২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পল্লী উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে

- প্রতীকী ছবি

বৈশ্বিক উৎপাদনব্যবস্থা ও শহরাঞ্চলের উত্তরোত্তর পরিবর্তনের ফলে পল্লী এলাকার বৈশিষ্ট্যাবলি দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। পল্লী উন্নয়ন বলতে সাধারণত জীবন ও অর্থনৈতিক মানোন্নয়নের প্রক্রিয়াকে বোঝানো হয় যা পৃথক ও বিক্ষিপ্ত জনবহুল এলাকার সাথে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত। প্রচলিত ধারায় পল্লী উন্নয়ন কৃষি ও বনের মতো প্রাকৃতিক সম্পদকে ঘিরে কেন্দ্রীভ‚ত হয়েছে। সম্পদের বিচ্ছুরণ ও অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কৃষিজ সম্পদের পরিবর্তে পর্যটন, উৎপাদক এবং বিনোদনব্যবস্থা স্থলাভিষিক্ত হয়েছে। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ততার ফলে উন্নয়নের লক্ষ্যস্থলকে বৃহৎ দৃষ্টিতে প্রসারণ ঘটানোয় কৃষি অথবা প্রাকৃতিক সম্পদভিত্তিক ব্যবসার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

শিক্ষা, উদ্যোক্তা, বাহ্যিক অবকাঠামো ও সামাজিক অবকাঠামো গ্রাম্য এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা পালন করছে। এ ছাড়াও পল্লী উন্নয়নের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হিসেবে রয়েছে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা। বিপরীতক্রমে শহুরে এলাকার সাথে অনেক বিষয়ে মিল থাকলেও গ্রাম্য এলাকার সাথে একে-অপরের পার্থক্য বিশাল ও ব্যাপক। এ প্রেক্ষিতে পল্লী উন্নয়নের বিভিন্ন কৌশল ও রূপরেখা বিশ্বব্যাপী প্রচলিত রয়েছে। পল্লী উন্নয়ন উৎপাদন বৃদ্ধি, সম্পদের সুষম বণ্টন ও ক্ষমতায়নের মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র জনগণের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনমান উন্নয়নের জন্য এক পরিকল্পিত পরিবর্তন। সাধারণত এ পরিবর্তনকে দুটি ভাগে ভাগ করা যায়, পল্লী প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও প্রযুক্তিগত।

উদার অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিতে এটি পল্লীর জনগণের ক্রমবর্ধমান কল্যাণকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে পরিচালিত ব্যাষ্টিক ও সামষ্টিক প্রয়াসের সাথে সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবর্তনের গোটা বিষয়টির প্রতি নিবদ্ধ। পল্লী উন্নয়নের উদ্দেশ্যাবলি হলো গ্রামীণ জীবনধারার সাথে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নকে সম্পৃক্ত করার পথ খোঁজা ও গ্রামীণ এলাকায় অবস্থান করে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করা। বহিরাগত কোনো ব্যক্তি খুব সহজেই এলাকার অবস্থা, সংস্কৃতি, ভাষা ও অন্যান্য অতি প্রচলতি বিষয়বস্তুর সাথে নিজের অবস্থান মেলে ধরতে পারেন না। কিন্তু সাধারণ মানুষ গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে তাদের উপযোগী কৌশল গ্রহণে খুব সহজেই সম্পৃক্ত হতে পারেন। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে গৃহীত সমন্বিত উন্নয়ন কৌশল নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষিত হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে অনেক কলাকৌশল ও চিন্তাধারা পল্লী উন্নয়নে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আজকের বাংলাদেশে পল্লী উন্নয়নের নির্দিষ্ট লক্ষ্য হচ্ছে গ্রামীণ বিত্তহীনদের, বিশেষ করে পশ্চাৎপদ মহিলা ও শিশুদের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে সক্ষম করা এবং সে নিয়ন্ত্রণের ফলশ্রুতি হিসেবে প্রাপ্ত সুযোগ সুবিধার যথাযথ বণ্টন। বাংলাদেশে পল্লী উন্নয়নের চাবিকাঠি হলো (ক) দারিদ্র্য দূরীকরণ ও গ্রামীণ দরিদ্রদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, (খ) আয় ও সম্পদের সুষম বণ্টন, (গ) ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি, (ঘ) পরিকল্পনা প্রণয়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন, সুযোগ সুবিধার অংশীদারিত্ব, পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচির মূল্যায়নে স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ এবং (ঙ) অপ্রতুল সম্পদের ব্যবহার ও বণ্টন নিয়ন্ত্রণের জন্য গ্রামীণ জনগণকে অধিকতর অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রদান।

১৯৭১ সালের পূর্বে এ দেশে কয়েক ধরনের পল্লী উন্নয়ন সংস্থা বিদ্যমান ছিল। গ্রাম সরকারের উৎপত্তি হয়েছে অতি প্রাচীনকাল থেকে। গ্রাম সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে কর আদায় এবং এর পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা বাণিজ্যের প্রসার ঘটানো। সীমিত আকারে পল্লী অবকাঠামো গঠন এবং জরুরি ত্রাণতৎপরতা চালানো ছাড়া মধ্যযুগের শাসনামল পল্লী উন্নয়নের সুবিন্যস্ত ও প্রাতিষ্ঠানিক ধারণার তেমন কোনো দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেনি। ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত আইনের মাধ্যমে ব্রিটিশ এক ধরনের আজ্ঞাবহ জমিদার শ্রেণী সৃষ্টি করে। এই জমিদারি ব্যবস্থা বাংলার স্থানীয় পল্লী সংস্থাগুলো বিলুপ্ত করে কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠীকে রাজস্ব আদায়ের উত্তম মাধ্যম ও রাজনৈতিক সমর্থনের ভিত্তিভূমি তৈরি করে দিয়েছিল।

কতক সমাজহিতৈষী ব্যক্তি কিছু সরকারি কর্মকর্তাসহ স্থানীয়ভাবে এবং সীমিত আকারে হলেও পল্লী উন্নয়নের বেশ কিছু কর্মসূচি বাস্তবায়নে প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন। রাজনীতি ও সমাজসেবা ব্যক্তিত্ব একে ফজলুল হক ১৯৩৭ সালে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন বহু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন এবং বাংলার কৃষকদের ঋণ-সমস্যা ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য বেশ কিছু আইন পাস করান। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকদের অধীনে উচ্চপদে আসীন সরকারি কর্মকর্তা যেমন এনএম খান, টিআইএম চৌধুরী প্রমুখ নিজ নিজ এখতিয়ারে পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা চালিয়েছেন। ১৯৫৩ সালে মার্কিন সরকারের সহায়তায় পল্লী কৃষি ও শিল্প উন্নয়ন কর্মসূচি ভিলেজ অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডেভেলপমেন্ট (ভি-এইড) চালু করা হয়।

পাকিস্তান আমলে পল্লী উন্নয়নের স্তরে জনতার অংশগ্রহণ নিশ্চিতকরণের ক্ষেত্রে এটাই ছিল প্রাথমিক প্রয়াস। পল্লী উন্নয়নের সব প্রধান ক্ষেত্র যেমন কৃষি, প্রাথমিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পয়ঃব্যবস্থা, সমবায়, ভ‚মি পুনরুদ্ধার, ভৌত অবকাঠামো এবং সামাজিক ও বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড এই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তবে কর্মসূচিটি স্বীয় ভিত রচনায় ব্যর্থ হয়, কারণ প্রতিষ্ঠান স্থাপন ও তৃণমূল পর্যায়ে সমাজকে সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তেমন উদ্যোগ নেয়া হয়নি এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে ১৯৬১ সালে প্রকল্পটির প্রতি সমর্থন প্রত্যাহার করা হয়। তবে এই কর্মসূচির সীমাবদ্ধতা সত্তে¡ও এটি পল্লী উন্নয়নের কুমিল্লা মডেলের ধারণাগত ভিত্তি রচনা ও অগ্রগতির জন্য যথেষ্ট অবদান রেখেছে।

পাকিস্তান একাডেমি অব রুরাল ডেভেলপমেন্ট কর্তৃক কুমিল্লা মডেল পরিকল্পিত হয়। পরবর্তী সময়ে এর নামান্তর হয়েছে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড)। মডেলটির ছিল চারটি মৌল ভিত : (ক) পল্লী কর্মপ্রকল্প : স্থানীয় জনশক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পানি নিষ্কাশন প্রণালীর উন্নয়ন; (খ) থানা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন কেন্দ্র : কৃষি, কারিগরি, সমবায়, নাগরিকদের অধিকার ও কর্তব্য ইত্যাদি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দান; (গ) থানা সেচ প্রকল্প : চাষিদের সেচসুবিধা দান এবং পাওয়ার পাম্প ও টিউবওয়েলের সামষ্টিক ব্যবহার ও ব্যবস্থাপনা; (ঘ) দ্বি-স্তর সমবায় : থানা ও মফস্বল পর্যায়ে পরিপূরক দুটি সমবায় কাঠামোর মাধ্যমে পল্লীর জনগণের মধ্যে সহযোগিতার মানসিকতা সৃষ্টি করা।
বাংলাদেশ এর জন্মলগ্ন থেকেই পল্লী উন্নয়ন সম্পর্কিত নানা মতবাদের অব্যাহত পরীক্ষা-নিরীক্ষা প্রত্যক্ষ করে যাচ্ছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি ও সমাজ গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বহুসংখ্যক স্বেচ্ছাসেবী ও সরকারি সংস্থা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। দেশের অন্যান্য অংশে কুমিল্লা মডেলের পুনঃপ্রচলন ও সম্প্রসারণের জন্য ১৯৭২ সালে সরকার সমন্বিত পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচিকে তৎপর করে তোলে। পরবর্তী সময়ে কর্মসূচিটি বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড নামীয় নতুন এক সংস্থায় রূপান্তরিত হয়। শেষ পর্যন্ত এটি পল্লী উন্নয়নের বৃহত্তম সরকারি সংস্থায় পরিণত হয়। এর প্রধান কাজ পল্লী দারিদ্র্য দূরীকরণ, উৎপাদনমুখী প্রকল্প গ্রহণ, দ্বি-স্তর সমবায়ের ব্যাপ্তি ঘটানো, পল্লী মহিলা প্রকল্প ও দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পের মতো টার্গেট গ্রুপভিত্তিক প্রকল্প ও কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প প্রণয়ন।

স্বনির্ভর আন্দোলনের একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য ছিল স্বাধীনতা ও স্বনির্ভর মতবাদের প্রতিফলন ঘটিয়ে পল্লী উন্নয়নের প্রশ্নে জনগণের দৃষ্টি থানা থেকে ফিরিয়ে গ্রাম পর্যায়ে নিবদ্ধকরণ, গ্রামের প্রাপ্তবয়স্ক সদস্যদের সমন্বয়ে গ্রামসভা নামক প্রতিষ্ঠান গঠন এবং উন্নয়ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কিত অংশীদারিত্বমূলক পল্লী পরিকল্পনা প্রণয়ন। স্বনির্ভর আন্দোলনের বড় ধরনের এক দৃষ্টান্তমূলক প্রকল্প যশোর জেলার উলশী-যদুনাথপুর খালখনন কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে ১৮,০০০ একর জলাভূমিকে চাষাবাদের আওতায় আনা হয়। এ জন্য প্রয়োজন হয়েছে দীর্ঘ ৪.২৬ কিলোমিটার সেচখাল খনন। প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর আওতায় জনগণের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নের প্রধান লক্ষ্যকে সামনে রেখে বার্ড ১৯৭৫ সালে পল্লী উন্নয়নের খাতওয়ারি ধারণা থেকে স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন নিবিড় পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচি শুরু করে।

১৯৯৩ সালে বার্ড একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচির উদ্যোগ গ্রহণ করে। সেটি ছিল ক্ষুদ্র চাষি উন্নয়ন কর্মসূচি যার সব তৎপরতার লক্ষ্য ক্ষুদ্র কৃষক। এর উদ্দেশ্য ছিল চাষি ও ভূমিহীন শ্রমিকদের উৎপাদন ও প্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় অন্তর্বর্তীকালীন সহায়তা ও অন্যান্য সেবা দিয়ে সংগঠিত করা। অপরাপর সরকারি পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প হলো দুস্থ শ্রেণীর উন্নয়ন প্রকল্প, থানা সম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান প্রকল্প, পল্লী সমাজসেবা কর্মসূচি, সমাজ উন্নয়ন কর্মসূচি, গ্রামীণ মহিলাদের স্বনির্ভর কর্মসূচি এবং পল্লী কর্মসংস্থানবিষয়ক প্রযুক্তি। সর্বশেষ পরিকল্পনায় লক্ষ করা যায় যে, সরকারের চলমান পল্লী উন্নয়ন নীতিমালার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে কর্মসংস্থানমুখী উৎপাদন, উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জনগণের অংশগ্রহণ, সরকারি ও বেসরকারি খাতের মধ্যে ব্যাপকতর সহায়তা এবং পল্লীর দরিদ্র মহিলা, জাতিগত সংখ্যালঘু, শিশু ও প্রবীণ-প্রবীণা প্রভৃতি পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য বিশেষ সব প্রকল্প প্রণয়ন।

পল্লী উন্নয়ন প্রয়াস সম্পর্কিত অতীত অভিজ্ঞতার বিশেষণ থেকে বড় ধরনের বেশ কিছু সমস্যাকে চিহ্নিত করা যায়, যেগুলো সব প্রয়াসের সফল সম্পাদনকে ব্যাহত করে আসছে। এসব সমস্যা হচ্ছে : পল্লী উন্নয়ন সংস্থাসমূহের অস্থায়িত্ব, অযোগ্য ও দুর্নীতিপরায়ণ নেতৃত্ব, কেন্দ্রীয় শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক স্থানীয় সরকারগুলোকে অসহযোগিতা, সুবিন্যস্ত পল্লী উন্নয়ন নীতিমালার অভাব, পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প থেকে উদ্ভূত সুযোগসুবিধার অসম বণ্টন, প্রাকৃতিক ও লব্ধ সম্পদের সীমাবদ্ধতা, পল্লী উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ও পরিকল্পনায় উচ্চশ্রেণীর আধিপত্য এবং অসহায়ক এক গ্রামীণ সমাজ। বাংলাদেশের পল্লীর আর্থসামাজিক বুনিয়াদের প্রকৃতিই পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচির কার্যকর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে হুমকি হয়ে দেখা দেয়। সেসব বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পুঁজি গঠনের নিম্নস্তর, কৃষিনির্ভর অর্থনীতি, নিপুণ ও শিক্ষিত জনশক্তির অভাব, বেকারত্ব, মুদ্রাস্ফীতি, বিদেশী সহায়তার ওপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরশীলতা, দ্রুত জনসংখ্যা বৃদ্ধি, গ্রাম্য রাজনৈতিক দলাদলি, ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অনুন্নত বাজার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং অনুৎপাদনশীল খাতে বিনিয়োগ।

পল্লী এলাকার সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ওপর নির্ভর করে পল্লী উন্নয়ন কৌশল গ্রহণ করতে হবে। সচরাচর পল্লী উন্নয়ন পরিকল্পনা স্থানীয় অথবা আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ, আঞ্চলিক উন্নয়ন সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা, সরকারব্যবস্থা অথবা আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংগঠনের মাধ্যমে শীর্ষ থেকে নিম্ন পর্যায় পর্যন্ত প্রয়োগ করা হয়। তার পরও স্থানীয় জনসাধারণ উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ততার লক্ষ্যে নিজস্ব পরিকল্পনাও গ্রহণ করতে পারে। তবে এটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য প্রযোজ্য না-ও হতে পারে। তবুও অনেক উন্নয়নশীল দেশ পল্লী উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে বেশ সক্রিয়। গ্রামীণ সরকারনীতিতে পল্লী উন্নয়নের প্রধান উৎস হচ্ছে অনুন্নত গ্রামগুলোকে উন্নয়নের ধারায় সম্পৃক্ত করা।

লেখক : সহকারী কর্মকর্তা, ক্যারিয়ার অ্যান্ড প্রফেশনাল ডেভেলপমেন্ট সার্ভিসেস বিভাগ, সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ই-মেইল : arafat.bcpr@seu.edu.bd


আরো সংবাদ



premium cement

সকল