২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাংলাদেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে

-

যানবাহন চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে দেশের প্রথম দৃষ্টিনন্দন যাত্রাবাড়ী-মাওয়া-ভাঙ্গা ননস্টপ এক্সপ্রেসওয়ে। ফলে খুব কম সময়ে এই সড়ক পথে যাতায়াতকারীরা তাদের গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। ১২ মার্চ গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আধুনিক ‘ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা’ সমৃদ্ধ ছয় লেনের মহাসড়কটিতে থাকছে দুই লেনের সার্ভিস রোড। রয়েছে চারটি করে ফ্লাইওভার, রেলওয়ে ওভারব্রিজ, বড় ব্রিজ এবং ১৯টি আন্ডারপাসসহ বিশ্বমানের সব নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এক্সপ্রেসওয়েটিতে গাড়ির সর্বোচ্চ গতিবেগ হতে পারবে ১৫০ কিলোমিটার। সে হিসাবে ঢাকা থেকে মাওয়া, এই ৫৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র ২৭ থেকে ৩০ মিনিট। সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে ২০১৬ সালে চারটি জেলা ঢাকা, মুন্সীগঞ্জ, মাদারীপুর ও ফরিদপুরে এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের বাস্তবায়ন শুরু করে এবং নির্ধারিত সময়সীমার তিন মাস আগেই নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে।
৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েতে জুরাইন, কুচিয়ামোড়া, শ্রীনগর ও আতাদিতে চারটি রেলওয়ে ওভারব্রিজ রয়েছে। এ ছাড়া চারটি বড় সেতু রয়েছে, যার মধ্যে আছে ৩৬৩ মিটার ধলেশ্বরী, এক হাজার ৫৯১ মিটার ধলেশ্বরী, দুই হাজার ৪৬৬ মিটার আড়িয়াল খাঁ এবং ১৩৬ মিটার দীর্ঘ কুমার নদীর সেতু।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির মূলে যে সড়ক যোগাযোগ সে বিষয়ে দ্বিমত নেই। বর্তমানে সারা দেশের সাথে যুক্ত হয়েছে সুপ্রশস্ত, সুন্দর ও মসৃণ সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক। সময় সময় অতিবর্ষণ ও বন্যায় সড়কের কিছু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও এবং সাময়িক দুর্ভোগের সৃষ্টি করা সত্ত্বেও সওজের উদ্যোগ ও স্থানীয় ব্যবস্থাপনায় সেগুলো মেরামতও করা হয়। ব্যস্ত মহাসড়কগুলো চার লেন ও আট লেনে উন্নীত করা হচ্ছে, সড়ক যোগাযোগ আরো দ্রুত ও ব্যয়সাশ্রয়ী করতে; সর্বোপরি সড়ক দুর্ঘটনা হ্রাসকল্পে।
‘বঙ্গবন্ধু যমুনা বহুমুখী সেতু’ অবহেলিত উত্তরবঙ্গের সাথে সড়ক যোগাযোগ সহজ করেছে। দীর্ঘ প্রতীক্ষিত, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নও বর্তমানে দৃশ্যমান। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এই সেতু সচল হলে দক্ষিণ বাংলার সাথে সড়ক ও রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিপুল সম্ভাবনাসহ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে যা যোগ করবে নতুন মাত্রা। এর বাইরেও নির্মিত হচ্ছে রাজধানীতে মেট্রোরেল, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রভৃতি। তবু স্বীকার করতে হবে, দেশে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহনের চাপ খুব বেশি। সে কারণে অনভিপ্রেত সড়ক দুর্ঘটনায় জানমালের ক্ষতিও হচ্ছে ব্যাপক। এ প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও কারিগরি সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছে বিশ্বব্যাংক ও জাতিসঙ্ঘ।
দেশ খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি, অর্থনীতি, রেমিট্যান্স, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ নানা ক্ষেত্রে যুগান্তকারী সাফল্য পেয়েছে। এ সাফল্য অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে বিশ্বে বাংলাদেশের আসন মর্যাদার হবে।
লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান, রাজউক


আরো সংবাদ



premium cement