অসতর্কতার ফলাফল
- আজহার মাহমুদ
- ০৮ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
‘করোনা’ শব্দটি ল্যাটিন। এই শব্দ থেকে নামকরণ করা হয়েছে ভাইরাসটির। এর অর্থ হচ্ছে ‘মুকুট’। ভাইরাসটির আকৃতি দেখতে অনেকটা মুকুটের মতো হওয়ায় এর নাম করোনা দেয়া হয়েছে। এর উপরিভাগে প্রোটিনসমৃদ্ধ। এই প্রোটিন আক্রান্ত টিস্যু নষ্ট করে দেয়। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে প্রাথমিকভাবে বোঝা যায় না। জ্বর, অবসাদ, ঠাণ্ডা-সর্দি, কাশি, শুকনা কাশি, শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ প্রকাশ পায়। আবার কিছু ক্ষেত্রে এসব উপসর্গ দেখা গেলেও জ্বর থাকে না। করোনা শনাক্তের জন্য কন্ট্রোলরুমে আইইডিসিআরের নম্বরে কল করতে হবে বা ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। এ ভাইরাস রোগীর শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমিত হয় এবং শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে অন্যজনের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১৪ দিনের মধ্যে রোগীর শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ দেখা যাবে। কোনো কোনো বিশেষজ্ঞ পাঁচ দিনের মধ্যে, আবার কেউ কেউ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে করোনাভাইরাসের লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে বলছেন।
করোনাভাইরাসের কোনো ওষুধ ও প্রতিষেধক না থাকায় পরিচর্যা, সতর্কতা ও সচেতনতাই প্রতিরোধের উপায়। এর জন্য বিশ্বব্যাপী দেয়া হচ্ছে সতর্কবার্তা। প্রতিষেধক ও ওষুধ তৈরির জন্য বিভিন্ন দেশের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কাজ করছে। ভাইরাসটির উৎপত্তি সম্পর্কে আজো সঠিক কোনো তথ্য নেই।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে বাঁচতে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে, মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, হাঁচি-কাশিতে রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করতে হবে, বাইরে ঘোরাফেরা ও ভ্রমণ, ভিড় জমানো, হ্যান্ডশেক, কোলাকুলি এবং যেখানে-সেখানে থুথু ফেলা থেকে বিরত থাকতে হবে, সাবান ও পানি দিয়ে ঘন ঘন হাত ধুতে হবে, জামাকাপড় পরিষ্কার রাখতে হবে, প্রতিদিন গোসল করার সময় সাবান ব্যবহার করতে হবে, অপরিষ্কার হাত দিয়ে নাক-মুখ ও চোখ ধরা যাবে না। গরম পানি দিয়ে কুলি করতে হবে, গরম পানি পান করতে হবে, আইসক্রিমসহ ঠাণ্ডা খাবার পরিহার করতে হবে, ঠাণ্ডা যাতে না লাগে খেয়াল রাখতে হবে, যতটা সম্ভব সূর্যের আলোতে থাকতে হবে, অসুস্থ পশুপাখি থেকে থাকতে হবে দূরে, মাছ-গোশতসহ খাবার ভালোভাবে সিদ্ধ করতে হবে, করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে, কেউ আক্রান্ত হয়েছে সন্দেহ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এবং রোগীকে সঠিক সময়ে সঠিক সেবা ও চিকিৎসা পেলে রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এটাকে মহামারী বলেছে। রোগটি প্রথমে চীনে ধরা পড়লেও এখন প্রতিদিনই সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ছে। বেশি আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে চীন, স্পেন, ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ইন্দোনেশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য প্রভৃতি রয়েছে।
সময়ে সময়ে এ পৃথিবীতে ভয়াবহ অনেক রোগ যেমনÑ ইনফ্লুয়েঞ্জা, এইডস, সার্স-মার্স, জিকা, গুটিবসন্ত, পোলিও, ইবোলায় কোটি কোটি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; কিন্তু এখনকার মতো এত ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হয়নি। করোনায় বিশ্বব্যাপী আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশেও রয়েছে মহা আতঙ্ক। ইতোমধ্যে বাংলাদেশেও কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে এ ভাইরাসে। অনিরাপদ জনস্রোতের পথে পা বাড়ালে মারাত্মক ক্ষতি হবে নিজেদেরই।
আমাদের দেশে কিছু চরম অসৎ, অসাধু ও সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী বিপদের সময় ব্যবসায়িক লাভ খোঁজেন এবং যেকোনোভাবে তা আদায়ও করে নেন। এ ক্ষেত্রে তারা কোনো ধর্মীয়, সামাজিক ও মানবিক মূল্যবোধের ধার ধারেন না। মাস্কের দাম হঠাৎ তিনগুণ বেড়ে গেল। আর আমরা হুজুগে অনেক বেশি দাম দিয়ে কিনছি। এ ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কিছুর দাম গিয়েছে বেড়ে। এভাবেই দেশের মানুষের বিপদের সময় বৈরী হয়ে দাঁড়ায় এসব অসৎ ব্যবসায়ী। দেশের মানুষের অনেকের নৈতিকতা, মানবতা, মনুষ্যত্ববোধ নেই তার জ্বলন্ত প্রমাণ এসব লুটেরা ও অর্থগৃধনু ব্যবসায়ীই।
দেশের মানুষের কাছে অনুরোধ, সবাই যেন সচেতন থাকেন, নিরাপদ থাকেন। প্রয়োজন ছাড়া যাবেন না। আপনার ভালো-মন্দ আপনাকেই দেখতে হবে। কে কী করছে সেটা দেখে আপনিও বেপরোয়া হবেন না। নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। প্রবাসী কেউ আশাপাশে থাকলে তাদের প্রতি নজর রাখুন। তারা বাইরে ঘোরাফেরা করলেই গোপনে প্রশাসনকে জানিয়ে দিন।হ
azharmahmud705@gmail.com
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা