শ্রমজীবীদের দুর্ভোগ লাঘবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করুন : শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৫ অক্টোবর ২০২১, ১৮:১৫
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী বৈঠক বৃহস্পতিবার ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদের সকল নেতা উপস্থিত ছিলেন।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে আরো বলা হয়েছে, বৈঠকের শুরুতে কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্যরা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলামকে দীর্ঘ এক মাস কারাবন্দী রাখার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
কার্যনির্বাহী পরিষদের নেতারা অভিমত ব্যক্ত করে বলেন, সরকারের ইশারায় একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশের শ্রমিক অঙ্গনের শীর্ষ নেতাকে হয়রানি করা হচ্ছে। মূলত আদর্শিক লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তাদের সকল ষড়যন্ত্রের নীল নকশা অচিরেই বুমেরাং হবে এবং আ ন ম শামসুল ইসলাম অতীতের মতো সকল মিথ্যা মামলা মোকাবিলা করে জনতার মাঝে ফিরে আসবেন।
কার্যনির্বাহী পরিষদ চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। নেতারা বলেন, সম্প্রতি সারাদেশে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য-সামগ্রীর দাম ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে কৃষক, শ্রমিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণ যোগান থাকা সত্ত্বেও নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি অযৌক্তিক। নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে সাধারণ জনতার হাহাকার প্রতিদিন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হচ্ছে। কিন্তু আমরা খুব বিস্ময়ের সাথে লক্ষ্য করছি সরকারের দায়িত্বশীল মহল এই সমস্যার সমাধান না করে লাগামহীন বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে।
শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতারা আরো বলেন, সরকারের ছত্রছায়ায় এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী দ্রব্যমূল্যের দাম ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে। আমরা সরকারের উদ্দেশ্যে স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আপনাদের সিন্ডিকেট ও অসাধু ব্যবসায়ীদের চক্র ভেঙে অবিলম্বে শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করুন।
কার্যনির্বাহী পরিষদ চলমান দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ ও শ্রমজীবী মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করতে নিম্মোক্ত প্রস্তাব সরকারের কাছে উপস্থাপন করছে
১. চলমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণে অতি দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
২. কালোবাজারি ও অবৈধ মজুদারের সকল সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে হবে। জন দুর্ভোগ সৃষ্টির জন্য তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
৩. চাল, ডাল, তেল ও পেঁয়াজসহ সকল পণ্যের মূল্য শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে।
৪. করোনাকালীন চাকরিচ্যুত ও আয়হীন মানুষের জন্য সরকারের পক্ষ বিনামূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর যোগান দিতে হবে।
৫. শ্রমিক, দিনমজুর ও নিম্ম আয়ের মানুষদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী স্বল্প মূল্যে প্রদান করতে হবে।
৬. বাজারে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর পর্যাপ্ত যোগান থাকা সত্ত্বেও যে সকল লোভী ও অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৭. বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে নিয়মিত ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও বাজার মনিটরিং করতে হবে।
৮. অসাধু চক্রের কাছে জিম্মি সাধারণ মানুষদের রক্ষা করতে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
৯. দেশের খাদ্যের যোগান অব্যাহত রাখতেকৃষকদের প্রণোদনা ও কৃষি খাতে ভুর্তকি দিতে হবে ও
১০. সুষ্ঠু বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখে জনজীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনতে হবে।
বিজ্ঞপ্তি