১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ

রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ - ছবি : নয়া দিগন্ত

সাংবাদিকদের নির্যাতন ও গ্রেফতার বন্ধ করে রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তির দাবি জানিয়েছেন আইনজীবী, সম্পাদক ও সাংবাদিক নেতারা। তারা বলেন, গণমাধ্যম বন্ধ করে সাংবাদিক নির্যাতন করে গণতান্ত্রিক সরকার হওয়া যায় না। গণমাধ্যম বন্ধ করে গণতন্ত্রের মানসকন্যা হওয়া যায় কি? সাংবাদিক নির্যাতন গ্রেফতার খুন করে গণতন্ত্রের মানসকন্যা হওয়া যায় কি? অবিলম্বে বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দিন। অবিলম্বে দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিন। তা না হলে জনগণ আপনাকে বাকশালে মানসকন্যা, স্বৈরাচারের মানসকন্যা হিসেবে আখ্যায়িত করবে। সাংবাদিকদের সত্য অনুসন্ধান করার সুযোগ দিন। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যত মামলা আছে সব তুলে নিন। তাহলে আপনার ও দেশের লাভ হবে। দেশ গণতন্ত্রের দিকে ধাবিত হবে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত সমাবেশে তারা এ দাবি জানান। বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের উদ্যোগে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক দিনকালের সম্পাদক ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী, সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রোকন, ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, আহমেদ মতিউর রহমান, খায়রুল বাশার, ফটোজার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ কে এম মহসিন, আবু ইউসুফ, সাদ বিন রাবি, বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন চৌধুরী, খুলনা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আলাউদ্দিন, মোফস্বল সাংবাদিক আ্যসোসিয়সেনর যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান আসাদ, লুৎফর রহমান বিনু, দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, ডিইউজের খন্দকার আলমগীর হোসাইন, জেসমিন জুঁই, এস এম আলাউদ্দিন প্রমুখ।

সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক রুহুল কুদুস কাজল বলেন, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, দেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলনে গাজী ভাই প্রথম সারিতে ছিলেন। আজকে দেশের প্রতিক্ষেত্রে সমস্যা, এই সমস্যার মূলে দুঃশাসন, গণতন্ত্রহীনতা দায়ী। সাগর-রুনী হত্যার বিচার হবে কিনা সন্দেহ। অবিলম্বে সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করছি।

সিনিয়র সাংবাদিক দৈনিক দিনকালের সম্পাদক ড. রেজওয়ান সিদ্দিকী বলেন, সাংবাদিকরা হলেন সত্য অনুসন্ধানী। সব সময় সত্য প্রকাশ করেন তারা। সেই সাংবাদিকদের কণ্ঠ যখনই রোধ করেন, তখনই দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়। আজ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সম্মিলিতভাবে কথা বলার অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। তাহলে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরে আসবে। তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজী, আবুল আসাদ ও কাজলকে অবিলম্বে মুক্তি দিন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমকে কণ্ঠ রুদ্ধ করা হচ্ছে এবং আওয়ামী লীগ সরকার ভিন্নমতের প্রকাশকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না। সে জন্যই এই সরকার আতঙ্কিত। তিনি বলেন যারা দিনের ভোট আগের রাতে ব্যালটে পুরে ক্ষমতা দখল করেছে, তারাই রাষ্ট্রদ্রোহী। রুহুল আমিন গাজী দেশ স্বাধীন করেছেন। জনগণের ভোটাধিকার, গণতন্ত্র ও মিডিয়ার স্বাধীনতার জন্য লড়াই করছেন।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নুরুল আমিন রোকন বলেন, অবিলম্বে দৈনিক সংগ্রাম সম্পাদক আবুল আসাদ ও চীফ রিপোর্টার রুহুল আমিন গাজীকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। তা না হলে দেশের সাংবাদিক সমাজ মুক্তির দাবিতে লাগাতার আন্দোলন অব্যাহত রাখবে। আমাদের আন্দোলন চলছে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত চলবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, সাংবাদিকরা চরম সঙ্কটকাল অতিক্রম করছে। কথায় কথায় সাংবাদিক নির্যাতন, সংবাদমাধ্যম বন্ধ এমনকি সাংবাদিকদের হত্যা করা হচ্ছে। সাংবাদিক হত্যার কোনো বিচার হচ্ছে না। সাগর-রুনি হত্যার তদন্ত রিপোর্ট ৭৫ বার পেছানো হয়েছে। এতে এটিই প্রমাণ হয় এ হত্যাকাণ্ডের সাথে প্রভাবশালী কেউ জড়িত। সরকার যখন ফ্যাসিস্ট হয়ে পড়ে তখনই গণমাধ্যমের উপরে হামলা করে। সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি না দেয়া পর্যন্ত আমাদের লাগাতার আন্দোলন চলবে।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, আপনারা যদি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করেন তবে সাংবাদিকদের নির্যাতন ও গ্রেফতার বন্ধ করুন এবং রুহুল আমিন গাজীকে মুক্তি দেন। সাংবাদিকদের গ্রেফতার, বাকস্বাধীনতা হরণ এবং গণমাধ্যম বন্ধ করে গণতন্ত্রের মানসকন্যা হওয়া যায় না। গণতন্ত্রের মানষকন্যা হতে হলে গণমাধ্যমকে শৃঙ্খলমুক্ত রাখতে হয়। তিনি অবিলম্বে সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়া এবং সাংবাদিকদের শীর্ষ নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তি দাবি করেন।

বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাখাওয়াত ইবনে মঈন চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, রুহুল আমিন গাজীকে রাষ্ট্রদ্রোহের বানোয়াট মামলায় গ্রেফতারের মাধ্যমে সরকারের সমালোচক, প্রতিবাদী কলামিস্ট, বিবেকবান লেখক-বুদ্ধিজীবীদেরকে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার এক অশুভ বার্তা জানান দিলো। সরকার কেবলমাত্র বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীরাই নয়, তারা এখন টার্গেট করেছে ফ্যাসিবাদ বিরোধী প্রতিবাদী কন্ঠস্বরকে। অবিলম্বে রুহুল আমিন গাজীর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান সমাবেশ থেকে এই সাংবাদিক নেতা।


আরো সংবাদ



premium cement