২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজ আদায়ের সুযোগ দিতে জামায়াত আমিরের আহ্বান

স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে নামাজ আদায়ের সুযোগ দিতে জামায়াত আমিরের আহ্বান - ফাইল ছবি

চলমান লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদের ধারণ ক্ষমতানুযায়ী নামাজ আদায়ের সুযোগ দেয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা: শফিকুর রহমান বুধবার এক বিবৃতি দিয়েছেন।

বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘করোনাভাইরাসের ব্যাপক বিস্তৃতির প্রেক্ষাপটে সরকার ১৪ এপ্রিল থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করেছে। ওই ঘোষণায় গার্মেন্ট কারখানাসহ সকল কলকারখানা খোলা রাখা হয়েছে। এ সকল কলকারাখানায় হাজার হাজার শ্রমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ করছে।

তিনি বলেন, অন্য দিকে মসজিদে নামাজ আদায়ের ব্যাপারে কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ছোট-বড় সকল মসজিদে মাত্র ২০ জন মুসল্লিকে সালাত আদায়ের সুযোগ দেয়া হয়েছে। সাধারণ মুসল্লিরা মনে করে মসজিদের সাথে সরকারের এই আচরণ যুক্তিযুক্ত হয়নি। সরকারের এই আচরণে মুসল্লিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, নামাজ হলো আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনের অন্যতম মাধ্যম। ধর্মপ্রাণ ইসলাম প্রিয় মানুষ দৈনিক ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের মাধ্যমে তারা আল্লাহর সাথে আত্মিক সম্পর্ক স্থাপন করে থাকে। সে সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা যুক্তিসঙ্গত কি-না তা সরকারের ভেবে দেখা দরকার। ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মনে করে সরকার যদি জাগতিক উন্নতি ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে শ্রমিক বহুল কলকারখানা চালু রাখতে পারে, সেখানে আল্লাহর সাথে বান্দার সম্পর্ক স্থাপনের জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বাভাবিকভাবে মসজিদে নামাজ আদায়ের সুযোগও দেয়া যেতে পারে। তাই আমরা মনে করি, মসজিদগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে ধারণ ক্ষমতানুযায়ী সালাত আদায়ের সুযোগ দেয়া উচিত।

পবিত্র রমজান মাস তাক্বওয়া অর্জনের মাস, আত্মশুদ্ধির মাস। আত্মশুদ্ধির জন্য এ মাসে মুসলমানরা বেশি বেশি ইবাদত-বন্দেগী করে। তাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মসজিদের ধারণ ক্ষমতানুযায়ী নামাজ আদায়ের সুযোগ সৃষ্টির জন্য আমরা সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আহ্বান

এ দিকে পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা ও পবিত্রতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ রাজধানী ঢাকাবাসীর প্রতি পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা ও সিয়াম পালনের মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি পাওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন।

যৌথ বিবৃতিতে ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াত নেতৃবৃন্দ বলেন, মাহে রমজান আত্মশুদ্ধি-আত্মগঠন ও তাকওয়া অর্জনের মাস। পবিত্র এ রমজানই কুরআন নাজিলের মাস। কুরআন মানবজাতির প্রতি আল্লাহর দেয়া সর্বশ্রেষ্ঠ নিয়ামাত। মানবতার মুক্তির সনদ এই কুরআনের অনুশাসন মেনে চলার মাধ্যমেই আমাদের দুনিয়ায় শান্তি ও পরকালিন মুক্তি সম্ভব। ফলে পবিত্র কুরআন অধ্যয়নের মাধ্যমে কুরআনের জ্ঞান অর্জন এবং সেই অনুযায়ী নিজের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও রাষ্ট্রীয় জীবন গড়ে তোলার দৃঢ় সংকল্প গ্রহণ করার মাধ্যমেই সত্যিকার অর্থে পবিত্র রমজান মাসের হক আদায় করা সম্ভব হবে। কুরআন থেকে হেদায়াত লাভের জন্য যে মন-মানসিকতা ও চরিত্রের প্রয়োজন, সেই মন ও চরিত্র গঠনের উদ্দেশেই আল্লাহ তা’য়ালা মাহে রমাজানের সিয়াম পালনকে আমাদের জন্য ফরজ করেছেন। পূর্ণ মর্যাদা ও তাকওয়ার সাথে হক আদায় করে মাসব্যাপী সিয়াম পালনের মাধ্যমে মহান রবের সন্তুষ্টি অর্জনে সচেষ্ট হওয়ার জন্য আমরা সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, দেশে করোনাভাইরাসের অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মানুষ একেবারে অসহায় হয়ে পড়েছে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রাদুর্ভাবে অসংখ্য মানুষ আক্রান্ত ও মৃত্যুবরণ করছেন। অন্য দিকে দীর্ঘসময় পেয়েও সরকারের অদূরদর্শিতা, সঠিক সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনার অভাবে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত আয়ের মানুষের উপার্জন বন্ধ হয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিরোধী দল ও মতের প্রতি সরকার দমন নিপীড়ন অব্যাহত রেখেছে। নেতৃবৃন্দ ঈদের আগেই পবিত্র রমাজানে কারাবন্দী বিশ্ব নন্দিত মুফাসসিরে কুরআন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, এটিএম আজহারুল ইসলামসহ সকল জামায়াত নেতৃবৃন্দ ও বিরোধী দলের নিরপরাধ নেতা-কর্মীকে মুক্তি দেয়ার উদাত্ত আহ্বান জানান।

এ ছাড়াও নেতৃবৃন্দ মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষায় সকলের কাছে নিম্নোক্ত আহ্বান জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম কমান। দিনের বেলায় হোটেল-রেস্তোরাঁ বন্ধ রাখুন। কুরআন পড়ুন, কুরআন বুঝুন এবং আল-কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন। সুদ, ঘুষ, মদ, জয়া ও দুর্নীতি থেকে বিরত থাকুন। ফেসবুক-ইউটিউবসহ সকল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, টেলিভিশন এবং সিনেমা হলে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা বন্ধ করুন। নির্ধারিত খাতে যাকাত পরিশোধ করে নিজের সম্পদকে পবিত্র রাখুন। করোনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান করুন।

নেতৃবৃন্দ করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে মুক্তির জন্য পবিত্র রমজানের এই সময়ে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দরবারে বিশেষ দোয়া ও নফল ইবাদাত করার জন্য আহ্বান জানান।

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ

অন্য দিকে মাহে রমজান উপলক্ষে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকার আবার নতুন করে সর্বাত্মক লকডাউন ঘোষণা করেছে। এমতাবস্থায় শ্রমজীবী দিনমজুর মানুষরা কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সবকিছু বন্ধ থাকায় বেকার হয়ে পড়েছে দেশের লাখ লাখ মানুষ। দিনে আনে দিনে খায় এই সকল মানুষের বেঁচে থাকার জন্য রীতিমত সংগ্রাম করতে হচ্ছে। করোনার কারণে দেশের অনানুষ্ঠানিক খাতের সোয়া ৪ কোটি শ্রমজীবী মানুষের জীবন-জীবিকা আজ হুমকির মুখে পড়েছে। এই সকল কর্মহীন শ্রমজীবীদের অবিলম্বে সরকারি উদ্যোগে ত্রাণ দিতে হবে।

তিনি বুধবার বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মাহে রমজান উপলক্ষে শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সভাপতি আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে ও মহানগরী দফতর সম্পাদক মাহবুবুর রহমানের সঞ্চালনায় এই সময় উপস্থিত ছিলেন মহানগরী সহ-সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান মাসুম, মহানগরী সহ-সাধারণ সম্পাদক মো: সোহেল রানা মিঠু প্রমুখ।

আতিকুর রহমান বলেন, করোনাভাইরাস আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষের ওপর সবচেয়ে বেশি আঘাত হেনেছে। গত বছর প্রায় এক মাস লকডাউন চলার পর পুনরায় লকডাউন শ্রমজীবীদের দুর্দিন ফিরে এনেছে। বিশেষত রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, রেস্টুরেন্ট শ্রমিক, চায়ের দোকানদার, দোকান কর্মচারী, ফুটপাতের ছোট ব্যবসায়ীসহ এমন খেটে খাওয়া কর্মজীবীরা এখন ঘরবন্দী থাকতে হবে। দারিদ্রসীমার নিচে বসবাস করা এই সকল মেহনতি মানুষের সঞ্চিত কোনো অর্থ সম্পদ নেই, যা তারা এই সময় ভেঙে খেতে পারবে। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে শ্রমজীবী মানুষদের ঘরে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে। বিশেষত মাহে রমজানের এই সময় শ্রমজীবীদের কাছে সাহরি ও ইফতারের খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিতে হবে।

তিনি আরো বলেন, কঠোর লকডাউনের মধ্যেও গামের্ন্টস ও শিল্প কারখানা খোলা রয়েছে। দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে এর কোনো বিকল্প নেই। এই সকল কলকারখানায় কর্মরত শ্রমিকরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছেন। কলকারখানা মালিকগণকে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের এই কঠিন পরিস্থিতি ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করতে হবে। কোনো মানব সন্তান যেন অনাহারে না মারা যায় সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। কোনো শ্রমজীবী ভাই বোনেরা খাদ্য সঙ্কটে থাকলে আমাদের যাদের সামর্থ্য আছে তাদের এগিয়ে আসতে হবে।

প্রেস বিজ্ঞপ্তি


আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল