২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘ইসলামি শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রিয়ভাবে কায়েম হলেই শ্রমিকসহ সকল মানুষের ন্যায অধিকার ফিরে পাবে’

বক্তব্য রাখছেন সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ। - ছবি : সংগৃহীত

ইসলামী শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রিয়ভাবে কায়েম হলেই শ্রমিকসহ সকল মানুষের ন্যায অধিকার ফিরে পাবে বলে মনে করেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় অন্যতম উপদেষ্টা, কক্সবাজার কুতুবদিয়া-মহেশখালী আসনের সাবেক এমপি এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ।

তিনি বলেন, ইসলামে যে মানুষের মুক্তি, মর্যাদা, সে মর্যাদা থেকে মানুষ বঞ্চিত, শ্রমিক সমাজ বঞ্চিত।
আল্লাহ মানুষ সৃষ্টি সম্পর্কে বলেছেন, আমি মানবজাতিকে সর্বোত্তম মর্যাদা দিয়ে সৃষ্টি করেছি। আর পৃথিবীতে যত সৃষ্টি আছে, সব মানুষের কল্যাণের জন্য সৃষ্টি করেছি, তাহলে কতগুলো মর্যাদার অধিকারী মানুষ।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সকালে কক্সবাজারের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আয়োজিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন, মানুষের মধ্যে শ্রেণিসংগ্রাম তৈরি, মানব রচিত মতাদর্শ, পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্রের কারণে
আল্লাহ প্রদত্ত মর্যাদার থেকে শ্রমিক সমাজ আজ বঞ্চিত। এই বঞ্চিত সমাজ সব সময় মুখাপেক্ষী, পরনির্ভরশীল, শোষিত বঞ্চিত হিসেবে চিহ্নিত। আল্লাহর সৃষ্টির সেরা জীব একমাত্র আল্লাহকে ছাড়া আর কারো কাছে নতশিকার করতে পারে? করলে তার মর্যাদা থাকে? এজন্য একজন মানুষ একমাত্র আল্লাহর গোলাম হবে, কোনো মানুষের গোলামী নয়। মানুষের কাছে মাথা নত হবে না, মুখাপেক্ষী হবে না। যে স্বনির্ভর হবে, সে মাথা উঁচু করে স্বাধীনভাবে আল্লাহর আনুগত্য করবে, মানুষের দাসত্ব প্রত্যাখ্যান করবে, এটাই হলো আল্লাহ মানুষের মর্যাদা দিয়েছে তার প্রতিফলন।

শ্রমিকরাও মানুষ, তারও মানবিক মর্যাদা এবং অধিকার রয়েছে কিন্তু পৃথিবীর কোনো শাসন ব্যবস্থা এবং মতাদর্শ দিতে পারে নাই, একমাত্র ইসলামই দিয়েছে। তারা শ্রমিক ঠকিয়েছে, ঠকিয়ে বড়লোক হয়েছে। পৃথিবীর সভ্যতা বিনির্মাণে শ্রমিকের ঘাম ঝরছে, রক্ত ঝরেছে। এই যে সুন্দর সুন্দর জামা আমরা পরিধান করছি, এই জামা তৈরি ক্ষেত্রে ঘাম ঝরিয়েছেন কি যারা বড়লোক না শ্রমিক শ্রেনী। বিলাসিতা করে জামা পোশাক দিয়ে এই বিলাসি সনাজ না ঘাম এবং রক্ত ঝরিয়েছেন, নাকি ঐশ্রমিক যার পরনে একটি ভালো জামা নেই। তারা উৎপাদনের ক্ষেত্রে যেমন ভূমিকা, সভ্যতার উন্নয়নেও সেম। তারপরও শ্রমিকরা এ দেশে তেমন মর্যাদার এবং অধিকার পায় না।

শহর সভাপতি সাবেক ছাত্রনেতা সারওয়ার কামাল সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কার্যকরি কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার জেলা সভাপতি শামসুল আলম বাহাদুর, সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম হাসান, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মহসিন, সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ শাহজাহান, মুহাম্মাদ শাহজাহান (২), সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইউ বাহাদুর ও কক্সবাজার সদর উপজেলার উপদেষ্টা মাওলানা আজিজুর রহমান।

আরো উপস্থিত ছিলেন বেলাল উদ্দিন, আমীর আহমেদ, আবদুল মনছুর, আবদুর রহিম, নবী হোসেন, নুরুল হোছাইন প্রমুখ।

সাবেক এমপি হামিদ আজাদ আরো বলেন, এই মানুষ ক্রীতদাস ছিল। মানুষ বাজারে বেচাকেনা হতো, শ্রমিক কনসেপ্ট কিন্তু ওখান থেকেই ছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু মক্কা নগরীতে এসেই তার মুক্তির আন্দোলন।
মানুষ আল্লাহর গোলাম, মানুষের ক্রীতদাস হতে পারে না।

আন্দোলন শুরু করেছেন নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। তিনি এই আদর্শ স্থাপন করেছে যে শ্রমিকরা তার ন্যায্য পাওনা এবং অধিকার যেন পায়। ইসলামের যে নীতি, শ্রম নীতি তিনি চালু করেছেন, ইসলামী শ্রমনীতির মূল নীতি হচ্ছে, ‘শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগে তার মজুরি দিয়ে দেয়া‘। কিন্তু এখন বকেয়া বেতন-ভাতার জন্য রাস্তা ব্লগ করে বস্ত্রশিল্পে যারা শ্রমিক আছে তাদের সংগ্রাম করতে হয়। কিন্তু ইসলামী শ্রমনীতি যদি বাস্তবায়ন হতো এদেশে তাহলে বকেয়া বেতনের জন্য আন্দোলন করা লাগতো না। মালিক-শ্রমিক ভাই-ভাই এই ধারণা দিয়েছে ইসলাম। ইসলাম প্রদত্ত কনসেপ্ট হচ্ছে প্রত্যেক মানুষ এবং পরস্পরকে ভাই মনে করবে।

রাসুলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘শ্রমিকরা তোমাদের ভাই, তোমরা যা খাও তাদেরকেও তা খেতে দিবে, তোমরা যা পরিধান কর, তোমাদের অধীনস্থ তাদেরকেও তা পরিধান করতে দিবে। এবং মালিকের সম্পদের মধ্যে শ্রমিকের হক ও অংশীদার, লাভের একটি অংশ শ্রমিককে দিতে হবে ‘ এই ধরনের অনেকগুলো নীতিমালা ইসলামী শ্রমনীতিতে আছে। এই নীতিমালা যদি বাস্তবায়ন হতো শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের দরকার হতো না।
কোনো শ্রমিক আন্দোলন দরকার হতো না।

আজকে আমাদের আন্দোলন কেনো করতে হচ্ছে স্বাধীন দেশে! কারণ সমাজ ব্যবস্থা মধ্যে ন্যায় বিচার নেই। সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে মানুষের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার নিশ্চয়তা নেই। এমনকি বঞ্চিত সমাজ যে কথা বলবে, সে কথা বলার অধিকার নেই, কণ্ঠ রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে। এই যে আজকে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থা, এর মূল কারণ শুধু শ্রমনীতি নয়, দেশের শাসন ব্যবস্থার মধ্যে ইসলামি নীতির বাস্তবায়ন না থাকা। প্রিয় ভাইয়ের আমরা শুধু ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়ন করলে কি সমাধান হবে? ইসলামি শ্রমনীতি বাস্তবায়ন কখনো সম্ভব নয়, যতক্ষণ না পর্যন্ত ইসলামি শাসন ব্যবস্থা রাষ্ট্রিয়ভাবে কায়েম হবে।

তিনি আরো বলেন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে ইকামতে দ্বীন, আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জিহাদ ফিসাবিলিল্লাহ, আমরা মুসলমান, আমরা ঈমানদার, ঈমানের দাবি হচ্ছে দ্বীন প্রতিষ্ঠা করা। আর এ কাজ, একা একা সম্ভব নয়, তাই সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আল্লাহর জমিনকে ইসলামী আন্দোলনের দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই আসবে প্রকৃত মুক্তি। আসুন দল-মত-নির্বিশেষে এই আন্দোলনকে আরো বেগবান করতে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের পতাকাতলে সমবেত হয়।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি।


আরো সংবাদ



premium cement
আজও স্বর্ণের দাম ভরিতে ৬৩০ টাকা কমেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৮ এপ্রিল খুলে দেয়ার প্রস্তুতি, ক্লাস চলবে শনিবারও মিরসরাইয়ে জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে লুট, মূল হোতা গ্রেফতার বৃষ্টি কামনায় ঈশ্বরগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর ইসতিসকার নামাজ আদায় কুবিতে আল্টিমেটামের পর ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলাল শিক্ষক সমিতি সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ শ্রমিক নিহতের খবরে ঈশ্বরগঞ্জে শোক দুর্যোগে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু কেন বাংলাদেশে? জবিতে ভর্তি পরীক্ষায় আসন বেড়েছে ৫০টি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা

সকল