২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

গণতন্ত্রের মুখোশ পরে আ’লীগ সরকার জনগণকে বোকা বানাচ্ছে : মির্জা ফখরুল

- সংগৃহীত

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গণতন্ত্র বিশ্বাস করেই না। শুধুমাত্র জনগণকে বোকা বানানোর জন্য তারা গণতন্ত্রের মুখোশ পরে একদলীয় শাসনব্যবস্থা প্রকৃতপক্ষে এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চলেছে। ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বিএনপি মহাসচিব এ কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজকে প্রমাণিত হয়ে গেছে এ সরকার গণতন্ত্র বিশ্বাস করে না। শুধু জনগণকে বোকা বানানোর জন্য, গণতন্ত্রের মুখোশ পরে একদলীয় শাসনব্যবস্থা, প্রকৃতপক্ষে এক ব্যক্তির শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা অনেক কিছু করেছি। মিছিল-মিটিং, হরতাল করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা এই সরকারের টনক নড়াতে পারিনি। রাষ্ট্র পরিচালনায়, দেশের মানুষের সমস্যা সমাধানে, দেশের মানুষের কল্যাণে সমস্ত কিছুতেই এই সরকার সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়েছে।’

সরকারের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অনেক হয়েছে। এভাবে আর চলতে পারে না। আমরা পরিষ্কারভাবে জানাতে চাই- অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, অবিলম্বে জনগণের চোখের ভাষা পড়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। অন্যাথায় জনগণের উত্তাল ঢেউ সৃষ্টি হবে, সেই ঢেউয়ে আপনারা সবাই ভেসে যাবেন।’

তিনি আরো বলেন,‘জনগণের উদ্দেশেও বলতে চাই, আপনারা আর নিশ্চুপ হয়ে থাকবেন না। যে অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে আজকে যদি আমরা প্রতিবাদ না করি, রুখে না দাঁড়াই তাহলে ১৯৭১ সালে আমরা যে স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম, আমরা যে ১৯৯০ সালে গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করেছিলাম, যে গণতন্ত্রকে আমরা ছিনিয়ে নিয়ে আসছিলাম সেই গণতন্ত্রকে তারা আবার হরণ করেছে। সুতরাং আমাদের সবাইকে আজকে রুখে দাঁড়াতে হবে, অধিকারকে ফিরিয়ে আনতে হবে, আমাদের গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘ভিন্নমতকে স্তব্ধ করে দেয়ার জন্য সরকার আজকে সাংবাদিক, রাজনীতিবিদ এবং সাধারণ মানুষ যারা ভিন্নমত পোষণ করে লেখালেখি করে, সোশ্যাল মিডিয়াতে কোনো কথা বলে তখনই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়। যে মামলাতে সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতার করা হয়েছে একটা মিথ্যা অপবাদ, একটা অপব্যাখ্যা এবং সেই সঙ্গে আইনের একটা অপব্যাখ্যা দিয়ে তাকে গ্রেফতার করে বিনা জামিনে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।’

অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজী, দৈনিক সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদের মুক্তি এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিও জানান মির্জা ফখরুল।

করোনা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ভয়াবহ করোনা আমাদের সবার মুখে মুখে ছড়িয়ে দিয়েছে। করোনা সারা বিশ্বের সবচেয়ে বড় সমস্যা। সেই করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। শুধু ব্যর্থ নয়, তারা জেনেশুনে করোনাভাইরাসকে ব্যবহার করে দুর্নীতি-লুটপাটের পাহাড় গড়ে তুলেছে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সারা দেশে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। বন্দুকের জোরে, ক্ষমতার জোরে, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় বসে আছে। আজ বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হয়ে পড়েছে। এই সরকারের ব্যর্থতার কারণে রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান হয়নি। রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে এই সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। আমরা পরিষ্কার করে বলতে চাই, এ ধরনের অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন আর সহ্য করা হবে না।’

তিনি বলেন, ‘এই নির্বাচন কমিশন ও সরকার যৌথভাবে এই নির্বাচনকে তাদের একটা হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে ক্ষমতায় টিকে থাকবার জন্য। তারা নির্বাচন নির্বাচন খেলা করছে। নির্বাচনের নামে তারা আজকে ত্রাস সৃষ্টি করেছে।’

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের উদ্যোগে সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজীকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে এ মানববন্ধন অনুষ্টিত হয়। সংগঠনের নেতা সাংবাদিক শওকত মাহমুদের সভাপতিত্বে ও সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেনের পরিচালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ছড়াকার আবু সালেহ, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব এম আবদুল্লাহ, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের কাদের গনি চৌধুরী, শহীদুল ইসলাম, এগ্রিকালচারিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের অধ্যাপক আবদুল করীম, শামীমুর রহমান শামীম, প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন, প্রকৌশলী ফখরুল আলম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের রফিকুল ইসলাম, নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের জাহানারা বেগম, জাসাসের রফিকুল ইসলাম প্রমুখ পেশাজীবী নেতারা।


আরো সংবাদ



premium cement