১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হিজাবফোবিয়া : উগ্র সেক্যুলারদের দৌরাত্ম্য

- প্রতীকী ছবি

সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ লিখিত-মৌখিক পরীক্ষা ও প্রেজেন্টেশনের সময় সব শিক্ষার্থীকে কানসহ মুখমণ্ডল দৃশ্যমান রাখার কঠোর নির্দেশ জারি করে। এর প্রতিবাদে ওই নোটিশ বাতিলের দাবিসহ পাঁচ দফা দাবি নিয়ে ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা’ মানববন্ধন করেন। তারা ভিসির কাছে স্মারকলিপি দেন। তাদের দাবি, ওই নোটিশে পরিচয় শনাক্তকরণের বিষয়টি অজুহাত হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় পরিচয় শনাক্তকরণের জন্য কর্তৃপক্ষ চাইলে অন্য কোনো গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থা নিতে পারে। নিজেদের দাবিনামায় প্রতিবাদকারী ছাত্রীরা বলেন, ‘পরিচয় শনাক্তকরণে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে; অন্যথায় পরীক্ষার আগে নারী কর্মচারী কিংবা নারী শিক্ষিকার মাধ্যমে আলাদা রুমে হিজাব ও নিকাব পরিহিতাদের পরিচয় শনাক্তের ব্যবস্থা চালু করতে হবে।’

দেশে যখন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক অচলাবস্থা বিরাজমান, তখন ঢাবির বাংলা বিভাগের এ ধরনের নোটিশকে অনেকে উসকানিমূলক বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মনে করেন। কারণ, ধর্মীয় স্বাধীনতা রুদ্ধকারী এমন নোটিশ যে ধর্মপ্রাণ মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া ও ক্ষোভ সৃষ্টি করবে তা নিশ্চয় কর্তৃপক্ষের অজানা ছিল না। তবু হঠাৎ এ ধরনের স্পর্শকাতর নোটিশ দেয়ার উদ্দেশ্য কী! এটি কি ইসলামবিদ্বেষী সেক্যুলার চক্রের দৃশ্যপটে অবস্থান নেয়ার পাঁয়তারা? যেহেতু ইসলামপন্থীদের আপাতত দমিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে! নাকি ধর্মীয় ইস্যুতে গণ্ডগোল তৈরি করে দেশের চলমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে পাবলিক ডিবেটকে অন্য দিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বিশেষ রাজনৈতিক মহলকে চাপমুক্ত করার কৌশল? কেননা আমরা দেখেছি, ভারতের কর্নাটক রাজ্যে একটি সরকারি কলেজে বোরকা-হিজাব নিষিদ্ধের সূত্র ধরে ওই রাজ্যের বিজেপি সরকার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করে তুলকালাম ঘটিয়েছিল। এর পেছনে হিন্দুত্ববাদীদের রাজনৈতিক স্বার্থ জড়িত থাকার বিষয়টি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও উঠে এসেছিল।


যাই হোক, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঢাবির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের একদল ছাত্রী তাদের ক্যাম্পাসে সর্বপ্রথম ‘বিশ্ব হিজাব দিবস’ পালনের আয়োজন করে আলোচনার জন্ম দেন। সেটি উগ্র সেক্যুলারদের গাত্রদাহের কারণ হয়েছিল। এ ছাড়া বিগত বছরগুলোতে ঢাবিতে হিজাব পরিহিতা ছাত্রীর সংখ্যা লক্ষণীয়ভাবে বেড়েছে বলে জানা যায়। একই সাথে বিভিন্ন সময় শ্রেণিকক্ষে কোনো কোনো শিক্ষকের কাছে হিজাব-নেকাব পরা ছাত্রীদের কটূক্তি ও বৈষম্যের শিকার হওয়ার অভিযোগ ওঠে।

২০২১ বছরের মার্চে ‘প্রোটেস্ট সেল অ্যাগেইনস্ট হিজাবফোবিয়া ইন ডিইউ’ নামে একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে ঢাবির একদল হিজাব-নেকাব পরিহিতা ছাত্রী নির্বিঘ্নে হিজাব-নেকাব পরার নিশ্চয়তা চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। ওই সম্মেলনে তারা জানান, হিজাব-নেকাবের কারণে ক্যাম্পাসে বা হলে কোনো বৈষম্যের শিকার হয়েছেন কি না- এমন প্রশ্নে তাদের পরিচালিত একটি জরিপে অংশ নেন ঢাবির ২২১ জন ছাত্রী। তাদের মধ্যে ‘না’ বলেন ১৪৭ জন, ‘হ্যাঁ’ বলেন ৭৩ জন। অর্থাৎ, প্রতি তিনজন পর্দানশীন ছাত্রীর একজন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। সুতরাং, তাদের এ অভিযোগ নিয়ে হেলাফেলার সুযোগ নেই। ঢাবি প্রশাসনকে এ বিষয়ে অবশ্য প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্যদিকে, উগ্র সেক্যুলাররা পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলছে, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে যদি পর্দা করতে হয়, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা কেন পড়তে এসেছেন? মাদরাসায় পড়লে তো হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কি সেক্যুলারদের পৈতৃক তালুক? ঢাবি একটি পাবলিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান; জনগণের করের টাকায় এর আর্থিক বরাদ্দ দেয়া হয়। সুতরাং, কারা মাদরাসায় পড়বেন আর কারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়বেন, সেটি ঠিক করে দেয়ার কোনো এখতিয়ার কারোর থাকতে পারে না। এছাড়া ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘বাংলাদেশ : ফেসিং চ্যালেঞ্জেস অব র‌্যাডিকালাইজেশন অ্যান্ড ভায়োলেন্ট এক্সট্রিমিজম’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের সময় অধ্যাপিকা আমেনা মহসিন বলেন, ‘সম্ভাষণ, বিদায়সহ দৈনন্দিন নানা বিষয়ে শিক্ষার্থীদের কথাবার্তায় আরবি শব্দের ব্যবহার বাড়ছে। নারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে হিজাব, নেকাব পরা এবং ছেলেদের মধ্যে গোড়ালির ওপর প্যান্ট পরার প্রবণতা বাড়ছে।’ (১৬ ডিসেম্বর ২০১৭, প্রথম আলো)


এ বিষয়গুলো তিনি তার গবেষণায় উগ্রবাদের লক্ষণ হিসেবে খুঁজে পেয়েছেন। এটি চাতুর্যপূর্ণ ইসলামবিদ্বেষী প্রপাগান্ডামূলক গবেষণা। বাংলা বিভাগের ওই নোটিশ এ ধরনের প্রপাগান্ডার ফল বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

ধর্মপ্রাণ জনগণের করের টাকায় পরিচালিত ঢাবির মতো একটি পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে বসে প্রতিনিয়ত সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের ধর্মীয় রীতিনীতির চর্চাকে উপহাস ও কলঙ্কিত করা হচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও আপত্তিকর।

বোরকা-হিজাব-নেকাবকে নিছক পোশাক হিসেবে দেখলে তা হবে একটি মস্ত ভুল। ইসলামে হিজাব-বোরকা পোশাকমাত্র নয়; বরং পর্দার প্রতীক। পর্দার সেন্স থেকে বিষয়টি দেখতে হবে। ইসলামে পর্দার উদ্দেশ্য বলতে যা বোঝায়, সেটি ধর্মীয় মূল্যবোধ হিসেবে হিজাব-বোরকা পরিধানের উদ্দেশ্য। সূরা আন-নূরে আল্লাহ বলেছেন, ‘ঈমানদার নারীদের বলে দাও, তারা যেন তাদের দৃষ্টি এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাজত করে। তারা যেন যা সাধারণত প্রকাশমান তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দিয়ে আবৃত করে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীরা, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌনকামনামুক্ত পুরুষ ও নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে।’ (আয়াত-৩১)।

সুতরাং, পর্দার মূল উদ্দেশ্য, অশ্লীলতা ও বিকৃতমনস্কদের কামুক নজর থেকে নারীদের সুরক্ষিত রাখা ও সমাজে শালীনতা বজায় রাখা। তাই আল্লাহর হুকুম ‘পর্দা’ মানার ক্ষেত্রে মুসলিম মেয়েদের জন্য ওড়না-হিজাব-বোরকা ধর্মীয়ভাবে আবশ্যিক পোশাক। তবে পর্দা শুধু নারীকে করতে বলা হয়েছে এমন নয়। পুরুষকেও চোখের পর্দা তথা দৃষ্টি অবনমিত রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে পবিত্র কুরআনে। সেই সাথে নারী-পুরুষ উভয়কে নিজ নিজ লজ্জাস্থানের হিফাজতও করতে বলা হয়েছে।

দুঃখের বিষয়, বাংলাদেশের মতো একটি মুসলিম-অধ্যুষিত দেশে উগ্র সেক্যুলাররা মুসলিমের ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি সঙ্কুচিত করতে সবসময় তৎপর। এ জন্য তারা রাষ্ট্র, মিডিয়া ও একাডেমিতে তাদের অবস্থানকে যথেচ্ছ অপব্যবহার করছেন। অন্য দিকে, পশ্চিমা বিশ্ব নিজেদের উদার ও মানবিক দাবি করলেও মুসলিমের বেলায় হয়ে পড়ে সঙ্কীর্ণ। জার্মান, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, সুইজারল্যান্ড ও নরওয়েসহ বিশ্বের প্রায় দশটি উন্নত দেশে আইন করে হিজাব ও বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়েছে তথাকথিত সেক্যুলার মূল্যবোধ রক্ষার স্বার্থে। এমনকি আইন লঙ্ঘন করলে জরিমানার ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। এটি যে সেক্যুলারিজমের আড়ালে ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী বর্ণবাদী আইন তাতে সন্দেহ নেই। হিজাব ব্যান্ড করার পেছনে ইসলামোফোবিয়া মূল অনুঘটক। এ ছাড়া ইউরোপে হিজাব-বোরকা পরা নারীদের প্রায়ই বর্ণবাদী হামলা ও কটাক্ষের শিকার হতে হয়। কার্যত ব্যাপারটা যেন এমন- উদারতা, মানবিকতা, নাগরিকদের ধর্মীয় স্বাধীনতা ও অধিকার মুসলমান বাদে আর সব ধর্মাবলম্বীর জন্য সুরক্ষিত!

বোরকা-হিজাব পরা মুসলিম মেয়েদের প্রতি সেক্যুলারদের বর্ণবাদী আচরণ খুব স্বাভাবিক একটি ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেক্যুলার জনপরিসরে তাদের ঘৃণাবশত ‘অপর’ করে দেখা হয়। উগ্র সেক্যুলারিজমের প্রভাবে হিজাব-বোরকা মুসলিম মেয়েদের জন্য এক ধরনের কৃত্রিম আইডেন্টিটি ক্রাইসিসও তৈরি করেছে। কথিত সেক্যুলার বাঙালি জাতিবাদীরা হিজাব পরা মেয়েদের ক্ষেত্রে আইডেন্টিটি ক্রাইসিস খুঁজে পান; অর্থাৎ, হিজাব-বোরকা পরলে বাঙালি পরিচয় থাকে না। যেমনটা- দাড়ি-টুপিতে তারা মুসলমানিত্ব দেখেন, বাঙালিত্ব দেখেন না। এক কথায়, তারা শুধু টিপ, সিঁদুর, ধুতি ও পৌত্তলিক সংস্কৃতিতেই বাঙালিত্ব খুঁজে পায়।

তথাকথিত প্রগতিশীলদের কাছে হিজাব-বোরকা পরা মেয়েরা ‘সাম্প্রদায়িক’ ও ‘ভিনদেশী’ হিসেবেও বিবেচিত হন। তার একটি বড় উদাহরণ : ২০২০ সালের শেষের দিকে আমাদের দেশে একজন বোরকা পরা মা তার ছেলেকে নিয়ে একটি মাঠে ক্রিকেট খেলছিলেন। তার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তখন সেই ছবি নিয়ে সেক্যুলার প্রগতিবাজরা বিতর্ক তুলেছিলেন। বিবিসি বাংলা এ বিষয়ে এক রিপোর্টে লিখেছিল, ‘মা আর সন্তানের খেলার ওই মুহূর্তটিকে ছাপিয়ে আলোচনা শুরু হয় ওই নারীর পোশাক নিয়ে। ওই নারী বোরকা পরিহিত হওয়ার কারণে অনেকে তার সমালোচনা করেছেন এই বলে, তার মধ্যে তারা ‘বাংলাদেশী মা’কে খুঁজে পাননি। অনেকে আবার বলেছেন যে, এটি পাকিস্তান কিংবা আফগানিস্তানের ছবি’। (১৩ সেপ্টেম্বর-২০২০, বিবিসি বাংলা) অথচ ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে ছবিটি তোলেন ডেইলি স্টারের একজন সাংবাদিক। হিজাব-বোরকার প্রতি অসহিষ্ণুতা যে মূলত ইসলামবিদ্বেষপ্রসূত, তাতে সন্দেহ নেই।

এছাড়া এক শ্রেণীর নারীবাদী চর্বিত-চর্বণ করে থাকেন, হিজাব-বোরকা নারীদের আবদ্ধ বা শৃঙ্খলিত করার মাধ্যমে পুরুষতন্ত্র টিকিয়ে রাখে। প্রথমত, পুরুষতন্ত্র বা নারীবাদ- এ ধরনের কোনো বাইনারি ইসলামে নেই। অধিকন্তু, এগুলো পাশ্চাত্য ধারণাপ্রসূত প্রপঞ্চ। ইসলাম তথাকথিত ব্যক্তিস্বাধীনতার ভিত্তিতে নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও অধিকারকে বিবেচনা করে না। বরং নারী-পুরুষকে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে বিবেচনা করে। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৭, দ্রষ্টব্য) উভয়কেই পরস্পরের প্রতি নির্ভরশীল হিসেবে দেখে। প্রতিটি সভ্যতা নির্মাণের পেছনে পুরুষের পাশাপাশি নারীর ভূমিকাও কম নয়। নারীর অবদান ছাড়া কোনো সভ্যতা নির্মিত-বির্নিমিত হতে পারত না। এগোতে পারত না ধর্মও। ফলে ইসলাম নারী-পুরুষের সম্পর্ক ও অধিকারের মধ্যে কোনো বৈষম্য রাখেনি।

আল্লাহ কুরআনে বলেছেন, ‘নারীর ওপর যেমন পুরুষের অধিকার রয়েছে, তেমনি রয়েছে পুরুষের ওপর নারীর অধিকার।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-২২৮)। কিন্তু পশ্চিমা সমানাধিকারের বয়ানের ফাঁদে পা দেয়া আমাদের ভুল হবে। যেমন, মাতৃত্বকালীন ছুটি নারীর প্রাপ্য, পুরুষের নয়। ফলে সমানাধিকারের আলাপটা সার্বিকভাবে খুব একটা যুক্তিসঙ্গত নয়। ইসলাম ন্যায্যতা তথা হকের জায়গা থেকে বিষয়গুলো দেখে। তাই দায়িত্ব ও অধিকারের প্রশ্নে তথাকথিত নারীবাদী ‘সমতা’ নয়, বরং উভয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে ইসলাম। ন্যায্যতা ও উপযুক্ততা অনুসারে যাকে যে অধিকার ও দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, সে সেটি পালন করবে। এভাবে সভ্যতা ও মানবসমাজ এগিয়ে যাবে। প্রতিভা, যোগ্যতা ও সুযোগ থাকলে হিজাব-বোরকা নারীদের কখনো আবদ্ধ বা পশ্চাৎপদ করে রাখতে পারে না। বর্তমান দুনিয়ায় হিজাব পরিহিতা অসংখ্য সফল নারী রয়েছেন। কেউ সংসারে সফল, কেউ বা বাইরে। কিন্তু দুঃখজনক হলো- মা হিসেবেও কোনো নারীর যে অসাধারণ সাংসারিক সফলতার গল্প থাকতে পারে, তা যেন আড়াল করে রাখা হয় নতুবা স্বীকৃতি দেয়া হয় না। তা ছাড়া হিজাব-বোরকা পরিত্যাগ করলে নারীমুক্তি ঘটবে- এটিও অতিরঞ্জিত বয়ান।

কেবল পুঁজিবাদী আধুনিকতাই সফলতার চূড়ান্ত মাপকাঠি নয়। তাই নারীর শিক্ষা ও সফলতা পর্দার কারণে বাধাগ্রস্ত হবে- এমন ধারণা একরৈখিক ও সঙ্কীর্ণ চিন্তাপ্রসূত। এ ছাড়া কুরআনে আল্লাহ উপমা দিয়ে বলেছেন, ‘নারীরা পুরুষদের পোশাক আর পুরুষরা নারীদের পোশাক।’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ২-১৮৭)। সুতরাং, পুরুষতন্ত্রের অজুহাতে নারীমুক্তি ও নারী-স্বাধীনতার জিগির তুলে পুরুষ থেকে নারীকে বিচ্ছিন্ন করতে চাওয়া সভ্যতাবিরোধী চিন্তাই শুধু নয়, ইসলাম পরিপন্থীও।

লেখক : রাজনৈতিক বিশ্লেষক
tareqislampt@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাঁয়তারা চালাচ্ছে বিএনপি : কাদের রৌমারীতে বড়াইবাড়ী সীমান্তযুদ্ধ দিবস পালিত

সকল