২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

‘কুরআন-সুন্নাহ’র বাহিরে জামায়াতের আর কোন গোপন তৎপরতা নেই’

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমির সেলিম উদ্দিন বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক ও গনতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। বাংলাদেশের সংবিধান এবং কুরআন-সুন্নাহ’র বাইরে জামায়াতের আর কোনো গোপন তৎপরতা নেই। সাধারণ মানুষের মাঝে ব্যাপকভিত্তিক দাওয়াতী কাজ, আত্মগঠন এবং রাসূলের সিরাতের বাস্তবভিত্তিক অনুসরণের মধ্য দিয়েই জামায়াত এদেশে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে চায়।


সোমবার ঢাকা জেলা উত্তর জামায়াতে ইসলামী পেশাজীবী জোনের উদ্যোগে ভার্চুয়াল মাধ্যমে আয়োজিত ঈদ পুণর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা কর্মপরিষদ সদস্য ফারুক চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং জেলা কর্মপরিষদ সদস্য শেখ শহীদুল ইসলাম এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও ঢাকা জেলা উত্তর আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আফজাল হোসাইন এবং জেলা সেক্রেটারি মাওলানা মো: শাহাদাত হোসাইন।

আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা সহকারী সেক্রেটারি ও সাবেক কমিশনার হাসান মাহবুব মাস্টার, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ মো: লুৎফর রহমান মোল্লা, জেলা মজলিশে শূরা সদস্য ও পেশাজীবী থানা আমির এইচ এম জোবায়ের, ইপিজেড থানা সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মো: সোহেল রানা প্রমুখ।

প্রধান অতিথি সেলিম উদ্দিন বলেন, ইসলামী আন্দোলন বিজয় ও সফলতার ঘোষণা দিয়ে তার কাজ শুরু করে। নবী-রাসূলগণকে (আ:) দীন প্রতিষ্ঠার মহান মিশন দিয়ে দুনিয়ায় পাঠানো হয়। তবে তাদের অধিকাংশই দুনিয়ায় বিজয়ের সফললতা পাননি। মুষ্টিমেয় কয়েকজন নবী দীন বিজয়ে সফল হয়েছিলেন। তাদের এই ঘটনা থেকে বোঝা যায় দীন কায়েমের চেষ্টা করা মানুষের উপর অর্পিত দায়িত্ব কিন্তু দীন বিজয়ের দায়িত্ব স্বয়ং আল্লাহ তা’য়ালার হাতে ন্যস্ত। তিনি যাকে এবং যে দলকে চান তার হাতে বিজয়ের মশাল তুলে দেন।

সেলিম উদ্দিন বলেন, দীন বিজয়ের জন্য কোনো সুনির্ধারিত দিন-তারিখ ঠিক করে কাজ করার সুযোগ নেই। তবে কাজের পরিধি নির্ণয়, মান অর্জন ও টার্গেট বাস্তবায়নের জন্য সুনির্ধারিত পরিকল্পনা থাকা জরুরি। যারা বিজয়ের জন্য নির্ধারিত দিন-তারিখ ঠিক করার কথা বলেন কিংবা দীর্ঘ সময় কাজ করে হতাশ হয়ে পড়েন তাদেরকে জনাব সেলিম উদ্দিন কুরআন-হাদীস এবং নবী-রাসূলগণের (আ:) সিরাত গভীরভাবে অধ্যয়নের পরামর্শ দেন।

তিনি বলেন, নবী-রাসূলগণ তাদের সময়ের সবচেয়ে সঙ্কটপূর্ণ এবং জাহেলি সমাজে আগমন করে দাওয়াতের কাজ শুরু করেন। সময়ের ব্যবধানে সে সমাজ ইনসাফের সমাজে পরিণত হয়। বর্তমান সময়েও ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে সমসাময়িক যুগ-জিজ্ঞাসার জবাব জানতে হবে। আধুনিক প্রায়োগিক জ্ঞানে জ্ঞানী হতে হবে। রাসূলের (সা:) সিরাতের যথাযথ অধ্যয়ন ও প্রয়োগই দীনের বিজয়ের পথকে সুগম করে দিবে।

প্রধান অতিথি বলেন, পৃথিবীর কোনো বিপ্লব শুধু তথ্য, তত্ত্ব ও চিন্তা-গবেষণার মাধ্যমে সংগঠিত হয়নি। বিপ্লবের জন্য সঠিক চিন্তা ও কর্মপদ্ধতির পাশাপাশি এমন একদল নিবেদিতপ্রাণ কর্মী বাহিনীর প্রয়োজন হয় যারা নিজেদের জীবনকে আল্লাহর রঙ্গে রঙ্গীন করে দীন প্রতিষ্ঠার কাজে একাগ্রচিত্তে কাজ করে যাবে। ইসলামের সুমহান দাওয়াত নিয়ে দিকভ্রান্ত মানুষের দুয়ারে দুয়ারে ছড়িয়ে পড়বে। নিজেরা আত্মগঠনের জন্য রাত্রি জাগরনের নিয়মিত অভ্যাস গড়ে তুলবে। কোনো প্রলোভন, লোভ-লালসা তাদের গতিপথে বাঁধা সৃষ্টি করতে পারবে না। ঈমানী শক্তি দিয়ে তারা বাতিলের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দীন বিজয়ের কন্টকাকীর্ণ পথে এগিয়ে যাবে।

দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট সম্পর্কে তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার ও বিরোধী দলসমূহ বিবৃতি নির্ভর হয়ে পড়েছে। তারা কাঁদা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত। প্রায় সকল দলই জনবিচ্ছিন্ন। রাজনীতির এই সঙ্কটকালে জামায়াত কর্মীদেরকে ইসলামের সুমহান আদর্শ নিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে যেতে হবে। ব্যাপক ভিত্তিক সেবাধর্মী কাজ নিয়ে জামায়াত মানুষের কাছে যেতে পারলে মানুষ অবশ্যই জামায়াতকে পরিত্রাণদাতা হিসেবে গ্রহণ করবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা জেলা উত্তর আমির মাওলানা আফজাল হোসাইন বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে অহেতুক ওজর পেশ না করে বিনা বাক্যে আল্লাহর বিধানের সামনে মাথা নত করে দিতে হবে। কোরবানিতে আমরা যেভাবে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছি সেভাবে সব সময় বিশেষত করোনাকালীন মহামারীতে মানুষের পাশে থাকতে হবে। সরকার করোনা ব্যবস্থাপনায় চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। সরকারের উচিত ছিল এই মহামারীতে সবাইকে সাথে নিয়ে সঙ্কট সমাধানের বাস্তব উপায় খুঁজে বের করা।

তিনি বলেন, আমরা যারা সমাজ পরিবর্তনের জন্য কাজ করছি তাদেরকে প্রথমে কুরআন-হাদীসের বাস্তব অনুসারি হতে হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement