২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মামুনুল হকের মুক্তি দাবিতে খেলাফত মজলিসের জাতীয় সমাবেশের ঘোষণা

মামুনুল হকের মুক্তি দাবিতে খেলাফত মজলিসের জাতীয় সমাবেশের ঘোষণা - ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ কারাবন্দী আলেমদের মুক্তির দাবিতে জাতীয় সমাবেশের ঘোষণা দেয়া হয়েছে। দলটির আমির মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরী বলেছেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের উদ্যোগে সংগঠনের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ কারাবন্দী আলেমদের মুক্তি, জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইসলামী শিক্ষা সংকোচনের প্রতিবাদ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ, শিক্ষার সকল স্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করণের দাবিতে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কিন্তু বইমেলা হওয়ার কারণে ডিএমপি কমিশনারের পরামর্শে আমরা গুলিস্তান পার্কে সমাবেশটির করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মঙ্গলবার খেলাফত মজলিসের নিজস্ব কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মলনে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এ সময় ইসমাঈল নূরপুরী আরো বলেন, মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হককে ২০২১ সালের ১৮ এপ্রিল অন্যায়ভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গ্রেফতার করে। তার আগে পরে অনেক আলেম-উলামা ও মাদরাসার ছাত্রদেরকে গ্রেফতার করা হয়। যাদের মধ্যে অনেকেই মুক্তি পেলেও মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকসহ কয়েকজন নেতা দীর্ঘ ২১ মাস যাবত কারাগারে বন্দী রয়েছেন। মাওলানা মামুনুল হক শুধু একজন রাজনীতিবিদই নন তিনি হাদিসের শিক্ষকতাসহ দ্বীনের বিভিন্ন কাজে নিয়েজিত ছিলেন। তার গ্রেফতারে অসংখ্য ছাত্র হাদিসের দরস থেকে বঞ্চিত হয়েছে। পরিবারও তার অনুপুস্থিতির কারণে বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। গ্রেফতারের পর তার নামে অন্যায়ভাবে ২৮টি নতুন মামলা দেয়া হয়েছে। আগের মামলাসহ মোট ৪১টি মামলা তাকে মোকাবেলা করতে হচ্ছে। যার প্রত্যেকটিই ভিত্তিহীন ও সাজানো। তার মামলা সম্পূর্ণ জামিনযোগ্য হওয়া সত্ত্বেও জামিন পাওয়া যাচ্ছে না। একজন দাগী আসামির মতো হাতে হ্যান্ডকাপ, মাথায় হেলমেট ও গায়ে বুলেটপ্রুপ জ্যাকেট পরিয়ে আদালতে আনা-নেয়া করা হয়। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। এতে তিনি শারীরিকভাবে ও মানসিকভাবে কষ্ট পাচ্ছেন। এটা সম্পূর্ণ জুলুম ও অন্যায়। এটা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। সরকারের এহেন আচরণে আমরা ক্ষুদ্ধ ও লজ্জিত।

তিনি আরো বলেন, গত ১৭ ডিসেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেশের শীর্ষ উলামায়ে কেরামের একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাৎ করে কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের মুক্তির দাবি জানান। প্রধানমন্ত্রীও তাদেরকে দ্রুত মুক্তি দেয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় এই যে, এখনো মাওলানা মামুনুল হকসহ শীর্ষ আলেমদের মুক্তির বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হচ্ছে না। মাওলানা মামুনুল হকসহ কারাবন্দী উলামায়ে কেরামের মুক্তির দাবিতে মাত্র ১৫ দিনে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়েছে, যাতে লক্ষাধিক মানুষ স্বতস্ফূর্ত স্বাক্ষর করেছেন। এটি সাধারণ মানুষের কাছে তার জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতার প্রমাণ। তাই আমরা মনে করি তাকে আটকে রাখার মধ্য দিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে।

মাওলানা ইসমাঈল নূরপুরী বলেন, আগামী প্রজন্মকে ধর্মহীন এবং নাস্তিক বানানোর চক্রান্তের অংশ হিসেবে জাতীয় পাঠ্যক্রমে ইসলামী শিক্ষা সংকোচন করে পৌত্তলিকতার শিক্ষা ও সংস্কৃতি অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে। যা অত্যন্ত আপত্তিকর ও দুঃখজনক।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা চরম সংকটাপন্ন। মানুষ চাল, ডাল, তেল, মাছ-গোশত, সবজিসহ নিত্য পণ্য অতিমূল্যের কারণে ক্রয় করতে প্রতিনিয়ত হিমশিম খাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। যা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও নিন্দনীয়।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষার্থীদের চরিত্রবান ও সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে তাদেরকে ইসলামী শিক্ষা তথা ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা উচিৎ। শিক্ষা ব্যবস্থায় ইসলামী শিক্ষা না থাকার কারণে সামাজিক নিরাপত্তা ও পারিবারিক বন্ধন প্রতিনিয়ত হৃাস পাচ্ছে। তাই সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা প্রয়োজন।

মাওলানা নূরপুরী বলেন, অনতিলম্বে আমাদের দাবিগুলোর ব্যাপারে সরকার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিশেষভাবে আমাদের মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হকের মুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। অন্যথায় ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সমাবেশ থেকে আন্দোলনের কর্মসূচি দিতে আমরা বাধ্য হবো।

তিনি আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি সর্বস্তরের দেশপ্রেমিক ও তৌহিদী জনতাকে সদলবলে জাতীয় সমাবেশে অংশগ্রহণের উদাত্ত আহ্বান জানান।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমীন, মুফতি শরাফত হোসাইন, কেন্দ্রীয় অফিস ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা মুহাম্মদ ফয়সাল, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ ভূঁইয়া, সহ-বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, সহ-সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাওলানা শরীফ হোসাইন, সহ-প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা রুহুল আমীন, ঢাকা মহানগীরর সহ-সভাপতি মাওলানা ছানা উল্লাহ আমিনী, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল মুমিন, ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় অফিস ও বায়তুলমাল সম্পাদক মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন প্রমুখ।

 


আরো সংবাদ



premium cement
জামালপুরে হিট স্ট্রোকে মরিচ ব্যবসায়ীর মৃত্যু প্রধানমন্ত্রী ৬ দিনের সফরে বুধবার থাইল্যান্ড যাচ্ছেন রায়গঞ্জে পাটভর্তি ট্রাকে আগুন জামালপুরে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টা ৪৬তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষার আসন বিন্যাস প্রকাশ ছোট দেশ কাতার অর্থনীতি ও কূটনীতিতে যেভাবে এত এগোল আশুলিয়ায় ছিনতাইকারীর হামলায় আহত নারীর মৃত্যু ‘মুসলিমদের সম্পদ পুনর্বণ্টন’ অভিযোগ মোদির, এফআইআর সিপিএমের প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিখ্যাত চালকবিহীনবিমানের আবিষ্কারক কটিয়াদীতে আসছেন গাজার গণকবরের ‘বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন’ তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের

সকল