১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

জিয়াউর রহমানের আমলে আ’লীগ দরখাস্ত করে দল গঠন করেছিল : মির্জা ফখরুল

- ছবি - নয়া দিগন্ত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমলে এই আওয়ামী লীগ দরখাস্ত করে, নতুন করে অনুমোদন নিয়ে দল গঠন করেছিল। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।

সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাব জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ৪৩তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কয়েকদিন যাবত আপনারা পত্রপত্র পত্রিকা খুললেই দেখতে পারবেন বেনজীরের নজিরবিহীন দুর্নীতি। একইসাথে সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ তাকেও স্যাংসান দেয়া হয়েছে। একজন এমপিকে পার্শ্ববর্তী দেশে টুকরো টুকরো করা হয়েছে। এই হলো সরকারের চেহারা।’

তিনি বলেন, ‘এখন সেনাবাহিনীর অবস্থা কী? বাহিনী হিসেবে তার সম্মান-ইজ্জত কোথায় থাকে, যখন তার সাবেক সেনাপ্রধানকে স্যাংসান দেয়া হয়। পুলিশ বাহিনীর মান-ইজ্জত কোথায় থাকে, যখন তার সাবেক আইজিপিকে পালিয়ে যেতে হয় দেশ থেকে। অর্থাৎ এই সরকার দেশটাকে ধ্বংস করে ফেলেছে।’

‘আমরা একটা কঠিন সময় পার করছি, এই অবস্থা তৈরি করেছে বর্তমান সরকার।’

সরকারের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বার বার বলি, সাহস থাকলে আসেন না একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করেন। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নির্বাচন হবে, কার কত জনপ্রিয়তা বোঝা যাবে। এই সরকারের শাসনকালে দলীয় সরকারের অধীনে তিনটা নির্বাচনেই প্রহসন হয়েছে। এরা নির্বাচন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। গত ১৫ বছরে একটা দানব সরকার সবকিছু ধ্বংস করেছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের নিজেদের সংগঠিত করার চেষ্টা করছি। জেল খাটছি। আমরা বার বার জেলে যাচ্ছি, কিন্তু আমরা এখনো চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করতে পারিনি। এই চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের জন্য আমাদের সংগঠনকে আরো দৃঢ় করতে হবে, নিজেদের মধ্যে ছোটখাটো ভুল বোঝাবুঝি থাকলে দূর করে ফেলতে হবে। সবাই মিলে একসাথে এক জোটে নামতে হবে। কারণ এটা বিএনপির সমস্যা না, এটা বাংলাদেশের সমস্যা। এটা জাতির সমস্যা, এই জাতি ভবিষ্যতে টিকবে কি টিকবে না আপনার ছেলেরা ভবিষ্যতে চাকরি পাবে কি পাবে না, তারা স্বাধীনভাবে চলতে পারবে কি পারবে না, তার পুরোটাই নির্ভর করছে এই সরকারকে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পরাজিত করতে না পারা পর্যন্ত।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের স্মৃতিচারণ করে তিনি আরো বলেন, ‘জিয়া ক্ষণজন্মা পুরুষ ছিলেন। জিয়ার আহ্বানেই দ্বিধা বিভক্ত জাতি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এটা সরকার মুছে ফেলতে চায়। আমরা শেখ মুজিবের অবদানকে কখনো অস্বীকার করি না। ৪৩ বছর পরেও জিয়াকে এদেশের মানুষ ভুলে নাই। যারা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদানকে অস্বীকার করে তারা তো দেশের স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করে কারণ তিনি তো স্বাধীনতার ঘোষক।

‘৭৫ সালে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর রাষ্ট্রপতি কে হয়েছিলেন- খন্দকার মোস্তাক। মন্ত্রী ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। মন্ত্রীত্বের কোনো পরিবর্তন হয়নি। সে মন্ত্রীরা মোস্তাককে স্যালুট করেছিলেন। আওয়ামী লীগ সব করার জন্য বিএনপির ওপর দোষ চাপায়। কিন্তু তখন তো বিএনপির জন্মই হয়নি। জিয়াউর রহমান সাহেব তো তখন সেনাবাহিনীর ডেপুটি চিফ ছিলেন। মানুষকে বোকা বানিয়ে, তরুণ প্রজন্মকে বোকা বানিয়ে, তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে চায়।

মির্জা ফখরুল বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এক দলীয় শাসনব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ব্যবস্থা এনেছিলেন। একটা দল নয়, সব দল রাজনীতি করবে। তার আমলে এই আওয়ামী লীগ দরখাস্ত করে, নতুন করে অনুমোদন নিয়ে দল গঠন করেছিল। এই হচ্ছে আওয়ামী লীগ।

জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক সাহিদা রফিক, মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খান প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement