২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

স্মরণ : সাংবাদিকতার প্রাণপুরুষ

-

এ বি এম মূসা দীর্ঘ ৬০ বছর সাংবাদিকতার সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত ছিলেন। ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল ৮৩ বছর বয়সে তিনি না-ফেরার দেশে চলে যান। ১৯৩১ সালে ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার ধর্মপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন সফল সম্পাদক, ক্ষুরধার কলামিস্ট। টেলিভিশনের টকশোতে সত্য উচ্চারণ করতে দ্বিধা করতেন না।
এ বি এম মূসা ১৯৫০ সালে মাত্র ১৯ বছর বয়সে দৈনিক ইনসাফে কাজ শুরু করেন। একই বছর তিনি দৈনিক পাকিস্তান অবজারভারে যোগদান করেন। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত অবজারভারে যথাক্রমে রিপোর্টার, স্পোর্টস রিপোর্টার, বার্তা সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ভাষা আন্দোলনের সময় সরকার অবজারভার বন্ধ করে দিলে তিনি দৈনিক সংবাদে যোগ দেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকায় সম্পাদক হয়েছিলেন। ২০০৪-২০০৫ সালে দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় তিনি লন্ডনের সানডে টাইমস পত্রিকার সংবাদদাতা ছিলেন। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের প্রথম মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭৩ সালে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে ফেনী-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন। ১৯৭৫-এর পটপরিবর্তনের পর তাকে আর রাজনীতিতে সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। ১৯৭৮ সালে জাতিসঙ্ঘের পরিবেশ কার্যক্রমের এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের পরিচালক পদে যোগ দেন। ১৯৮১ সাল থেকে ১৯৮৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ছিলেন। ১৯৮৫ সাল থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত বাসস মহাব্যবস্থাপক ও প্রধান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। প্রবীণ সাংবাদিক মূসা মৃত্যুর আগের বছরগুলোতে টেলিভিশনের টকশোতে আইনের শাসন, ন্যায়বিচার, বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, নাগরিকদের গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে কথা বলে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। তিনি ছিলেন স্পষ্টবাদী ও প্রতিবাদী। সন্ত্রাস, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, শিক্ষাঙ্গনে নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে তিনি কথা বলতেন। সরকার ও সরকারি দলের কর্মকাণ্ডের কঠোর সমালোচনার জন্য তাকে অনেক গঞ্জনার শিকার হতে হয়েছে। আওয়ামীপন্থী বুদ্ধিজীবী হওয়া সত্ত্বেও এই প্রবীণ সাংবাদিককে নানাভাবে মানসিক নির্যাতন চালিয়েছিলেন এ দলের শীর্ষ পর্যায়ের লোকজন। সাবেক এমপি হিসেবে সংসদ ভবনে তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও রহস্যজনক কারণে তা হয়নি।
মোহাম্মদপুর ইকবাল রোডের মাঠে, জাতীয় প্রেস ক্লাবে, ফেনী শহরের মিজান ময়দানে এবং গ্রামের বাড়ি কুতুবপুরে মূসা ভাইয়ের নামাজে জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছিল। হ
শামসুল হুদা লিটন


আরো সংবাদ



premium cement