২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তারা দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে সমূলে উৎপাটন করতে চেয়েছিল : শফিকুর রহমান

তারা দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে সমূলে উৎপাটন করতে চেয়েছিল : শফিকুর রহমান -

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরে ঢাকার পল্টনে সংঘটিত ইতিহাসের নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে বাংলাদেশকে নিয়ে একটি গভীর সংকট সৃষ্টি করা হয়েছিল। সেদিন ওই ঘটনার মূলে ছিল দেশপ্রেমিক নেতৃত্বকে সমূলে উৎপাটন করার অভিপ্রায়।

তিনি বলেন, সেদিন শুধু আভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্রই নয়, বিদেশী সাম্রাজ্যবাদী শক্তিও দেশকে নিয়ে ভয়াবহ খেলায় মেতে উঠেছিল। সেদিনের লগি-বৈঠার বর্বরতায় বাংলাদেশে হেরে গিয়েছিল মানবতা। চরমভাবে পদদলিত হয়েছিল মানবাধিকার।

অন্যদিকে বর্তমানের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী সেই একই ধারায় পুরো দেশকে আজ ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। এখন দেশের সাধারণ মানুষের জন্য তো প্রতিটি দিনই হচ্ছে লগি-বৈঠার বর্বরতার ২৮ অক্টোবর।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি নাগরিককে বুঝতে হবে জামায়াত নিয়ে সরকারের এত মাথাব্যথার কারণ কী? আমরা বলতে চাই, দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব ও কর্মী তৈরিকে বাধাগ্রস্ত করতেই মূলত তারা এ বর্বর হামলা চালিয়েছিল। অতীত থেকে আমাদেরকে শিক্ষা নিতে হবে।

তিনি ২৮ অক্টোবরের নিহতদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন ও মহান আল্লাহর দরবারে তাদের আত্মত্যাগ কবুলের জন্য দোয়া করেন।

বুধবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠার তাণ্ডবে নির্মমভাবে নিহতদের স্মরণে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির জননেতা নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহা. আব্দুল জব্বার, কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য আব্দুস সবুর ফকির, অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান। আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য কামাল হোসাইন, আব্দুস সালামসহ অন্য নেতারা।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, দেশপ্রেমিক নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার মাধ্যমে দেশে ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রাকে মুছে ফেলার ভয়াবহ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা হয়েছিল সেদিন। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে। মহান আল্লাহর দেয়া মেধা ও যোগ্যতার পূর্ণ সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে ভূমিকা রাখতে হবে। সেজন্য দেশ ও জাতির প্রয়োজনে আমাদের সর্বোচ্চ ত্যাগ ও কুরবানির প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে নুরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘২০০৬ সালের পল্টন ট্রাজেডির দিনে শুধু পল্টনে দাঁড়িয়ে থাকা জামায়াতের নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে তাই নয় বরং সেদিনের পর থেকেই মূলত বাংলাদেশ পথ হারিয়েছে। আজ তা স্পষ্ট হয়েছে, দেশে গণতন্ত্র নেই, কথা বলার অধিকার নেই, ভোটের অধিকার নেই, ভাতের অধিকার নেই, নির্যাতিত নিপীড়িত জনগণ আজ চরমভাবে বিপর্যস্ত। মানবাধিকার এখানে ভূলুণ্ঠিত।’

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে মরহুম রহুল আমিন ও মরহুম হাবিবুর রহমানের স্মরণে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল বুধবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহম্মেদ, লস্কর মুহাম্মদ তসলিম, সহ-সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলমগীর হোসাইন, আব্দুস সালাম, দফতর সম্পাদক নুরুল আমিন প্রমুখ।

এ ছাড়াও ফেডারেশনের বিভিন্ন মহানগরী, থানা ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভায় বক্তারা শহীদ রহুল আমিন ও শহীদ হাবিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, বাংলাদেশকে স্বাধীনতার পরপরই জিম্মি রাখার নীল নকশা প্রণয়ন করা হয়। আমরা যেন পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারি। এজন্য প্রতিবেশী একটি রাষ্ট্র প্রতিনিয়ত আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বুনে যাচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য তারা এই দেশের এক শ্রেণির অসৎ ও দেশবিরোধী রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও আমলাদের সমর্থন পাচ্ছে। ফলে তাদের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের পথ সুগম হয়েছে। তাদের প্রতিটি বিষাক্ত থাবায় ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাচ্ছে আমাদের প্রাণপ্রিয় মাতৃভূমি। আমরা যখনই স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব সুদৃঢ় করার চেষ্টা করেছি তখনই তারা বিষাক্ত ছোবল আমাদের ওপর মেরেছে।
তিনি আরো বলেন, পলাশী প্রান্তরে বাংলার স্বাধীনতা ও ইসলামের বিরুদ্ধে যে গভীর ষড়যন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়েছিল ২৮ অক্টোবর সেই ধারাবাহিকতার অংশ। যারা মানুষের মন থেকে ইসলাম ও দেশপ্রেম মুছে দিতে চায় তারা আজ সবাই এক প্ল্যাটফর্মে।

আলোচনা সভা শেষে মরহুম রহুল আমিন ও হাবিবুর রহমানের জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া করা হয়। তাদের পরিবার ও স্বজনদের ধৈর্য ধরার তাওফিক কামনা করা হয়।
বিজ্ঞপ্তি

লগি বৈঠাধারীরাই খুনি ও ধর্ষক : ছাত্রশিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী বলেছেন, লগি বৈঠার নির্মমতা জাতির জীবনে একটি কালো অধ্যায়। ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে ও খুঁচিয়ে নিরাপরাধ মানুষকে খুন করে লাশের উপর নৃত্য করে জঘন্যতম বর্বরতার সূচনা করা হয়েছিল। তারই ধারাবাহিকতায় নির্মমতা, পৈশাচিকতা, বর্বরতা আরো বেড়েছে। সেদিনের লগি বৈঠাধারী সন্ত্রাসীরাই আজকের আগ্নেয়াস্ত্রধারী খুনি ও ধর্ষক।

বুধবার ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রচার সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

এতে আরো বলা হয়, রাজধানীর একটি মিলনায়তনে ইসলামী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টন ট্রাজেডি দিবস স্মরণে আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল রাশেদুল ইসলামসহ শিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারিয়েট সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement