২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশে সংসদে বিল

পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশে সংসদে বিল - ছবি - সংগৃহীত

পরীক্ষা ছাড়াই ফল প্রকাশ করতে জাতীয় সংসদে পৃথক তিনটি আইন সংশোধনের প্রস্তাব উঠেছে। এই আইন সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে গৃহিত হলে বিশেষ পরিস্থিতিতে পরীক্ষা ছাড়াই এসএসসি, এইচএসসি ও সমমানের শ্রেণির ফল প্রকাশ করতে আইনি কোন সমস্যা হবে না।

মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১, বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল-২০২১ সংসদে উত্থাপন করেন।

পরে ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন বিলটি একদিনের মধ্যে এবং বাকি দুটি দুইদিনের মধ্যে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়।

তবে বিল উত্থাপনে আপত্তি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বিল তিনটি উত্থাপনের অনুমতি ভোটে দিলে, তা কণ্ঠভোটে পাস হয়। পরে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বিল তিনটি উত্থাপন করেন।

১১টি শিক্ষা বোর্ডের ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭৮৯ জন শিক্ষার্থীর এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল ১ এপ্রিল থেকে। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে শুরু করলে ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে সরকার পরীক্ষা ছাড়াই মূল্যায়নের মাধ্যমে এইচএসসি ও সমমান শ্রেণির ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নেয়। এক্ষেত্রে জেএসসি এবং এসএসসির ফলের গড় করে এইচএসসির ফল নির্ধারণ করার ঘোষণা করে সরকার।

কিন্তু পরীক্ষা ছাড়া ফল প্রকাশে আইনগত জটিলতা দেখা দেয়। যার কারণে ডিসেম্বরে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। পরে সরকার আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয় এবং মন্ত্রিসভায় অনুমোদনের পর মঙ্গলবার সংসদে তোলা হলো।

বিল তিনটির উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত আইনে বিশেষ পরিস্থিথিতে অতিমারি, মহামারি, দৈব দুর্বিপাকের কারণে বা সরকার কর্তৃক সময় নির্ধারিত কোনো অনিবার্য পরিস্থিতিতে কোনো পরীক্ষা গ্রহণ, ফল প্রকাশ এবং সনদ করা সম্ভব না হলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপিত আদেশ দ্বারা কোনো বিশেষ বছরে শিক্ষার্থীদের জন্য পরীক্ষা ছাড়াই বা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা গ্রহণ করে উক্ত প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত পদ্ধতিতে মূল্যায়ন এবং সনদ প্রদানের জন্য নির্দেশাবলি জারি করার বিষয় উল্লেখ রয়েছে।’

ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল-২০২১ উত্থাপন নিয়ে সংসদে আপত্তি জানান জাতীয় পার্টির জ্যেষ্ঠ সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম। নিয়ম অনুযায়ী সংসদে উত্থাপনের আগে নোটিশ না পাওয়ায় তিনি আপত্তি জানান। একইসাথে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিবের বক্তব্য নিয়েও আপত্তি জানান তিনি।

পরে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী তার অনুমোদন নিয়ে বিলটি তোলা হয়েছে বলে জানান।

আইন পাস হলেই এইচএসসির ফল

সংসদে বিলটি তোলার সময় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফল আমাদের প্রস্তুত রয়েছে। বিদ্যমান আইনে যেহেতু রয়েছে পরীক্ষার পর ফল প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু বৈশ্বিক মহামারির কারণে আমরা এবার পরীক্ষা নিতে পারিনি। বিশেষ পদ্ধতিতে ফল দিতে চাইছি। এজন্য আইনটি সংশোধন প্রয়োজন। মহান সংসদ থেকে আইনটি পাস করে দিলেই দ্রুততার সঙ্গে আমরা ফলাফল প্রকাশ করতে পারব।


আরো সংবাদ



premium cement