২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শ্রমজীবী মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন হচ্ছে না : ডা: শফিকুর রহমান

- ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা: শফিকুর রহমান বলেছেন, শ্রমিকের রক্ত ঘামে দেশের অর্থনীতির চাকা ঘুরলেও তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। স্বাধীনতার ৫০ বছর অতিক্রম করলেও সুষ্ঠু শ্রমনীতি প্রণিত হয়নি। তাই আজও শ্রমজীবী মানুষ সমাজ ও রাষ্ট্রে অবহেলিত থেকে গেছে।

তিনি বলেন, শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে অনেক শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা হলেও তারা কেউ সত্যিকারের কল্যাণার্থে কাজ করছে না। এমতাবস্থায় শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করতে হলে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। তাই শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণ নিশ্চিত করতে ইসলামের পতাকাবাহী সংগঠন শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি গতকাল শনিবার বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত জেলা ও মহানগরী সমূহের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যদের নিয়ে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত দিনব্যাপী শিক্ষাশিবিরের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমানের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সাবেক এমপি ডা: সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের, মাওলানা এটিএম মাছুম, মাওলানা এইচ এম আব্দুল হালিম, অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রাব্বানী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের খান, লস্কর মুহাম্মদ তসলিম, মুজিবুর রহমান ভূইয়া, মনসুর রহমানসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, শ্রমজীবী মানুষ বহুমুখি সমস্যায় জর্জরিত। এই সমস্যা সমাধানে তিনটি পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন। এই তিনটি পক্ষ হলো- উদ্যোক্তা বা মালিক, শ্রমিক ও ভোক্তা পক্ষ। এই তিনটি পক্ষের কেউ যদি কারো বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো আর এগিয়ে যাবে না। এই বৃহত্তর ময়দান পিছিয়ে যাবে। ক্রমাগত সঙ্ঘাত, বিশৃঙ্খলা ও ধ্বংসের দিকে যাবে। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন শুধু শ্রমিকদের সংগঠন না। বরং এটি শ্রমিক মালিক ও ভোক্তাদের কল্যাণে কাজ করে যাওয়া এক অনন্য সংগঠন। শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন যেমনিভাবে শ্রমিকদের মনে করিয়ে দেয় সততা ও জিম্মাদারির সাথে শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করতে। আল্লাহর দেয়া মেধা ও শক্তি নিয়ে মালিকের পাশে দাঁড়াতে, আন্তরিকতার সাথে তার কর্তব্য সম্পন্ন করতে। তেমনিভাবে মালিকপক্ষকে স্মরণ করে দেয় শ্রমিকদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে। কলকারখানায় শ্রম বান্ধব পরিবেশ ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। যথাসময়ে শ্রমিকের উপযুক্ত পারিশ্রমিক বুঝিয়ে দিতে। মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার জন্য বাসস্থান ও স্বাস্থ্যসেবাসহ নিত্য প্রয়োজন পূরণ করতে মালিক পক্ষের প্রতি শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আহবান জানায়।

তিনি বলেন, এ বিষয়গুলো যদি মালিক পক্ষ পূরণ করতে পারে তাহলে মালিক শ্রমিক এক পরিবারের অংশ হয়ে যাবে। মালিক শ্রমিকের ঐক্যের মাধ্যমে কারখানার উন্নতি সাধিত হবে। পণ্যের মান বৃদ্ধি পাবে। আর পণ্যের মান বৃদ্ধি পেলে ভোক্তাও মালিকের উদ্যোগ ও শ্রমিকের শ্রম উচ্চমূল্যে ক্রয় করবে।

তিনি আরো বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনকে তিন পক্ষের মধ্যেই কাজ করতে হবে। কারো সাথে কারো সংঘাত সৃষ্টি করা যাবে না। বরং পরস্পরকে পরস্পরের সম্পূরক বানাতে হবে। সত্যিকারের কল্যাণ করতে এই পথে হাঁটতে হবে। কিন্তু যুগ যুগ ধরে নির্যাতিত শ্রমজীবী মানুষদের পুঁজি করে একদল মানুষ নিজেদের স্বার্থ হাসিল করেছে। অনেক সংগঠন শ্রমিকদের রক্ত বিক্রি করে শ্রমজীবী মানুষদের ধোঁকা দিয়েছে। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেনশনের নেতাকর্মীরা নিঃস্বার্থভাবে শ্রমিকদের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে।

ডা: শফিকুর রহমান বলেন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি দেশের মুক্তিকামী মানুষের জনপ্রিয় নেতা ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য। তার মত সজ্জন ব্যক্তি সরকারের ঘৃণ্য ষড়যন্ত্র ও অমানবিক আচরণের শিকার। তিনি ডায়বেটিস ও উচ্চরক্তচাপসহ নানা রোগে আক্রান্ত। আমি তাকে আশু মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি। আ ন ম শামসুল ইসলামসহ তার সথীদের কারাভোগ এদেশের শ্রমজীবী মেহনতি মানুষের মুক্তির উছিলা হোক।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement