১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আদর্শ মানুষ গড়তে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করুন, কারাবন্দি আলেমদের মুক্তি দিন : ড. মাসুদ

রাজধানীতে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিক্ষোভ মিছিল - ছবি : নয়া দিগন্ত

সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা এবং কারাবন্দি আলেমদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই ২০২২) জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি জননেতা ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ মিছিলটি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক প্রতিবাদ সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য বিশিষ্ট শ্রমিক নেতা আব্দুস সালাম, হাফিজুর রহমান, নিজামুল হক, আব্দুর রহমান, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পূর্বের সভাপতি মু: আবুল খায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুল কাইউম মুরাদসহ ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের বিভিন্ন থানা আমির, সেক্রেটারি ও বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ বলেন, আমরা মহান আল্লাহ তা‘আলার কাছে শুকরিয়া জানাই, তিনি আমাদেরকে ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে জন্ম ও ইসলামের মতো নেয়ামাত দান করেছেন। অথচ ৯০ ভাগ মুসলমানের এদেশে দীর্ঘদিন ধরে ইসলামবিরোধী অপশক্তিগুলো নানামুখী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তারা দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে ইসলামকে মুছে ফেলার চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। বর্তমানে তারা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে ইসলামী আদর্শের শিক্ষাসমূহ পাঠ্যপুস্তক থেকে সরিয়ে দিয়ে নাস্তিক্যবাদ শেখানোর ষড়যন্ত্র করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, একইসাথে দেশে আলেম-ওলামাদেরকে জেলখানায় আটকে রেখে তাদের কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। আপনারা বিশ্ববরেণ্য মুফাসসিরে কোরআন মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীকে বন্দি করে রেখেছেন, মুফতি কাজী ইবরাহীম, আল্লামা মামুনুল হক, মুফতি আমির হামজাসহ অসংখ্য আলেমকে বন্দি করে রেখেছেন। এদিকে আমরা লক্ষ্য করছি, জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক গোলাম পরওয়ার আদালত থেকে পাঁচবার জামিন পাওয়ার পরেও আপনারা জেলগেটে আবারো আটকিয়ে দিচ্ছেন।

মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান একজন বিশিষ্ট আলেমে দ্বীন, তাকে জামিন দিচ্ছেন না। আমরা অবিলম্বে ঈদুল আজহার আগেই আলেম-ওলামাসহ এসব সম্মানিত মানুষদেরকে মুক্তির দাবি জানাচ্ছি। মনে করবেন না আলেমদের বন্দি করে, তাদের কণ্ঠরোধ করে ইসলামী শিক্ষা ও তমুদ্দুনবিরোধী চক্রান্ত বাস্তবায়ন করতে পারবেন। দিনের পর দিন বরেণ্য আলেমদের কারাগারে বন্দি রেখে এদেশের মুসলমানেরা নীরবে নিভৃতে ঘুমিয়ে থাকতে পারে না। দেশে ইসলামী শিক্ষা ও মূল্যবোধ ধ্বংসের চক্রান্ত প্রতিহত করা হবে। প্রয়োজনে দেশের ২০ কোটি মুসলমানকে সাথে নিয়ে আমরা রাজপথে গণআন্দোলন গড়ে তুলবো।

ড. মাসুদ আরো বলেন, একটি মুসলিমপ্রধান দেশে আমরা সেই শিক্ষা ব্যবস্থা চাই, যেখানে রাসূল সা:-এর আদর্শ শিখে মানুষ নৈতিকতা, মানবিকতা, জবাবদিহিতা ও বাস্তবসম্মত শিষ্টাচার, ভদ্রতায় পরিপূর্ণ হবে। আমরা হযরত ওমর রা.-এর শিক্ষা ব্যবস্থা প্রণয়ন করার কথা বলি।

তিনি বলেন, আজ সিলেট সুনামগঞ্জসহ সারাদেশে বন্যা পরিস্থিতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে অথচ দায়িত্বশীল কেউ তাদের পাশে নেই। হেলিকপ্টারে চড়ে প্রধানমন্ত্রী পরিদর্শন করতে যান। অথচ আমরা যদি ওমরের শিক্ষায় জাতিকে শিক্ষিত করতে পারতাম তাহলে কষ্টে থাকা সেসব মানুষ আজ উপকৃত হতো। মানুষকে সহযোগিতার জন্য আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের মতো কাঁধে বোঝা নিয়ে যেতেন।

ড. মাসুদ আরো বলেন, আমাদের দেশে মূল্যবোধহীনতা, অপরাধ প্রবণতা ও নানাবিধ সামাজিক অনৈতিকতাবোধ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। নাস্তিক্যবাদী নৈতিকতাহীন শিক্ষা ব্যবস্থায় আজ ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে একজন ছাত্র শিক্ষককে হত্যা করছে, শ্রেষ্ঠ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিকারুন নেসা নুন স্কুলে পড়া একজন ঐশী তার জন্মদাতা বাবা-মাকে হত্যা করছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরি করে উৎসব পালন করছে কেউ কেউ।

তিনি বলেন, এ পরিস্থিতিতে নাগরিকদের নৈতিকভাবে বলীয়ান করে, অপরাধমুক্ত জীবন গড়ার লক্ষ্যে ধর্মীয় ও ইসলামী শিক্ষার পরিধি বাড়ানো জরুরি। তা না করে ধর্মীয় শিক্ষা সঙ্কুচিত করা অযৌক্তিক, অপরিণামদর্শী, জাতি বিধ্বংসী ও চরম আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে। এ দেশের জনগণ ইসলামী আকিদা, মৌলিক বিশ্বাস ও চিন্তাচেতনা বিরোধী কোনো শিক্ষানীতি মেনে নিবে না। প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement