২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ফ্যাসিস্ট সরকার শেষ সময়ে এসে মারাত্মক মিথ্যাচার ও গণহারে গ্রেফতারের লিপ্ত হয়েছে : রিজভী

বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবি রিজভী। - ছবি : নয়া দিগন্ত

ফ্যাসিস্ট সরকার শেষ সময়ে এসে মারাত্মক মিথ্যাচার এবং গায়েবি মিথ্যা মামলা দিয়ে গণহারে গ্রেফতারের লিপ্ত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবি রিজভী।

তিনি বলেন, একদিকে চলছে গায়েবি এবং মিথ্যা মামলা ও গ্রেফতারের হিড়িক, অন্যদিকে অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাদের গোয়েবলসীয় মিথ্যাচারকেও হার মানিয়েছে।

সোমবার (৫ ডিসেম্বর) বিকেল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, গত ৩০ নভেম্বর রাত থেকে ৫ ডিসেম্বর দুপুর পর্যন্ত (পাঁচ দিনে) এক হাজার এক শ` পাঁচজন বিএনপি নেতাকর্মীসহ আরো কয়েক শ` ব্যক্তিকে গ্রেফতারের হয়েছে।

চট্টগ্রামে আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ হাসিনার বক্তব্যে তিনি লজ্জা না পেলেও গোটা জাতি লজ্জা পেয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন, `বিএনপি ভোট চুরি করে ক্ষমতায় আসতে চায়, বিএনপির আমলের দুর্নীতি ও খুনের রাজনীতে দেশ ফিরে যাবে না।` তিনি আরো বলেছেন, গণতন্ত্র আছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।` প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলতে চাই ২০১৪ সালে বিনা ভোটের সরকার এবং ২০১৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের রাতে নিশিরাতের ভোট ইতিহাস সারাবিশ্বে নজীরবিহীন এক ঘটনা। শেখ হাসিনার এহেন ভোট চুরির ঘটনায় সারাবিশ্বের মানুষ বিস্ময়ে হতবাক। এখন গণতন্ত্রের ছিটেফোটাও বাংলাদেশে নেই। মানুষের ভোটের অধিকার নেই, নেই কথা বলার অধিকার। বিচার বিভাগ এবং প্রশাসন চলছে এক ব্যক্তির ইচ্ছা-অনিচ্ছার ওপর। দেশে দুর্নীতি ও লুটপাটের প্রতিযোগিতা এখন সীমাহীন। আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কুইক রেন্টাল, পর্দা ও বালিশের নামে দুর্নীতির নতুন নতুন মহাকাব্যের কথা না হয় বাদই রাখলাম। ফরিদপুরের জেলা পর্যায়ের ছাত্রলীগের এক নেতার দুই শ` কোটি টাকা পাচারের কথা কি শেখ হাসিনা জানতেন না? এটা তো ছোট্ট একটি ঘটনা। এর চেয়েও অনেক বড় দুর্নীতির মহাযজ্ঞ চলছে শেখ হাসিনার আমলে। প্রধানমন্ত্রী গতকাল বিএনপিকে নিয়ে খুনের কথা বলছেন, উনি তো চট্টগ্রামে একটা মারলে দশটা মারার নির্দেশ দিয়েছিলেন ছাত্রলীগ-যুবলীগকে। এটা তো প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি।

আজ ওবায়দুল কাদের সাহেব বলেছেন, বিএনপির সমাবেশ নিয়ে মানুষ আতঙ্কে আছে। আমি কাদের সাহেবকে পরিস্কার বলতে চাই, আপনারা গণবিচ্ছিন্ন, তাই মানুষের উপস্থিতি দেখলেই ভয় পান। সেজন্য মিথ্যার বুলি আউরিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার শেষ চেষ্টা করছেন। আওয়ামী নেতাদের মিথ্যা কথা চেঁচানোর রেওয়াজ দীর্ঘ দিনের। গণতন্ত্রের ধ্বংসস্তুপের ওপর বসে অপপ্রচার করা ছাড়া আপনাদের গত্যন্তর নেই। বিএনপির সবগুলো সমাবেশে নেতাকর্মীদের পাশাপাশি লাখ লাখ সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ দেখে আপনাদের অবৈধ মসনদ কেঁপে উঠেছে। এ মূহুর্তে দেশের মানুষের দাবি একটাই এ সরকারের পদত্যাগ।

জনসভা আয়োজনের নামে ভোট চাওয়া আওয়ামী লীগের যে কৌশল তা স্রেফ নাটক। ২০১৪ ও ২০১৮ সালে জনগণের ভোটে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হয়নি। জনগণ যাতে ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে না পারে সেজন্যই তারা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে নানাবিধ সুবিধা দিয়েছিল এবং বিরোধী নেতাকর্মীদেরকে কারাগারে পাঠিয়ে মাঠশুন্য করা হয়েছিল। সুতরাং অবৈধ দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এবং শেখ হাসিনার মিথ্যার বাড়াবাড়ির বিরুদ্ধে কেউ যাতে প্রতিবাদ না করতে পারে সেজন্য গণতন্ত্রের মা, আপসহীন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা ও সাজানো মামলায় বন্দী করে রাখা হয়েছে।

হামলা-মামলা গ্রেফতার করে জনগণের আন্দোলনকে দমানো যাবে না। দেশের মানুষের অধিকার ও গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপিসহ গোটা জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। যেকোন ত্যাগের বিনিময়ে হারানো গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করার শপথ নিয়েছে তৃণমূল। কোনো বাধাই বিএনপির কর্মসূচি ঠেকাতে পারবে না।

দেশব্যাপী গ্রেফতার ও মিথ্যা মামলার বিষয়ে আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার ও গ্রেফতারকৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান রিজভী।

গতকাল ৪ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আজ ৫ ডিসেম্বর বিকেল পর্যন্ত বিএনপি নেতাকর্মীদেরকে গ্রেফতারের সংক্ষিপ্ত চিত্র :

সুত্রাপুর থানা ৪২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ইস্রাফিল হোসেন বাবু, বংশাল থানা ৩১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবেদুল ইসলাম জনি, ৩২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ইউছুফ মিয়া, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা পারভেজ, মাসুদ চাঁন, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা আবদুল ওহাব, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো: স্বপন, শ্যামপুর থানা ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো: রাসেল, শাহজাহানপুর থানা ১২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সাধারণ সম্পাদক মো: নুরুল আমিন, চকবাজার থানা ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো: ইলিয়াস রশিদ, ওয়ার্ড বিএনপি নেতা কোরবান খন্দকার , গেন্ডারিয়া থানা ৪৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো: মামুন, মো: পিন্টু, মো: সেন্টু ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মাসুদ মোড়ল, লালবাগ থানা ২৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো: সুমন, যাত্রাবাড়ি থানা ৬৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি নেতা মো: কুতুব উদ্দিন, হাজারীবাগ থানা মৎস্যজীবী দল সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক, ওয়ারী থানা শ্রমিক দল নেতা মনির হোসেন প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement
কক্সবাজারে ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যু, স্বজনদের হাসপাতাল ঘেরাও বঙ্গোপসাগরে ১২ নাবিকসহ কার্গো জাহাজডুবি ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশকে ‘নেট সিকিউরিটি প্রোভাইডার’ হিসেবে দেখতে চায় যুক্তরাষ্ট্র রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি রাজশাহীতে টানা তাপদাহ থেকে বাঁচতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা শরীয়তপুরে তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে পানি ও খাবার স্যালাইন বিতরণ জামায়াতের এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী নয় : শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী নজিরবিহীন দুর্নীতির মহারাজার আত্মকথা ফতুল্লায় ১০ লাখ টাকা চাঁদার দাবিতে নির্মাণকাজ বন্ধ, মারধরে আহত ২, মামলা পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনী: সাম্প্রতিক ভাবনা গফরগাঁওয়ে ব্রহ্মপুত্র নদে টিকটক করতে গিয়ে স্কুলছাত্রের মৃত্যু

সকল