২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
আদালতে মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের কাবিন সমর্থনে সাক্ষ্য

রিফাত হত্যার আগের দিনও নয়ন বন্ডের বাসায় গিয়েছিল মিন্নি

রিফাত হত্যার আগের দিনও নয়ন বন্ডের বাসায় গিয়েছিল মিন্নি - ছবি : সংগৃহীত

বরগুনায় বহুল আলোচিত চাঞ্চল্যকর শাহনেওয়াজ রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে বুধবার আরও তিনজন সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। এদিন মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের কাবিনের সাক্ষী জান্নাতুল ফেরদৌস, নয়ন বন্ডের বাসার ভাড়াটিয়া হাবিবুল্লাহ ও আনোয়ারুল কবির আদালতে সাক্ষী দিয়েছেন। রিফাত হত্যার আগের দিনও মিন্নিকে নয়নের বাসায় যেতে দেখেছেন তারা। সাক্ষ্য দেয়ার সময় আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ ৯ জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিল। এ পর্যন্ত জেলা ও দায়রা আদালতে ৩১ এবং শিশু আদালতে ১৫ জনের সাক্ষ্য জেরা সমাপ্ত হলো।

বুধবার সকাল সাড়ে নয়টায় বরগুনা জেলা কারাগার হতে পুলিশ পাহারায় ৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক আসামিকে দায়রা আদালতে উপস্থিত করেন। জামিনে থাকা আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিও আদালতে উপস্থিত হয়। আসামি মুছা পলাতক রয়েছে। সাক্ষ্য শেষে আসামিদের আবার কারাগারে পাঠায়। সকাল সাড়ে নয়টায় আদালত এজলাসে বসেন জেলা ও দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামান।

আদালতে সাক্ষ্য দেয় মিন্নি ও নয়ন বন্ডের বিয়ের কাবিনের সাক্ষ্য জান্নাতুল ফেরদৌস, নয়ন বন্ডের বাসার ভাড়াটিয়া হাবিবুল্লাহ ও আনোয়ারুল কবির।

আদালতে সাক্ষ্য শেষে জান্নতুল ফেরদৌস বলেন, আমি যা দেখেছি তা আদালতে বলেছি। শুধু এ টুকু বলতে পারি আদালতে কোন অসত্য সাক্ষী দেইনি। আমার স্বামীর ঘর নয়ন বন্ডের ঘরের পাশে। নয়ন বন্ড ও আমার স্বামী সাইফুল ইসলাম বন্ধু।

সাক্ষী হাবিবুল্লাহ বলেন, আমি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এক বছর আগে নয়ন বন্ডের বাসায় ভাড়া থাকি। ২০১৮ সালের ১৫ অক্টোবর নয়ন ও মিন্নির সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর মিন্নি কিছুদিন নয়নের বাড়ীতে ছিল। এ ছাড়াও আর কিছু বলতে পারবো না। তবে আমি যতটুকু জানি বা দেখেছি তা আদালতে বলেছি।

সাক্ষী আনোয়ারুল কবির বলেন, আমরা নয়ন বন্ডের বাসায় ভাড়া থাকি। নয়ন বন্ড মিন্নিকে বিয়ে করে। পরে শুনতে পাই মিন্নি রিফাত শরীফ নামের একটি ছেলেকে বিয়ে করেছে। আমাকে আইনজীবীরা জেরা করেছেন। আমি যতটুকু জানি সে টুকু আদালতে বলেছি। আসামি মিন্নির পক্ষে জেরা করেন। আইনজীবী মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, আজকে যারা সাক্ষ্য দিয়েছেন, তারা কেহই বলেননি মিন্নি রিফাত শরীফ হত্যার সাথে জড়িত ছিল। তা ছাড়া আমরা কাবিন নামা চ্যালেঞ্জ করেছি। ওই কাবিন নামা মিন্নি নয়ন বন্ডের নয়। কাবিন নামা সৃষ্টি করা।

রাষ্ট্র পক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর ভুবন চন্দ্র হাওলাদার বলেন, আদালতে তিনজনের সাক্ষ্য ও জেরা সমাপ্ত হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।

শিশু আদালতে ১৪ আসামী বিরুদ্ধে দুইজন সাক্ষ্য প্রদান
রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় শিশু আদালতে বুধবার দুইজন সাক্ষ্যের ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। ওই আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন নাজমুল হাসান ও সাইফুল ইসলাম। শিশু আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান তাদের সাক্ষ্য রেকর্ড করেন। তাদেরকে ১০জন আইনজীবী জেরা করেন।

বুধবার সকালে নিত্য দিনের মত বরগুনা কারাগার থেকে শিশু আসামি ৯ জন ও জামিনে থাকা ৫ জন আসামী আদালতে উপস্থিত হয়।

শিশু আদালতে সাক্ষ্য শেষে নাজমুল হাসান বলেন, রিফাত শরীফ আমার বাল্য বন্ধু। ২৬ জুন আমি বাড়ীতে ছিলাম। আমার এক বন্ধু আমাকে জানায় বরগুনা সরকারী কলেজের সামনে সকাল সোয়া ১০টার সময় আসামী রিফাত ফরাজি, নয়ন বন্ড, রিশান ফরাজিরা রিফাত শরীফকে কুপিয়েছে। রিফাত শরীফকে বরিশাল নেয়ার পর আমিও বরিশাল যাই। পরে ভিডিও ফুটেজে দেখতে পাই আসামীরা রিফাত শরীফকে মারধর করে কোপায়। আমি যত টুকু জানি এবং দেখেছি আদালতে তা বলেছি। সাক্ষ্য সাইফুলও অনুরুপ ভাবে আদালতে সাক্ষ্য দেয়।

আসামি পক্ষে মনিরুজ্জামান বলেন, আমার জেরায় আসামীরা হত্যা সঙ্গে সম্পৃক্ত তা প্রমান হয়নি।

রাষ্ট্র পক্ষে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, সাক্ষ্যরা যে ভাবে আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে যাচ্ছেন তাতে রাষ্ট্র ন্যায় বিচার পাবে।


আরো সংবাদ



premium cement