২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ধর্মাচারই পারে সমাজকে সুস্থির রাখতে

-

পৃথিবী একটা সরাইখানা। আমরা এখানে ক্ষণিকের অতিথি। এটা এমনই সরাইখানা, যেখান থেকে এক সময় বিদায় নিয়ে চলে যাবো আর ফিরব না। তবু কথাটা আমরা প্রায়ই ভুলে যাই। যদি তাই না হতো তবে পরিবারে, সমাজে, রাষ্ট্রে এত গোলযোগ, হানাহানি, রক্তারক্তি ও খুনখারাবি হতো না। আমরা সমাজে ও রাষ্ট্রে নিয়ম-কানুন ও শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, রক্ষা ও মান্য করে চলতে ব্যর্থ হতাম না। অন্যায়, অবিচার ও দুর্নীতির প্রতি মানুষের এত আকর্ষণ থাকত না। দিন দিন এর বৃদ্ধি ঘটত না। এক সময় তো আমাদের দেশ ও সমাজ এত উত্তপ্ত ও বিশৃঙ্খল ছিল না। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির শিথিলতা কোনো কালেই ছিল না, তা বলব না। তবে এখন যেমনটা দেখা যাচ্ছে তেমন নৈরাজ্যকর অবস্থা আগে ছিল না। মাদক সেবন করে পিতা-মাতাকে সন্তান খুন করছে কিংবা রাস্তায় বন্ধুকে বন্ধু প্রকাশ্যে কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে মারছে, প্রায়দিনই মানুষ গুম হচ্ছে, মানুষকে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করছে, যথেচ্ছ ব্যভিচার চলছে।

মানুষের মনে পাপ-পুণ্যবোধ প্রখর ছিল বলে এসব এতটা ব্যাপক হারে কোনোকালে আমাদের সমাজে প্রচলিত ছিল না। শান্তির ধর্ম ইসলাম সমাজে শান্তি নিশ্চিত করত। মানুষের মনে সর্বশক্তিমান আল্লাহভীতি কাজ করত, যা সবাইকে রাখত সংযত।

আজকাল দেখা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শত চেষ্টা করেও এসব অনিয়ম ও নৈরাজ্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না। শোনা যায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কোনো বিপথগামী সদস্য এসবের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রশ্রয়ে এসব অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে। এ সবই ব্যথিত ও বিস্মিত হওয়ার মতো কার্যকলাপ। এ জন্য আমরা কাকে দোষ দেবো? রাষ্ট্র বা সরকারকে? দোষ কি কেবল যারা সরকার পরিচালনা করেন, শুধু তাদেরই? পিতা-মাতা, সমাজপতি বা এজাতীয় যারা সমাজে প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব, তাদের কি কোনো দায় নেই এ ব্যাপারে? দায় তাদেরও আছে। তবে স্বীকার করতেই হয়, আজকে আমাদের দেশে যে প্রতিহিংসা ও অসহিষ্ণুতার কর্তৃত্ববাদী রাজনীতি চলছে, এর দায়ের বেশির ভাগ যেসব রাজনীতিক দেশ পরিচালনা করেন, তাদের ওপরই বর্তায়। তাদের বিরোধীপক্ষও এ দায় পুরোপুরি এড়াতে পারেন না। সামাজিক অঙ্গনের তুলনায় রাজনৈতিক অঙ্গনেই এসব হানাহানি, বিশৃঙ্খলা ও খুনখারাবি বেশি। পরস্পরের প্রতি তাদের ভাষার প্রয়োগ ও আচরণ আক্রমণাত্মক। এতে করে মানুষ বিপথগামী এবং সমাজ কলুষিত হচ্ছে। রাজনীতিকরা সেটা খেয়াল করেন না কেন?

আমাদের সমাজ ও দেশ আজ দ্বিধাবিভক্ত- সরকারপক্ষ এবং বিরোধীপক্ষ। যখন একটি দেশ রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত হয়ে যায়, তখন সমাজে অনিয়মের ঢল বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো গ্রাস করে যেমনটি আমাদের দেশে ঘটছে। ছোট্ট একটি অনুন্নত হলেও সুন্দর বাংলাদেশ আমাদের। এর আয়তনের তুলনায় জনসংখ্যা বিশাল। এ দেশে আয়রোজগারের সুযোগ-সুবিধা সীমিত। শিক্ষাঙ্গনে নিম্ন ও উচ্চবিদ্যালয়ের একটি সিট নিয়ে ২০ থেকে ৪০ জন কাড়াকাড়ি করে ভর্তি হতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের সিট নিয়েও একই অবস্থা। চাকরির একটি পদের জন্য প্রতিযোগিতা করছেন বেশুমার নরনারী। সুবিধাবঞ্চিত বেকার ও উপার্জনহীন লোকে দেশ ছেয়ে গেছে। কাকে রেখে কাকে সুযোগ দেয়া যায়? নিয়মমাফিকও যদি একজন সুবিধা পান, ৩০-৫০ জন অসন্তুষ্ট হন। বিক্ষুব্ধ হন। তাদের ধৈর্যের বাঁধ ভেঙে যায়। এর ওপর আছে ‘আগুনে ঘি ঢালা’র মতো নিয়োগে রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব ও দলীয়করণ। তাই কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে চান না। নিয়ম মানেন না অনেকেই। বঞ্চনা বোধ তাদের তাড়িয়ে বেড়ায়। শুরু হয় আইন অমান্য করার কর্মকাণ্ড- ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, খুনখারাবি। ঠেকাতে এগিয়ে আসে কর্তৃত্ববাদী সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটে থাকে বিক্ষোভকারী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ। উভয়পক্ষেই হয় হতাহত। কিন্তু যেখানকার সমস্যা সেখানেই রয়ে যায়। কারণ, এর মূলে রয়েছে পরস্পরের প্রতি অবিশ্বাস, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং ভিন্নমতের প্রতি অসহিষ্ণুতা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে এ ধরনের সমস্যার হয়তো সাময়িক উপশম হয় কিংবা হয় না। এ দিকে, চাপা আক্রোশে ফুঁসতে থাকেন বঞ্চিত ও বিরোধীরা। কেউ বা ভোগেন হতাশায়। সমাজ ও রাষ্ট্র আজ এমনই নীতিবিবর্জিত, পক্ষপাতদুষ্ট ও দুর্নীতিগ্রস্ত যে, সামাজিক মানুষের সামনে কোনো আদর্শ নেই, ভবিষ্যৎ নেই। হতাশাগ্রস্তরা শরণাপন্ন হচ্ছে মাদকের কিংবা এরও চেয়ে মারাত্মক অসামাজিক কাজে। সমাজে বিশৃঙ্খলা ও অসন্তোষের আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। দেশের কর্ণধার রাজনীতিকরা সেদিকে নজর দেন কমই- এসব ব্যাপারে তারা প্রায় নির্বিকার। এ কারণে এসব সমস্যা বেড়েই চলেছে। সরকারের লোকরা কি তবে কেবল সবাই যেমন বলেন, নিজেদের আখের গোছাতেই ব্যস্ত? তা না হলে যেখানে এই দরিদ্র দেশে তাদের জীবনমান শনৈঃশনৈঃ উন্নত হচ্ছে সেখানে পোশাক শ্রমিকদের মতো বিভিন্ন পেশার শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ দিনরাত কঠোর পরিশ্রম করেও বেঁচে থাকার মতো ন্যায্য মজুরি/বেতনের দাবিতে রাস্তায় নামতে হয় কেন? সমাজে এত বৈষম্য কী কারণে? নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকারীদের কেন পুলিশের গুলি খেতে হয়? পুলিশকেই বা কেন তাদের হাতে হতে হয় নাস্তানাবুদ? এসব প্রশ্নের উত্তর দেবে কে? নিশ্চয়ই সরকার।

আমাদের ভুললে চলবে না, আমাদের দেশের প্রায় ৮০ ভাগ মানুষ গ্রামে থাকেন। তাদের অধিকাংশই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। প্রাকৃতিক দৈবদুর্বিপাক, যেমন নদীভাঙন তাদের নিত্যসঙ্গী। ফলে এরা নগর-বন্দরে এসে উদ্বাস্তু জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন। গ্রামের ছেলে-মেয়েরা স্কুল বা কলেজ সার্টিফিকেট হাতে করে অথবা শ্রমিক বেশে যখন শহরে প্রবেশ করেন, তারা শহরের জাঁকজমক দেখে হতবাক হয়ে যান। এ দেশ আজ এতটাই বৈষম্যমূলক অবস্থানে চলে গেছে। শহরের এই গাড়ির বহর, এই সুরম্য অট্টালিকা গণমানুষের নয়। এটা তারা অনুভব করেন বা তাদের অনুভব করতে দেয়া হয়। পেছনে ফেলে আসা তাদের পিতা-মাতা, ভাইবোন অভাব-অনটনে দিনাতিপাত করছেন দেখে তারা হতাশ হন। এই হতাশা থেকে তাদের মনে এক ধরনের দ্রোহের জন্ম নেয়। মাঝে মধ্যে এই দ্রোহের বিস্ফোরণ ঘটে। তখন তারা বেপরোয়া হয়ে পড়েন। প্রচলিত আইন তা রোধ করতে পারে না। বিক্ষোভ, ভাঙচুর, গোলযোগ সৃষ্টি করা হয়। এসব দমন করতে পুলিশ যেন সরকারের লাঠিয়াল বাহিনীর ভূমিকায় চলে গেছে। মনে করা হয়, এসব দমনে পুলিশই সরকারের ভরসা।

আসলে পুঁজিবাদী বিশ্বায়নের দৈত্য বা ভূত যা-ই বলি না কেন, তা আমাদের এই ছোট্ট দরিদ্র দেশটিতেও জেঁকে বসেছে। দেশে বিত্তবান ছোট আকারের, অথচ প্রবল ক্ষমতাধর একটি শ্রেণী তৈরী হয়েছে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এদের বিচরণ অবাধ ও নিরঙ্কুশ। শ্রম-ঘামে সিক্ত এ দেশের খেটে খাওয়া মানুষের উৎপন্ন দ্রব্যাদি ঔপনিবেশিক শ্রেণীর মতো তারা ভোগ করেন। শিল্পোক্তাদের একমাত্র লক্ষ্য, মুনাফা লুট করা। এ দেশের কৃষক-শ্রমিককে তারা নিজেদের আত্মীয় মনে করেন না। এই শ্রেণীটি প্রতিদিন যে ডলার গোনেন, তা যে এ দেশেরই রক্ত-ঘাম ঝরা শ্রমিকের শ্রমের ফসল তা তাদের মনোযোগ আকর্ষণ করে না। এরা কেবলই হিসাব দেখান, দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৪-৩৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এটা দেখে তারা তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন। একবারও ভাবেন না, কাদের এ উপার্জন। কাদের শ্রমের বিনিময়ে এ প্রাপ্তি? তারা ভোগ করেন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন না। উপার্জনকারীকে দেন না ন্যায্য হিস্যা।

কিন্তু আজ আর শ্রমিক শ্রেণী অন্ধ বা অচেতন নয়। তাদের ‘চোখ ফুটেছে’। স্বাভাবিক কারণেই তারা মাঝে মধ্যে বঞ্চনার প্রতিবাদ জানান, ভাঙচুর করেন। ঔপনিবেশিক আমলে মানুষ সমষ্টিগতভাবে অন্যায়, অবিচার, শোষণ, বঞ্চনা, নির্যাতন, নিপীড়নের প্রতিবাদ করেছে। যেসব রাজনীতিক আজো রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেন, তাদের অনেকেই ন্যায়বিচারের জন্য আন্দোলন করেছেন। দেশের লোক প্রতিবাদ করেছেন। তা না হলে এ দেশটা স্বাধীন হতো না। প্রতিনিয়তই তো আমরা রেডিও, টেলিভিশনে ও খবরের কাগজে নতুন প্রজন্মকে সেসব কাহিনী শোনাচ্ছি। ভুললে চলবে না, তারা আমাদেরই উত্তরসূরি। প্রতিবাদকারী বীরের রক্ত এদের ধমনিতে প্রবাহিত। অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে আমরা তাদের দোষ দেবো কিভাবে? তাই ওদের দমনে পুলিশ লেলিয়ে দেয়া অনুচিত।

আমাদের দেশের যারা অভিভাবক তাদের একটি বড় দোষ এই যে, তারা সবুর করতে বা সংযত হতে নিজেরা যেমন জানেন না, তেমনি উত্তরসূরিদেরও শেখান না। ধর্মাচরণের ব্যাপারে এরা এমনই উদাসীন যে, ন্যায় ও অন্যায়ের মতো ধর্মীয় মূল্যবোধগুলো এরা সমাজ থেকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দিয়েছেন। তাই আমাদের আত্মা আজ শুষ্ক, অকর্ষিত। মানবপ্রেম ও মানবতাবোধ আজ নির্বাসিত। এসব বিষয়ে দেশে বড় বড় সেমিনার-সিম্পোজিয়াম হচ্ছে; আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু সব মানবিকতার উৎস যে ধর্ম, তা ‘মধ্যযুগীয় বা মৌলবাদ’ বলে পাশ্চাত্যের মতো উপেক্ষিত হচ্ছে। এককালে এই ধর্মই ছিল প্রাচ্যের মানববন্ধনের মূলসূত্র। বর্তমানে আমরা দেখছি আমাদের দেশে ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা আছে, কিন্তু এর আমল নেই বা তা থাকলেও অতি অল্প। একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী যারা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করেন, তাদের মধ্যে ধর্মাচার সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। অথচ ইসলামে পুরোহিততন্ত্র নেই। সমাজের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ধর্মাচার বর্তমান যুগে প্রায় নেই। তাই সমাজের নেতৃত্বদানকারী ধর্মাচারহীন শ্রেণী বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে গ্রাস করে ফেলছে। এ কারণে একের প্রতি অপরে নির্দয় আচরণ করতে দ্বিধা করেন না। ফল যা হওয়ার তাই হচ্ছে। জলে-স্থলে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ছে। পবিত্র কুরআন ও হাদিস পড়ুন। বুঝে পড়ুন এবং চর্চা করুন।

পাশ্চাত্য সভ্যতার অস্থিরতা এবং মানুষের প্রতি মানুষের অবহেলা ও বঞ্চনার রোগটি আমাদের পেয়ে বসেছে। পাশ্চাত্যের মতো আমাদের সমাজের মানুষও একে অপরের অনাত্মীয় হয়ে সবাই নিঃসঙ্গ হয়ে পড়ছে। পাশ্চাত্যের মতো কেবলই বস্তু আহরণের প্রতিযোগিতার কবলে পড়ে আমরা একে অপরের ঘোষিত বা অঘোষিত শত্র“তে পরিণত হচ্ছি। পাশ্চাত্য সভ্যতার অনেক গুণের পাশাপাশি এটিই বড় দোষ। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে অনুসৃত, পাশ্চাত্যের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আমাদের একের প্রতি অপরকে শত্রুতে পরিণত করেছে। পাশ্চাত্যের অগ্রসর অর্থনীতিতে এই দোষ তারা কিঞ্চিৎ সামাল দিতে পারলেও পুরোপুরি পারেনি। এটা তাদের বৈষম্যমূলক সামাজিক ব্যবস্থার কুফল। আমরাও পারছি না; কারণ দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিকরা জনগণকে বঞ্চিত করে বিদেশে অর্থ পাচার করছেন। ধর্মীয় অনুশাসনগুলো মান্য করা হচ্ছে না। এই দোষ আমাদের সমাজকে পেয়ে বসেছে। ধর্ম আজ আর দায়িত্ব পালন করতে পারছে না। পাশ্চাত্য আমাদের ধর্মকে ভয় পেতে শিখিয়েছে। তবে ধর্মাচার ব্যতীত আমাদের সমাজে উচ্ছৃঙ্খল জীবনধারা সামাল দেয়ার কোনো পথ নেই। রাষ্ট্রীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তা পারছে না। এটাই আমাদের নিত্যদিনের অভিজ্ঞতা। ধর্মবিশ্বাস এবং আল্লাহ ও পরকালের ভীতিই তা সামাল দিতে পারে; যেমনটি আগে পারত।

পারিবারিক, সমাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে ধর্মাচার আমাদের মুক্তি দিতে পারে। ধর্ম মোটেও সেকেলে বিষয় নয়, বরং সেটাই প্রগতির পথ- ধর্মই প্রগতি। ধর্মই শিখিয়েছে- ‘আল্লাহ্র সাথে শান্তির অর্থ, তার ইচ্ছার প্রতি পরিপূর্ণভাবে নিজেকে সমর্পিত করা। মানুষের সাথে শান্তির অর্থ, এমন জীবন যাপন করা যা কোনো মানুষের শান্তি বিনষ্ট হওয়ার কারণ না হয়।’ (বুখারি ২/৩)। শান্তির এ নীতি চর্চার মাধ্যমেই পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে সুস্থিতি প্রতিষ্ঠা এবং পরকালেও শান্তির নিবাস লাভ করা সম্ভব। আল্লাহ ও পরকালভীতিই মানুষের শান্তিপূর্ণ জীবনযাপনের মূল নিয়ামক। এ ছাড়া আর কোনো পথ আছে বলে জানা যায় না। মনুষ্যপ্রণীত কোনো মতবাদই শান্তির নিশ্চয়তা দিতে পারেনি; পারবেও না। মানুষের তৈরি করা আইন পক্ষপাতদুষ্ট। অপর দিকে, আল্লাহর আইন ব্যক্তিনিরপেক্ষ, সর্বজনীন ও সর্বকালীন।

লেখক : অর্থনীতির অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ভাইস প্রিন্সিপাল, সরকারি মহিলা কলেজ, কুমিল্লা


আরো সংবাদ



premium cement