২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাজেট বক্তৃতায় সংসদে যা বললেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা

বাজেট বক্তৃতায় সংসদে যা বললেন ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা - ফাইল ছবি

জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় অংশ নিয়ে বিরোধী দলীয় সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বিএনপি চেয়ারপাসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন। একইসাথে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম জিয়াকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার সংসদে রুমিন ফারহানা বাজেট বক্তৃতায় ২০২১-২২ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন অসঙ্গতিও তুলে ধরেছেন।

এখানে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার বাজেট বক্তব্যটি নয়া দিগন্ত পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-

তিনবারের সফল প্রধানমন্ত্রী, দেশনেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও তার বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আমার বাজেট বক্তৃতা শুরু করছি।

কেবল হ্যাঁ-নার মধ্যে আটকে থাকা সংসদে আমার এই বাজেট বক্তব্যের মূল লক্ষ্য দেশের সাধারণ জনগণ। কারণ আমি জানি আমার কোনো কথাই সরকার গ্রহণ করবে না।

আমি বিশ্বাস করি, সরকারের দিক থেকে বাজেট একেবারে ঠিক আছে। ক্ষমতায় থাকতে যাকে প্রয়োজন তার জন্যই তো বাজেট হবে। ক্ষমতায় থাকতে জনগণের ম্যান্ডেট লাগলে জনগণকে খুশি করতে হবে, আর ক্ষমতায় থাকতে যদি প্রয়োজন হয় কিছু ক্রোনি ব্যবসায়ী আর আমলা, তাহলে তাদের জন্যই বাজেট হবে; হয়েছেও সেটা। আপনার হাতে যে পরিমাণ সম্পদ আছে সেটা আপনি ‌ব্যয় করবেন আপনার প্রায়োরিটি অনুযায়ী, আপনার যাদের প্রয়োজন তাদের পেছনে।

করোনার লকডাউনের মধ্যে গত বছর অর্থমন্ত্রী বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৮ দশমিক ২ শতাংশ হবে বলে লোক হাসিয়েছিলেন। এবার অর্থমন্ত্রী দাবি করছেন, ৭ দশমিক ২ শতাংশের কথা। যদিও বিশ্বব্যাংকের মতে, এটি ৫ দশমিক ১ শতাংশ হতে পারে। প্রবৃদ্ধি মানেই যে সু-সরকার, সুশাসন বা জনগণের সরকার নয় তার প্রমাণ হলো বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ডেটায় গেলে যে কেউ দেখতে পাবেন, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দু’টি উল্লেখযোগ্য জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল ৯ দশমিক ৪৮ ও ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ। যথাক্রমে ১৯৬৮ ও ১৯৬৪ সালে, আইয়ুব খানের আমলে।

স্বাস্থ্য
সরকার বড়াই করে বলছে, মাথাপিছু আয়ে নাকি বাংলাদেশ ভারতকে ছাড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ বাংলাদেশ এখন নাকি ভারতের চাইতে ধনী দেশ। দেখা যাক আমাদের চাইতে গরিব ভারত করোনায় স্বাস্থ্যখাতে কী করেছে।
নতুন অর্থবছরের বাজেটে ভারত স্বাস্থ্য ও ভালো থাকা (হেলথ অ্যান্ড ওয়েল-বিয়িং) খাতে অর্থ বরাদ্দ করেছেন দুই লাখ ২৪ হাজার কোটি রুপি, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৯৪ হাজার কোটি রুপি। অর্থাৎ সেই দেশের স্বাস্থ্য বাজেট আগের অর্থবছরের তুলনায় ১৩৭ শতাংশ বেড়েছে বা প্রায় আড়াই গুণ হয়েছে। এই বরাদ্দ হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি; করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারত বিপর্যস্ত হওয়ার আগেই।

আর আমাদের দেশে ২০২১-২০২২ সালের প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ চলতি বছরের বরাদ্দের তুলনায় মাত্র ১২ শতাংশ বেশি। চলতি বছরে সংশোধিত বাজেটে স্বাস্থ্য বরাদ্দ যেহেতু কিছুটা বেড়েছে, তাই সংশোধিত বাজেটের সাথে তুলনা করলে প্রস্তাবিত বাজেটে বৃদ্ধির পরিমাণ মাত্র ৪ শতাংশ। আমাদের অর্থমন্ত্রী কি নির্মালা সীতারমনের কাছ থেকে একটু শিখবেন?

বাজেটে বলা হচ্ছে, ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য কৌশলপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। অথচ স্বাস্থ্যখাতে ব্যক্তির নিজস্ব ব্যয় কেবলই বাড়ছে। ২০১২ সাল থেকে চিকিৎসায় ব্যক্তিগত খরচ ৬০ ভাগ থেকে ক্রমাগত বেড়ে ৭২ ভাগে পৌঁছেছে। বাকি ২৮ ভাগের পুরোটাও সরকারের ব্যয় নয়। এর একটা বড় অংশ এনজিও থেকে আসে। প্রতিবছর স্বাস্থ্য ব্যয় মেটাতে দারিদ্র্য সীমার নিচে চলে যায় ৬৬ লাখ মানুষ।

এ দিকে চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে সার্বিকভাবে এডিপির ৪৯ ভাগ বাস্তবায়িত হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এই হার মাত্র ২৫ ভাগ। এই মহামারীর মধ্যে অপর্যাপ্ত বরাদ্দের অর্ধেকও খরচ করতে পারেনি তারা। আর ১০ হাজার মানুষের জন্য পাঁচজন ডাক্তার আর তিনজন নার্স নিয়ে চলছে স্বাস্থ্যখাত।

বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী এখনো ভারত থেকে তিন কোটি টিকা পাওয়ার গল্প করছেন। অথচ ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, এ বছর শেষ হওয়ার আগে তারা কোনোরকম টিকা রফতানি করতে পারবে না। যদিও টিকার দাম আগেই চুকানো হয়ে গেছে। আর এক অতিরিক্ত সচিব সিনোফার্ম টিকার দামের তথ্য জানিয়ে দেওয়ার পর সেই টিকা প্রাপ্তিও অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

অর্থমন্ত্রী স্বপ্ন দেখছেন মাসে ২৫ লাখ টিকা দেয়ার, যেখানে টিকার কোনো উৎসই এখন পর্যন্ত ঠিক হয়নি। আর এই হিসাবেও ১৭ কোটি মানুষের ৮০ ভাগ অর্থাৎ ১৩ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে সময় লাগবে আট বছরের বেশি। ওদিকে ভারতের পরিকল্পনা হচ্ছে দিনে এক কোটি টিকা দেয়া।

সামাজিক সুরক্ষা
আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে কাগজে-কলমে এক লাখ সাত হাজার কোটি টাকার বেশি বাজেট বরাদ্দ দেখানো হচ্ছে, এই খাতে। অথচ এতেই আছে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসর ভাতা-গ্র্যাচুইটি, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, সঞ্চয়পত্রের সুদ, উপবৃত্তির টাকা, এমনকি প্রণোদনার জন্য দেয়া ঋণের সুদে ভর্তুকি সমন্বয়ের অর্থ। এসব ক্ষেত্রেও কিছু দারিদ্র্য প্রান্তিক মানুষ সাহায্য পেয়ে থাকতে পারে। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হচ্ছে, গরিব মানুষকে টার্গেট করে কত টাকা বরাদ্দ হচ্ছে এই খাতে?

বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা,‌‌ প্রতিবন্ধী ভাতা এরকম নানা শ্রেণীতে সমাজের প্রান্তিক মানুষকে ভাতা দেয়া হয়। বর্তমান অর্থবছরে এমন মানুষের মধ্যে সামাজিক নিরাপত্তা ভাতা পেয়েছে ৯৮ লাখ জন। আগামী অর্থবছরে কিছু কিছু কর্মসূচির আওতা বাড়ানো হচ্ছে। তাতে নতুন ১৪ লাখ উপকারভোগীর যুক্ত হয়ে সর্বমোট সংখ্যা দাঁড়াবে এক কোটি ১২ লাখ জন। এদের পেছনে মোট বরাদ্দ বছরে সর্বোচ্চ সাত হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ জিডিপির মাত্র ০ দশমিক ২২ ভাগ প্রান্তিক মানুষের জন্য সরাসরি বরাদ্দ।

সরকারি গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক সুরক্ষায় তালিকাভুক্তদের কমপক্ষে ৪৬ ভাগ ভাতা পাওয়ার যোগ্য নন। কারণ, তারা সামর্থ্যবান। আমরা দীর্ঘ দিন থেকেই এরকম অভিযোগ দেখেছি সরকার ও সরকারি দলের সাথে জড়িত লোকজন দেশের দারিদ্র্যদের জন্য বরাদ্দকৃত ভাতা নিজেদের ও তাদের আত্মীয়-স্বজনের নামে করে তুলে নেন। অর্থাৎ সামাজিক সুরক্ষার প্রকৃত দুঃস্থ উপকারভোগীর সংখ্যা বিবেচনা করি তাহলে তা দাঁড়ায় মাত্র ৬০ লাখ।

মধ্যবিত্ত
বেসরকারি সংস্থা পিপিআরসি ও ব্র্যাকের যৌথ গবেষণা জরিপে দেখা গেছে করোনার অভিঘাতে এই বছরের মার্চে দেশে নতুন করে দরিদ্র হয়েছে ২ কোটি ৪৫ লাখ মানুষ। আর সানেম জানায় গত বছরের নভেম্বর-ডিসেম্বরে দেশের দারিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী জনসংখ্যার অনুপাত ছিল ৪২ শতাংশ। অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. আবুল বারাকাতের সম্প্রতি দেখিয়েছেন, ১৭ কোটি মানুষের দেশে ২০২০ সালে কোভিডের লকডাউনের ফলে শ্রেণি কাঠামো পাল্টে হয়েছে দরিদ্র ৪০ শতাংশ, মধ্যবিত্ত ৫০ শতাংশ আর ধনী ১০ শতাংশ, যা আগে ছিল যথাক্রমে ২০, ৭০ ও ১০ শতাংশ।

করোনা দেশের কমপক্ষে ২০% মধ্যবিত্তকে দরিদ্র বানিয়ে দিয়েছে। অবশ্য অর্থমন্ত্রী বলছেন বিবিএস বা বিআইডিএসের মত সরকারি সংস্থার তথ্য ছাড়া তিনি মানবেন না। তাহলে বলি। ঠিক এক বছর আগে ২০২০ সালের জুন মাসের শেষের দিকে বিআইডিএস জানিয়েছিল ওই সময় পর্যন্ত দেশে ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ দারিদ্র্যের কাতারে নতুন করে যুক্ত হয়েছে।

আর করোনার আগেই ২০১৯ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে করা এক সমীক্ষায় বিবিএস জানিয়েছিল, শহরের ৮ শতাংশ দরিদ্র পরিবার না খেয়ে ঘুমাতে যায়, ১২ শতাংশের ঘরে খাবার নেই, ২১ শতাংশেরও বেশি দরিদ্র পরিবারে পর্যাপ্ত খাবার নেই, আর সারাদিনে একবেলাও খেতে পায় না প্রায় ৩ শতাংশ শহুরে দরিদ্র পরিবার। করোনার সময়ে তাহলে পরিস্থিতি নিশ্চয়ই এর চাইতে বহুগুণ বেশি খারাপ হয়েছে। আমার প্রশ্ন, বিআইডিএস ও বিবিএস এর এসব তথ্য কি বিশ্বাস করেন অর্থমন্ত্রী?

এই যে করোনার মধ্যে অর্থনৈতিক সংকট চলছে সেটার জন্য কেন বিআইডিএস কিংবা বিবিএস কে দিয়ে নতুন জরিপ করানো হয়নি? আসলে তথ্য জানলেই তো তাদের জন্য কাজ করার প্রশ্ন আসে; তার চেয়ে অনেক সহজ ডিনায়েল। ডিনায়ালের চর্চা দেখছি আর সব মন্ত্রীর মতো স্বাস্থ্যমন্ত্রীর ক্ষেত্রেও। স্বাস্থ্যখাতের সর্বব্যাপি দুর্নীতি যখন করোনার সময়ে মানুষের সামনে বেশি করে আসলো তখন স্বাস্থ্যমন্ত্রী স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগ তোলা একটা ফ্যাশন বলে সমালোচকদের বিদ্রুপ করছেন। তবে তিনি এটাও বলেছেন, তার মন্ত্রণালয় সাধু, অন্যরা টাকা পাচার করছে। মনে পড়লো, অর্থমন্ত্রী আবার টাকা পাচারের কথা জানেনই না।

বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা আগের মতোই তিন লাখ টাকা রাখা হয়েছে। করোনার মধ্যেই সাধারণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী এবং সন্তানদের অনলাইন ক্লাসের জন্য ডিজিটাল ডিভাইস, ইন্টারনেট ডেটা, ‘ইলেকট্রনিক গ্যাজেট’ কেনা ইত্যাদি খাতে খরচ অনেক বেড়েছে। নানা দফায় গণপরিবহন বন্ধ থাকার কারণে বেড়েছে যাতায়াত ব্যয়ও। সহজে শনাক্ত করা যায় বলে চাকুরীজীবী মধ্যবিত্তদেরই আয়করের প্রধান টার্গেটে পরিণত করা হয়েছে।

শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার। দেশের মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের অনেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। ট্রাস্ট আইনের অধীনে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর আয়কর বসানো বেআইনি এনং এটা আখেরে ছাত্র-ছাত্রীদের টিউশন ফি এর ওপর ধার্য হয়ে তাদের জীবন দুর্বিষহ করে তুলবে।

করোনার সময় দেশে স্থায়ীভাবে ফিরতে বাধ্য হওয়া কমপক্ষে ৫ লক্ষ প্রবাসীদের জন্য এই বাজেটে কিছুই করা হয়নি। গত বছরের জুনে প্রবাসীদের কম সুদে ও সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার জন্য মাত্র ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। এর মধ্যে সরকার থেকে ছাড় করা হয়েছে ২৫০ কোটি টাকা আর গত মার্চ পর্যন্ত বিতরণ করা হয়েছে মাত্র ১৪৮ কোটি টাকা। যাদের শ্রমে ঘামে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি সরকার। সব মিলিয়ে মধ্যবিত্তকে পরিণত করা হচ্ছে এক বিলুপ্ত প্রজাতিতে।

বিনিয়োগ
প্রস্তাবিত বাজেটে দেশীয় শিল্প এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে বেশ কিছু নীতি-সহায়তা লক্ষ্য করে কেউ কেউ বাজেটকে বিনিয়োগ বান্ধব বলছেন। তবে মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বাড়াতে না পারলে কোনও সহায়তাই ব্যবসায় প্রকৃত সহায়তা হবেনা। করোনার অভিঘাতে কর্মহীন কয়েক কোটি দরিদ্র, নিম্ন-মধ্যবিত্ত মানুষের হাতে নগদ অর্থ তুলে দিলে সেটাই বাজারে চাহিদা তৈরি করে শিল্প-ব্যবসাকে এমনিতেই চাঙা করে তুলতো; তাদেরকে প্রনোদনার নামে ঋণ দেবার দরকার হত না।

জনগণের হাতে নগদ অর্থ তুলে দিয়ে মানুষকে করোনার কবল থেকে বাঁচিয়ে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের কথা বিএনপি বার বার বলেছে। কিন্তু মন্দার সময়ের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের এই কেইন্সিয়ান তত্ত্বের আশপাশ দিয়ে যায়নি সরকার। আমরা দুর্যোগে মানুষের হাতে টাকা তুলে দিচ্ছি না, অথচ বর্তমান পৃথিবী আলোচনা করছে দুর্যোগ নয়, স্বাভাবিক সময়েও মানুষের হাতে নগদ টাকা দেয়া ইউনিভার্সাল ব্যাইসিক ইনকাম নিয়ে। উন্নত দেশ তো বটেই কেনিয়া, উগান্ডার মতো আফ্রিকার দেশ, এমনকি ভারতও কয়েক বছর আগে থেকেই এটা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।

সর্বোপরি সর্বগ্রাসী দুর্নীতি,লুটপাটের কারণে বাজেটে যেটুকু বরাদ্দ হয় সেটুকুর উপকারও জনগণের কাছে পৌঁছে না। লুটপাট বন্ধ আর সরকারের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারলে এই বাজেট বরাদ্দেও জনগণ অনেক কিছুই পেতে পারত।

একটা সরকারের চরিত্রের ওপর নির্ভর করে বাজেটের চরিত্র কেমন হবে। সরকার যদি হয় by the looters, for the looters, of the looters তাহলে বাজেটও হবে লুটেরা রক্ষারই বাজেট, তাতে জনগণের অংশীদারিত্ব থাকবে না সেটাই স্বাভাবিক।


আরো সংবাদ



premium cement