২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

শাহাদাত প্রত্যেক মুমিনের জন্যই কাঙ্ক্ষিত : সেলিম উদ্দিন

শাহাদাত প্রত্যেক মুমিনের জন্যই কাঙ্ক্ষিত : সেলিম উদ্দিন - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, শাহাদাত প্রত্যেক মুমিনের জন্যই কাঙ্ক্ষিত। পবিত্র কালামে হাকীমে ইরশাদ হয়েছে- ‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে পার না’।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্রঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ২৮ অক্টোবরের শহীদদের স্মরণে আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিলে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানে তিনি আরো বলেন, ২৮ অক্টোবরের হত্যাযজ্ঞ কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় বরং ইসলাম, ইসলামী মূল্যবোধ, দেশ ও জাতিসত্তাবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ। সেদিন প্রকাশ্য দিবালোকে রাজপথে পিটিয়ে মানুষ হত্যা ও লাশের ওপর উদ্দাম নৃত্য ইতিহাসের সকল নির্মমতা ও নিষ্ঠুরতাকে হার মানিয়েছে এবং সভ্যতাকে কলঙ্কিত করেছে। তিনি লগি-বৈঠার তাণ্ডবে শাহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তাদের জান্নাতে উচ্চ মাকাম দানের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাত করেন এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা: রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও জামায়াত নেতা জামাল উদ্দীন প্রমূখ।

এম এস উদ্দিন বলেন, শাহাদাত প্রত্যেক মুমিনের জন্যই কাঙ্ক্ষিত। পবিত্র কালামে হাকীমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়, তাদের মৃত বলো না বরং তারা জীবিত, কিন্তু তোমরা তা উপলব্ধি করতে পার না’। (সূরা বাক্বারা : ১৫৩) হাদিসে রাসূলে বলা হয়েছে, রাসূল সা: বলেছেন, কোনো ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করার পর আর দুনিয়ায় ফিরে যেতে চাইবে না। অবশ্য শহীদের কথা আলাদা। সে চাইবে যে, তাকে দুনিয়ায় ফিরিয়ে আনা হোক এবং দশ বার তাকে আল্লাহর পথে শহীদ করা হোক।

তিনি আরো বলেন, (বুখারি ও মুসলিম) তাই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। মূলত ২৮ অক্টোবরের খুনিদের বিচার হয়নি বলেই দেশে গুম, খুন, সন্ত্রাস, নারী নির্যাতন, বিচারবর্হিভূত হত্যার মহোৎসব চলছে। এমতাবস্থায় গণবিরোধী ও জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে সকল হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে। তিনি জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে সকলকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।

মহানগরী আমির বলেন, মূলত ক্ষমতায় থাকার জন্যই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে সরকার। নির্বাচন কমিশন নামের প্রহসন কমিশন দিয়েই ‘মিডনাইট’ নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকার ক্ষমতায় এসেছে। আগামী দিনেও তারা একই কায়দায় ক্ষমতায় যাওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের অন্যতম অনুঘটক হচ্ছে বর্তমান নির্বাচন কমিশন। তাই দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকে কলঙ্কমুক্ত করতে দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশনকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। সাজানো ও পাতানো নির্বাচন জনগণ কখনোই মেনে নেবে না। এ সময় তিনি সরকারের সকল গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

হাতিরঝিল পশ্চিম থানা
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মো: তসলিম বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন হত্যাযজ্ঞ ছিল ইতিহাসের এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। প্রকাশ্য দিবালোকে পৈশাচিকভাবে রাজপথে এভাবে মানুষ পিটিয়ে হত্যার ঘটনা আইয়ামে জাহেলিয়াতকে হার মানিয়েছে। তিনি পল্টনে নিহতদের শাহাদাত কবুলের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের সবরে জামিলের তৌফিক কামনা করেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী হাতিরঝিল থানা পশ্চিমের উদ্যোগে পল্টন ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষে এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ও হাতিরঝিল থানা পশ্চিম আমির মুহাম্মদ আতাউর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী মোল্লার পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন থানা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য আবু তানজিল, মাওলানা গোলাম মাওলা, আবু সাঈদ মন্ডল, রাশেদুল ইসলাম ও শায়েস্তা খান প্রমুখ।

লস্কর মো: তসলিম বলেন, পল্টন ট্রজেডির পর দীর্ঘ দিন অতিক্রান্ত হলেও ওই হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি বরং এ ঘটনায় আনীত মামলাগুলো প্রত্যাহার করে নিয়ে দেশের বিচার ব্যবস্থায় খারাপ নজীর সৃষ্টি করা হয়েছে। তিনি অবিলম্বে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।

রামপুরা থানা উত্তর
পল্টন ট্রাজেডি উপলক্ষে রামপুরা উত্তর থানার উদ্যোগে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। থানা আমির ফজলে আহমেদ ফজলুর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দিন মোল্লা। উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি রাজিফুল হাসান বাপ্পী ও জামায়াত নেতা হাফিজুর রহমান প্রমুখ।

প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ জামায়াতে ইসলামীর শান্তিপূর্ণ সমাবেশে লগি-বৈঠা নিয়ে পৈশাচিক কায়দায় আক্রমণ করে সন্ত্রাসীরা। তাদের অতর্কিত হামলায় ইসলামী আন্দোলনের ৬ জন নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেন এবং আহত হয় অসংখ্য নেতাকর্মী। যা ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। তিনি পল্টন শহীদদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের জান্নাতে সর্বোচ্চ মর্যাদা দানের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন।

বিমানবন্দর থানা
রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবর উপলক্ষে এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বিমানবন্দর থানা। থানা আমির অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম খলিলের সভাপতিত্বে ও নায়েবে আমির এনামুল হক শিপনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারি মো: সুজারুল হক, থানা কর্ম পরিষদ সদস্য মো: আব্দুর রহিম সাব্বির, মো: মাহবুবুল হক দিদার ও মো: আনিসুর রহমান প্রমুখ।

সিলেটে জামায়াতের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেছেন, ২৮ অক্টোবর জাতির জন্য একটি বেদনা ও কলঙ্কময় দিন। ২০০৬ সালের এই দিনে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিপন্ন করে দেশকে করদরাজ্যে পরিণত করার হীন উদ্দেশ্যেই দেশব্যাপী লগি-বৈঠার নারকীয় তাণ্ডব চালানো হয়েছিল। যার সুদুরপ্রসারী ফলাফল জাতি আজ উপলব্ধি করতে পারছে। তিনি বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই, মানুষের ভোটাধিকার নেই। সর্বত্র দুর্নীতির মহোৎসব চলছে। খুন, গুম, ধর্ষণ, হামলা-মামলায় নাগরিক জীবনে সীমাহীন দুর্ভোগ নেমে এসেছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হলেও সেদিকে ক্ষমতাসীনদের কোনো দৃষ্টি নেই।

কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেট মহানগর জামায়াতের উদ্যোগে ভয়াল ২৮ অক্টোবর উপলক্ষে শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। বুধবার সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ ফখরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মোহাম্মদ শাহজাহান আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও সিলেট বিভাগীয় আঞ্চলিক দায়িত্বশীল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও সিলেট জেলা উত্তর জামায়াতের আমির হাফিজ মাওলানা আনোয়ার হোসাইন খান।

এ ছাড়াও সভায় বক্তব্য রাখেন সিলেট মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা সোহেল আহমদ, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আব্দুর রব, জামায়াত নেতা অ্যাডভোকেট আলিম উদ্দিন ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সিলেট মহানগর সভাপতি মো: সাইফুল ইসলাম। সভা শেষে শহীদদের মাগফিরাত কামনা এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement