১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

এবনে গোলাম সামাদ

এবনে গোলাম সামাদ - ছবি : নয়া দিগন্ত

(গতকালের পর)

গতকালের লেখাটি পড়ার জন্য এখানে ক্লিক করতে পারেন
এবনে গোলাম সামাদ (প্রথম অংশ)

বখতিয়ার খিলজীর বঙ্গ বিজয়ের পর থেকে এ দেশে বিস্তর কুরআন-হাদিসের চর্চা হয়েছে। গড়ে উঠেছে মাদরাসা। এসব মাদরাসায় ফিকাহর চর্চা হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে মানুষ হজে গেছেন। ফেরার সময় তারা নিয়ে এসেছেন মুসলিম বিশ্বের নানা অংশের চিন্তার ফসল। তাই কেবল লোক-ইসলাম ও তথাকথিত সূফী সাধনার মাধ্যমে বাংলার মুসলিম মানস ব্যাখ্যা করা যায় না। এ কথা ঠিক পীরপূজার একটা অনুপ্রবেশ ঘটেছে বাঙালি মুসলমানের মধ্যে। কিন্তু সেটা শুধু বাংলাদেশের ঘটনা নয়। পুরো মুসলিম জগতেই এটা ঘটেছে। এই প্রভাব থেকে মুক্ত করার জন্য চেষ্টাও হয়েছে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে আবদুল ওহাব এই পীরপূজার বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছিলেন। এর প্রভাব বাংলাদেশে এসেও পড়েছে। এটি ধর্ম-সংস্কার আন্দোলনের মধ্যেই সীমিত থাকেনি। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দাবি আদায়ের আন্দোলনেও পরিণত হয়েছে। ওহাবী, ফরায়েজী ও তিতুমীরের মোহাম্মদীয়া আন্দোলন এর বড় প্রমাণ। সামাদ লিখেছেন :

বাংলাদেশ আজ একটা পৃথক রাষ্ট্র। বাঙালি মুসলমানকে নিয়ে নতুন করে আলোচনা তাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজকের বাঙালি মুসলমানকে বুঝে দেখতে হলে যা স্বীকার করা দরকার, তা হলো বাঙালি মুসলমানের আছে একটা স্বতন্ত্র ইতিহাস। বাংলাদেশের মুসলমানের মধ্যে কাজ করে চলেছে যে ধর্ম চেতনা, তা কেবল বাংলাদেশেই সীমাবদ্ধ নয়, তার ব্যাপ্তি বিশ্বের একটা বিরাট অংশজুড়ে। অতীতে ইসলামী বিশে^র এক অংশের জাগরণ আর এক অংশকে প্রভাবিত করেছে। বাঙালি মুসলমানও ইসলামী বিশে^র মূলভাবনা স্রোত থেকে বিছিন্ন হয়ে থাকেনি, থাকতে পারেনি। কেবল বাংলাদেশের মধ্যেই থাকেনি তার দৃষ্টি সীমাবদ্ধ হয়ে।

চার.
শিল্পকলা নিয়ে এবনে গোলাম সামাদ তিনটি বই লিখেছেন :
শিল্পকলার ইতিকথা (১৯৬০)
ইসলামী শিল্পকলা (১৯৭৮)
মানুষ ও তার শিল্পকলা (২০০৬)

শিল্পকলা নিয়ে সামাদের আগ্রহ ও বুদ্ধিবৃত্তির গভীরতার ফল হচ্ছে এ বইগুলো। এসব লেখালেখির ভেতর দিয়ে সামাদ যেমন শিল্পকলা বিষয়ে বাংলাভাষী পাঠকদের আগ্রহ জাগিয়ে তুলতে চেয়েছেন তেমনি শিল্পকলার ভেতর দিয়ে বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের জায়গাটাও চিহ্নিত করেছেন।

শিল্পের মাধ্যমে আমরা মানব মনের আশা-আকাক্সক্ষার কথা পড়তে পারি। শিল্প আসলে মানুষের জীবনের অংশ। ধর্ম যেমন মানুষের সমস্যা-বিক্ষুব্ধ জীবনে সান্ত্বনা হিসেবে কাজ করে, তেমনি শিল্পও এক সান্ত্বনার জগত তৈরি করে। ধর্ম যেমন মানুষের আত্মপরিচয়ের আকাক্সক্ষাকে জাগ্রত করে, তেমনি শিল্পও মানুষের পরিচয় বৈশিষ্ট্যকে মূর্ত করে। এই কারণেই দেখা যায় অনেক সময় ধর্ম ও শিল্প হাত ধরাধরি করে চলে। সামাদ লিখেছেন :

ধর্ম কাজ করেছে মানুষের সমস্যা-বিক্ষুব্ধ জীবনে সান্ত্বনা হিসেবে। আশার প্রতীক হিসেবে শিল্পেও সে সৃষ্টি করতে চেয়েছে এক অপার্থিব জগৎ, পরম সান্ত্বনার জগৎ। মানুষ অপ্রাপ্তব্যকে পেতে চেয়েছে তার ধর্ম ও শিল্প সাধনার মাধ্যমে।

একই কারণে দেখা যায় শিল্পের মধ্যেও বৈচিত্র্য আছে। আছে বিভিন্ন ধারা। এই বিভিন্নতা তৈরি হয়েছে মানুষের ইতিহাস ও সংস্কৃতির প্রভাবের কারণে।

শিল্পকলা সম্বন্ধে বলতে গিয়ে সামাদ এক জায়গায় লিখেছেন :
সামাদ যে কালের মানুষ সেসময় সমকালীন শক্তিশালী মতবাদ মার্কসবাদ সারা দুনিয়া দাপিয়ে বেড়িয়েছে। ফলে এসব চিন্তাভাবনা কমবেশি তাকেও প্রভাবিত করেছে। কিন্তু মার্কসবাদ তাকে নাড়া দিলেও তিনি মার্কসবাদী হননি। মার্কসের দার্শনিক ও সমাজতাত্ত্বিক ধ্যান-ধারণা সামাদকে প্রভাবিত করেনি। কিন্তু তিনি মনে করেন, মার্কসের অর্থনৈতিক চিন্তা যেকোনো দেশের অর্থনীতিকে বিশ্লেষণ করে তার মূল চরিত্র বুঝতে সহায়তা করে। সে হিসেবে তিনি মনে করেন বাংলাদেশের জাতীয় নীতিনির্ধারণে এখনো এরা সহায়ক হতে পারে। চেষ্টা হওয়া উচিত অপুঁজিবাদী (Non-capitalist) পন্থায় অগ্রসর হওয়া। পুঁজিবাদকে আঁকড়ে ধরা নয়।

তাহলে কি সামাদ মার্কসবাদী না হয়েও মার্কসবাদী অর্থনীতির সমর্থক? সেটাও না। সামাদ গণতন্ত্র চান। ব্যক্তি উদ্যোগ চান। কিন্তু সেই উদ্যোগের সীমাহীনতাকে প্রয়োজনে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণাবদ্ধও করতে চান। সেদিক দিয়ে তিনি সম্ভবত গণতান্ত্রিক সমাজবাদী ও মিশ্র অর্থনীতির সমর্থক। মার্কসবাদ সম্বন্ধে তার কথা হলো, মার্কসের অনেক ভবিষ্যদ্বাণী খাটেনি। তার থিওরিতেও আছে অনেক রকমের ভুল। মার্কসবাদীরা ইতিহাসকে কেবল শ্রেণী সংগ্রাম দিয়ে ব্যাখ্যা করেছেন। কিন্তু মানুষের ইতিহাস শুধু শ্রেণী সংগ্রামের ফল নয়। মানুষের পরস্পর সহযোগিতারও ইতিহাস। মার্কসের ধর্মচিন্তা ছিল বিশেষভাবে বিভ্রান্তিকর। তিনি ধর্মকে মনে করেছেন যাবতীয় অজ্ঞতা ও কুসংস্কারের ফল। কিন্তু সামাদ বলেছেন, সব ধর্মের ব্যাখ্যার মধ্যেও আমরা দেখি মানবতাবাদের অনেক উন্নততর বিকাশ।

সামাদ শুধু মার্কসের থিওরির পূর্ণমূল্যায়ণ করেননি, মার্কসবাদীদের বিচ্যুতি নিয়েও লেখালেখি করেছেন এবং এই বিচ্যুতিগুলো তাদের পতনকে ত্বরান্বিত করেছে। তিনি লিখেছেন :
সব বাঙলা ভাষাভাষী মানুষ একত্র হয়ে এখনো এক রাষ্ট্র গড়তে চাচ্ছেন না। বাঙলা যাদের মাতৃভাষা তাদের ৬০% বাস করে বাংলাদেশে। আর বাকি ৪০ শতাংশ বাস করেন ভারতে। ভারতে বাংলাভাষী হিন্দুরা বাঙালি হতে চাচ্ছেন না, থাকতে চাচ্ছেন ভারতীয় হয়ে। শিখতে চাচ্ছেন রাষ্ট্রভাষা হিন্দি। আজকের বাংলাদেশের জাতিসত্তা কেবল ভাষাভিত্তিক নয়। ভাষা এর একটি মূল্যবান উপাদান। কিন্তু একমাত্র উপাদান নয়। এর আরেকটি উপাদান হলো ইসলামের স্বাতন্ত্র্য। আজকের বাংলাদেশ টিকে আছে বাঙলাভাষী মুসলমান আছেন বলেই। তারা হলেন- এ দেশের মেরুদণ্ড। আমি তাই বলব, সংস্কৃতির শিকড় খুঁজতে হলে খুব বেশি দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। খুঁজতে হবে ইসলামের স্বাতন্ত্র্যের মধ্যে। আরেক কথায় ইসলামী ঐতিহ্যের (Tradition) মধ্যে।

তাই বাংলাদেশের মানুষ যে চেতনাকে নির্ভর করে পৃথক স্বাধীন জাতিরাষ্ট্র গড়ে তুলেছেন তাকে ঠিক বাঙালি জাতীয়তাবাদ বলা চলে না। বাঙালি জাতীয়তাবাদের ভেতরে একটি আত্মপরিচয়গত বিভ্রান্তির সম্ভাবনা আছে, যা একটি স্বাধীন জাতি রাষ্ট্রের পক্ষে স্বাস্থ্যকর নয়।
এই আত্মপরিচয়গত বিভ্রান্তি দূর করার জন্য তিনি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বিশেষভাবে আলোচনা করেছেন। কারণ রবীন্দ্রনাথকে বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা তাদের সাংস্কৃতিক প্রতীক হিসেবে মনে করে। সামাদ লিখেছেন :

রবীন্দ্রনাথ বাঙলা ভাষায় লিখেছেন; কিন্তু রবীন্দ্রনাথ কখনোই বাঙলা ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদে আস্থাশীল ছিলেন না। তিনি আস্থাশীল ছিলেন নিখিল ভারতীয় জাতীয়তাবাদে। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন হিন্দুত্ববাদে বিশ্বাসী। কারণ তিনি ফিরে যেতে চেয়েছেন প্রাচীন বৈদিক যুগের সমাজ জীবনের মূল্যবোধে। তাই তিনি কখনোই আমাদের আদর্শ হতে পারেন না।

১৯৭১ এর ঘটনাবলীকেও সামাদ এমনভাবে মূল্যায়ন করেছেন যার সাথে বাঙালি জাতীয়তাবাদী মূল্যায়নের রয়েছে যথেষ্ট ভিন্নতা। এই ভিন্নতা তৈরি হয়েছে অভিজ্ঞতার ভিন্নতার কারণে। এ দেশের বাঙালি জাতীয়তাবাদী বয়ান তৈরি হয়েছে উনিশ শতকের কলকাতাকেন্দ্রিক বর্ণবাদী ব্রাহ্মণ্যদের সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতা থেকে, যে অভিজ্ঞতার মধ্যে পূর্ববাংলার বাঙালি মুসলমান ছিল অনুপস্থিত। পূর্ববাংলার মুসলমানরাও ছিল বাঙালি এবং সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালি। কিন্তু তাদের অভিজ্ঞতা কলকাতাকেন্দ্রিক বাঙালি সংস্কৃতিকেন্দ্রিক মহাকাব্যে স্থান পায়নি। তাই পূর্ববাংলার মুসলমান হেঁটেছে ভিন্নপথে। সেই ভিন্নপথের ইঙ্গিত দিয়েছেন এবনে গোলাম সামাদ :

কলকাতায় থাকার সময় আমি অনেক সময় গিয়েছি পশ্চিমবঙ্গের গ্রামগঞ্জে। সেখানে কথা হয়েছে অনেক মুসলমানের সাথে। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানেরা আমাকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন আমরা মুক্তিযুদ্ধ করছি? পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানের চেয়ে আমরা তো আছি অনেক ভালো। আর ভোগ করছি অনেক বেশি বাস্তব রাজনৈতিক স্বাধীনতা। পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানদের দেখে আমাদের চোখ খোলা উচিত।...

এক দিন আমাকে আমার এক পরিচিত ব্যক্তি নিয়ে যান বিখ্যাত সাহিত্যিক অন্নদাশঙ্কর রায়ের কাছে। কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জিন্নাহ্র দ্বিজাতিতত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করছে। এতে তিনি খুবই খুশি হয়েছেন। আমি তার কথার মধ্যে কোনো কথা না বলে কেবলই শুনে গিয়েছিলাম তার বক্তব্য। কেবল অন্নদাশঙ্করই নন, অনেককেই বলতে শুনেছিলাম এই একই রকম কথা। আমি হয়তো বলতে পারতাম, বাংলাদেশের মানুষ চাচ্ছেন একটি পৃথক স্বাধীন রাষ্ট্র গড়তে। তারা মিশে যেতে চাচ্ছেন না ভারতের সাথে। তাই বাংলাদেশের অভ্যুত্থানকে বলা যায় না কেবলই দ্বিজাতিতত্ত্বের বিরোধী। বলতে হয় তা কংগ্রেসের সাবেক এক জাতিতত্ত্বকেও মিথ্যা প্রমাণ করতে যাচ্ছে। এসব কিছু বলিনি; চুপ করে থেকেছি। কারণ, এ সময় এ রকম কথা বলার কোনো পরিবেশ ছিল না পশ্চিমবঙ্গে।

১৯৭১ সালের অভিজাত বাঙালি মুসলমানের চৈতন্যকে টুকরা টুকরা করে দিয়েছে। তার ইতিহাস চেতনা, সাংস্কৃতিক আত্মপরিচয় ও ধর্মবোধ হয়ে পড়েছে খণ্ডিত। তার জাতীয়তাবোধের ভেতরেও মতদ্বৈধতার শেওলা জমা হয়েছে। ঐক্য নয়, একাত্তর আমাদের এক বিচূর্ণিত চৈতন্যের উন্মেষ ঘটিয়েছে। এবনে গোলাম সামাদ মনে করেন, একাত্তর ও তার পূর্বাপর প্রেক্ষাপট নিয়ে যে সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বয়ান তৈরি হয়েছে তা কিন্তু দিল্লির রাজনৈতিক ও কলকাতার সাংস্কৃতিক হস্তক্ষেপমুক্ত নয়। এই অন্যায্য হস্তক্ষেপ বাঙালি মুসলমানের সাংস্কৃতিক স্বাতন্ত্র্য নির্মাণের পথে বড় প্রতিবন্ধক। বাঙালি জাতিবাদী চিন্তার সীমাবদ্ধতার কারণে যে বিস্ময়কর কূপমণ্ডুকতা তৈরি হয়েছে যার ফলে বাঙালি মুসলমানের মননে ইসলাম প্রশ্নে এক দীর্ঘ দ্বিধা এসে দাঁড়িয়ে পড়েছে। এই দ্বিধা বাঙালি মুসলমানকে দোদুল্যমানতার শিকারে পরিণত করেছে। সামাদ মনে করেন, বাঙালি মুসলমানকে তার দ্বিধামুক্তির জন্য বৈদেশিক হস্তক্ষেপমুক্ত নিজস্ব সাংস্কৃতিক বয়ান গড়ে তুলতে হবে। যার ভিত্তি হবে ইসলাম। সেটাই হবে বাঙালি মুসলমানের শিকড়ে ফেরা।

পাঁচ.
এবনে গোলাম সামাদ নৃতাত্ত্বিক, শিল্পকলাবিদ ও সর্বোপরি একজন সমাজবিজ্ঞানী হিসেবে বাঙালি মুসলমানের আত্মপরিচয়ের অনুসন্ধান করেছেন। তার লেখার মূল সুরের মধ্যে এই অনুসন্ধান প্রক্রিয়াটি সতত প্রবহমান। একজন ট্রাডিশনাল ধর্মতাত্ত্বিকের মতো তিনি বাঙালি মুসলমানকে পর্যালোচনা করেননি। তিনি একজন সমাজবিজ্ঞানীর চোখ দিয়ে বাঙালি মুসলমানের মন অনুধাবন করার চেষ্টা করেছেন। এটা তার আধুনিক মনের পরিচয়ও বটে।

সামাদের লেখালেখির একটা বড় অংশ জুড়ে আছে বাঙালি মুসলমানের স্বাতন্ত্র্যবাদের কথা। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় বাঙালি মুসলমান যে জাতিরাষ্ট্রটি গড়ে তুলেছে তার স্বরূপ তিনি নির্দেশ করেছেন। বিশেষ করে এসব লেখালেখির ভেতরে তিনি এমন কতকগুলো প্রশ্নের অবতারণা করেছেন এবং তার জওয়াব খোঁজার চেষ্টা করেছেন যার ভেতর দিয়ে জাতিসত্তা বিষয়ক কুয়াশার অবসান হয়েছে।

এ দিক দিয়ে বলা যায়, তিনি বাংলাদেশের মানুষের জাতিসত্তার একজন মৌলিক ভাষ্যকার। তিনি তার বৌদ্ধিকতা দিয়ে এই ভাষ্যকে বিশেষভাবে করে তুলেছেন সারবান। সাংস্কৃতিক চিন্তার দিক দিয়ে তিনি একজন মুসলিম জাতীয়তাবাদী এবং রাজনৈতিক চিন্তার দিক দিয়ে তিনি হলেন গণতান্ত্রিক-সমাজবাদী। তার এই বিশেষ চিন্তাভাবনা বাঙালি মুসলমানের স্বাতন্ত্র্যবাদী বয়ানকে শক্তিশালী করেছে। বাঙালি মুসলমানের জাতিরাষ্ট্রটি যতদিন টিকে থাকবে তার লেখালেখি বিশেষ করে সাংস্কৃতিক বয়ান ততদিন মহাকালের সামনে কখনোই জীর্ণ হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement