২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

এনডিএফ’র বাজেট বিষয়ক আলোচনা সরকারের সব নীতিতে স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে

- ছবি সংগৃহীত

সরকারের নীতিতে স্বাস্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। কারণ স্বাস্থ্য ভালো থাকলে মানুষ কর্মক্ষম থাকবে এবং অর্থনীতিতে তারা অবদান রাখতে পারবে। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বাজেট প্রণয়নের সময়ও সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা থাকে না। এক খাত থেকে কমিয়ে আরেক খাতে বাড়িয়ে বাজেট তৈরি প্রবণতা রয়েছে। ফলে বরাবরই বাংলাদেশে স্বাস্থ্যখাত বেশ অবহেলিত থেকে যাচ্ছে।

দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বাজেট সবচেয়ে কম, বাংলাদেশের জিডিপির শূণ্য দশমিক ৯৫ শতাংশ। প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি বরাদ্দ রয়েছে অন্যান্য কিছু মন্ত্রণালয়ে।

রোববার ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের (এনডিএফ) উদ্যোগে বাংলাদেশের ২০২১-২০২২ সালের উপস্থাপিত স্বাস্থ্য বাজেটের ওপর ভার্চুয়াল পর্যালোচনা’ শীর্ষক সভায় বক্তারা উপরিউক্ত বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাবেক আঞ্চলিক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: মোজাহেরুল হক।

এনডিএফ’র সভাপতি অধ্যাপক ডা: মো: নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনায় প্রধান আলোচক ছিলেন অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অফ বিজনেস লিডারশিপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ড. শফিকুর রহমান। সঞ্চালনায় ছিলেন এনডিএফ’র জেনারেল সেক্রেটারি ডা: এ কে এম ওয়ালী উল্লাহ।
অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: মো: শাহীনুল আলম, বিশিষ্ট বায়োকেমেস্ট্রির অধ্যাপক ডা: আবু খালদুন আল মাহমুদ।

অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, ২০২১-২২ সালের স্বাস্থ্য বাজেট প্রস্তাবিত বাজেটের মধ্যে খুব বেশি পার্থক্য নেই। একটি জনকল্যাণমূলক সত্যিকারের স্বাস্থ্য বাজেট হতে হলে আগে প্রয়োজনীয় খাত নির্দিষ্ট করে নিতে হবে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যায় জোর দিতে হবে যেন গোড়াতেই মানুষ সুস্থ হয়ে যেতে পারেন। এতে করে চিকিৎসায় খরচ কমে যাবে। বর্তমানে চলমান করোনা পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করে অধ্যাপক মোজাহেরুল হক বলেন, করোনা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে। সেখানে অক্সিজেন, মাস্ক ও হাইফ্লো নেজাল ক্যানোলা সরবরাহ করতে হবে যে শুরুতেই আক্রান্তরা চিকিৎসা পেয়ে যান।

প্রধান আলোচনায় ড. শফিকুর রহমান বলেন, প্রস্তাবিত স্বাস্থ্য বাজেট বাংলাদশের জিডিপির ১ শতাংশের কম। বাজেট বাস্তবায়ন করতে হলে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের জনশক্তিকে দক্ষ হতে হবে এবং জনশক্তির ঘাটতি পুরণ করতে হবে। সরকারি-বেসরকারি সব মেডিক্যালের শিক্ষার উন্নয়নে বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে।

তিনি অস্ট্রেলিয়ার উদাহরণ দিয়ে বলেন, সে দেশে সরকারি ও বেসরকারি সব মেডিক্যাল প্রতিষ্ঠানে সরকার বাজেট দিয়ে থাকে। প্রস্তাবিত উচ্চ শিক্ষা বিশেষ করে মেডিক্যাল শিক্ষার ওপর করারোপে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি বেড়ে যাবে। সবচেয়ে বড় কথা, খরচে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহীতা না থাকলে দুর্নীতি কমবে না।

অধ্যাপক শাহীনুল আলম বলেন, জনগণের পকেট থেকে চিকিৎসা খরচ কমিয়ে আনার কোনো কথা বাজেটে নেই। এই কোভিড সময়ে নিজের পকেট থেকে ৮০ শতাংশ চলে যাচ্ছে চিকিৎসায়। গার্মেন্টসকর্মীরা খুব কম আয় করেন। গুরুত্বপুর্ণ এই সেক্টরের কর্মীদের জন্য গাজীপুর ও সাভারে সরকারি খরচে বড় হাসপাতাল করা প্রয়োজন। যা কর্মীদের কর্মক্ষমতা বাড়াতে পারে। কিন্তু বাজেটে এদের ব্যাপারে কিছুই নেই।

অধ্যাপক আবু খালদুন আল মাহমুদ বলেন, করোনাই শেষ নয়। সামনে এ ধরনের আরো রোগ আসতে পারে। এ ধরনের জীবাণু সামাল দেয়ার জন্য বাজেটে সব সময় কিছু বরাদ্দ থাকা উচিৎ।


আরো সংবাদ



premium cement