২০১৯ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রত্যাশানুরূপ ফল না করায় ১০ জন শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেছে বলে জানা যায়। এসব তরুণ শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার জন্য দায়ী আমাদের সমাজব্যবস্থা তথা জিপিএ ৫ নামক মানদণ্ড। তাই আমরা জিপিএ ৫ নামক মানদণ্ডটি দিয়ে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে বিচার না করি। একজন শিক্ষার্থী তখনই পরিপূর্ণ শিক্ষিত হতে পারবে যখন সে তার দক্ষতার মাধ্যমে নিজের জীবনকে আলোকিত করতে পারবে এবং মনুষ্যত্ববোধ অর্জন করতে পারবে। একজন শিক্ষার্থীর দক্ষতা বিচার করতে হলে আনুষঙ্গিক সব বিষয় বিবেচনায় নিতে হবে। শিক্ষার্থীরা আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ তাই তাদের যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে গড়ে তোলা আমাদের সবার দায়িত্ব। তাই শিক্ষার্থীদের জিপিএ ৫-র মানদণ্ডে বিবেচনা না করে আমাদের সমাজব্যবস্থার উচিত তাদের সাপোর্ট দিয়ে যাওয়া। হ
লেখক : সাইফুল ইসলাম, শিক্ষার্থী দ্বিতীয় বর্ষ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement
রাবিতে গ্রীষ্মের ছুটি স্থগিত, ঈদের সাথে সমন্বয় করে ছুটির নতুন তারিখ ঘোষণা ইন্দোনেশিয়ার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট প্রাবোও গাজার ২টি হাসপাতালে গণকবরের সন্ধান, তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের তীব্র তাপদাহে পানি, খাবার স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির ৬ জেলায় বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ, সিলেট বিভাগে বৃষ্টির সম্ভাবনা মাতামুহুরিতে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ ২ আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতি নিয়োগ ফেনীতে ইসতিসকার নামাজে মুসল্লির ঢল গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ১০০ শতাংশ ছাড়িয়েছে ইসরাইলের সামরিক ব্যয় মন্ত্রী-এমপি’র স্বজনরা প্রার্থিতা প্রত্যাহার না করলে ব্যবস্থা : কাদের গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন

সকল