২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

তৈমূরকেও বহিষ্কার করলো বিএনপি

তৈমূরকেও বহিষ্কার করলো বিএনপি - ছবি : সংগৃহীত

নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন (নাসিক) নির্বাচনের এক দিন পরই দল থেকে তৈমূরকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। এর আগে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকে অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারকে সরানো হয়েছিল। নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার এক দিন পরই তৈমূর আলম খন্দকারকে দলের সব পদ থেকে বহিষ্কার করে বিএনপি।

মঙ্গলবার রাতে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে তাকে বহিষ্কার করা হয়।

চিঠিতে বলা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির গঠনতন্ত্র মোতাবেক আপনাকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে নির্দেশক্রমে বহিষ্কার করা হলো। এই সিদ্ধান্ত অবিলম্বে কার্যকর হবে।

মঙ্গলবার রাতে সাড়ে ১১টার দিকে তৈমূর আলম খন্দকার নয়া দিগন্তকে জানান, নারায়ণগঞ্জে রাজনৈতিক মহামারী চলছে। নাসিক নির্বাচনে যারা নৌকার বিরুদ্ধে কাজ করেছে তাদের বহিষ্কার চলছে অন্য দিকে যারা আমার প্রতীক হাতির পক্ষে কাজ করেছে তাদের দল থেকে বহিষ্কার চলছে।

তিনি বলেন, ‘সকল দলের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাকর্মীদের জালালী খতম পড়ে আল্লাহর কাছ সাহায্য চাওয়া উচিত যাতে রাজনৈতিক মহামারী থেকে আল্লাহ রক্ষা করেন।’

তিনি বলেন, আমাকে কারচুপির মাধ্যমে হারানো হয়েছে। ইভিএম এর ডাকাতি বাক্সে ষড়যন্ত্র করে আমাকে হারানো হয়েছে।

তিনি বলেন, দলের একজন কর্মীর মর্যাদা নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই।

দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের অংশ নিয়ে যেন কঠিন সিদ্ধান্তের মুখোমুখি হলেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

এর আগে দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামালকে বহিষ্কার করা হয়।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে স্বতন্তভাবে নির্বাচনে অংশ নেন অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। আর এই বিষয়টিকে কেন্দ্রীয় বিএনপি সহজভাবে নিতে পারেনি।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর জয়ে পরাভূত হয়েছেন স্বতস্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার।

নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র দাখিলের পরপরেই জেলা বিএনপির আহ্বায়ক পদ থেকে সরিয়ে দেয়া হয় তৈমূর আলম খন্দকারকে। এ সময় ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয় মনিরুল ইসলাম রবিকে।

সবশেষ গত ৩ জানুয়ারি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদ থেকেও প্রত্যাহার করা হয় তৈমূর আলম খন্দকারকে।

সেদিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য জানানো হয়। চিঠিতে তৈমূর আলম খন্দকারকে জানানো হয়, দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল সদস্য পদ থেকে আপনাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। অবিলম্বে এই নির্দেশনা কার্যকর হবে।

সেসময় দলের এমন সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে তৈমূর বলেছিলেন, দল থেকে আমাকে কিছু জানানো হয়নি। যদি এটা সত্য হয়ে থাকে, আলহামদুলিল্লাহ। আমি মনে করি দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটা সময়োচিত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি আমাকে জনগণের জন্য মুক্ত করে দিয়েছেন। এখন আমি রিকশাওয়ালাদের কাছে ফিরে যাব। ঠেলাগাড়িওয়ালাদের কাছে ফিরে যাব। আমি গণমানুষের কাছে ফিরে যাব। ’

কিন্তু তৈমূরের বিরুদ্ধে দলের এই ঘোষণাতেও নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নেতাকর্মীরা তাকে ছেড়ে যায়নি। নির্বাচনের প্রচার প্রচারণাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে তৈমূরকে সঙ্গ দিয়েছেন। তার নির্বাচনী এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন। সেই সাথে তার প্রধান এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল। যার পরিণতিতে এ টি এম কামালকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement