১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দি ব স : অটিস্টিক শিশুদের ভালোবাসুন

-

‘অটিজম’ একটি মানসিক বিকাশঘটিত সমস্যা, যা স্নায়ু বা স্নায়ুতন্ত্রের গঠন ও পরিবর্ধনজনিত অস্বাভাবিকতার ফলে সৃষ্টি হয়। ১৮ মাস থেকে তিন বছরের মধ্যে এ রোগের লক্ষণ দেখা যায়। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের সমস্যা হয় স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে। অটিজমের কারণে কথাবার্তা, অঙ্গভঙ্গি, আচরণ একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ থাকে। অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের মানসিক এবং ভাষার ওপর দক্ষতা থাকে কম।
অটিস্টিক শিশুরা সামাজিকভাবে মেলামেশা করতে চায় না। তবে শিশুরা কম কথা বললেই কিন্তু তাদের অটিস্টিক শিশু বলা যায় না। এর সাথে তার অন্যান্য আচরণ, সামাজিকতা, অন্য একটি শিশুর বা বয়স্ক মানুষের সাথে মেশার বিষয়ে সমস্যা থাকলে ধরে নিতে হবে যে, শিশুটি অটিজমে আক্রান্ত। খেলার সময় সহপাঠীরা ডাকলে সে খেলতে আসে না। ক্লাসের মধ্যে সব সময় থাকে নীরব। কারো সাথে মেশে না। অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা কথা বলতে পারে, আবার না-ও বলতে পারে। পুরোপুরি গুছিয়ে বলতে পারে না। তাদের ঘুম কম হয়। ঘুম স্বাভাবিকভাবে না হওয়ার কারণে তাদের মনোযোগ ও কাজের ক্ষমতা কমে যায়। আচার-আচরণে সেটি বোঝা যায়। অনেক শিশুর সঠিক সময়ে কথা বলতে সমস্যা হয়। তাদের বুদ্ধিও কম। অটিজমে আক্রান্ত অনেক শিশু দেখা, শোনা, গন্ধ, স্বাদ ও স্পর্শের প্রতি অতি সংবেদনশীল অথবা প্রতিক্রিয়াহীন। সাধারণত তাদের প্রতি চারজনের মধ্যে একজনের খিঁচুনি সমস্যা থাকতে পারে। তাদের মানসিক অস্থিরতার ঝুঁঁকি থাকে বেশি। এ ছাড়া শিশুদের বিষণœতা, উদ্বেগ ও মনোযোগের ঘাটতি থাকে। তাদের হজমশক্তি কম থাকায় পেটব্যথা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, পেটে গ্যাস ও বমি ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে। অটিস্টিক শিশুরা সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করতে ব্যর্থ হয়। স্বাভাবিক একটি শিশু বেড়ে ওঠার প্রক্রিয়ায় মা-বাবা ও পরে অন্যদের সাথে যেভাবে সামাজিক সম্পর্ক তৈরি করে, ওরা তা করতে পারে না। তারা শিশুকালে মা-বাবার চোখে চোখ রাখা, কোলে ওঠার জন্য হাত বাড়ানো, চোখ ঘুরিয়ে দৃষ্টি দিয়ে মা-বাবাকে অনুকরণ করতে পারে না। সাড়া দেয় না তাদের নাম ধরে ডাকলে। অন্য শিশুদের মধ্যে রাখলে দূরে একা বসে থাকে। অন্যদের প্রতি আগ্রহ বোধ করে না। আপন জগতে থাকতে পছন্দ করে। খেলনা দিলে খেলে না। যায় না অন্য কারো কোলে।
তাদের ভাষা কিংবা কথা শেখানোর সময় সাথে সাথে কথা বলা বা আওয়াজ করে না। নিয়মমাফিক কাজ করা পছন্দ করে। পুনরাবৃত্তিমূলক আচরণ, অদক্ষতা, যোগাযোগে ব্যর্থতাÑ এগুলোর যেকোনোটি থাকা মানে অটিজম নয়। একসাথে এ তিনটির প্রত্যেকটিরই কমবেশি লক্ষণ দেখলে বুঝতে হবে, শিশুটি অটিস্টিক শিশু। তারা অটিজমে আক্রান্ত কি না তা অবশ্যই অভিজ্ঞ চিকিৎসকরা সিদ্ধান্ত দেবেন। বই বা পত্রিকা পড়ে কিংবা ইন্টারনেট ঘেঁটে লক্ষণ মিলিয়ে কারো শিশুকে অটিস্টিক মনে করা উচিত নয়। গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০০৮ সাল থেকে প্রতি বছর ২ এপ্রিল ‘বিশ্ব অটিজম সচেতনতা দিবস’ পালন করা হয়। হ মকবুল হামিদ


আরো সংবাদ



premium cement