ক্ষুদ্র আয়ের মানুষদের জন্য দুর্যোগকালীন তহবিল গঠন করুন : ডা. শফিকুর রহমান
- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ২৯ মার্চ ২০২০, ১৯:০৬
করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে দিন আনে দিন খায় এবং ক্ষুদ্র আয়ের মানুষদের জন্য এখনই দুর্যোগকালীন তহবিল গঠনের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তার প্রস্তুতি নিতে সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামী আমীর ডা. শফিকুর রহমান।
রোববার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, একা সরকারের পক্ষে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। তাই দলমতের ঊর্দ্ধে উঠে জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে সকলকে সম্পৃক্ত করে সমন্বিত প্রয়াসের মাধ্যমে পরিস্থিতি উত্তরণে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক আয়ের মানুষ এবং শ্রমজীবী ও গ্রামীণ অর্থনীতির উপর নির্ভরশীল ক্ষুদ্র আয়ের লোকদের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানিয়ে ডা. শফিক গণমাধ্যমে এই বিবৃতি দেন।
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত বৈশ্বিক মহামারির কারণে লাখ লাখ মানুষের জীবনই শুধু ঝুঁকির মুখে পড়ছে না, অর্থনীতিতেও পড়তে যাচ্ছে বড় আকারের নেতিবাচক প্রভাব। করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের সবকিছু প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা সবই বন্ধ। শহর-গ্রাম নির্বিশেষে দিন আনে দিন খায় এমন অসহায় মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। শহরের মানুষ এখন গ্রামমুখী। সংগত কারণেই গ্রামের উপর চাপ বাড়বে।
জামায়াতের আমীর বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান খাত হচ্ছে কৃষি। কৃষিখাতে প্রায় আড়াই কোটি মানুষ কর্মরত। সরকারের যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে কৃষিখাত ভয়াবহ বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে পারে। ইতোমধ্যেই করোনা ভাইরাসের প্রভাবে কৃষির সাথে সম্পৃক্ত ডেইরী, পোল্ট্রি, ফিসারীসহ গ্রামীণ অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। কৃষি খাতের পাশাপাশি ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পে নিয়োজিত বিপুল সংখ্যক মানুষ কার্যত আজ বেকার হয়ে পড়েছে। দেশের অধিকাংশ দোকান, পরিবহন ও কারখানা বন্ধ থাকায় জনজীবনে স্থবিরতা নেমে এসেছে। এ স্থবিরতার চরম প্রভাব ফেলছে দেশের অর্থনীতিতে। একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিসংখ্যাণ অনুযায়ী বাংলাদেশের অর্থনীতির দৈনিক ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। মানুষ অবরুদ্ধ হয়ে পড়ায় খাদ্য নিরাপত্তার ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে গোটা দেশ। রাজধানী ঢাকাসহ শহরগুলোর সাথে দেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় কৃষক তার উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত করতে পারছে না। ফলে তারা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে কৃষিখাতে। অপরদিকে অর্থনীতিবিদগণ বিশ্বব্যাপী ভয়াবহ মন্দার আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। বৈশ্বিক মন্দার কারণে বাংলাদেশের রফতানি বাণিজ্য ও পর্যটন শিল্পে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদগণ। এর সামগ্রিক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে। কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ধরে রাখার জন্য প্রয়োজন ডেইরী, পোল্ট্রি, ফিসারিসহ প্রান্তিক চাষীদের প্রতি সরকারের প্রত্যক্ষ পৃষ্ঠপোষকতা।
তিনি বলেন, দেশের চলমান পরিস্থিতিতে আর্থিক মন্দা বিশেষ করে কৃষি নির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতির সম্ভাব্য সংকট মোকাবিলায় যথাযথ প্রস্তুতি নেয়ার জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানাচ্ছি।
প্রশাসনের কতিপয়ের বাড়াবাড়ি বন্ধের আহবান : এদিকে প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তির বাড়াবাড়ি বন্ধ করে জনগণের সাথে সুন্দর ও মানবিক আচরণ করার আহবান জানিয়েছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
গতকার পৃথক বিবৃতিতে তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারাদেশে কাজ করছে মাঠ প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। জনজীবন সচল রাখার জন্য চিকিৎসা, ওষুধ, নিত্যপণ্য, খাদ্যদ্রব্য, বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং ও মোবাইল ফোনসহ আবশ্যক সকল জরুরী সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তি ও যানবাহনের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। হোটেল-বেকারীগুলো খোলা রাখার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। এ সব কাজ বাস্তবায়নে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলা হয়েছে।
সরকারের এসব স্পষ্ট নির্দেশিকা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনের কতিপয় ব্যক্তি নাগরিকদের রাস্তায় ফেলে মারধর করছে এবং কান ধরে ওঠবস করাচ্ছে। এই কাজগুলো অবশ্যই গর্হিত, অমানবিক, অনৈতিক ও বেআইনী। প্রজাতন্ত্রের কোনো কর্মচারী নাগরিকদের সাথে এ ধরনের গর্হিত ও অন্যায় আচরণ করতে পারেন না। সেবার মনোভাব নিয়ে তাদেরকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা