২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

রাজনীতিক এম এ সালামকে নিয়ে কিছু কথা

-

সব সময়ই দেশে কিছু কিছু মানুষের জন্ম হয়; যারা শুধু নিজের জন্য জীবন ব্যয় করেন না, অন্যের জন্যও তার মন কাঁদে। তারা হন পরোপকারী ও মানবদরদি। এ সব ব্যক্তি নিজের পাড়া-মহল্লার সীমানা ছাড়িয়ে হয়ে ওঠেন জাতীয়ভাবে পরিচিত ব্যক্তিত্ব। তেমনি একজন ব্যক্তি ছিলেন এম এ সালাম। তিনি ১৯৩৮ সালের ১৩ আগস্ট চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার অন্তর্গত পৈতৃক নিবাসে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম আবদুর রহমান। মা আছিয়া খাতুন। বাবা পেশায় একজন কন্ট্রাক্টর। মা ছিলেন গৃহিণী। মা-বাবার ১১ সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন নবম। তার পিতৃ প্রদত্ত নাম মোহাম্মদ আবদুস সালাম হলেও এম এ সালাম নামেই ছিলেন সমধিক পরিচিত। তাদের আদি নিবাস ছিল হাটহাজারীতে। মহাকবি আলাওল তার পূর্বপুরুষ। মোগল আমলে আগ্রাবাদ মুহুরীপাড়ায় এসে তার পূর্বপুরুষ বসতি স্থাপন করে।

স্থানীয় মক্তবে এম এ সালামের শিক্ষাজীবন শুধু। স্থানীয় প্রাইমারি স্কুল, বারিক মিয়া হাইস্কুল ও বেগমজান হাইস্কুলে লেখাপড়া করেন তিনি। ১৯৫৪ সালে ম্যাট্রিক পাস করার পর চট্টগ্রাম কলেজে ভর্তি হন। সেখান থেকে ১৯৫৬ সালে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন। পরে আইসিএস থেকে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ডিপ্লোমা করেন। ১৯৬২ সালের ১৪ ডিসেম্বর বিয়ে করেন চট্টগ্রামের শিল্পপতি আনোয়ারা জুট মিল লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর বড় মেয়ে নূরজাহান বেগমকে। একজন বাবা হিসেবেও সফল ছিলেন তিনি। তার পাঁচ ছেলে ও দুই মেয়ে সবাই সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজ নিজ ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত।

সাবেক পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের স্পিকার ফজলুল কাদের চৌধুরী ছিলেন তার রাজনৈতিক জীবনের প্রথম দীক্ষাগুরু। তিনি যোগদান করলেন মুসলিম লীগে। সেই থেকে নানা ঘাত-প্রতিঘাত, ভাঙাগড়া, দলবদলের হিড়িকের মধ্যেও আমৃত্যু মুসলিম লীগের রাজনীতিতেই সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৯৩ সালে মুসলিম লীগের কাউন্সিল নির্বাচনে দলের সিনিয়র সহসভাপতি নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০০০ সালে কাজী আবদুুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে দলের সভাপতি নির্বাচিত হন ও একই সময় মহাসচিব নির্বাচিত হন মোহাম্মদ জমির আলী। এম এ সালামের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী অনুষ্ঠানে তার তৃতীয় ছেলে হারুন সালামের শ্বশুর স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দীন বলেছিলেন, ‘আমি সালাম সাহেবের সাথে আত্মীয়তা করেছি দল-মতের ঊর্ধের মানুষ এম এ সালামকে দেখে। কাজী আকরাম আরো বলেন, ‘দলের প্রতি আনুগত্য না থাকলে দল বদলের তাবিজ পরে নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার সুবর্ণ সুযোগের মায়াবী হাতছানিতে সালাম সাহেবও হয়তো সাড়া দিতেন।’

নিঃস্বার্থ জনগণের সেবক আদর্শ রাজনীতিক সালাম সাহেবকে কোনো লোভ-লালসা কখনো এতটুকু বিভ্রান্ত করতে পারেনি। তিনি শুধু একজন রাজনীতিবিদ নন, একজন সফল ব্যবসায়ী ও শিল্পপতি হিসেবেও সর্বমহলে পরিচিত ছিলেন। তবে নেশা ছিল জনগণের কল্যাণ করা। এখানেই মানবদরদি হিসেবে তার সত্যিকার পরিচয় পাওয়া যায়। বন্দরনগরী চট্টগ্রামের এমন কোনো মসজিদ, মাদরাসা, মক্তব, বেসরকারি স্কুল-কলেজ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন কমই আছে যেখানে তার অনুদানের হাত প্রসারিত হয়নি। এই ধর্মনিষ্ঠ মানুষটি ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর ইন্তেকাল করেন।

লেখক : সাধারণ সম্পাদক, এম এ সালাম স্মৃতি সংসদ


আরো সংবাদ



premium cement
ঢাবির কলা, আইন ও সামাজিক বিজ্ঞান ইউনিটে প্রথম হয়েছেন যারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিজ দেশে ৫ বছর পর ফিরল দিপক চট্টগ্রামে ৬ কিশোর গ্যাংয়ের ৩৩ সদস্য আটক শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের জন্য সংগঠন মজবুত করতে হবে : শামসুল ইসলাম ইউরো ২০২৪’কে সামনে রেখে দল নির্বাচনে বিপাকে সাউথগেট ভারতীয় পণ্য বর্জনকে যে কারণে ন্যায়সঙ্গত বললেন রিজভী মাকে ভরণ-পোষণ না দেয়ায় শিক্ষক ছেলে গ্রেফতার প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত ঢাবির সব ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ নিরাপত্তা-বিষয়ক আলোচনা করতে উত্তর কোরিয়ায় রুশ গোয়েন্দা প্রধান

সকল