২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ছাত্রলীগের একাল-সেকাল

-

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠা ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি। জন্মের পর থেকে সংগঠনটি ছাত্রসহ পূর্ববাংলার মানুষের বিভিন্ন দাবিদাওয়া আদায়ে সোচ্চার ছিল। এর ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট আন্দোলন, ’৫৮-এর মার্শাল ল’ বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালের গণবিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১১ দফা আন্দোলন ও সত্তরের নির্বাচনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। আর একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের ১৭ হাজার বীরযোদ্ধা স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছেন।

সামরিক শাসনের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে ১৯৮৩ সালে শিক্ষা আন্দোলন ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যের ১০ দফা তৈরিতে নেতৃত্ব দেয় ছাত্রলীগ। অথচ বর্তমানে সংগঠনটি অতীত গৌরব হারিয়ে পথভ্রষ্ট হতে বসেছে। যে সংগঠন সবসময় ছাত্রদের পাশে সুখে-দুঃখে থেকেছে, সেই সংগঠনের উচ্চ পদধারীরা যেমন তীব্র সমালোচনার মুখে, তেমনি সাধারণ ছাত্রদের থেকেও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। ছাত্রলীগের থাকার কথা ছিল ছাত্র অধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি জাতীয় রাজনৈতিক দলীয় অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন ও সামাজিক স্বার্থ রক্ষা করায়। বর্তমানে ছাত্রলীগ নামটির সাথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, দখলবাজি, লুটপাট, ভীতি, আতঙ্ক, দাপট, দৌরাত্ম্য প্রভৃতি যেন সমার্থক শব্দে পরিণত হয়ে গেছে।

১৯৯৮ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা জসিমউদ্দিন মানিক শত তরুণীকে ধর্ষণের ‘সেঞ্চুরি উৎসব’ পালন করেছিল। থার্টি ফার্স্ট নাইটে ঢাবির টিএসসিতে বাঁধন নামে এক তরুণীর বস্ত্র হরণ করে নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করে। ছাত্রলীগে মোটামুটি নব্বই দশকের শেষের দিকে দুই-একজন অসৎ, লোভী, চরিত্রহীন নেতা তাদের কর্মকাণ্ডে ধীরে ধীরে পুরো সংগঠনটির মাঝে কলঙ্কের দাগ লাগে। তাদের অনুসরণ করায় গত দশকেও কয়েকজন শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ওঠে।

সম্প্রতি ছাত্রলীগের পদচ্যুত সভাপতি শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীর বিরুদ্ধে অসংখ্য অভিযোগ নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। যেমন- ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিতর্কিত ব্যক্তিদের কেন্দ্রীয় কমিটিতে জায়গা করে দেয়া, অনৈতিক আর্থিক লেনদেন, বিলাসী জীবনযাপন, সংবাদকর্মীদের এড়িয়ে চলা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়েও নির্ধারিত সময়ের পরে উপস্থিত থাকা ইত্যাদি। ছাত্রলীগ নেতৃত্ব ছাত্রদের অধিকার প্রতিষ্ঠার চেয়ে নিজেদের স্বার্থ নিয়ে ব্যস্ত ছিল।

সবশেষে দু’জন শীর্ষ নেতা চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন। অভিযোগ ওঠে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিকে চাপ দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দেড় হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের ঠিকাদারের কাছ থেকে কমিশন আদায় করে দিতে, যা সংগঠনটির ইতিহাসে প্রথম ঘটনা। তবে বিষয়টি এখনো প্রমাণিত হয়নি।
লেখক : প্রকৌশলী

ই-মেইল : nazmulhussen@yahoo.com


আরো সংবাদ



premium cement
কুলাউড়ায় জঙ্গল থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার ঈদগাঁওতে মাদককারবারি গ্রেফতার শিক্ষায় ব্যাঘাত : ফেসবুক-টিকটক-ইনস্টাগ্রাম-স্ন্যাপচ্যাটের বিরুদ্ধে ২৯০ কোটি ডলারের মামলা আমতলীতে কিশোরীকে অপহরণ শেষে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৩ মহানবীকে কটূক্তির প্রতিবাদে লালমোহনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ ক্রিমিয়া সাগরে বিধ্বস্ত হলো রুশ সামরিক বিমান জর্ডান আন্তর্জাতিক কোরআন প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশী বিচারক এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর

সকল