২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং চিকিৎসা ব্যয়

বাংলাদেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণ এবং চিকিৎসা ব্যয় - ছবি : সংগৃহীত

‘সুলভে যৌক্তিক চিকিৎসা পাবার অধিকার সবার
বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার আলমা আটা ঘোষণাপত্র, ১৯৭৮’
ক. বাংলাদেশে চিকিৎসা অপচয়ের মূল কারণগুলো
বাংলাদেশে ব্যক্তি স্বাস্থ্য খাতে (ঙঁঃ ড়ভ চড়পশবঃ : ঙঙচ) প্রায় ৭০ শতাংশ ব্যয় হয়, যা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। 
এত অধিক ব্যয়ের মূল কারণ বাংলাদেশে কোনোরূপ উন্নতমানের প্রাইভেট বা বেসরকারি স্বাস্থ্য বীমা (চৎরাধঃব ঐবধষঃয ওহংঁৎধহপব) কিংবা সরকার নিয়ন্ত্রিত জাতীয় স্বাস্থ্য বীমা (ঘধঃরড়হধষ ঐবধষঃয ওহংঁৎধহপব) না থাকা।

রোগীরা চিকিৎসকদের কাছ থেকে ন্যূনতম ৫ মিনিট পরামর্শ সময় না পাওয়ায়, রোগী ও তার আত্মীয়স্বজন চিকিৎসকের ওপর আস্থা হারায়, এমনকি নামী-দামি চিকিৎসকের ওপরও। রোগীর উপসর্গগুলোর বর্ণনা শেষ করার আগেই চিকিৎসক রোগীকে একটি ব্যবস্থাপত্র (চৎবংপৎরঢ়ঃরড়হ) ধরিয়ে দেন, কোন ওষুধ কোন উপসর্গ উপসমের জন্য দিয়েছেন, কখন সেবন করতে হবে খাবার আগে না পরে তা চিকিৎসক বুঝিয়ে বলার আগেই পরবর্তী রোগী পরামর্শ কক্ষে প্রবেশ করেন, কোনটি কোন রোগের ওষুধ এবং এসব ওষুধের সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (ঝরফব ঊভভবপঃং), মিথস্ক্রিয়া (ঈড়হঃৎধরহফরপধঃরড়হ) রোগী জানার সময় পায় না, রোগী ওষুধের ব্যবহার সম্পর্কিত পুরো তথ্য না জানার অসন্তোষ নিয়ে চিকিৎসকের চেম্বার ত্যাগ করেন। সামান্য সমস্যা হলে রোগী ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেন এবং অনেক সময়ে অন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

রোগীরা চিকিৎসকদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে দামি ওষুধকে বেশি ভালো ওষুধ মনে করেন। রোগী ও চিকিৎসক উভয়ে জানেন না যে, দামি (ঈড়ংঃষু) ওষুধ বেশি নকল এবং ভেজাল (ঈড়ঁহঃবৎভবরঃ) ও নিম্নমানের (ঝঁনংঃধহফধৎফ) হয়। রোগী দামও বেশি দিলেন, আবার অকেজো খারাপ ওষুধও সেবন করলেন। রোগ না সারায় প্রতি বছর কয়েক লাখ বাংলাদেশী রোগী ভারত, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর ও মালয়েশিয়া এমনকি কতক আমেরিকা ও ইংল্যান্ড যাচ্ছেন এবং বিদেশে চিকিৎসা ব্যয়ের কারণে তাদের দুর্নীতি ও দারিদ্র্য বাড়ছে। গবেষক ড. হোসেন জিল্লুর রহমান বিআইডিএসে (ইওউঝ) কর্মরত থাকাকালীন ১৯৯৪ সালে তথ্য প্রকাশ করেছিলেন যে, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, অতিরিক্ত চিকিৎসা ব্যয় এবং পুলিশের হয়রানির কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের অবসান হচ্ছে না।

চিকিৎসকরা বিভিন্ন আর্থিক সুবিধা নিয়ে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটিটিভ দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছেন। সোজা কথায়, ঘুষ নিচ্ছেন। তারা আর্থিক বিবেচনায় নির্ধারিত কোম্পানির ওষুধ লেখা ও অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত রোগ নির্ণয় পরীক্ষা করানোর জন্য ক্লিনিক বা ল্যাবরেটরি থেকে ৫০-৬০ শতাংশের বেশি কমিশন বাবদ পেয়ে থাকেন। অর্থাৎ চিকিৎসকরা অতিরিক্ত দামি ওষুধ লিখছেন এবং অতিরিক্ত রোগ নির্ণয় পরীক্ষাও (উরধমহড়ংঃরপ ঞবংঃং) করাচ্ছেন। সব প্রাইভেট হাসপাতাল মালিক এবং দুর্নীতিতে অংশগ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে। উদাহরণ ছাড়া চরিত্র পরিবর্তন হবে না।

চিকিৎসকের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে রোগীরা ওঈট/ঈঈট এর সন্ধানে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে, এমনকি নাম গোত্রহীন ক্লিনিকে। কতক হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ভেন্টিলেটর, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা, ডিফিব্রিলেটর, কার্ডিয়াক মনিটর, ইসিজি ও ইকো এবং বিবিধ সিরিঞ্জ পাম্প থাকলেও ওঈট পরিচালনার জন্য সার্বক্ষণিক প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ওঈট/ঈঈট বিশেষজ্ঞ নেই।

অথচ হাসপাতালের বিছানার চাদর, মাস্ক, পেপার গাউন, তোয়ালে, জুতার কভার ও বালিশের কভার পরিবর্তন এবং সময়ে অসময়ে বিভিন্ন চিকিৎসক রোগীকে পরিদর্শন (ঈড়হংঁষঃধঃরড়হ) করে রোগী থেকে ফি আদায় করছেন। ওঈট/ঈঈট তে ভর্তি থাকা সময়ে ভেন্টিলেটর, কার্ডিয়াক মনিটর, পালস অক্সিমিটার, সিরিঞ্জ পাম্প, ওষুধের ডোজ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র প্রভৃতি ব্যবহারের জন্য আলাদা আলাদা চার্জ আদায় করা হয়। এটি অনৈতিক ও দুর্নীতির অংশ। দৈনিক কত লিটার অক্সিজেন ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাব নেই, অথচ ওঈট বিদায় কালে ৪০,০০০-৫০,০০০ টাকা অক্সিজেন চার্জ বাবদ রোগী থেকে আদায় করা হয়। দিনে দুপুরে ডাকাতি। দুদক কী করছেন? উল্লেখ্য, রোগী বা তাদের আত্মীয়স্বজনরা এমনকি চিকিৎসকরা প্রতি হাজার লিটার ঙ২ (অক্সিজেন) ক্রয়মূল্য জানেন না। তাই প্রাইভেট হাসপাতাল মালিকরা রোগীদের ঠকায়, প্রতারণা করে। ফলে প্রতিদিন ওঈট বিল বাড়ে দ্রুতগতিতে, যা দৈনিক ৫০,০০০ থেকে ১,৫০,০০০ টাকাও হতে পারে।

সৌভাগ্যবশত গণস্বাস্থ্য ওঈট তে এমন একজন দায়িত্বে আছেন যিনি অত্যন্ত নিবেদিত এবং কানাডা, ব্রিটেন, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যে ব্যাপক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন। ওঈট বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজীব মোহাম্মদ ২০০১ সালে ইউরোপিয়ান ডিপ্লোমা ইন ইনটেনসিভ কেয়ার মেডিসিন (ঊউওঈ) অর্জন করেছেন। সম্ভবত বর্তমানে বাংলাদেশে অধ্যাপক নজীবের চেয়ে অধিকতর জ্ঞানসম্পন্ন সিনিয়র কোনো ওঈট বিশেষজ্ঞ নেই। পরবর্তীতে তিনি ক্রিটিকেল কেয়ার (ঈৎরঃরপধষ ঈধৎব টহরঃ), খরাবৎ ওঞট (ওঈট) ও গঁষঃরফরংপরঢ়ষরহধৎ-ওঈট তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রখ্যাত হাসপাতালগুলোতে এবং সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতাল ও অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব মেলবোর্ন হাসপাতালে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন ও বিশেষ কর্মদক্ষতা অর্জন করে দেশে ফিরেছেন। 

ওঈট-তে রোগী থাকলে তিনি দৈনিক ১৬-১৮ ঘণ্টা সময় হাসপাতালে কাটান। ওঈট বিশেষজ্ঞরা জুনিয়র চিকিৎসক বা নার্সদের ফোন পাওয়ার পর কত দ্রুত হাসপাতালে পৌঁছেন তার ওপর ওঈট রোগীর জীবন নির্ভরশীল। তাকে দ্রুত ডাকার জন্য তিনি হাসিমুখে সব জুনিয়কে ধন্যবাদ জানান, তাদের সাথে নিয়ে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিয়ে রোগী দেখেন, রোগী পরীক্ষা করা শেখান এবং পরে আলাদাভাবে প্যারামেডিক, ওয়ার্ডবয়, ক্লিনার এবং রোগীর আত্মীয়স্বজনকে সযতেœ রোগীর সমস্যা বুঝিয়ে বলেন।

বাংলাদেশের অধিকাংশ বিশেষজ্ঞ একটিও আন্তর্জাতিক মেডিক্যাল জার্নাল কিনে না পড়ায় তাদের জ্ঞানের পরিধি সীমিত হয়ে যাচ্ছে এবং সহজে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হচ্ছেন, আস্থাহীনতায় ভুগছেন। চিকিৎসকরা ওষুধের মূল্য জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন না। দুর্ভাগ্যজনক পরিস্থিতি। বাণিজ্যিক (ইৎধহফ/ঞৎধফব ঘধসব) নামের ওষুধে দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে রোগের উপসম না হলে চিকিৎসক এন্টিবায়োটিক বদলিয়ে দেন। প্রকৃতপক্ষে অধিকাংশ ক্ষেত্রে হয়তো এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজনীয়তাই নেই। চিকিৎসকরা ওষুধ লিখেন জিনেরিক (এবহবৎরপ) নামে নয়, বিভিন্ন ব্র্যান্ড নামে ফলে রোগী ওষুধের প্রকৃত নাম জানতে পারেন না। অনেক সময় খেয়াল করেন না যে ওষুধ লিখছেন তা মূলত একই জিনেরিক গোত্রের। তারা ওষুধের প্রকৃত দামও জানেন না বলে অপ্রয়োজনে বেশি মূল্যের অধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সমন্বিত ওষুধগুলোর বিধিব্যবস্থাপত্র (চৎবংপৎরঢ়ঃরড়হ) লিখে থাকেন।

খ. বাংলাদেশের গ্রামে প্রথম স্বাস্থ্যবীমার (ঐবধষঃয ওহংঁৎধহপব) প্রচলন 
স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৩ সালে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র সাভার এলাকায় একই দরের কিস্তিতে (প্রিমিয়ামে) গণস্বাস্থ্য বীমা (এড়হড়ংযধংঃযধুধ ঐবধষঃয ওহংঁৎধহপব) চালু করে। স্থানীয় প্রত্যেক পরিবার প্রত্যেক মাসে দুই টাকার কিস্তি (প্রিমিয়াম) দিতেন। বিনিময়ে রোগী বিনা ফিতে বিবিধ স্বাস্থ্যবীমা সুবিধা পেতেন। যেমন পারামেডিক ও চিকিৎসকদের ফ্রি পরামর্শ ও ওষুধ এবং রক্ত, পায়খানা, প্রস্রাবের সাধারণ (ইধংরপ) পরীক্ষাগুলোর সুবিধা পেতেন বিনা খরচে। দুর্ভাগ্যবশত এই নীতিতে না দরিদ্র পরিবার না ধনীরা খুশি ছিলেন। মধ্যবিত্ত ও ধনীরা লাইন করে দরিদ্র রোগীর পেছনে দাঁড়াতে অস্বস্তি বোধ করতেন। উপরন্তু ধনী ও মধ্যবিত্তরা আলাদাভাবে প্রাইভেটে বাড়িতে ডাক্তার নিয়ে দেখাতে চান। উপরন্তু দরিদ্র রোগীরা মনে করতেন যে ধনীদের আয় যেহেতু অনেক বেশি তাদের কাছ থেকেও মাসিক দুই টাকা চাঁদা ধার্য করা যৌক্তিক নয়, ‘গরিবের হক হরণ করা হচ্ছে, তাদের প্রতি অন্যায় করা হচ্ছে, অবস্থাপন্নদের বিশেষ সুবিধা দেয়া হচ্ছে, খাতির করা হচ্ছে।’

একক শ্রেণীর স্বাস্থ্যবীমার পরিবর্তে ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণের সাথে একাধিক আলোচনা সভা করে সাভারসহ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের সব কর্ম এলাকায় সব জনসাধারণকে ছয়টি সামাজিক শ্রেণীতে বিন্যাস করে সামাজিক শ্রেণিভিত্তিক গণ স্বাস্থ্যবীমা চালু করা হয়Ñ ১. অতি দরিদ্র ২. দরিদ্র ৩. নিম্নমধ্যবিত্ত ৪. মধ্যবিত্ত ৫. উচ্চ মধ্যবিত্ত ৬. ধনী বা উচ্চবিত্ত। স্বাস্থ্য বীমাহীনরা ৭ নম্বরে নিবন্ধিত হন। দরিদ্ররা নগণ্য প্রিমিয়াম দিয়ে বেশি সুবিধা পান, ঙচউ-তে পরামর্শ ফ্রি। কিন্তু অবস্থাপন্ন উচ্চবিত্ত পরিবাররা দেন অনেক বেশি প্রিমিয়াম। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখাতে অবস্থাপন্নরা বেশি ফি দেন। অধূমপায়ী দরিদ্র পরিবার দেন বছরে ২০০ টাকা, অপর পক্ষে উচ্চবিত্ত ধনী পরিবার স্বাস্থ্য বীমা দেন বছরে দুই হাজার ৮০০ টাকা, উচ্চ মধ্যবিত্ত পরিবার দেবেন দুই হাজার ৪০০ টাকা এবং অধূমপায়ী মধ্যবিত্ত পরিবার দেন মাত্র এক হাজার ৮০০ টাকা। প্রতি দুই বছর পরপর পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্যবীমার প্রিমিয়ামের বিহিত করা হয়। এত কম প্রিমিয়ামে স্বাস্থ্যবীমা পৃথিবীর কোথাও স্বাস্থ্যবীমা নেই। কিন্তু এ বিষয়ে পর্যালোচনা বা প্রচারে সরকারি আগ্রহ কোনোটাই নেই। 

ঢাকা শহরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাত্র চার হাজার ৯৮২ পরিবারের গণস্বাস্থ্যবীমা আছে (চবড়ঢ়ষব'ং ঐবধষঃয ওহংঁৎধহপব)। অপরপক্ষে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের গ্রামীণ কর্ম এলাকায় প্রায় ১৫ লাখ লোকসংখ্যার দুই লাখ ২৮ হাজার ৭৬২ পরিবারের মধ্যে মাত্র ৪৭ হাজার ৬০৪ পরিবার গণস্বাস্থ্যবীমা নিবন্ধিত। প্রকৃতপক্ষে যথেষ্ট প্রচার প্রচারণার অভাবে পল্লী এলাকায় গণস্বাস্থ্য বীমার প্রসার হয়নি। ফলে জনসাধারণ একটি আধুনিক জনসেবার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে।


গ. কোভিড-১৯ রোগের সংক্রমণ ও চিকিৎসা
চীনের সবচেয়ে বড় শিল্পাঞ্চল উহান প্রদেশে ২০১৯ সালের নভেম্ব^র মাসে নভেল করোনা কোভিড-১৯ ভাইরাস আত্মপ্রকাশ করে এবং দ্রুত বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর কারণে প্রথম মৃত্যু ঘটে ৮ মার্চ ২০২০। বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ মার্চের সতর্কবাণীকে বাংলাদেশ সরকার গুরুত্ব দেয়নি। ফলে রোগটি বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। করোনা রোগের চিকিৎসা সম্পর্কে মাগুরার চিকিৎসক ডা: খলিলুর রহমান (ফোন-০১৭১২৮১৯৪০৫, ০১৯৬০৪৬৩৭৩৫) তার অভিজ্ঞতার আলোকে তিন পর্যায়ে ভাগ করে করোনা রোগ ও তার চিকিৎসা সম্পর্কে একটি ছোট লেখা লিখেছিলেন তা শিক্ষণীয় বলে কিছু অংশ আমি পুনঃউল্লেখ করছি।

‘কোভিড-১৯ একটি স্পর্শকীয় ভাইরাস (ঞড়ঁপযরহম ঠরৎঁং), যা আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি বা কাশি থেকে বা আশপাশের ৩-৬ ফুটের মধ্যে অবস্থিত বস্তু থেকে ব্যক্তিদের অসতর্কতার কারণে ছড়িয়ে পড়ে। স্টেফাইলো কক্কাস, স্ট্রেপটোকক্কাস, নিউমোকক্কাস প্রভৃতি ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে অন্য ব্যক্তিদের মধ্যে সংক্রমিত হয়। সাধারণত ৩-১৪ দিনের মধ্যে কোভিড-১৯ উপসর্গ প্রকাশ পায় (ওহপঁনধঃরড়হ চবৎরড়ফ) তিন পর্যায়ে।

প্রথম পর্যায়ে ১-৩ দিন : শুরু হয় সাধারণ জ্বর, গায়ে মাথায় সামান্য ব্যথা ও শুষ্ক কাশি দিয়ে, যোগ হয় নাক দিয়ে হালকা পানি পড়া (জঁহহরহম ঘড়ংব), হাঁচি-কাশি ও তৃতীয় দিনে মৃদু শ্বাসকষ্ট। চুলকানি ও হাঁচি-কাশি অ্যালার্জির লক্ষণ।

দ্বিতীয় পর্যায় ৪-৬ দিন : হঠাৎ জ্বর বেড়ে ১০২০ থেকে ১০৪০ ফারেনহাইট ওঠে, শুকনা কাশির সাথে শ্লেষ্মা যুক্ত হয়। সর্বত্র মৃদু ব্যথা বিশেষত গলায় (ঝড়ৎব ঞযৎড়ধঃ), শ^াসকষ্ট ক্রমেই বেড়ে যায়, (চৎড়মৎবংংরাব উুংঢ়হড়বধ) শ্লেষ্মাসহ হাঁচি-কাশি বৃদ্ধি এবং খাওয়ায় অরুচি ও অনিদ্্রা যোগ হয়। নিউমোনিয়ার (চহবঁসড়হরধ) লক্ষণ প্রকাশমান এবং রোগীর অস্বস্তি রোধের সাথে ভীতি সঞ্চার ও লক্ষণীয়।
তৃতীয় পর্যায় : রক্তে অক্সিজেন সংমিশ্রণ (ঙ২- ঝধঃঁৎধঃরড়হ) বিভ্রাটে নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ও কফ শ্লেষ্মা বৃদ্ধি বুকের ভেতর গড়গড় শব্দ শোনা যায় এবং স্বাভাবিকভাবে শুয়ে থাকায় অসুবিধা হয়, রোগী ক্রমে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।


ঘ. করোনা রোগীর চিকিৎসা ও ব্যয় 
প্রথম পর্যায়ে রোগীকে আলাদা ঘরে রেখে আলাদাভাবে দেখাশোনা করাই মূল কাজ। এলাকার একজন চিকিৎসকের (এবহবৎধষ চৎধপঃরঃরড়হবৎ) নিয়মিত পরামর্শ নিলে ভালো হয়। প্রায় ৭০ থেকে ৮০ ভাগ রোগী নিরাময় হয় নিজ বাড়িতে স্বল্প খরচে, স্বল্প সময়ে ও স্নেহ ভালোবাসায়। বোকামি করতে হবে না একই ওষুধ অকারণে বেশি দামে কিনে, এতে ভালোর চেয়ে অন্য সমস্যাও সৃষ্টি হতে পারে।

দিনে ১টা বা ২টা করে ৫০০ মিলিগ্রামের প্যারাসিটামলের (চধৎধপবঃধসড়ষ) ট্যাবলেট দিনে এক থেকে তিনবার সেবন যুক্তিসঙ্গত। প্যারাসিটামলের সাথে অন্য উপাদান যেমন ক্যাফেইন বা ঘুমের ওষুধ মিশ্রিত না থাকা ভালো, এতে অন্য পাশর্^প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্যারাসিটামল বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার (ডঐঙ) নির্দেশমতো উৎপাদিত, জিনেরিক নাম জি-প্যারাসিটামল, প্রতি ট্যাবলেটের মূল্য সত্তর পয়সা অর্থাৎ ৭ সাত টাকায় ১০টি জি-পারাসিটামল কিনতে পাওয়া যায়। অপরপক্ষে বাণিজ্যিক নামে বাজারজাতকৃত নাপা, নাপা প্লাস, নাপা এক্সট্রা প্রভৃতি এবং অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত উপাদানসহ প্রস্তুত প্রতি ট্যাবলেট দুই টাকা থেকে আড়াই টাকায় বিক্রি হয়। এতে রোগ দ্রুত সারে না, কিন্তু অর্থের অপচয় হয়।

হাঁচি-কাশি অর্থাৎ অ্যালার্জি নিবারণের এন্টি অ্যালার্জি (অহঃর অষষবৎমু) ওষুধ ৪ মিলিগ্রামের ক্লোরফেনারামিন (ঈযষড়ৎঢ়যবহবৎধসরহব/এ-অহঃরযরংঃধসরহব ঞধনষবঃ) দিনে একটি করে খেলে ভালো উপকার হয়। প্রতি ট্যাবলেটের মূল্য মাত্র পঁচিশ পয়সা (অর্থাৎ এক টাকায় ৪টি এন্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট কিনতে পাওয়া যাবে)। গরম চা, মধু ও আদায় গলায় আরাম পাওয়া যায়। চুষে চুষে জি-ভিটামিন সি-২৫০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট দিনে ৩-৪টি খাওয়া যেতে পারে, প্রতি ট্যাবলেট জি ভিটামিন সি মূল্য এক টাকা ত্রিশ পয়সা (১০টি ট্যাবলেটের মূল্য ১৩.০০ টাকা) অনেকে প্রতিদিন ২০ মিলিগ্রামের একটা বা দুটো জিংক ট্যাবলেট (এ-তরহপ) গ্রহণের পরামর্শ দেন, খরচ প্রতি ট্যাবলেট ১.০০ টাকা অর্থাৎ ১০টি জিংক ট্যাবলেটের মূল্য ১০ টাকা।

কোয়ারেন্টিন রুমে (একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পৃথক থাকা) অবশ্যই এক বোতল ১০০ মিলিলিটারের জাইনানল বা জি-ক্লোর হেক্সাডিন (৫-ঈযষড়ৎযবীরফরহব) থাকা দরকার জীবাণুনাশক হিসেবে ব্যবহারের জন্য। ১০০ মিলিলিটারের মূল্য ১০০ টাকা। সাবানও ব্যবহার করবেন।

ভালো উপকার পাওয়া যায় গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা টিংচার আয়োডিন কিংবা ইউকেলিপট্যাস তেল মিশিয়ে গরম বাষ্প নিলে।

অন্য সমস্যা যেমন পেট বা বুক জ্বালাপোড়া বা এসিড ভাব লাগলে দিনে একটি বা দু’টি ২০ মিলিগ্রামের জি-ওমিপ্রাজল (এ-ঙসবঢ়ৎধুড়ষব) ক্যাপসুল সেবন করলে নিরাময় নিশ্চিত। খরচ প্রতি ক্যাপসুলের মূল্য ৩.০০ (১০ ক্যাপসুলের মূল্য ৩০ টাকা)।

প্রথম পর্যায়ে নিরাময়ে ব্যর্থ ২০ শতাংশ রোগীকে অবশ্যই নিকটবর্তী সরকারি বা বেসরকারি ক্লিনিক হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে (ওংড়ষধঃরড়হ টহরঃ) ভর্তি হতে হবে। তবে ভর্তির আগে নিশ্চিত হতে হবে যে, সেখানে ছোট অক্সিজেন পালস অক্সিমিটার (চঁষংব ঙীুসবঃবৎ) যন্ত্র এবং রোগীকে প্রয়োজনমাফিক সরাসরি অক্সিজেন দেয়ার সুবিধা আছে। রক্তে পরিমিত অক্সিজেন সংমিশ্রিত না হলে (ঙীুমবহ ঝধঃঁৎধঃরড়হ) রোগীকে মুখে বা নাক দিয়ে অক্সিজেন (ঙীুমবহ) কিছুক্ষণ দিতে হয়। দেখতে হবে অক্সিজেন সংমিশ্রণ ৯২- ৯৫% মধ্যে যেন থাকে। অতিরিক্ত অক্সিজেন দেয়া অপচয় তো বটে, অনেক সময় ক্ষতিকরও।

বাংলাদেশ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেডিসিনের অধ্যাপক তারিক আলম করোনা পজিটিভ দ্বিতীয় পর্যায়ের রোগীদের প্রতিদিন একটি এন্টি হেলমিনথিক আইভারম্যাকটিন (ওাবৎসবপঃরহ) যার প্রতি ট্যাবলেটের মূল্য ৫.০০ (পাঁচ) টাকা এবং ১০০ মিলিগ্রামের ডক্সিসাইক্লিন হাইড্রোক্লোরাইড ট্যাবলেট দিনে দু’বার পাঁচ দিন সেবন করিয়ে রোগ নিরাময় লক্ষ করেছেন।

হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি প্রথম দিনে ইনজেকশন মিথাইল প্রেডনিশোলন ২৫০ মিলিগ্রাম ২টি কিংবা ইনজেকশন ডেক্সামেথাসন ৪ মিলিগ্রাম (এ-উবীধসবঃযধংড়হব ৪ সম ওহলবপঃরড়হ) মূল্য প্রতি ইনজেকশন মাত্র ১৫.০০ টাকা দিনে দু’বার ৩ দিন, খরচ ৯০.০০ টাকা।
নিউমোনিয়ার চিকিৎসার জন্য কো-এমক্সিক্লেভ (ঈড়-অসড়ীরপষধা) ১-২ গ্রাম দিনে তিনবার কিংবা এরিত্রোমাইসিন/এজিথ্রোমাইসিন অথবা ক্যাপসুল সেফেক্সিম (এ-ঈবভরীরসব ২০ সম, মূল্য ২০ টাকা) ৫ দিন সেবনের জন্য দেয়া হয়।

দিনে কয়েকবার গরম পানির বাষ্প বা মেশিনের মাধ্যমে সালবুটামল (এ-ঝধষনঁঃধসড়ষ ঝড়ষঁঃরড়হ .০৫% সম) মূল্য প্রতি ভায়াল ৮০.০০ টাকা কিংবা বুডিসোনাইড (ইঁফবংড়হরফব ০.৫সম) অথবা এন-এসিটিল (ওহলবপঃরড়হ ঘ-অপবঃুষ ঈুংঃবরহব-ঘঅঈ) সংমিশ্রণে নেবুলাইজার ব্যবহারে শ্লেষ্মা বের করায় খুব উপকার পাওয়া যায়।
ব্যয়বহুল এন্টিভাইরাল রেমডিসিভির (জবসফবংরারৎ) ব্যবহারে নিরাময়ে তিন দিন সাশ্রয় করায়। অন্য এন্টি ভাইরালের ব্যবহারে সুফলের প্রমাণ নেই। অর্থের অপচয় মাত্র। শিক্ষিত পেশাজীবী ও প্রতারিত হচ্ছেন অপ্রমাণিত বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ৫০,০০০ থেকে এক লাখ টাকায় কিনে। তাদের জ্ঞান চক্ষু কবে উন্মোচিত হবে?

আইসোলেশন (ওংড়ষধঃরড়হ) ওয়ার্ডে ৮-১০ দিন ভালো নার্সিং সেবা ও নিয়মিত চিকিৎসা পেলে দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রায় সব রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান, অনধিক ১০ শতাংশ রোগী বিভিন্ন জটিলতা (ঈড়সঢ়ষরপধঃরড়হং) ও একাধিক বিকল অঙ্গের সমস্যা নিয়ে তৃতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করে।
তৃতীয় পর্যায়ের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং মূলত নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (ওঈট) তে চিকিৎসা করাতে হয়। করোনা রোগে মৃত্যুহার ২-৩ শতাংশ সীমিত।

ঙ. এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে সর্বোচ্চ সতর্কতা প্রয়োজন
সারা পৃথিবীতে এমনকি উন্নত বিশ্বের চিকিৎসকরা সহজে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সুলভ ওষুধ থাকা সত্ত্বেও অযাচিতভাবে অধিকতর মূল্যের ওষুধ লেখেন। নতুন ওষুধের ভুল প্রয়োগ প্রায়ই লক্ষণীয় ঘটনা। এ সমস্যা রহিত করার লক্ষ্যে প্রায়ই পরামর্শ প্রকাশ করে থাকেন আন্তর্জাতিক পরামর্শক কমিটি ঘওঈঊ (ঘধঃরড়হধষ ওহংঃরঃঁঃব ঋড়ৎ ঐবধষঃয ধহফ ঈধৎব ঊীপবষষবহপব)। সময়মতো চিকিৎসা না হলে বা চিকিৎসা বিভ্রাট হলে কোভিড-১৯ রোগের মূল সমস্যা হাসপাতালে ভর্তির সময় বা ভর্তির ৪৮ ঘণ্টা আগে বাড়ি ও এলাকার পরিবেশ থেকে অর্জিত নিউমোনিয়া (ঈড়সসঁহরঃু অপয়ঁরৎবফ চহবঁসড়হরধ) অথবা হাসপাতালে অন্য কারণে আগত রোগীরা হাসপাতালের পরিবেশ থেকে অর্জিত সংক্রমণ (ঐড়ংঢ়রঃধষ ওহভবপঃরড়হ) দ্রুত ফুসফুসের কার্যকারিতা কমিয়ে দেয়। সে সমস্যার দ্রুত চিকিৎসার জন্য মে, ২০২০ তারিখে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিষয়ক পরামর্শ কমিটি ঘওঈঊ-এর সুপারিশগুলো বিশেষভাবে প্রণিধানযোগ্য। এন্টিবায়োটিক সাধারণত ৫ দিন সেব্য। তবে ক্ষেত্রবিশেষে বিশেষত ফুসফুসের সমস্যায় ২-৩ সপ্তাহ এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়।

চ. স্বাভাবিক পরিবেশ থেকে অর্জিত (ঈড়সসঁহরঃু অপয়ঁরৎবফ) পরিমিত (গড়ফবৎধঃব) ও তীব্র (ঝবাবৎব) নিউমোনিয়ার চিকিৎসায় মুখে (ঙৎধষষু) ডক্সিসাইক্লিন (উড়ীুপষরহব) ২০০ মিলিগ্রাম প্রথম দিনে এবং দ্বিতীয় দিন থেকে ১০০ মিলিগ্রাম করে বা কো-এমক্সিক্লেব (ঈড়-অসড়ীরপষধা) ৫০০ মিলিগ্রাম দিনে তিনবার সাথে ক্লেরিথ্রোমাইসিন (ঈষধৎরঃযৎড়সুপরহ) ৫০০ মিলিগ্রাম দিনে দু’বার সেবন করতে হবে। রোগের তীব্রতা (ঝবাবৎরঃু) বেড়ে গেলে লেভোফোক্লাসিন (খবাড়ভষড়ীধপরহ) ৫০০ মিলিগ্রাম দিনে একবার বা দু’বার ৫ দিন সেব্য। মুখে সেব্য এন্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা বাড়ানোর লক্ষ্যে আন্তঃশিরায় (ওহঃৎধাবহড়ঁং) পদ্ধতিতে উপরে উল্লিখিত এন্টিবায়োটিকগুলো ব্যবহার করার পরামর্শ দিচ্ছেন। 

হাসপাতালে অর্জিত (ঐড়ংঢ়রঃধষ অপয়ঁরৎবফ) প্রতিহত (জবংরংঃধহঃ) নিউমোনিয়া হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা না থাকলে পূর্বে উল্লিখিত এন্টিবায়োটিকগুলো মুখে ৫ দিন সেব্য নতুবা হাসপাতালে অর্জিত (ঐড়ংঢ়রঃধষ অপয়ঁরৎবফ) নিউমোনিয়ার তীব্রতা (ঝবাবৎরঃ), প্রদাহ (ঝবঢ়ংরং) কিংবা ভেন্টিলেটর (ঠবহঃরষধঃড়ৎ) সম্পৃক্ত বা উদ্বুদ্ধ নিউমোনিয়া অথবা চিকিৎসা প্রতিহত (জবংরংঃধহপব) হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা থাকলে নিম্নলিখিত এন্টিবায়োটিকগুলো আন্তঃশিরায় (ওহঃৎধাবহড়ঁং : ওঠ) দ্রুত ব্যবহার বাঞ্ছনীয়। এন্টিবায়োটিকগুলো হচ্ছেÑ
* চরঢ়বৎধপরষষরহ ডরঃয ঞধুড়নধপঃঁস (পিপারসিলিন মিশ্রিত টেজোব্যাকটাম, প্রতিবার ৪.৫ গ্রাম করে দিনে তিনবার ইনজেকশন দেয়া শুরু করে, প্রয়োজনে একই মাত্রায় দিনে চারবার দেয়া যেতে পারে।

* ঈবভঃধুরফরসব (সেফটাডিজিম) ২ গ্রাম করে দিনে তিনবার আন্তঃশিরায় ইনজেকশন।
* কোনো কারণে উপরে উল্লিখিত এন্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে লেভোফ্লোক্সাসিন (খবাড়ভষড়ীধপরহ) ৫০০ মিলিগ্রাম দিনে দু’বার বা ততোধিকবার আন্তঃশিরায় (ওহঃৎধাবহড়ঁং) দেয়া যুক্তিযুক্ত।

* মেথিসিলিন প্রতিহতকরণে সমর্থ (গবঃযরপরষষরহ জবংরংঃধহঃ) স্টাফাইলোকক্কাস অরিয়স (ঝঃধঢ়যুষড়পড়পপঁং অঁৎবড়ঁং) প্রদাহে অবশ্য দেয়- ঠধহপড়সুপরহ (ভ্যানকোমাইসিন) প্রতি কিলোগ্রাম ওজনে ২০ মিলিগ্রাম হিসেবে সর্বোচ্চ ২ গ্রাম দিনে তিনবার আন্তঃশিরায় বা ঞবরপড়ঢ়ষধহরহ (টাইকোপ্লানিন) প্রতি কিলোগ্রাম ওজনে ৬ মিলিগ্রাম দিয়ে শুরু দিনে তিনবার করে পরবর্তীতে দিনে একবার দিলে কার্যকর হয়।

* খরহবুড়ষরফ (লিনেজোলিড) ৬০০ মিলিগ্রাম দিনে দু’বার মুখে সেব্য কিংবা বিশেষজ্ঞের উপস্থিতিতে একবার ইনজেকশন দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। ওষুধের মূল্যের প্রতি ক্লিনিসিয়ান বা বিশেষজ্ঞদের নজর রাখা উচিত।

দুর্ভাগ্যের বিষয় যে ঘওঈঊ মতো সর্বোচ্চ বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশগুলো দেশের ক্লিনিশিয়ান বা বিশেষজ্ঞরা সতর্কতার সাথে অনুসরণ না করায় দেশে এন্টিবায়োটিক প্রতিহতকরণ জীবাণু (জবংরংঃধহপব) প্রতিনিয়ত বেড়ে যাচ্ছে।


ছ. মৃত্যুর দ্বার থেকে ফিরে আসা একজন ওঈট রোগীর চিকিৎসা ব্যয় 
শরীরে করোনা রোগের প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলে ২৩ মে ২০২০ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ৭৮ বছর বয়স্ক বিকল কিডনি রোগী জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ২৪ মে ২০২০ গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এজ-জধঢ়রফ অহঃরনড়ফু পরীক্ষায় কোভিড-১৯ পজিটিভ প্রমাণিত হয়। পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে (ইঝগগট) রিয়াল টাইম চঈজ (চড়ষুসবৎধংব ঈযধরহ জবধপঃরড়হ) এ করোনা পজিটিভ প্রমাণিত হয়। ৩০ মে রোগীর শ্বাসকষ্ট বাড়ে, মানসিক আচরণে বিশৃঙ্খলা ও আচ্ছন্ন ভাব দেখা যায়, রক্তে অক্সিজেন মিশ্রণ (ঝধঃঁৎধঃরড়হ) ৮৫ শতাংশ নেমে এলে রোগী তন্দ্রাছন্ন হয়ে পড়েন। রোগীকে এ অবস্থায় গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে করোনা নির্ধারিত ওঈট-তে ভর্তি করা হয়। দু’জন বিশেষজ্ঞ, অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার মামুন মুস্তাফী এবং ওঈট বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজীব মোহাম্মদ সার্বক্ষণিকভাবে দৈনিক ১৬ থেকে ১৮ ঘণ্টা রোগীর পাশে বসে থেকে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করেছেন, অক্সিজেন সংমিশ্রণ (ঝধঃঁৎধঃরড়হ) ৯৪-৯৬ শতাংশ নিশ্চিত করার জন্য প্রতি মিনিটে ন্যূনতম ৬ লিটার অক্সিজেন (ঙ২) সরবরাহ এবং তারা ৯ (নয়) রকমের এন্টিবায়োটিক ১০ দিনে বিধিব্যবস্থা দিয়েছেন।

এত ধরনের এন্টিবায়োটিকের যৌক্তিক ব্যবহার অবশ্যই প্রশ্নসাপেক্ষ। সম্ভবত নিজেদের ওপর আস্থার অভাব এবং গুরুত্বপূর্ণ? বয়স্ক রোগী বিধায় রোগীর অবস্থার দ্রুত উন্নতির জন্য বিশেষজ্ঞরা ঘনঘন এন্টিবায়োটিক বদলিয়েছেন। স্টেরয়েড ব্যবহার করেছেন। তার বুকের এক্সরেতে উভয় দিকে (ইরষধঃবৎধষ) নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। তার রক্তের মৌলিক পরীক্ষা (ঈইঈ) স্বাভাবিক ছিল, তবে সি রিঅ্যাকটিভ প্রোটিন ঈজচ ও উ- ঞরসবৎ বৃদ্ধি পায়। সালবুটামল ও বুডেসোনাইড দিয়ে নেবুলাইজার শুরু করা হয়। অধ্যাপক তারিক আলমের পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় এন্টিহেলমিনথিক ইভারম্যাকটিন (ওাবৎসবপঃরহব) ও এন্টিবায়োটিক ডক্সিসাইক্লিন হাইড্রোক্লোরাইড দিয়ে। স্লেড পদ্ধতিতে প্রতিদিন ডায়ালাইসিস করানোর ব্যবস্থা নেয়া হয়। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হেমোটোলজির অধ্যাপক মহিউদ্দিন আহমদ খানের পরামর্শে তিনবার প্লাজমা ট্রান্সফিউশন দেয়া হয়। প্লাজমা ট্রান্সফিউশনে রোগী উজ্জীবিত হন, প্রাণশক্তি বৃদ্ধি পায়। শিশু হাসপাতালের অধ্যাপক হানিফ ও একই পরামর্শ দিয়েছিলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী সপ্তাহে তিনবার হেমোডায়ালাইসিস নিচ্ছেন বিগত চার বছর ধরে। সঙ্গে পাচ্ছেন উচ্চ রক্তচাপের চিকিৎসা। গত বছর রোগী হেপাটাইটিস-সি (ঐবঢ়ধঃরঃরং-ঈ) এর জন্য ঝড়ভড়ংনাঁরৎ ও উধপষধঃধংারৎ দিয়ে ৩ মাস চিকিৎসা করিয়ে হেপাটাইটিস-সি (ঐবঢ়ধঃরঃরং-ঈ) মুক্ত হয়েছেন। তার একটা পুরনো মাইয়োকার্ডিয়াল ইনফার্কসন (গও) রয়েছে।
* করোনা আক্রান্ত সব গণস্বাস্থ্যকর্মী গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের খরচে গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতাল ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনা খরচে সব পরীক্ষা ফ্রি চিকিৎসা পেয়ে থাকেন। কর্মীকে কেবল খাওয়া খরচ বহন করতে হয়। 

এ প্যাকেজে সব ওষুধের মূল্য, অক্সিজেন, রোগ নির্ণয় বিল, ওঈট ভাড়া, যন্ত্রপাতির ব্যবহার এবং বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ ফি ধরা আছে। অতিরিক্ত কোনো খরচ নেই। বিশেষজ্ঞরা দিনে রাতে যতবারই রোগীকে পরিদর্শন করবেন ও পরীক্ষা করবেন অতিরিক্ত কোনো ফি চার্জ হবে না।

রোগ নির্ণীত হওয়ার পর রোগীকে প্রথম ১০ দিন ওঈট-তে রেখে চিকিৎসা দেয়া হয়, পরবর্তীতে রোগীকে কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। রোগী করোনামুক্ত (ঈঙঠওউ-১৯ ঘবমধঃরাব) হন ১৩ জুন ২০২০ তারিখে, তবে এখনো চড়ংঃ ঈঙঠওউ -ঋধঃরমঁব (কোভিড-উত্তর পরিশ্রান্তি) রোগে ভুগছেন এবং হাসপাতালে আছেন।
বাংলাদেশে চিকিৎসা ব্যয় অত্যধিক, যা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ক্রয়ক্ষমতার বাইরে, যা আগে বলা হয়েছে, নিজ পকেট থেকে চিকিৎসার জন্য ব্যয় (ঙঁঃ ড়ভ চড়পশবঃ = ঙঙচ) পৃথিবীর মধ্যে সর্বোচ্চ। প্রয়োজনে প্রথম দুই সপ্তাহ গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় (ওঈট) তে চিকিৎসা দেয়া হয়। পরে রোগীর আর্থিক বিবেচনায় হয় কেবিনে কিংবা দরিদ্র রোগী সরাসরি জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়, যার চার্জ খুবই কম।

* এই খরচের মধ্যে রোগীর আত্মীয়স্বজনের আসা-যাওয়া (ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ), খাওয়া-দাওয়া, সেবিকা (আয়া) রাখা বিভিন্ন শ্রেণীর বেতনবিহীন কর্মীদের চাহিদা, বকশিশ প্রভৃতির খরচ হিসেবে ধরা হয়নি।

ওওও. ওষুধ ও অক্সিজেন বাবদ ব্যয়
বাংলাদেশে ওষুধের মূল্য নির্ধারণের জন্য দু’টি নিয়ম প্রচলিত আছে। ১৯৮২ সালের জাতীয় ওষুধনীতি অনুসরণ করে সব ওষুধের পরিবর্তে মাত্র ১১৭টি ওষুধের মূল্য স্থির করে দিয়ে থাকেন সরকার, যা গজচ (গধীরসঁস জবঃধরষ চৎরপব) বলে পরিচিত। বাকি সব ওষুধের মূল্য ওষুধ কোম্পানিগুলো সরাসরি নির্ধারণ করে থাকে কোম্পানির মর্জি মতো অধিক মূল্যে, এটাকে ওহফরপধঃরাব চৎরপব (ওচ) পদ্ধতি বলা হয়। এখানেই সব সমস্যা। এ পদ্ধতি ১৯৯৪ সালে চালু হয় বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার আমলে বেক্সিমকো সালমান এফ রহমানের প্ররোচনায়, যা আজো চালু আছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ওয়াজেদের দীর্ঘ শাসনামলে। বর্তমানে সালমান এফ রহমান এমপি প্রধানমন্ত্রীর শিল্প বাণিজ্য উপদেষ্টা।

১. অক্সিজেন (ঙ২) নিবিড় পরিচর্যার প্রধান প্রয়োজন দ্রুত পর্যাপ্ত শরীরের প্রয়োজনমাফিক সংমিশ্রণ (ঝধঃঁৎধঃরড়হ) অর্থাৎ প্রতি মিনিটে গড়ে ৬-১০ লিটার অক্সিজেনের (ঙ২) ক্রমাগত অবাধ অব্যাহত (টহরহঃবৎৎঁঢ়ঃবফ) সরবরাহ অর্থাৎ ওঈট প্রতিদিন ২৪ ঘণ্টাই একজন রোগীকে অক্সিজেন দিতে হবে, তাতে দৈনিক অক্সিজেন ব্যয় হবে ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ লিটার, গড়ে ১২,০০০ লিটার ৭-১০ দিন পরে কম অক্সিজেন খরচ হয়। প্রতি ঘনমিটার (১০০০ লিটার) অক্সিজেনের ক্রয় মূল্য ৪৭.০০ টাকা। মেডিক্যাল গ্যাস হিসাবে ব্যবহার উপযোগী অক্সিজেনের জন্য উৎপাদক জার্মান বহুজাতিক কোম্পানি লিন্ডসে ফ্যাক্টরিতে যাতায়াত, খালি সিলিন্ডার অক্সিজেনে ভর্তি করা, শ্রমিক সেবা, মূসক (ঠঅঞ) প্রভৃতি খরচ যোগ করলে প্রতি ১০০০ লিটার অক্সিজেনের ব্যয় দাঁড়ায় ৭০.০০ টাকা। ওঈট-তে ১০ দিনে ব্যয় ৮,৪০০ টাকায় অক্সিজেন এবং কেবিনে ৪৩ দিনে দৈনিক অক্সিজেন ব্যয় অনূর্ধ্ব ৩,০০০ লিটার অর্থাৎ ২১০ টাকা প্রতিদিন। 

২. ওঈট দ্রুত কঠিন প্রদাহ নিবারণে ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক।
ইনজেকশন মেরুপেনাম, টেজো ব্যাকটাম+পিপারিসিলিন, সেটেপাইন, ভ্যানকো মাইসন, মক্সিফ্লক্সাসিন নেভোফ্লক্সোসিন, মেট্রোনিডাজল, ট্যাবলেট ডক্সিসাইক্লিন হাইডোক্লোরাইড, ট্যাবলেট লিনেজোলিড প্রভৃতি।

শেষের কথা : সরল কথা

১. নিজ বাসায় পরিবারের স্নেহ ভালোবাসায় আলাদা ঘরে থেকে সাধারণ চিকিৎসায় প্রায় ১০০ শতাংশ রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। খরচ খুবই কম। গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের জি-পারাসিটামল (মূল্য প্রতি ট্যাবলেটের সত্তর পয়সা, জি-এন্টিহিস্টামিন পঁচিশ পয়সা, জি-ভিটামিন সি এক টাকা ত্রিশ পয়সা) ও স্টিম বাষ্প দিনে কয়েকবার ব্যবহার করুন, মধুও খাবেন।

২. হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিলে হাসপাতালে বিশেষে খরচ দৈনিক দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা। তবে নিরাময়ের হার দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রায় ৯০%।

৩. ওঈট তে চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয় বহুল। ব্যয় দিনে ৫০,০০০-১৫০,০০০ টাকা, নামী-দামি অপ্রমাণিত ও ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহারে এবং অপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন পরীক্ষায়। দেশের সব ওঈট-তে পর্যাপ্ত সেবার ব্যবস্থা নেই। ওঈট-তে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পর্যাপ্ত জুনিয়র চিকিৎসক ও নার্স ওঈট-তে নেই; ব্যবহৃত ওষুধের কার্যকারিতা ও পাশর্^প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জ্ঞান সীমিত এবং তারা দ্রুত দৌড়ে সেবা দিতে অভ্যস্ত নন। দেশের সেরা ওঈট বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক নজীব মোহাম্মদকে দ্রুত প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা প্রচলনের জন্য দায়িত্ব দেয়া যেতে পারে।
স্মরণ রাখবেন চিকিৎসক ও সেবিকাদের অক্লান্ত সেবার পরও ওঈট তে মৃত্যুহার খুব বেশি। ওঈট তে মৃত্যুহার ৫০% অতিক্রম করতে পারে।

৪. ওষুধ কোম্পানি নিয়ন্ত্রিত ওহফরপধঃরাব চৎরপব (ওচ) প্রথা অবিলম্বে বাতিল করে সরকার ১৯৮২ সালের ‘জাতীয় ওষুধনীতি ১৯৮২’ এর পুরো অনুসরণ করে এবং সুনির্দিষ্টভাবে রোগ নির্ণয় পরীক্ষার এবং অপারেশনের দর স্থির করে দিয়ে পুরোপুরি কার্যকর করে ওষুধের সর্বোচ্চ ক্রয়মূল্য (গজচ) ধার্য করলে ক্রয়ে এবং বিভিন্ন পরীক্ষার চার্জগুলো অধিকাংশ ক্ষেত্রে ৫০ শতাংশ কমবে।

৫. সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে এবং সব ক্লিনিকের রেজিস্ট্রেশনের নিয়মাবলি সহজ হওয়া প্রয়োজন। সরকার ন্যূনতম যন্ত্রপাতির তালিকা স্থির করে দেবেন, কয়জন ডাক্তার, কয়জন ডিপ্লোমা পাস নার্স থাকতে হবে, এ নিয়ে সরকারের কাগজে নির্দেশনা কেবল দুর্নীতি বাড়াবে, বহু রিজেন্ট সাহেদ তৈরি করছে এবং আরো নতুন করে তৈরি হবে, সঙ্গে দুর্নীতি। প্রাইভেট প্র্যাকটিসে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ফি (ঈড়হংঁষঃধঃরড়হ) চিকিৎসক নিজে স্থির করবেন। এ ক্ষেত্রে সরকারের নাক না গলানোই উত্তম।

৬. সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার ওপর নির্ভর করছে সব নাগরিকের সুলভে সহজে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা প্রাপ্যতা। বাংলাদেশে সামাজিক শ্রেণিভিত্তিক জাতীয় স্বাস্থ্যবীমা (ঝড়পরধষ ঈষধংং ইধংবফ ঘধঃরড়হধষ ঐবধষঃয ওহংঁৎধহপব) বিবেচনার সময় এসেছে। কয়জন চিকিৎসক, কয়জন নার্স (সেবিকা) টেকনিশিয়ান দিয়ে ক্লিনিক চালাবেন তা বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক মালিকরা স্থির করবেন। ব্যক্তিমালিকরা লাভ ও সেবা দুটোই ভালো বোঝেন। হ


আরো সংবাদ



premium cement