২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ম্যান্ডেটহীন সরকার নিজেদের টিকিয়ে রাখতে উন্নয়নের প্রেপাগান্ডা চালাচ্ছে : রুমিন ফারহানা

রুমিন ফারহানা - ছবি : সংগৃহীত

জনগণের ম্যান্ডেটহীন সরকার নিজেদের টিকিয়ে দেশে চরম অর্থনৈতিক উন্নয়ন হচ্ছে বলে জোর প্রেপাগান্ডা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যরিষ্টার রুমিন ফারহানা।

সংসদে বুধবার রাতে রাষ্ট্রপতির ভাষনের ওপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি এমন এক সময় উন্নয়নের দাবি করলেন যখন দেশের অর্থনীতি সকল সূচকে নিম্নমুখী। অর্থনীতি প্রচন্ড বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে।

ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রায় ২২ মিনিট তিনি বক্তব্যে ফারহানা সরকারের কঠোর সমালোচনা করে।

বলেন, রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বলেছেন গত ৩০ শে ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বলেছেন নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে হয়েছে। কিন্তু এই নির্বাচন নিয়ে বিদেশি পর্যবেক্ষক, সুজন, টিআইবি, আওয়ামী লীগ ছাড়া সকল রাজনৈতিক দল, এমনকি আওয়ামী লীগের শরিক দল তীব্র সমালোচনা করেছে। সেই নির্বাচনের নূন্যতম গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে কেউ মনে করে না । এই নির্বাচন বিশ্বের এক বিরল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিভিন্ন দেশে, বিভিন্ন সময়, বিভিন্ন নির্বাচনে জয়ের জন্য নানান কায়দায় দুর্নীতি হয়েছে। কিন্তু আগের রাতে ব্যালট বাক্স ভরে নিরঙ্কুশ বিজয় বিশ্বের বুকে এই প্রথম।

তিনি বলেন, সম্ভবত আগামী রাষ্টপতির ভাষনেও একই রকম বক্তব্য দিবেন। কারণ মানুষ নিজেদের কথা বিশ্বাস করে না কিন্তু অন্যদেরকে বিশ্বাস করাতে চায়। এজন্য এ কথাটি মানুষ বারবার বলে। এটাকে গোয়েবলসের লাই থিওরি বলে।

তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতিবিদরা দেশের অর্থনীতিতে মন্দাভাব নিয়ে পূর্বাভাস দিয়েছেন কিন্তু রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে সেটা নেই।

তিনি বলেন দেশের এইসব সমস্যার সাথে যোগ হয়েছে বাকস্বাধীনতার সমস্যা। হামলা হুমকি বিজ্ঞাপন দাতাদের উপর প্রভাব খাটিয়ে গণমাধ্যমের উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। সম্প্রতি প্রকাশিত আইন ও সালিশ কেন্দ্রের প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, গত বছর ১৪২ জন সাংবাদিক শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। বিকল্প মাধ্যম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নিপীড়নমূলক নির্যাতন চলছে ডিজিটাল আইনের নামে।

রুমিন ফারহানা বলেন, আমরা আজ পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠাতে পারি নাই। এনআরসি নিয়ে বলছি এটি ভারতের আভ্যন্তরীণ বিষয়। অথচ এখন পর্যন্ত ভারত সরকারের সঙ্গে এনআরসির বিষয়ে কোন সূরাহাই আসতে পারেনি।

তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি তার ভাষণে বৃহত্তর স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু শুধুমাত্র বিরোধীদল হওয়ায় দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের প্রধানকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে জেলে রেখে তাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। বিরোধী দলের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে এক লক্ষ মামলা দিয়েছে। গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের মাধ্যমে ভয়ের সৃষ্টি কর হয়েছে। জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন স্বাধীনতা সংগ্রামকে ব্যবহার করে সুপরিকল্পিতভাবে জাতিকে দ্বিধাবিভক্ত করে সর্বত্র ভীতির সংস্কৃতি চালু করে ভিন্ন মতকে দমন করে গণতান্ত্রিক অধিকারগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতির এই আহ্বান জাতির কাছে কোনো অর্থ বহন করে না।

তিনি বলেন, সরকারের মর্জির ওপর দেশের সবকিছু নির্ভর করে। আলোচিত নুসরাত হত্যাকান্ডের বিচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকার চাইলে দেশে বিচার তার দ্রুত বিচার হয়, আর না চাইলে সাগর রুনি হত্যা মামলার চার্জশীট দাখিল ৭০ বার পেছায়।

 


আরো সংবাদ



premium cement