২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

দাওয়াতে দ্বীন ও সমাজকল্যাণ

দাওয়াতে দ্বীন ও সমাজকল্যাণ - ছবি : প্রতীকী

মুমিন মাত্রই একজন দায়ী ইলাল্লাহ। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠাই ছিল সব নবী-রাসূলের মৌলিক কাজ। সর্বশেষ নবী প্রেরণের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহ পাক কুরআনের সূরা তাওবা, সূরা ফাতাহ ও সূরা সাফ- এই তিন জায়গায় বলেছেন, ‘তিনি আপন রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ পাঠিয়েছেন যাতে সব দ্বীনের ওপর বিজয়ী করতে পারেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে।’ (সূরা সাফ-৯) ইকামতে দ্বীনের প্রাথমিক কাজ হলো মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা। সব নবী-রাসূল দাওয়াতের কাজে সর্বক্ষণ নিয়োজিত ছিলেন এবং এ কাজে প্রচণ্ডভাবে বাধার সম্মুখীন হয়েছেন।

নবী-রাসূলরা ছিলেন সমাজের সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী এবং জাতির সর্বাধিক কল্যাণকামী। জাহান্নামের দিকে ধাবমান ব্যক্তিকে সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে জান্নাতমুখী করে দেয়ার চেয়ে কল্যাণকর কাজ আর কী হতে পারে? তাঁদের প্রতি ঈমান পোষণকারী মুমিনরাও ছিলেন কল্যাণকামী। আমরা সূরা ইয়াসিনের দ্বিতীয় রুকুতে লক্ষ করেছি, তিনজন রাসূলের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় একজন ব্যক্তি ঈমান এনেছিলেন। ঈমান আনার পর তিনি তার জাতির কাছে ছুটে এসে ঈমানের দাওয়াত দেন। অথচ তার জাতি দাওয়াত কবুল না করে তাকে হত্যা করে। সেই মুহূর্তেও তিনি তার জাতির কল্যাণ কামনা করেছেন। মুহাম্মদ সা: হেরা গুহায় নবুওত লাভের পরপরই মক্কাবাসীকে ঈমানের দাওয়াত দিয়েছেন।

মুহাম্মদ সা: নবী হওয়ার আগে দীর্ঘ ৪০টি বছর তাঁর সমাজে অতিবাহিত করেছেন। সদাচরণ, সততা, বিশ্বস্ততা, আমানতদারি, প্রতিশ্রুতি পালনসহ সব মৌলিক মানবীয় গুণে ভূষিত মুহাম্মদ সা: ছিলেন সমাজের কাছে অত্যন্ত সমাদৃত। তিনি ছিলেন একজন সমাজসেবী। সমবয়সী যুবকদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘হিলফুল ফুজুল’। তাদের কাজ ছিল বিপন্ন মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাঁর সেবাধর্মী কর্মতৎপরতার কারণে তিনি হয়েছিলেন সমাজের নেতা। তিনি ছিলেন মানুষের আমানত সংরক্ষণকারী, বিবাদ-বিসংবাদের মীমাংসাকারী, পরামর্শদাতা, বিপদাপদে সহায়তাকারী এবং আত্মীয়তার হক আদায়কারী। ওহিপ্রাপ্ত হয়ে ভীতসন্ত্রস্ত মুহাম্মদ সা: গৃহে আসার পর তাঁর প্রিয়তমা স্ত্রী খাদিজা রা: তাঁর সামাজিক কর্মকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে তাঁকে অভয়বাণী শুনিয়ে ছিলেন।

আল্লাহর নিয়ম হলো- সামাজিক কর্মকাণ্ডে অগ্রসর ব্যক্তিদের সমাজের নেতৃত্ব দান করা। লেখাপড়ায় পিছিয়ে পড়া ডানপিটে ছেলেমেয়েরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রীয় নেতৃত্বে সমাসীন হয়ে থাকেন। আমাদের সমাজে ‘ধার্মিকতা’ বলতে সমাজবিচ্ছিন্ন মসজিদকেন্দ্রিক ব্যক্তির চেহারা ভেসে ওঠে। এসব ধার্মিক ব্যক্তির হাতে মসজিদের নেতৃত্বটাও নেই। এমনকি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির হকও পুরোপুরি আদায় করা তাদের পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। রাসূল সা:-এর জীবন হলো আমাদের জন্য আদর্শ (মডেল)। তিনি ছিলেন আদর্শ স্বামী, আদর্শ পিতা, আদর্শ সমাজসেবক, আদর্শ রাজনীতিক ও রাষ্ট্রনায়ক; এককথায় মানব জীবনের সব বিভাগ তাঁর জীবনে পরিস্ফুট ছিল।

দ্বীন কায়েমের উদ্দেশ্য হলো- মানুষকে আল্লাহর গোলামিতে নিয়োজিত করার মাধ্যমে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ সাধন। শেষ নবী সা:-এর অনুসারীদের সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা শ্রেষ্ঠতম জাতি, তোমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মানবজাতির কল্যাণের জন্য, তোমরা মানুষকে সৎ কাজের আদেশ দেবে এবং অসৎ কাজ থেকে বিরত রাখবে।’ (সূরা আলে ইমরান-১১০) মানবজাতির কল্যাণ সাধনে যে জাতি অগ্রসর আল্লাহ তায়ালা দুনিয়ার নেতৃত্বও সেই জাতিকে দান করেন। এটি আল্লাহর নিয়ম। ভালো কাজের আদেশ দান আর মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখার ক্ষমতা মূলত রাষ্ট্র সরকারের। ক্ষমতার বাইরে ওয়ায়েজিনরা বড়জোর নসিহত করতে পারেন, কিন্তু মানুষকে আদেশ দিতে পারেন না।

কল্যাণকর কাজের পরিধি অনেক বিস্তৃত। ‘সমাজকল্যাণ’ বলতে বোঝায় সমাজের মানুষের উপকার সাধন। বিশেষ করে অভাবী মানুষের মৌলিক প্রয়োজন (খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা) পূরণ, তার মর্যাদা সমুন্নত রাখা, তার মতামত প্রকাশসহ সব অধিকার পূরণের ব্যবস্থা করা। কল্যাণ সাধনের লক্ষ্যে সব তৎপরতা হলো সমাজকর্ম এবং যারা এ কর্ম করে তারাই হলেন সমাজকর্মী। হাদিসের কিতাবগুলোয় সমাজকর্মী সম্পর্কে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা ও সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। ‘ইয়াতিম, বিধবা ও মিসকিনদের সাহায্যার্থে নিয়োজিত ব্যক্তিকে হাদিসে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদকারীর সমতুল্য বলা হয়েছে। সে ওই সালাত আদায়কারীর ন্যায় যার সালাত আদায়ে কোনো ক্লান্তি নেই; ওই সিয়াম আদায়কারীর ন্যায় যার সিয়ামে কোনো বিরাম নেই।’ (সহিহ মুসলিম)

মানুষের জন্য হিতকর বা বল্যাণকর কাজই হলো ‘আমলে সালেহ’। আল্লাহ পাক কুরআন মাজিদে ‘জান্নাতে যাওয়ার জন্য ঈমানের সাথে সাথে নেক আমলের কথা বলেছেন। ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ একটি গোষ্ঠীকে আল্লাহ দুনিয়ায় খিলাফত দানেরও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।’ (সূরা নূর-৫৫) সৃষ্টির জন্য হিতকর আচরণ ও কর্ম সবই আমলে সালেহ, তা যদি পশুপাখি ও বৃক্ষলতার প্রতিও হয়ে থাকে। পরিচিত-অপরিচিত নির্বিশেষে সবাইকে অগ্রসর হয়ে সালাম দেয়া একটি বড় আমলে সালেহ এবং এটি দাওয়াতি কাজের জন্য খুবই ফলপ্রসূ। রিকশা থেকে নেমে রিকশাওয়ালা বা বিল্ডিংয়ে প্রবেশের সময় দারোয়ানকে সালাম দিলে লক্ষ করবেন, সে আপনার প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েছে। আল্লাহর রাসূল সা: সবসময় অন্যদের আগে সালাম দিতেন। এটি দ্বীনি ও সামাজিক কাজ এবং সব সামাজিক কাজই (মানুষের জন্য হিতকর) দ্বীনি কাজ।

সমাজের জন্য অকল্যাণকর, এমন সবই ‘কবিরা গুনাহ’ অর্থাৎ বড় পাপ। মানুষকে ধমক দেয়া, কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা (হতে পারে চাকর-চাকরানি, ড্রাইভার, পিয়ন, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি বা অন্য কেউ), আর্থিক কোনো বিষয়ে কাউকে ক্ষতিগ্রস্ত করা, কারো সম্মান হানি করা, এককথায় মানুষ কষ্ট পায় এমন সব আচরণ ও কর্ম কবিরা গুনাহ। সূরা হুমাজায় আল্লাহ পাক কঠোর সাবধানবাণী শুনিয়েছেন, ‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনাসামনি গালাগাল করে ও পেছনে দোষ প্রচার করে; আর ধন-মাল জমা করে ও গুনে গুনে দেখে (কার্পণ্য করে)।’ এদের পরিণতি হচ্ছে হুতামাহ বা জাহান্নাম, আল্লাহর আগুন প্রচণ্ডভাবে উত্তপ্ত-উৎক্ষিপ্ত। স্কুলজীবনে ইসমাইল হোসেন সিরাজীর লেখা একটি প্রবন্ধে পড়েছিলাম, ‘অতি নামাজি-কালামি, হাজী-দরবেশ পাপী-গুনাহগার হতে পারেন, যদি করে থাকেন সামাজিক জীবনের দুশমনি’।

আল্লাহ মানুষকে সম্মানিত করেছেন এবং সব সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন। তাঁর বাণী, ‘আমি অবশ্যই আদম সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি। স্থলে ও সমুদ্রে ওদের চলাচলের বাহন দিয়েছি এবং পবিত্র জিনিস দিয়ে আমি তাদের রিজিক দান করেছি, আমি অন্য যত কিছু সৃষ্টি করেছি, তার বেশির ভাগের ওপরই তাদের শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ (সূরা বনি ইসরাইল-৭০) ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, লিঙ্গ সব কিছু উপেক্ষা করে বলা হয়েছে ‘আদম সন্তান’। মানুষ হিসেবে সবাই সমান এবং সবাই ইনসাফ পাওয়ার হকদার। অবশ্য আল্লাহর কাছে বেশি সম্মানিত সেই, যে তাঁকে বেশি ভয় করে।

স্বাধীন চলাফেরা ও মতপ্রকাশের অধিকার সব মানুষের রয়েছে। কারো সম্মান ও অধিকার ক্ষুণ্ন করার সুযোগ কারো নেই। একজন দায়ী ইলাল্লাহ বা মুমিনের কাছে সবার জীবন, সম্পদ ও সম্মান পূর্ণ নিরাপদ। রাসূল সা:-এর বহুল প্রচলিত একটি উক্তি স্মরণযোগ্য, ‘ওই ব্যক্তি মুমিন নয়, মুমিন নয়, মুমিন নয়; যার হাত ও মুখের অনিষ্ট থেকে অন্যরা নিরাপদ নয়’।

আল্লাহ পাক সব মানুষকে সমান করে পাঠাননি। মানুষের মেধা, যোগ্যতা, ক্ষমতা ও অর্থবিত্ত সব কিছুতে রয়েছে ভিন্নতা এবং আখিরাতে আল্লাহর আদালতে হিসাবটাও হবে ভিন্ন। সমাজে পিছিয়ে পড়া লোকদের হিসাব হবে খুবই হালকা। যারা সম্পদশালী ও কর্তৃত্বশীল, তাদের দায়িত্ব বেশি এবং হিসাবও হবে কঠিন। সমাজকল্যাণের বড় অংশটি রয়েছে অভাবী মানুষদের প্রয়োজন পূরণের বিষয়ে। হতদরিদ্রদের প্রয়োজন পূরণের দায়িত্বটা আল্লাহ পাক তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে সচ্ছল বান্দাদের ওপর ন্যস্ত করেছেন।

দান-সদকার বিষয়ে কুরআন-হাদিসে নানাভাবে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। নামাজের সাথে সাথে জাকাতের কথা বলা হয়েছে। এ সম্পর্কিত আল্লাহর বাণীগুলোর কয়েকটি- ‘আমরা যে রিজিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করে’, ‘ধনীদের সম্পদে প্রার্থী ও বঞ্চিতদের হক রয়েছে’, ‘সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় খরচ করে’, ‘আল্লাহকে কর্জে হাসানা দাও, আল্লাহ বহুগুণ বাড়িয়ে দেবেন’, ‘কিয়ামতের বদলাকে অস্বীকার করে তারা যারা মিসকিনকে খাবার দেয় না এবং ইয়াতিমকে ধাক্কা দেয়’।

হাদিসেও বিভিন্নভাবে তাগিদ দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে- ‘তোমরা আল্লাহর পথে খরচ করো, কত খরচ করলে, সে হিসাব করো না’, ‘এক টুকরো খেজুর দিয়ে হলেও জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচো’, ‘সদকা আল্লাহর ক্রোধকে প্রশমিত করে’, ‘দান-সদকা মানুষের রিজিক প্রশস্ত ও হায়াত বৃদ্ধি করে’, ‘দানকারী আল্লাহর নিকটবর্তী, জান্নাতের নিকটবর্তী’। পক্ষান্তরে, কার্পণ্যকে ঘৃণা করা হয়েছে। বলা হয়েছে- ‘কৃপণ মানুষ থেকে দূরে, আল্লাহ থেকে দূরে এবং জাহান্নামের নিকটে’, ‘কৃপণ জান্নাতে যাবে না’। ফিতরাতের ধর্ম ইসলামে সদাচরণ ও ব্যয়ের ক্ষেত্রে ব্যক্তির যে যত নিকটবর্তী, তাকে তত অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে। আল্লাহর বাণী, ‘তারা তোমার কাছে জানতে চাইবে, তারা কী (কোন খাতে) খরচ করবে? তুমি বলে দাও, যা কিছুই খরচ করবে তা তোমাদের বাবা-মা, আত্মীয়স্বজন, ইয়াতিম, অসহায় মিসকিন ও মুসাফিরের জন্য; যা ভালো তোমরা করবে, আল্লাহ তায়ালা অবশ্যই তা জানতে পারবেন।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-২১৫)

‘তোমরা আল্লাহর ইবাদত করো এবং তাঁর সাথে কোনো শরিক করো না। মা-বাবার সাথে ভালো ব্যবহার করো। নিকটাত্মীয় ও ইয়াতিম-মিসকিনের সাথে সদ্ব্যবহার করো। আত্মীয় প্রতিবেশী, অনাত্মীয় প্রতিবেশী, পার্শ্বসাথী, মুসাফির এবং তোমাদের মালিকানাধীন দাসী ও দাসদের প্রতি সদয় ব্যবহার করো। নিশ্চিতভাবে জেনে রাখো, আল্লাহ এমন কোনো ব্যক্তিকে পছন্দ করেন না যে আত্ম অহঙ্কারে ধরাকে সরাজ্ঞান করে এবং নিজের বড়াই করে।’ (সূরা নিসা-৩৬)

আল্লাহর সাথে শিরক না করার কথা প্রথমেই বলা হয়েছে। এরপর সদাচরণের বড় হকদার বা অধিকারী হলেন নিজের বাবা-মা ও আত্মীয়স্বজন। রক্তসম্পর্কীয় ও বৈবাহিক সম্পর্কীয় সব আত্মীয়স্বজন এর মধ্যে শামিল। ইয়াতিম-মিসকিন, প্রতিবেশী (আত্মীয় ও অনাত্মীয়), পার্শ্বসাথী (মানুষ যেখানে অবস্থান করে বা বন্ধু-বান্ধব), মুসাফির, দাস-দাসী; মূলত সব মানুষই সদাচরণের দাবিদার।

আল্লাহ পাক তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদেরকে উদার ও সবার প্রতি কল্যাণকামী হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা: মুমিনদের যেসব গুণ উল্লেখ করেছেন তা যদি তারা যথাযথভাবে আয়ত্ত করতে পারেন, তা হলে আখিরাতে নাজাতের সাথে সাথে দুনিয়ার জীবনেও তারা মানুষের ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা লাভে সক্ষম হবেন। আসলে মানুষের কাছে মৌখিক দাওয়াত নয়, আমলি বা কাজের মাধ্যমে দাওয়াত বেশি কার্যকর হয়।

বিশ্বব্যাপী মুসলমান আজ আর সম্মান ও মর্যাদার প্রতীক নয়। তারা আজ আর আদেশ দানের পর্যায়ে নেই। কাফির-মুশরিকদের আদেশানুগত ও তাদেরই বন্ধু। চরিত্রের দিক দিয়ে তারা অধঃপতনের সর্বনিম্ন স্তরে পৌঁছে গেছে। দুনিয়ার জীবনে লাঞ্ছনায় ভুগছে এবং আখিরাতে যে তাদের জন্য ভালো কিছু না থাকার কথা তা তাদের আমল-আখলাক দেখেই বোঝা যায়। আশার দিক হলো, পচনশীল জনগোষ্ঠীর বাইরে ক্ষুদ্র হলেও সমাজ পরিবর্তনের লক্ষ্যে একদল মানুষ সঙ্ঘবদ্ধভাবে প্রয়াস চালাচ্ছে। তাদের এই জামাতবদ্ধ জিন্দেগি ও নিজেদের পরিশুদ্ধ করার পাশাপাশি মানুষকে সত্য বা হকের দিকে আহ্বান পরিবর্তন ত্বরান্বিত করবে ইনশা আল্লাহ। আল্লাহ পাক মুসলিম উম্মাহকে পৃথিবীর বুকে মানবজাতির কল্যাণকামী হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : উপাধ্যক্ষ (অব:), কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ


আরো সংবাদ



premium cement