২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

পূজামণ্ডপে হামলায় শিবিরকে জড়িয়ে সংবাদের নিন্দা ও প্রতিবাদ

-

দেশের বিভিন্ন স্থানে পূজামণ্ডপে হামলার সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে কিছু গণমাধ্যমে মিথ্যাচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

শুক্রবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী ও সেক্রেটারি জেনারেল রাশেদুল ইসলাম বলেন, পূজামণ্ডপে হামলার মতো একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে চরম দায়িত্বহীনতা প্রদর্শন করেছে কিছু গণমাধ্যম। গাজীপুর ও রংপুরে পূজামণ্ডপে হামলার সাথে শিবিরকর্মী জড়িত বলে কিছু গণমাধ্যমে সম্পূর্ণ বানোয়াট ও উদ্দেশ্যেপ্রণোদিত প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।

নেতৃদ্বয় বলেন, পূজামণ্ডপে হামলার মতো ঘৃণ্য ও ইসলামবিরোধী কাজের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোনো সম্পর্ক নেই। আসল অপরাধীদের আড়াল করতেই এসব উদ্ভট প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে।

তারা আরো বলেন, সম্প্রতি কুমিল্লায় পূজামণ্ডপে হামলার ব্যপারে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক একটি টিম নিয়ে স্থানীয় পূজা কমিটি, মণ্ডপ কমিটি, ঢাকি, হামলায় আহত ও স্থানীয় হিন্দুদের সাথে কথা বলে ও তদন্ত করার পর বলেছেন, কুমিল্লার স্থানীয় আওয়ামী লীগের এমপি ও মেয়রের সাথে দ্বন্দ্বের পটভূমিতে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করতে স্থানীয় সংসদ সদস্যের সরাসরি ইন্ধনে পূজামণ্ডপে হামলা করা হয়েছে।

তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে ফায়দা হাসিলের জন্য এ হামলা করেছে আওয়ামী লীগের নেতারা। এমনকি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরাও একথা স্বীকার করেছে বলে তিনি উল্লেখ করেছেন।

তিনি আরো বলেছেন, কুমিল্লার ঘটনার সময় হিন্দু সম্প্রদায় পুলিশ, ৯৯৯ ও ফায়ার সার্ভিসে ফোন দিয়েও রহস্যজনক কারণে কোনো সাহায্য পায়নি এবং স্থানীয় পুলিশ সরকারদলীয় প্রভাবশালীদের কথাতেই চুপ ছিল। তারা চেয়েছিল একটা ম্যাসাকার হোক।

একইভাবে রংপুরে দীর্ঘ সময় নিয়ে লোক জড়ো হয়ে পরিকল্পিতভাবে হিন্দুদের বাড়িতে হামলার সময় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় পুলিশের সহায়তা চেয়েও রহস্যজনক কারণে সাহায্য পায়নি। অন্যদিকে এ বছরের মার্চ মাসে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁও হিন্দুপল্লীতে হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দিয়েছে স্থানীয় যুবলীগ সভাপতি শহীদুল ইসলাম স্বাধীন ওরফে স্বাধীন মেম্বার। যিনি ‘মূল আসামি’ হিসেবে গ্রেফতার হয়েছেন।

২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বরে রামুতে বৌদ্ধপল্লীতে হামলার ঘটনা ঘটে যার নেতৃত্বে ছিল স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা সম্পর্কে বংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজল দেবনাথ ডয়েচে ভেলেকে বলেছেন, নাসিরনগরে হামলার নেপথ্যে ছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য ও তার ভাই। তাদের আইনের আওতায় আনা হয়নি।

তিনি আরো বলেছেন, যারা হামলা করে তারা গ্রেফতার হয় না। বিচারও হয় না এসব ঘটনার। এর পিছনে আছে রাজনীতি। ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক স্বার্থ উদ্ধার। আরো আছে হিন্দুদের জমি ও সম্পত্তি দখল। আর এটা ক্ষমতা না থাকলে করা যায় না।

শিবিরের বিবৃতিতে বলা হয়, এভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর খুন, জখম, ধর্ষণ, বর্বরোচিত অত্যাচার আওয়ামী লীগের শাসন আমলে আওয়ামী লোকজনদের দ্বারাই বেশি ঘটেছে ও ঘটছে। বহু আগে থেকেই প্রতিপক্ষের রাজনীতিকে ঘায়েল, ইস্যু তৈরি করে জনগণের দৃষ্টি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করা এবং দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে সংখ্যালঘুদের উপর হামলা ও নির্যাতনকে পন্থা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে আওয়ামী লীগ। আর তাতে সহযোগীর ভূমিকা পালন করে আসছে কিছু দলকানা সাংবাদিক।

যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, এর আগেও আওয়ামী লীগ ও তাদের সেবাদাস কিছু দায়িত্বহীন সাংবাদিক এমন ঘৃণ্য বিষয়ের সাথে শিবিরকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে সব মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। পূজামণ্ডপে হামলা নিয়ে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এসব প্রতিবেদন বিকৃত মস্তিস্কের উদ্ভট আবিষ্কার।

তারা আরো বলেন, জনগণ সজাগ ও সচেতন। ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে কাণ্ডজ্ঞানহীন প্রতিবেদন প্রকাশ করলেই জনগণ তা মেনে নিবে এমনটি ভাবা বোকামি। এসব উদ্ভট আবিষ্কারের সাথে ছাত্রশিবিরের ন্যূনতম কোনো সম্পর্ক নেই। নিজ দায়িত্বের প্রতি সম্মান দেখিয়ে এসব সাজানো প্রতিবেদন প্রত্যাহার ও একপেশে উদ্ভট নিউজ প্রকাশ থেকে বিরত থাকার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদক ও গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement