২০৩৫ সালের মধ্যে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে : প্রধানমন্ত্রী
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০৩ জুলাই ২০২৪, ২১:৫২
হাইড্রোজেন ও অ্যামোনিয়া থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৩ জুলাই) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর টেবিলে উপস্থাপিত হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, পেট্রোবাংলার অধীন রূপান্তরিত প্রাকৃতিক গ্যাস কোম্পানি লিমিটেডে (আরপিজিসিএল) জ্বালানি হিসেবে হাইড্রোজেন উৎপাদনে টেকসই ও নির্ভরযোগ্য পদ্ধতির ওপর উন্নত বিশ্বের চলমান অধিকতর গবেষণাগুলোর ফলাফল এবং গৃহীত কার্যক্রমের তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহের লক্ষ্যে একটি সেল গঠন করা হয়েছে। ওই সেল গ্রহণযোগ্য তথ্যাদি প্রাপ্তির পর একটি প্রকল্প প্রস্তাব প্রণয়ন করবে। আশা করা যায় ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার সম্ভব হবে।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াটের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের প্রথম ইউনিটটি এই বছরের শেষ নাগাদ বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে যাবে।
তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি থেকে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফেনী-১ আসনের এমপি আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরীর অন্য এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ৮ লাখ ৬৭ হাজার ৯৭৭টি ভূমিহীন-গৃহহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এতে উপকারভোগী মোট মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৩ লাখ ৩৯ হাজারেরও বেশি। এ পর্যন্ত ৫৮টি জেলা এবং ৪৬৪টি উপজেলা সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হয়েছে। ঢাকা, ময়মনসিংহ, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহী এই ৫টি বিভাগ এখন সম্পূর্ণভাবে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত। অর্থাৎ, এসব জেলা, উপজেলা ও বিভাগে কোনো ভূমিহীন-গৃহহীন মানুষ নেই।’
তিনি বলেন, ব্যারাক হাউজের মাধ্যমে আমরা ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত ৯ লাখ ৫৯ হাজার ৮৪৮টি পরিবারকে পুনর্বাসন করেছি। ব্যারাক হাউজ ছাড়াও আমরা ১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৫৩টি পরিবারকে নিজ জমিতে বিনামূল্যে গৃহ নির্মাণ করে দিই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে ২ লাখ ৬৬ হাজার ৮৫টি পরিবারের কাছে স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ২ শতাংশ জমির মালিকানাসহ সেমিপাকা একক ঘর হস্তান্তর করেছি। মুজিববর্ষে উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩ লাখ ৩০ হাজার।
তিনি আরো বলেন, ভূমিহীন-গৃহহীন ও ছিন্নমূল মানুষকে জমির মালিকানাসহ ঘর করে দেয়ার লক্ষ্যে সারাদেশে ৬ হাজার ৯৪৫ একর খাস জমি উদ্ধার করা হয়েছে। যার বাজারমূল্য তিন হাজার ৭৭৩ কোটি টাকা।
সরকারি দলের সদস্য এস এম আতাউল হকের প্রশ্নের জবাবে সংসদ নেতা বলেন, ২০০৮-০৯ অর্থ বছরের ১৩ হাজার ৮৪৫ কোটি টাকা থেকে ৯.১২ গুণ বাড়িয়ে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে এক লাখ ২৬ হাজার ২৭২ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ১১৯টি সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় এ সহায়তা কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজমের প্রশ্নের জবাবে সরকারপ্রধান বলেন, ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবার জন্য সমতার ভিত্তিতে সুবিচার নিশ্চিত করা এবং বিচার ব্যবস্থায় দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধন করে সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সরকার বদ্ধপরিকর। বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবে সঠিক বিচারের নিশ্চয়তা প্রদান করে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি জানান, ২০০৯ সাল থেকে অধঃস্তন আদালতে ১ হাজার ৪২৯ জন বিচারক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
সূত্র : বাসস