২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের শপথ নিন : বিএফইউজের সুবর্ণজয়ন্তীতে বিএনপি নেতা আবদুস সালাম

- ছবি : নয়া দিগন্ত

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দিনব্যাপী আয়োজিত অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের পারস্পরিক মতভেদ ভুলে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের শপথ নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি নেতা আবদুস সালাম।

শুক্রবার বিএফইউজের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেসক্লাবে বর্ণাঢ্য র‌্যালি, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, ফল উৎসব ও আলোচনা সভার আয়োজন হয়। এ সময় সারাদেশের সাংবাদিক ইউনিয়নের নেতাদের সম্মাননা, নিহত ও নির্যাতিত সাংবাদিকদের নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শনী করা হয়।

বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব নুরুল আমিন রোকনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে অতিথি ছিলেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, নয়াদিগন্ত সম্পাদক আলমগীর মহিউদ্দিন, গ্রীন ওয়াচ সম্পাদক মোস্তফা কামাল মজুমদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।

মাহমুদূর রহমান মান্না তার বক্তব্যে বলেন, দেশী-বিদেশী চাপের মুখে এবং আমেরিকার ভিসা হারানোর ভয়ে সরকারের মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ নেতারা মুখ ফসকে সত্য কথা বলে দিচ্ছেন।

হুঁশিয়ার করে এই নেতা বলেন, গুম, খুন ও লুটপাট করে দেশকে যারা দুর্বিষহ করে তুলেছে, তাদের পালাতে দেয়া হবে না। প্রত্যেকেকে বিচারের মুখোমুখি করা হবে।

দ্বিতীয় পর্বে সাহসী সম্পাদক ও নির্যাতিত সাংবাদিকদের সম্মাননা অনুষ্ঠিত হয়। সংগঠনের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে এবং সাংবাদিক ও গীতিকার-সুরকার আমিরুল মোমেনিন মানিকের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী। বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. তাজমেরি এস ইসলাম, বিএফইউজে এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ।

এ সময় বিএফইউজে’র ৫০ বছর পূর্তিতে শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমাদ আব্দুল কাদের ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব গাজী আতাউর রহমান প্রমুখ।

বিচারপতি নজরুল ইসলাম অনুষ্ঠানে বলেন, সরকারের অভ্যন্তরীণ দুর্বলতার কারণে সাংবাদিকদের ওপর নির্যাতন নেমে আসে।

তিনি আরো বলেন, কোনো দেশে গণতন্ত্র এবং আইনের শাসন না থাকলে ব্যক্তির শাসন চলে এবং গণমাধ্যম ও জনগনের অধিকার খর্ব করা হয়।

সাবেক এই বিচারপতি প্রশ্ন রেখে বলেন, এখন বাংলাদেশে অধিকার চর্চা করা যায় কিনা, ওই প্রশ্নের জবাব দেশবাসী দেবেন।

অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস ইসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকার সব সময় গণমাধ্যমের ওপর আঘাত হানে। বিএফইউজের পক্ষ থেকে যে তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়েছে তাতে ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে। বিচারহীনতার কারণে সাংবাদিক নির্যাতন যেমন বাড়ছে, তেমনি মানুষের গণতান্ত্রিক ও মানবিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে। ফ্যাসিবাদী আঘাত প্রতিহত করতে এক হয়ে লড়ার আহ্বান জানান তিনি।

শওকত মাহমুদ তার বক্তব্যে বলেন, চলমান দুঃশাসনের বিরুদ্ধে যখন গোটা জাতি ঐক্যবদ্ধ, সাংবাদিকরা যখন কলম যুদ্ধে সর্বস্ব নিয়ে নামার প্রস্তুতি নিয়েছেন, তখন দেশপ্রেমিকদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে নানামুখী চক্রান্ত শুরু হয়েছে।

তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, জনগণের অভ্যুত্থান ঠেকানোর শক্তি এই সরকারের নেই। সম্মিলিত শক্তির প্রতিরোধে সরকারকে বিদায় নিতে হবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। একইসাথে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সংস্কার করে দেশকে যথাস্থানে টেনে তুলতে সাংবাদিকদের কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

এ পর্বে সম্মাননা দয়া হয় নির্যাতিত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, আবু সাউদ মাসুদ, ইমরান হোসেন, মুনির উদ্দিন আহমদ, আজিজ ফারুকী, ফরিদুল মোস্তফা প্রমুখকে।

এছাড়া সফল নেতৃত্ব সম্মাননা দেয়া হয় বিএফইউজে’র সাবেক ও বর্তমান সভাপতি ও মহাসচিবদের। বিএফইউজের সাবেক সভাপতি-মহাসচিবদের মধ্যে যারা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাদের পরিবারের সদস্যরা সম্মাননা গ্রহণ করেন।

বর্তমান নির্বাহী কমিটির সদস্যদের হাতেও সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন প্রধান অতিথি বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরী ও অধ্যাপক ড. তাজমেরি এস ইসলাম।

অনুষ্ঠানে সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার এবং সাংবাদিক নির্যাতন অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানানো হয়।

সবশেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করা হয়।

গোটা অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি কবি হাসান হাফিজ, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, বিএফইউজের সহ-সভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ওবায়দুর রহমান শাহীন, রাশিদুল ইসলাম, অঙ্গ ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ, কাউন্সিলর, কেন্দ্রীয় ও অঙ্গ ইউনিয়নের নেতারা।


আরো সংবাদ



premium cement