২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অবৈধ প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তারে ইডেন ছাত্রলীগের এ সংঘর্ষ : সেলিম উদ্দিন

অবৈধ প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তারে ইডেন ছাত্রলীগের এ সংঘর্ষ : সেলিম উদ্দিন - ছবি : সংগৃহীত

নিজেদের অবৈধ প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তারকে কেন্দ্র করে সম্প্রতি ইডেন কলেজের ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের এই সংঘর্ষ হয়েছে, বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।

তিনি আরো মন্তব্য করেন, নেত্রীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভর্তি ও সিট বাণিজ্য, শিক্ষার্থীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করা, ছাত্রী নির্যাতন ও মারধরসহ নানাবিধ কুৎসিত ও মানবতাবিরোধী অপরাধ গোটা জাতিকেই স্তম্ভিত করেছে। এসব ছাত্রলীগের অতি পুরনো অভ্যাস। অতীতেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দীন মানিক ধর্ষণের সেঞ্চুরি উদযাপন করেছিল।

সোমবার সকালে রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ইডেন মহিলা কলেজসহ সারাদেশে ছাত্রলীগের অপতৎপরতার প্রতিবাদে ও অবিলম্বে এসব বেআইনী কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভ মিছিলের পরে সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

এ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম, মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, ইয়াছিন আরাফাত ও মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, মহানগরী শূরা সদস্য ডা. শফিউর রহমান, কুতুব উদ্দীন, মিজানুর রহমান খান, মাহমুদুর রহমান আজাদ, মেসবাহ উদ্দীন নাঈম, ডা. মাঈন উদ্দীন, মুহাম্মদ আতাউর রহমান সরকার ও অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিল, ছাত্রনেতা জাকির হোসেন, আব্দুল্লাহ আল মামুম, হুমায়ন কবির ও সালাউদ্দীন প্রমুখ।

বিক্ষোভ মিছিলটি মহাখালী ক্যান্সার হাসপাতাল থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নাবিস্কের সামনে এসে শেষ হয়। পরে সেখানেই সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সেলিম উদ্দিন বলেন, অপশক্তির অপতৎপরতা বন্ধে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

এ সময় তিনি অবিলম্বে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের তৎপরতা বন্ধের জোর দাবি জানান। অন্যথায় জনগণই এই অপশক্তির বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে বলেও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, কথিত ছাত্র রাজনীতির নামে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রলীগ যা করছে তা কোনো রাজনীতি নয় বরং রীতিমত দুর্বৃত্তায়ন। ইডেন কলেজে সিট বাণিজ্য ও অনৈতিক সুবিধা পাওয়ার জন্য যা করা হচ্ছে তা মোটেই ছাত্ররাজনীতি নয় বরং রীতিমত ফৌজদারী অপরাধ। অথচ ক্ষমতাসীনরা এমন অন্যায় কাজগুলোকে ছাত্ররাজনীতি নাম দিয়ে গোটা শিক্ষা ব্যবস্থাকেই ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে। মূলত, ক্ষমতাসীনরা তাদের অবৈধ ক্ষমতা টিকে রাখার জন্য এই অপশক্তিকে সকল প্রকার মদদ দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু এসব করে অতীতে কোনো গণবিরোধী, স্বৈরাচারি ও অগণতান্ত্রিক শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি, আর কখনো হবেও না।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারকে নেতিবাচক রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে ইতিবাচক রাজনীতিতে ফিরে আসতে হবে। অন্যথায় ইতিহাস তাদেরকে কখনোই ক্ষমা করবে না।

তিনি বলেন, দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই ছাত্রলীগ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। ইডেন কলেজের ছাত্রীদের দলীয় নেতাদের মনোরঞ্জনের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। ফলে ক্ষমতাসীনদের প্রতি জনগণের তীব্র ঘৃণার সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রলীগকে তারা চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, দুর্নীতিসহ অনৈতিক সব কর্মকাণ্ডকে অভ্যস্ত করেছে এবং ক্ষমতায় থাকার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করছে। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে তারা কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদেরকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গত কারণেই ইডেন কলেজসহ সারাদেশে ছাত্রলীগের বেআইনি তৎপরতার দায় ক্ষমতাসীনরা কোনোভাবেই এড়াতে পারে না।

এ সময় তিনি সরকার পতনের একদফা আন্দোলনে সকলকে রাজপথে নেমে আসারও আহ্বান জানান।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement