১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সংসদে রুমিন ফারহানার ৭টি প্রশ্ন

সংসদে রুমিন ফারহানার ৭টি প্রশ্ন - ছবি সংগৃহীত

জাতীয় সংসদে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা সোমবার বক্তব্য রেখেছেন। তার বক্তব্য এখানে তুলে ধরা হলো।

যেহেতু ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ১৯৭১ সালের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত বাংলাদেশে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে প্রতিনিধি নির্বাচিত করা হয়েছিল;
এবং
যেহেতু এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ ১৬৯টি আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় ১৬৭ জন প্রতিনিধি নির্বাচিত করেছিল;

এবং
যেহেতু জেনারেল ইয়াহিয়া খান ১৯৭১ সনের ৩রা মার্চ তারিখে শাসনতন্ত্র রচনার উদ্দেশ্যে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিবেশন আহ্বান করেন;
এবং
যেহেতু তিনি আহূত এই অধিবেশন স্বেচ্ছাচার এবং বেআইনিভাবে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেন;
এবং

যেহেতু পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি পালন করার পরিবর্তে বাংলাদেশের জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে পারষ্পরিক আলোচনাকালে ন্যায়নীতি বহির্ভূত এবং বিশ্বাসঘাতকতামূলক যুদ্ধ ঘোষণা করেন;……
…..সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী বাংলাদেশের জনগণ নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি যে ম্যান্ডেট দিয়েছেন সে ম্যান্ডেট মোতাবেক আমরা, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আমাদের সমবায়ে গণপরিষদ গঠন করে পারষ্পরিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের জন্য সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে
বাংলাদেশকে একটি সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্র ঘোষণা করছি……

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে আমি স্মরণ করিয়ে দিচ্ছি পাকিস্তান ভেঙে একটি নতুন দেশের জন্ম হয়েছিল জনরায়কে উপেক্ষা করে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে। সুতরাং মুক্তিযুদ্ধের একটি মাত্র চেতনার কথা বলতে হলে সেটি হল গণতন্ত্র। এই একটি শব্দই সবকিছু বলে দিলেও আমরা আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে স্পষ্ট করে উচ্চারণ করেছিলাম সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার এর কথা। যা আরেকটু বিস্তারিতভাবে বলা আছে আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনার তৃতীয় অনুচ্ছেদে –

“আমরা আরও অঙ্গীকার করিতেছি যে, আমাদের রাষ্ট্রের অন্যতম মূল লক্ষ্য হইবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এমন এক শোষণমুক্ত সমাজতান্ত্রিক সমাজের প্রতিষ্ঠা – যেখানে সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত হইবে”।

ঘোষণাপত্র এবং সংবিধানের প্রস্তাবনার এই কথাগুলো আবার স্মরণ করিয়ে দেবার উদ্দেশ্য হলো, মুক্তিযুদ্ধকে রাজনৈতিক অস্ত্র হিসাবে ক্রমাগত ব্যবহার করার ফল হয়েছে এখন ভাস্কর্য ভাঙা কিংবা পদ্মা সেতু গড়ার মধ্যেও এই চেতনা খোঁজা হয়। পরিকল্পিতভাবে এই রেডিক্যাল সংজ্ঞা দেবার সুবিধা হলো, মূল চেতনাকে সরিয়ে যেকোনো কিছুকে চেতনা বলে সামনে এনে ক্ষমতাসীন দল ও সরকারের সকল অপকর্মকে জায়েজ করার চেষ্টা করা যায়।

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং সংবিধানের প্রস্তাবনা হচ্ছে আমাদের রাষ্ট্র গঠনের মূলমন্ত্র। সেই মূলমন্ত্রের সাথে বর্তমান বাংলাদেশকে মিলিয়ে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলা যায় বাংলাদেশের ৫০ বছরের ইতিহাসে বর্তমান সরকারের মত মুক্তিযুদ্ধের এত বড় বিপক্ষ শক্তি অতীতে কখনও ক্ষমতায় আসেনি।

আজকের বাংলাদেশে বসে অবাক লাগে ইহাহিয়ার মত একজন ঘৃণিত সামরিক স্বৈরশাসকের অধীনেও একটা অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতি একাদশ সংসদ নির্বাচনের পর সংসদে দেয়া তার তিনটি ভাষণের প্রত্যেকটিতে উল্লেখ করলেন এই নির্বাচনটি ছিল অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ। এ যেন রবীন্দ্রনাথের সেই কথা –“কত বড় আমি কহে নকল হীরাটি, তাই তো সন্দেহ করি নহ ঠিক খাঁটি”।

রাষ্ট্রপতির তাঁর ভাষণে আয়ুবীয় অবকাঠামোগত উন্নয়নকে, (যেটি আবার নিম্নমান এবং লুটপাটের কারণে ব্যপকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ),যত গুরুত্ব দিয়ে তুলে এনেছেন ততটাই অবহেলিত থেকেছে আইনের শাসন, বিচার বিভাগের স্বধীনতা, সার্বজনীন মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সাধারণ মানুষের জীবনমান, ক্রমবর্ধমান বৈষম্য,হরিলুট,সাংবিধানিক স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ভেঙে পড়া ইত্যাদি।মহাজোটের এই ব্রুট মেজরিটির সংসদে প্রদীপের নীচের সেই অন্ধকারকে নিয়ে স্রোতের বিরুদ্ধে আমার বক্তব্য।

মহামান্য রাষ্ট্রপতির পুরো ভাষণ মূলত কিছু ডেটার সমাহার যেখানে জিডিপি থেকে গড় আয়ু বৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় থেকে মাতৃমৃত্যু কিছুই বাদ যায়নি। অথচ বাংলাদেশের ডেটার গ্রহণযোগ্যতা নিয়েই কঠিন প্রশ্ন তুলেছে বিশ্বব্যাংক।

২০২০-এ প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের স্ট্যাটিসটিক্যাল ক্যাপাসিটি স্কোরে ২০১৯ সালে ৬২ দশমিক ২ স্কোর নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আফগানিস্তান ছাড়া আর সকল দেশের পেছনে আছে বাংলাদেশ।
রাষ্ট্রপতির পুরো ভাষণটি রাষ্ট্র পরিচালনার গতানুগতিক রুটিনের একটি ধারা বিবরণী মাত্র এবং এসব দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তিনি সরকারের কৃতিত্ব দাবি করেছেন। চলতি বাজেটেই সরকারের পরিচলন ব্যয় সাড়ে ৩ লাখ কোটি টাকার বেশি। প্রশ্ন হচ্ছে এই বিপুল ব্যয়ে এই দেশের জনগণ একটা সরকার পুষছে কি স্রেফ বসে থাকার জন্য?

চলছে পৌর নির্বাচন। জাতীয় নির্বাচনকে প্রহসনে পরিণত করার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচনগুলোকেও ‘নৌকা মানেই জেতা’ ধরণের নির্বাচনে পরিণত করা হয়েছে।

এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবার সময় সবচেয়ে বেশি আলোচিত উক্তিগুলো হল –‘আওয়ামী লীগ ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি’; ‘এই প্রশাসন মনে করে সরকার তারা বানিয়েছে সুতরাং যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে; নির্বাচনে প্রশাসনের কাছে ফল চাওয়া হয়েছে, তারা পুরো গাছ তুলে নিয়ে এসেছে; সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগের এমপিরা পালানোর পথ খুঁজে পেত না; আওয়ামী লীগের এমপিরা রাতের বেলা মদ-জুয়া-নারী নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, এদের মত লোকদের পুলিশ স্যালুট দেয়। কে বলেছে, এটা বলার কি আর দরকার আছে মাননীয় স্পিকার?

বাংলাদেশের নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস হওয়া নিয়ে বিএনপি ছাড়াও অন্যান্য সব বিরোধী দল,মহাজোটের শরীক দলগুলো, টিআইবি, সুজন,বিভিন্ন গণতান্ত্রিক দেশ, বিদেশি পর্যবেক্ষক,বিদেশি গণমাধ্যমের নিন্দা জানানোর পর সম্প্রতি সরকার আর নির্বাচন কমিশনের ‘সাফল্যের’ মুকুটে একটা পালক যুক্ত হয়েছে – যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দ্য ইলেক্টোরাল ইন্টিগ্রিটি প্রজেক্ট ২০১৯’ তার রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। সেখানে নির্বাচনের মানের বিবেচনায় বাংলাদেশের স্কোর ৩৮,যা দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। সারা পৃথিবীতেই বাংলাদেশের চাইতে খারাপ নির্বাচন হয় মাত্র ২১ টি দেশে। এই স্টাডিতে বাংলাদেশের শুধু ২০১৪ সালের নির্বাচনকে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। ২০১৮ সালের তথাকথিত নির্বাচন বিবেচনায় নেয়া হলে বাংলাদেশ সম্ভবত থাকতো বিশ্বের সর্বশেষ অবস্থানে।

বলে রাখি, ফ্রিডম হাউজের সর্বশেষ রিপোর্টে ইলেক্টোরাল ডেমোক্রেসির তালিকায় বাংলাদেশ আর নেই, যার অর্থ হচ্ছে নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার লেশমাত্র নেই বাংলাদেশে।

নির্বাচন প্রসঙ্গে আমি রাষ্ট্রপতির ভাষণে উল্লেখ করা একটি বাক্য বলতে চাই, যাকে জনগণের কাছে মনে হবে এক অসাধারণ কৌতুক। ২৯.১০ অনুচ্ছেদে তিনি বলেন - গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির বিকাশে আইননানুগ এবং গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ইতোমধ্যে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে, তা দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে।

অথচ কিছুদিন আগেই আওয়ামী লীগের প্রতি সহানুভূতিসম্পন্ন অনেকেসহ ৪২ জন বিশিষ্ট নাগরিক বর্তমান নির্বাচন কমিশনের চরম ব্যর্থতাসহ আর্থিক দুর্নীতি উল্লেখ করে তাদের অভিশংসন চেয়েছেন।

ইকনোমিস্ট ইন্টেলিজেন্স ইউনিট এর মতে বাংলাদেশে এখন হাইব্রিড রেজিম, ফ্রিডম হাইজের মতে আংশিক মুক্ত, কিন্তু সার্বিক বিবেচনায় বাংলাদেশ আসলে একটি স্বৈরতান্ত্রিক দেশ যা ২০১৮ সালেই জার্মান গবেষণা সংস্থা বেরটেলসম্যান স্টিফস্টুং পরিষ্কার ভাষায় ব্যক্ত করেছে।

২০২০ সালে প্রকাশিত এই সংস্থার দেশভিত্তিক বেরটেলসম্যান ট্রান্সফরমেশন ইন্ডেক্স (বিটিআই) এ বিএনপি সরকারের শেষ বছর, ২০০৬ সাল থেকে ২০২০ এর মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন সূচকের তুলনা করলে দেখা যায় নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার সম্পর্কিত ২০ টি সূচকেই বাংলাদেশের অবস্থান ক্রমাগত নিম্নমুখী।

বাংলাদেশের স্বৈরতান্ত্রিকতার স্বীকৃতি এখন আসছে নানাদিক থেকে। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে দেয়া এক যৌথ বিবৃতিতে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ, রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস এবং ওয়ার্ল্ড অর্গানাইজেশন অ্যাগেইনস্ট টর্চার সহ ৭ টি মানবাধিকার সংগঠনের পক্ষ থেকে কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানানো হয়। ডিজিটাল সিকিউরিটি এক্ট এবং ’৭৪ এর বিশেষ ক্ষমতা আইনের উল্লেখ করে বলা হয়, এই করোনাকালে সরকার তার কর্তৃত্ববাদী শাসন আরও বেশি পোক্ত করেছে।

এদিকে গত অক্টোবরে বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুম আর নির্যাতনের অভিযোগে ‌RAB এর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিতে ট্রাম্প প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছেন মার্কিন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক কমিটির ১০ সদস্য।

জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৪২ তম নিয়মিত অধিবেশনে বাংলাদেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে বলা হয়, এদেশে গত ১০ বছরে গুম হয়েছে ৫৩৬ জন। বিচার বহির্ভূত হত্যা হয়েছে ২ হাজার ১৮৮ টি। হেফাজতে নির্যাতনে মারা গেছে ১২৮ জন। আর খেয়াল খুশিমত গ্রেফতারের শিকার হয়েছে কয়েক হাজার মানুষ। আইন ও শালিস কেন্দ্র এবং অধিকার এর রিপোর্ট দেখলে বোঝা যায় এই সংখ্যা আরও অনেক বেশি।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বাংলাদেশকে দেয়া বাণিজ্য সুবিধা ২০২৩ সালের পর বহাল থাকবে কি-না, সেই প্রশ্নে শ্রমিক অধিকারের সাথে যুক্ত করা হবে মানবাধিকার সুরক্ষাও।

২০১৮ সালের নভেম্বরে ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছিল জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে মতপ্রকাশের অধিকার, নাগরিকদের সভা-সমাবেশ করার অধিকারসহ রাজনৈতিক অধিকার নিশ্চিত করা, বিচারবহির্ভূত হত্যা বন্ধ করা, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের নিপীড়নমূলক ধারা বাতিল করা, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করাসহ বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভূক্ত রয়েছে।

দেশের মত প্রকাশের স্বাধীনতার পরিস্থিতিও ভয়াবহ। ২০২০ সালের রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স এর রিপোর্টে ‘Tougher politics, more press freedom violations’ শিরোনামে বাংলাদেশ সম্পর্কে বলা হয়েছে -

Bangladeshi journalists have been among the leading collateral victims of the tougher methods adopted by the ruling Awami League since 2009. The campaign leading up to the re-election in late 2018 was accompanied by a disturbing increase in press freedom violations, including violence by political activists against reporters in the field, the arbitrary blocking of news websites, and arbitrary arrests of journalists.

সংবাদ মাধ্যমের ওপরে নানামুখী চাপের কারণে ২০২০ সালের রিপোর্টে বাংলাদেশ ক্রমাগত পিছিয়ে ১৮০ টি দেশের মধ্যে ১৫১ তম অবস্থানে আছে যা পাকিস্তান, মিয়ানমার, আফগানিস্তানের চাইতেও পেছনে।
রাষ্ট্রপতির ভাষণ মতে উন্নয়নের সংজ্ঞা হল আবকাঠামোগত উন্নয়ন। কিন্তু এটা আসলে বীভৎস লুটপাটের এক বিরাট উৎস।

চার লেনের নতুন মহাসড়ক নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় ইউরোপে ২৮ কোটি, ভারতে ১০ কোটি আর চীনে ১৩ কোটি টাকা। বাংলাদেশে গড়ে ৬০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা মহাসড়ক চার লেন নির্মাণে কিলোমিটারপ্রতি ব্যয় শেষ পর্যন্ত গিয়ে দাঁড়িয়েছে ২০০ কোটি টাকায়, যা বিশ্বের সবচাইতে ব্যয়বহুল সড়কেরও কয়েক গুণ।

ভারতে প্রতি কিলোমিটার ফ্লাইওভার ৪৮-৮৮ কোটি টাকা, চীন এবং মালয়েশিয়ায় ৮০-৯০ কোটি টাকা। বাংলাদেশে ১৫০-১৮০ কোটি টাকা। এই অঞ্চলের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের খরচ ২০৫ থেকে ২৫০ কোটি হলেও ঢাকা-আশুলিয়া এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে প্রতি কিলোমিটারে খরচ ৭০০ কোটি টাকা।
চীন/ভারতে প্রতি কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণের ব্যয় ১২ কোটি, উন্নত দেশগুলোতে সর্বোচ্চ ৩০ কোটি টাকা আর বাংলাদেশে দোহাজারী-ঘুনধুম ১৩৯ কোটি টাকা,ঢাকা-যশোর ২০৩ কোটি আর ঢাকা-পায়রা বন্দর ২৫০ কোটি টাকা।

২০১৭ সালের জুন মাসে বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ ডঃ জাহিদ হোসেন বাংলাদেশের সাথে এই অঞ্চল এবং উন্নত বিশ্বের অবকাঠামো নির্মাণের ব্যয়কে তুলনা করে প্রমাণ করেছিলেন বাংলাদেশের এই ব্যয় বিশ্বেই সর্বোচ্চ। মজা হল সর্বোচ্চ ব্যয়ে নির্মিত হয় সর্বনিম্ন মানের অবকাঠামো। গত বছরের আগস্ট মাসে প্রকাশিত অবকাঠামো নিয়ে বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২৯টি দেশের সড়কের মানে নেপাল ও মঙ্গোলিয়া ছাড়া অন্য যে কোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশের সড়কের মান খারাপ।

মাননীয় স্পিকার, আসি পদ্মা সেতু প্রসঙ্গে। যেখানে ভারত, চীন, মালয়েশিয়া, ব্রুনেই এ প্রতি কিলোমিটার সেতু তৈরিতে খরচ পড়ে সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৭০০ কোটি টাকা সেখানে এই সেতুর প্রতি কিলোমিটারের ব্যয় হচ্ছে ৫ হাজার কোটি টাকা, যা সর্বোচ্চ স্বাভাবিক খরচের দশ গুণ। বুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক শামসুল আলমের মতে, নদীর জটিল ভূপ্রকৃতি বিবেচনায় রেলসহ এর প্রতি কিলোমিটারের ব্যয় সর্বোচ্চ ১৫০০ কোটি টাকা হতে পারে।

দুর্নীতি আর লুটপাটের একটি বড় ক্ষেত্র হলো ব্যাংক আর শেয়ার বাজার। সরকারি তথ্য মতে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্যাংকে মন্দ ঋণের পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার কোটি টাকা। সরকারি হিসাবেই ৮০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ হাওয়া হয়ে গেছে দুই কারণে। ১)অতি তুচ্ছ পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করে ঋণ পুন-তফশিল করা আর ২) অতি বড় কিছু ঋণখেলাপির রিট। দেড় বছর আগে আইএমএফ বলেছিল দেশে মন্দ ঋণের পরিমাণ আড়াই লক্ষ কোটি টাকা আর বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলামের মতে নানা কায়দায় লুকিয়ে ফেলা খেলাপি ঋণ বিবেচনায় নিলে এর পরিমাণ আরও বেশি সাড়ে তিন লক্ষ কোটি টাকা।

লুটপাটের আর এক ক্ষেত্র বিদ্যুৎ যেখানে এক মেগাওয়াটও উৎপাদন না করে ইনডেমনিটির সুবিধা নিয়ে সরকারের কিছু ক্রনি গত এক দশকে কেন্দ্র ভাড়া বাবদ বিদ্যুৎ খাত থেকে তুলে নিয়েছে ৬২ হাজার কোটি টাকা। সরকারি বয়ান মতে সর্বোচ্চ প্রয়োজনের দ্বিগুণ উৎপাদন সক্ষমতা থাকার পরেও অনেক কেন্দ্রের চুক্তি নবায়ন এবং নতুন কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি প্রমাণ করে এই লুটের সঙ্গে সরকার সরাসরি যুক্ত।

লুটের এক টেক্সবুক এক্সাম্পল এখন বাংলাদেশ। বালিশ ৬ হাজার টাকা, একটা বটি ১০ হাজার টাকা, কাঁটা চামচ ১ হাজার টাকা, দুধে পানি মাপার যন্ত্র ৩ লাখ ৩২ হাজার টাকা, বর্জ্য রাখার পাত্রের দাম ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা, তালা ৫,৫৫০ টাকা, বালতি ১,৮৯০ টাকা,একটা মেডিকেল বই ৮৫ হাজার টাকা, পর্দা ৩৭ লাখ টাকা, টেলিফোন ১৫ লাখ টাকা, লিফট ২ কোটি টাকা, ব্লাড প্রেশার মাপার মেশিন ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা, চেয়ার ৬ লাখ টাকা এখন অতি স্বাভাবিক বিষয়। প্রকল্পের কেনাকাটায় লুটপাটের সাথে আছে পুকুর খনন, লিফট কিনতে, গরুর কৃত্রিম প্রজনন, ট্যাংরা-পাবদা মাছ চাষ, তেল জাতীয় ফসল এবং মৌ চাষ, নলকূপ খনন শেখার মতো উদ্ভট যুক্তিতে বিদেশ সফর।

এইসব লুটের টাকার একটা বড় অংশ বিদেশে পাচার হয়ে তৈরি হয় বেগমপাড়া কিংবা সেকেন্ড হোম। গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির তথ্য প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে ৮০ হাজার কোটি টাকার বেশি পাচার হয় যা কেবল ওভার এবং আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে ব্যাংকিং চ্যানেলে পাচারের তথ্য। এর সাথে হুন্ডিতে পাচারের তথ্য যোগ করলে সংখ্যাটি এক দশকে আর মাত্র সাড়ে ৮ লক্ষ কোটিতে সীমাবদ্ধ থাকে না।

গত এক যুগের জানা অজানা লুটের ফল হয়েছে বাংলাদেশে কোটিপতির বাম্পার ফলন। ২০০৯ সালের ২১ হাজার ৪৯২ জন কোটিপতি ২০২০ সালে দাঁড়িয়েছে ৮৭ হাজার ৪৮৮ জনে। ব্যাংকের এই হিসাবের বাইরে আছে আরও বহু কোটিপতি যার ফল ফলেছে বিশ্বে ২৫০ কোটি টাকার বেশি সম্পদের মালিক অতি ধনী বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ প্রথম আর ধনী বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ তৃতীয়, কিন্তু বিশ্বে দরিদ্র মানুষের সংখ্যায় বাংলাদেশ পঞ্চম। তীব্র বৈষম্য জিনি সহগকে নিয়ে গেছে চরম বৈষম্য নির্দেশকারী দশমিক ৫-এর খুব কাছাকাছি।
বিএনপির শাসনামল, ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত বাংলাদেশে দারিদ্র্য বিমোচনের হার ছিল ১.৮%, যেটা ২০০৬ থেকে ২০১০-এ নেমে দাঁড়ায় ১.৭%, আর ২০১১ থেকে ২০১৬ সালে দাঁড়িয়েছে ১.২%। অর্থাৎ দারিদ্র্য বিমোচনের হার আশংকাজনকভাবে কমছে, যদিও এই সময়টাতেই জিডিপির উচ্চ প্রবৃদ্ধি আর মাথাপিছু আয় বাড়ার গর্ব করছে সরকার।

ওদিকে স্বাস্থ্য, শিক্ষা আর সামাজিক সুরক্ষার মতো ওয়েলফেয়ার খাতে জিডিপি’র অনুপাতে বরাদ্দ দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে কম বাংলাদেশে। তাই তথাকথিত উন্নয়নের হাওয়া একটুও লাগেনি দেশের সাধারণ মানুষের জীবনমানে। করোনার সময়ে ত্রান নিয়ে গর্বিত সরকারের প্রেসনোটের তথ্য অনুযায়ী একজন মানুষ গড়ে দিনে খাদ্য বরাদ্দ পেয়েছে ১৪.৫৫ গ্রাম আর অর্থ সাহায্য পেয়েছে ১১.৩৮ পয়সা। ত্রাণের নামে এই প্রহসনের ফল ফলছে এখন - সানেমের সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে দেশে বর্তমানে ৪২ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর করোনার আগে করা এক জরিপে দেখা যায় - শহরের আট শতাংশ দরিদ্র পরিবার না খেয়ে ঘুমাতে যায়, ১২ শতাংশ দরিদ্র পরিবারে খাবার নেই, সারাদিনে একবেলাও খেতে পায়নি প্রায় তিন শতাংশ দরিদ্র পরিবার। ঢাকা শহরের জনসংখ্যা দুই কোটি হলে শুধু এই শহরেই অন্তত ৬ লক্ষ মানুষ দিনে এক বেলাও খেতে পায় না। সাহস থাকলে এই মানুষগুলোর সামনে গিয়ে তথাকথিত উন্নয়ন খেয়ে পেট ভরাতে বলুন।

২০১০ সালে দু'জন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ জোসেফ স্টিগলিৎজ এবং অমর্ত্য সেন এর সাথে বিখ্যাত ফরাসি অর্থনীতিবীদ জাঁ পল ফিটুসী "মিসমেজারিং আওয়ার লাইভস : হোয়াই জিডিপি ডাজন'ট অ্যাড আপ" শিরোনামের বইতে স্পষ্টভাবে দেখান জিডিপির প্রবৃদ্ধি এবং মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে করা অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিমাপ করার সনাতন পদ্ধতিতে রাষ্ট্রের বেশিরভাগ মানুষের সত্যিকারে ভালো থাকা পরিমাপ করে না। তাই বিশ্বজুড়ে এই চল উঠে গেলেও সরকারের এটাই একমাত্র সম্বল।

সরকারের এযাবৎকালের সকল ব্যর্থতাকে ছাড়িয়ে গেছে করোনাকালীন ব্যর্থতা। শুরু থেকে করোনা পরীক্ষা, মাস্ক, পিপিই, হাসপাতাল শয্যা, অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ, প্রণোদনা সহ সকল ক্ষেত্রে দুর্নীতি আর অব্যবস্থাপনা এই কঠিন সময়কে কঠিনতর করেছে। পৃথিবীতে একমাত্র দেশ বাংলাদেশ যেখানে নকল করোনা সার্টিফিকেট বিক্রি হয়েছে।

এই সবকিছুর পরে এখন যুক্ত হয়েছে টিকা নিয়ে ব্যবসা। শুধুমাত্র সেরাম ইন্সটিটিউটের সাথে সরাসরি চুক্তি না করে বেক্সিমকোর সাথে চুক্তি করার কারণে বাংলাদেশকে ভারতের তুলনায় ৪৭% বেশি দামে টিকা কিনতে হচ্ছে, যাতে ৩২৫ কোটি টাকা যাবে কোম্পানিটির পকেটে। এছাড়াও বেসরকারি খাতেও টিকা বিক্রির ক্ষেত্রে তারা ভারতের বেসরকারি টিকার তুলনায় কমপক্ষে ৪০% বেশি দাম ধরেছে। তুঘলকি কাণ্ড এখানেই শেষ নয়, দেশে সরকারের চুক্তির টিকা আনার আগে বেক্সিমকো বেসরকারি খাতে বিক্রির টিকা নিয়ে এসেছে।

ওদিকে বার্ধক্য, অসুস্থ ইত্যাদি সত্যিকারের ভালনারেবল মানুষকে বাদ দিয়ে সরকারের সকল প্রতিষ্ঠানের লোকজন, যারা অবৈধ ক্ষমতা টিকিয়ে রেখেছে তাদেরকেই নিয়েই টিকার অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি হয়েছে।

রাষ্ট্রপতি বিরোধী দলের ভূমিকার কথা বলেছেন। দেশের প্রধান বিরোধী দলের সর্বোচ্চ থেকে তৃণমূল পর্যন্ত গত এক যুগে হত্যা গুম মিথ্যা মামলা সহ নানা নির্যাতনের মধ্য দিয়ে ধ্বংসের সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। মিথ্যা, হয়রানিমূলক, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সনকে কারাগারে পাঠানো, একটিং চেয়ারম্যানকে দেশে ফিরতে না দেয়া, দলের মহাসচিবকে দফায় দফায় জেলে পাঠানো, সবকিছুই হয়েছে বিএনপিকে একেবারে ধ্বংস করে ফেলার উদ্দেশ্যে। এই প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতির এই আহ্বান স্রেফ প্রহসন।

বিস্তারিত ভাষণের ২৭.১ থেকে ২৭.১৫ অনুচ্ছেদে মাননীয় রাষ্ট্রপতি বিচার বিভাগ ও আইনের শাসন নিয়ে বলতে গিয়ে বিচারক নিয়োগ,ভবন নির্মাণ ইত্যাদি রুটিন কাজের ফিরিস্তি দিয়েছেন। এই সময়ের মধ্যে বিচার ব্যবস্থার মূল কাজ, জনগণের ন্যায় বিচার পাওয়া, সেটা নিয়ে কোন কথা নেই। বিচার বিভাগের মানের বিচার করে তৈরি করা ওয়ার্ল্ড জাস্টিস রিপোর্ট ২০২০ এ বাংলাদেশের অবস্থান ১২৮ টি দেশের মধ্যে ১১৫ তম। দক্ষিণ এশিয়ায় মিয়ানমারসহ প্রায় সব দেশ আমাদের চাইতে ভাল অবস্থায় আছে।
জানি উত্তর পাবো না, তারপরও প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি

১। রোহিঙ্গা সমস্যার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের তথাকথিত অতি ঘনিষ্ঠ বন্ধুরা সবাই কেন মিয়ানমারের পক্ষে?

২। দ্বিপক্ষীয় সমস্যা সমাধানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দর কষাকষির ক্ষমতা কেন একেবারে শূন্য?

৩। সরকারি নানা সংস্থার তালিকায় থাকা ইয়াবার মূল হোতা সাবেক এক এমপি আর সরকারি দলের ইয়াবা কারবারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে কয়কশ সাধারণ মানুষকে বিনা বিচারে খুন করা হয়েছে কেন?

৪। ধর্ষণের মতো ভয়াবহ অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে কেন ৯৭/৯৮ শতাংশ অপরাধী ছাড়া পেয়ে যায়?

৫। দেশের ৪ কোটি ৮২ লক্ষ কর্মহীনকে কাজ না দিয়ে এই দেশকে অতি মোটা বেতনের কয়েক লক্ষ বিদেশির কর্মক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছে কেন?

৬। মানবাধিকার কমিশন, তথ্য অধিকার কমিশনকে জনগণের টাকা দিয়ে পোষা হচ্ছে কি এসএমএস দিয়ে মানুষকে সচেতন করা আর দুর্নীতি দমন কমিশনকে কি পোষা হচ্ছে বিরোধী দলকে হয়রানি আর সরকারি দলের অপরাধীদের সততার সার্টিফিকেট দিতে?

৭) ঢাকার ২ মেয়র পরস্পরের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অভিযোগআনার পরও কেন ফৌজদারি ব্যবস্থা না নিয়ে মতপার্থক্য বলে ধামাচাপা দেয়া হচ্ছে?

স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীকে সামনে রেখে দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে স্বাধীনতার চেতনা বিরোধী বর্তমান অনির্বাচিত সরকারটির দ্রুততম সময়ে পতন কামনা করছি যার মাধ্যমে স্বাধীনতার প্রকৃত চেতনা গণতন্ত্র, সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সামজিক ন্যায়বিচারভিত্তিক একটি রাষ্ট্র গড়ার কাজ আমরা শুরু করতে পারবো।


আরো সংবাদ



premium cement