পাট পণ্যের উন্নয়ন ও বিপণনে একটি সমন্বিত পথনকশা প্রণয়ন করা হবে : মন্ত্রী
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৯:১৫
বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, পাট পণ্য রফতানিকারক এবং সংশ্লিষ্টরা পাটের উৎপাদন থেকে শুরু করে পাট পণ্য নিয়ে গবেষণা, নকশার উন্নয়ন, বিপণনসহ বিভিন্ন বিষয়ে একটি সমন্বিত পথনকশা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। আমরা শিগগিরই এ সংক্রান্ত পথনকশা প্রণয়ন ও তা যথাযথ বাস্তবায়নে কার্যক্রম গ্রহণ করব।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) ঢাকার মোহাম্মদপুরে সূচনা কমিউনিটি সেন্টারে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) আয়োজিত ‘বহুমুখী পাট পণ্যের একক মেলা’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
বস্ত্র ও পাট সচিব মো: আব্দুর রউফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন পাট অধিদফতরের মহাপরিচালক জিনাত আরা, বস্ত্র অধিদফতরের মহাপরিচালক মো: নুরুজ্জামান, জেডিপিসি-র পরিচালক (যুগ্মসচিব) গোপাল চন্দ্র দাশ প্রমুখ। তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এ মেলা ২৩ এপ্রিল শুরু হয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) তথ্য অনুযায়ী বিশ্বে পাট উৎপাদনে বাংলাদেশ দ্বিতীয়। পাট পণ্যের উৎপাদন খরচ যেসকল দেশে সবচেয়ে কম তারমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। পাটের তৈরি গৃহসজ্জার পণ্যের চাহিদার পাশাপাশি পাটের তৈরি শপিং ব্যাগ, জিওটেক্সটাইল ও ফ্লোর কভারের চাহিদাও বাড়ছে। এ ছাড়া পাটকাঠির তৈরি চারকোলের চাহিদাও রয়েছে চীনসহ বিভিন্ন দেশে। এ ছাড়া পাটভিত্তিক জিওটেক্সটাইলের বৈশ্বিক বাজারের আকার ক্রমে বেড়েই চলেছে। এ সকল সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা পাটের উৎপাদনের দিকে যেমন গুরুত্ব দিচ্ছি, তেমনি মূল্য সংযোজিত পাটপণ্য উৎপাদনে আরও জোর দিচ্ছি। এজন্য জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) বহুমুখী পাটজাত পণ্যের উদ্ভাবন, ব্যবহার ও বাজার সম্প্রসারণে কাজ করে যাচ্ছে।
মন্ত্রী নানক বলেন, পরিবেশবান্ধব সোনালী আঁশ পাট বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাটশিল্পের উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় কর্তৃক পাটখাতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন হচ্ছে। পাট ও পাটজাত পণ্য নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখছে সরকার। বর্তমান মন্ত্রিসভার প্রথম সভায় পাটজাত পণ্যসহ তিনটি খাতকে তৈরি পোশাকশিল্পের বিকাশে যেভাবে সহায়তা দেওয়া হয়েছিল, প্রয়োজনে তেমন সহায়তা দিতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।
মন্ত্রী পর্যায়ক্রমে ঢাকা শহরের বিভিন্ন স্থান এবং সারা দেশের বিভিন্ন জায়গায় এরকম মেলার আয়োজন করে পাট পণ্যের প্রচার ও প্রসারের জন্য জেডিপিসিকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে জেডিপিসি পাটপণ্য উৎপাদনকারী, বিপণনকারী, ব্যবহারকারী এবং বিদেশি ক্রেতাদের মধ্যে অধিক যোগাযোগ স্থাপনে সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে। ইতোমধ্যে, এখাতের উদ্যোক্তাগণ বিভিন্ন প্রকার দৃষ্টিনন্দন, আধুনিক ও স্মার্ট পাটপণ্য উৎপাদন করছেন যার অধিকাংশই বিদেশে রফতানি করা হচ্ছে। এসকল পণ্যকে জনপ্রিয় করতে প্রচার প্রচারণাসহ বিদেশে বিভিন্ন মেলার আয়োজন করার কাজ চলমান রয়েছে। জেডিসিপি’র উদ্যোক্তরা ২৮২ রকমের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করেছে; যা পাটপণ্য হিসেবে গেজেটভুক্ত হয়েছে।