২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বিএনপির আন্দোলন জনগণের মুক্তির আন্দোলন : মির্জা ফখরুল

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল - ছবি : নয়া দিগন্ত

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জনগণ তাদের গণতন্ত্র ফিরে চায়। তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়। বাঁচবার অধিকার ফিরে পেতে চায়। এ আন্দোলন সমগ্র জনগণের মুক্তির আন্দোলন।

বুধবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি আরো বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে, চাল, ডাল, পানি, গ্যাসসহ সকল জিনিসপত্র ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। জ্বালানির তেল, পেট্রোলের দাম হুঁ হুঁ করে বাড়ছে। এর প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে তখন গণতন্ত্রকামী মানুষেরা, ছাত্ররা, যুবকরা অকাতরে প্রাণ দিচ্ছে। আমরা বিভাগীয় সমাবেশ করছি। হঠাৎ করেই সরকার এতটা ভীতসন্ত্রস্ত হয়েছে। বিভাগীয় সমাবেশগুলোকে বন্ধ করার জন্য, আন্দোলনকে দমন করার জন্য, তারা মরিয়া হয়ে গেছে। আক্রমণ করছে, গায়েবি মামলা দিচ্ছে, মিথ্যা মামলা দিচ্ছে, ঘরে ঘরে গিয়ে আমাদের নেতা কর্মীদের গ্রেফতার ও হয়রানি করছে।

গত সাত দিনে ১৬৯ মামলা হয়েছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, এ মামলাগুলোতে আসামি করা হয়েছে ৬৬২৩ জনকে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে ১৫ হাজারের ওপরে। তিনি বলেন, কোর্টে হাজিরা দিতে গেলে গ্রেফতার করা হচ্ছে। এটা কোন নিয়ম? সংবিধানে এমন কোনো নিয়ম নেই। অথচ পুলিশ গ্রেফতার করছে। পুলিশ ও ডিবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে।

২০১৩-১৪ ও ১৫ সালের উদাহরণ টানিয়ে নিয়ে ফখরুল বলেন, সেই সময় তারা জনগণের আন্দোলন স্তব্ধ করতে চেয়েছিল। সেই ভঙ্গিমায় একইভাবে, একই কায়দায় সেই ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।

আজ মানুষ জেগে উঠেছে; প্রতিটি বিভাগে গণ সমাবেশ হচ্ছে জানিয়ে মহাসচিব বলেন, গাড়ি বন্ধ করে, গুলি করে হত্যা করেছে তবুও মানুষ গণসমাবেশে এসেছে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি পরিষ্কার করে বলে দিতে চাই- আমরা একমাস আগে পার্টির তরফ থেকে বলে দিয়েছি যে, আমরা নয়া পল্টনে বিভাগীয় সমাবেশ করতে চাই। এর আগেও আটটি সমাবেশ হয়েছে, মহাসমাবেশ হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া এখানে সমাবেশ করেছেন। কোনো দিন সমস্যা হয়নি। সুতরাং ডিক্লিয়ার দিয়েছি সমাবেশ করব। সেটা বাস্তবায়নের দায়িত্ব আপনাদের।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমি আবার পরিষ্কার করে বলতে চাই, আমরা জনগণকে নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করব। তাদের ভাত ও ভোটের অধিকার ফেরত দিতে আমরা আন্দোলন-সংগ্রাম করছি। যে আন্দোলনে আপনারা অযথা যেভাবে অন্যায়-অত্যাচার করছেন, সেই কাজগুলো গণতন্ত্রের জন্য ভালো না। আপনাদের জন্য ভালো না, রাষ্ট্রের জন্য ভালো না।

‘আপনারা (সরকার) পথ খোলা রাখবেন না। আবারো বলছি, টেকনিকেই ব্যবস্থা করুন। তা নাহলে এদেশের ইতিহাস আপনাদের জানার কথা। এ দেশে ৫২ সালে পারেনি, ৫৯ সালে পারেনি, ৬৯ সালে পারেনি, ৭১ সালে পাকিস্তানিরা পারেনি। এমনকি ৯০ সালে এরশাদ পারেনি। যতই ষড়যন্ত্র করেন না কেন- পারবেন না।’ বলেন মির্জা ফখরুল।

জনগণ জেগে উঠেছে জানিয়ে ফখরুল বলেন, এখন এই আন্দোলন শুধু বিএনপির আন্দোলন না। এই আন্দোলন শুধু খালেদা জিয়ার আন্দোলন না। তারেক জিয়ার আন্দোলন না। এটি সমগ্র জনগণের আন্দোলন জনগণের মুক্তির আন্দোলন। জনগণ তাদের গণতন্ত্র ফিরে চায়। তাদের ভোটের অধিকার ফিরে পেতে চায়, বাঁচবার অধিকার ফিরে পেতে চায়।

গত কয়েক মাসে শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গায় এক শ’র বেশি ডেডবডি পাওয়া গেছে জানিয়ে মহাসচিব বলেন, এরা (সরকার) বলে দেশ নাকি ভালো চলছে! কী করেছেন দেশের অবস্থা! ব্যাংক খালি করেছেন। সব লুটপাট করেছেন। দেশটাকে ফোঁকলা বানিয়েছেন। বিদেশের নিষেধাজ্ঞায় বিপদে পড়েছেন। যদি জনগণের নিষেধাজ্ঞা আসে তখন কিন্তু আরো বড় বিপদে পড়তে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহবায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে আরো উপস্থিত ছিলেন, স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া, সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব অ্যাডভোকেটে রুহুল কবির রিজভী প্রমুখ।


আরো সংবাদ



premium cement