গুলশানে নামাজরত মুসল্লিদের আটকে জামায়াতের নিন্দা
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৯ মার্চ ২০২৩, ১৭:০০

রাজধানীর গুলশানের কুরআন শিক্ষাকেন্দ্র থেকে ১৭ জনকে আটক ও আদালতের রিমান্ড মঞ্জুরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মো: রেজাউল করিম।
বুধবার নেতৃবৃন্দ এক যৌথ বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, সোমবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে গুলশানের শাহজাদপুর এলাকার একটি কুরআন শিক্ষাকেন্দ্র থেকে তারাবিহ নামাজরত ইমাম, দুই নারী ও শিশুসহ ১৭ মুসল্লিকে গুলশান থানা পুলিশ তুলে নিয়ে যায়। আটকদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র দিতে থানায় স্বজনরা গেলে তাদের মধ্য থেকে আরো ৮ জনকে আটক করে পুলিশ। এটি দেশের নাগরিকদের আইনের শাসনের অধিকার ক্ষুন্ন করার শামিল।
ইসলামিক সেন্টার থেকে আটকদের বিশেষ ক্ষমতা এবং বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে গুলশান থানার মামলায় তাদের গ্রেফতার দেখানো হয়। যা ইতিহাসের চরম হয়রানি ও নিপীড়নের উদাহরণ। পুলিশ পূর্বের মতোই বলে দিয়েছে তারা নাকি নাশকতার জন্য একত্রিত হয়েছিলেন।
নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন যে পুলিশ দাবি করেছে জামায়াতের বইপুস্তকের সাথে সেখানে ককটেল পেয়েছে! এমন নির্লজ্জ মিথ্যাচারে গোটা জাতি হতবাক। বিভিন্ন গণমাধ্যম ইতোমধ্যে ঘটনার বিষয়ে সবিস্তারে খবর ছেপেছে। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এক নম্বর সাক্ষী রাসেল মিজি একটি জাতীয় পত্রিকাকে বলেছেন, ‘পুলিশ তাকে সোমবার রাত ১১টার দিকে ডেকে নিয়ে সাক্ষী করে। তিনি কিছু মানুষের জটলা দেখেছেন। কিন্তু কী ঘটেছে তা জানেন না। তবে পুলিশের কাছে শুনেছেন তারা জামায়াতের নেতাকর্মী। তবে সেখানে তিনি কোনো ককটেল দেখেননি।’ এতেই প্রমাণিত হয় যে ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো ও পরিকল্পিত।
নেতৃবৃন্দ বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, পুলিশের দাবি করছে তারা জামায়াত শিবিরের কর্মী। প্রশ্ন হলো জামায়াত শিবির কি তারাবির নামাজ পড়তে পারবে না? আইন অমান্য করে কোনো অপরাধে জড়িত থাকলে গ্রেফতার মেনে নেয়া যায়। কিন্তু শুধুমাত্র জামায়াত শিবিরের সাথে জড়িত থাকার দায়ে নামাজরত অবস্থাতেও গ্রেফতার করা চরম বাড়াবাড়ি নয় কী?
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কোনো ঘটনা ঘটলেই জামায়াত শিবিরের সাথে জড়িত করে নীরিহ ও সাধারণ মানুষকেও গ্রেফতার করা হয়। অযথা কয়েক মাস জেলে থাকার মতো জুলুমের শিকার হন তারা। তাদের পরিবারে নেমে আসে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ও মানসিক কষ্ট। সরকার ও প্রশাসনকে এহেন কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাই।
নেতৃবৃন্দ উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, আটক মুসল্লিদের মধ্যে ওমরা-হজ পালন করার জন্য প্রস্তুতি নেয়া ৬ জন মুসল্লি রয়েছে, যাদের হজ্জ পালন করা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আমরা অবিলম্বে আটক সকলের মুক্তিদান এবং হজ পালন করার সুযোগ করে দেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ ঢাকা মহানগরীসহ সারাদেশে আটক আলেম-ওলামা ও মুসল্লিদের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন। মানুষের মৌলিক অধিকার ভোগের সুযোগ করে দেয়ার আহ্বান জানান।