২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
সংসদে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

‘ভারতের মতো নেপাল-ভুটানকেও সুবিধা দিতে সম্মত বাংলাদেশ’

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন - ছবি : সংগৃহীত

পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন বলেছেন, বর্তমান সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর হতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র সমূহের সঙ্গে আন্তঃসংযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করে।এরই ফলশ্রুতিতে, চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের মাধ্যমে ভারতকে সড়ক ও রেলপথে পণ্য পরিবহণের সুবিধা প্রদানে বাংলাদেশ সম্মত হয়। একই রকম সুবিধা প্রতিবেশী রাষ্ট্র নেপাল ও ভুটানকে প্রদানেও বাংলাদেশ সম্মত আছে।

সংসদে প্রশ্নোত্তরে রোববার সরকার দলীয় সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী একথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো জানান, এছাড়াও নেপাল, ভুটানকে সৈয়দপুর বিমানবন্দর ব্যবহার করতে দিতেও বাংলাদেশ সম্মতি প্রকাশ করেছে। আন্তঃ সংযোগ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য রাষ্ট্র পর্যন্ত বিস্তৃত করার ব্যাপারে কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এটি এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করতে পারে।

এ কে আবদুল মোমেনজানান, ভারত, নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে বাণিজ্যিক কূটনৈতিক তৎপরতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকার গত ১০ বছরে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে এ সকল উদ্যোগ গ্রহণের ফলে ভারত-নেপাল-ভুটানসহ প্রতিবেশী দেশ সমূহের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে গত বছরে ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ প্রথমবারের মতো এক বিলিয়ন ডলারের সীমারেখা অতিক্রম করেছে এবং আমরা আশা করছি এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।

আবুল কালাম আজাদের (জামালপুর-১) এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে প্রতিবেশীদেশসহ অন্যান্য দেশের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। সকল রাষ্ট্রের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরো জোরদার করার করার লক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক গুরুত্বের প্রেক্ষাপটে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বৃদ্ধির মাধ্যমে বর্হিবিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমুর্তি আরো সমুন্নত করার প্রয়াসে বর্তমানর সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করেছে। এই ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত বিদেশে বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ দূতাবাসের সংখ্যা ৪৬ থেকে ৫৯ এ উন্নীত করছে। পূর্নাঙ্গ মিশনের পাশাপাশি কূটনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রবাসী বাংলাদেশীদের উপস্থিতি বিবেচনায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে আরো ১৬টি উপদূতাবাস/কনস্যুলেট/ উপহাইকমিশন/সহকারি হাইকমিশন রয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশি দেশগুলোর সাথে বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানকে বিশেষভাবে অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। ভারতের সাথে আন্তর্জাতিক নদী সমূহের অভিন্ন পানি বন্টন চুক্তি বিশেষকরে তিস্তা চুক্তিবাস্তবায়ন, সীমান্তে শান্তিপূর্ণসহ অবস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সীমান্তে হত্যা বন্ধ, বাণিজ্য ঘাটতি দূরিকরণ, সড়ক ও নৌপথ যোগাযোগ আরো সহজতর করাসহ অন্যান্য সকল ইস্যুতে বাংলাদেশের ন্যায্য হিস্যা আদায় নিশ্চিতকরণ, মিয়ানমারের সাথে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের পদক্ষেপ গ্রহন, বঙ্গোপসাগরের মহীসোপানে আমাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা, এশিয়ান হাইওয়েতে সংযুক্তির মাধ্যমে মিয়ানমারের সাথে সড়ক যোগাযোগ বৃদ্ধিকরণ এবং নেপাল ও ভূটানের সাথে অভিন্ন পানি ও জ্বালানী নিরাপত্তা জোরদকার করা হচ্ছে।

মন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিকভাবে কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করার উদ্যোগে কার্যকর ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশের পণ্য ও শ্রমবাজার সম্প্রসারণ এবং প্রচলিত রপ্তানী পন্যের পাশাপাশি নতুন রপ্তানী ক্ষেত্র সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহন, মাধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর সকল দেশে অদক্ষ ও কিছুটা অদক্ষতা সম্পন্ন শ্রমিকের সাথে সাথে দক্ষ ও পেশাজীবী জনশক্তি রপ্তানীর সুযোগ তৈরী এবং সকল প্রবাসীর সব ধরণের সনস্যুলার সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের লক্ষ্য।


আরো সংবাদ



premium cement