২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগে পরিবর্তনের আভাস

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগে পরিবর্তনের আভাস - ছবি : সংগৃহীত

মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৩০ নভেম্বর। সম্মেলনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হয়ে উঠছেন। নতুন নেতৃত্ব নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদে হাজী আবুল হাসনাত ও শাহে আলম মুরাদ পুনর্বহাল হবেন নাকি নতুন কাউকে স্থলাভিষিক্ত করা হবে এ নিয়ে এখন নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনার ঝড় বইছে। ইতোমধ্যে কৃষক লীগ, জাতীয় শ্রমিক লীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগে নতুন নেতৃত্ব দেয়া হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বেও পরিবর্তনের আভাস পাওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, ২০১৬ সালের ১০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর দক্ষিণে হাজী আবুল হাসনাতকে সভাপতি ও শাহে আলম মুরাদকে সাধারণ সম্পাদক করে ২৪টি থানা, ৫৭টি ওয়ার্ড ও সাতটি ইউনিয়নের কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ। ওই সময় শুধু সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের নাম ঘোষণা করা হয়। এরপরে ১১ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হয়। তৃণমূল নেতাদের অভিযোগ আছে, তিন বছর কেটে গেলেও এখনো পর্যন্ত সবগুলো থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি বর্তমান শীর্ষ নেতৃত্ব। ধানমন্ডি, হাজারীবাগ, কলাবাগান, নিউ মাকের্ট, কামরাঙ্গীরচর, শাহবাগ, ওয়ারী, গেন্ডারিয়া, কোতোয়ালি, শ্যামপুর ও কদমতলী থানার পূর্ণাঙ্গ কমিটি দিলেও এখানে বড় ধরনের লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে এবং এ বিষয়টি দক্ষিণের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে আলোচনা হয়। লেনদেনের অভিযোগ ওঠার পরই বিভিন্ন সময় কেন্দ্রীয় একাধিক নেতা আওয়ামী লীগ প্রধানকে অবহিত করেন। ওই সময় আওয়ামী লীগ প্রধান কেন্দ্রীয় ওই নেতাদেরকে নগরে বিকল্প নেতৃত্ব খোঁজারও নির্দেশ দেন বলে নির্ভরযোগ্য একটি সূত্রে জানা গেছে। যদিও হাজী আবুল হাসনাত আদি ঢাকাইয়া হিসেবে দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে পুনর্বহাল হতে আগ্রহী। অনেকেই মনে করেন, বয়সজনিত কারণে আবুল হাসনাতের বাদ পড়ার ঝুঁকিও আছে। সে ক্ষেত্রে সভাপতি হিসেবে আলোচনায় আছেন আইনজীবী নেতা অ্যাডভোকেট কাজী মো: নজীবুল্লাহ হিরু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ২৩ নম্বর ওয়ার্ডের একাধিকবার নির্বাচিত কাউন্সিলর আদি ঢাকাইয়া আলহাজ মো: হুমায়ুন কবির ও সহসভাপতি আবুল বাশারসহ অন্তত এক ডজন নেতা। আর শাহে আলম মুরাদ সাধারণ সম্পাদকের পরিবর্তে সভাপতি পদে দৌড়ঝাঁপ দিচ্ছেন বলে তার ঘনিষ্ঠজন সূত্রে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ সম্পাদক পদে নতুন নেতৃত্ব আসছে নগর নেতাকর্মীদের মধ্যে এমন আলোচনা এখন জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক পদে আলোচনায় আছেন ছাত্রলীগের দুঃসময়ের কাণ্ডারি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক, ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতা এবং নারায়ণগঞ্জ-২ আসনের এমপি নজরুল ইসলাম বাবু, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথি বোর্ডের চেয়ারম্যান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা: দিলীপ রায়, মহানগর দক্ষিণের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং অবিভক্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মরহুম এম এ আজিজের ছেলে ওমর বিন আজিজ (তামিম), দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আশরাফ হোসেন তালুকদার, মহিলাবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তাহমিনা বেগম, ছাত্রলীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহদফতর সম্পাদক মো: মিরাজ হোসেন, অবিভক্ত শ্যামপুর-কদমতলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা-৪ আসনের সাবেক এমপি অ্যাডভোকেট সানজিদা খানমসহ অন্তত ডজনখানেক নেতা।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ এ প্রসঙ্গে নয়া দিগন্তকে বলেন, সম্মেলনের প্রস্তুতি পুরোদমে চলছে। কমিটি গঠনে তৃণমূলের আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে তিনি বলেন, শুধু অভিযোগ করলে তো হবে না, প্রমাণ তো থাকতে হবে। এগুলো ভিত্তিহীন। থানা ও ওয়ার্ডের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা প্রসঙ্গে শাহে আলম মুরাদ বলেন, পূর্ণাঙ্গ কমিটির তালিকা কেন্দ্রে জমা দেয়া আছে। সেখান থেকে নির্দেশনা এলেই হয়ে যাবে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী আবুল হাসনাত নয়া দিগন্তকে বলেন, কমিটি গঠনে লেনদেনের বিষয়টি আমি জানি না। পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন হয়নি সে বিষয়টি আমার জানা নেই। আমার কাছে কেউ জমা দেয়নি। এগুলো দফতর জানে। নতুন নেতৃত্ব প্রসঙ্গে আবুল হাসনাত বলেন, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। নেত্রী যেখানে রাখবেন সেখানেই থাকব।

নতুন নেতৃত্ব প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা ড. আব্দুর রাজ্জাক এমপি নয়া দিগন্তকে বলেন, দক্ষ, যোগ্য, অভিজ্ঞ এবং যাদের কোনো বিতর্ক নেই তারাই মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আসবেন।

 


আরো সংবাদ



premium cement