১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী

রাষ্ট্রের বাইরে কর্তৃত্ব প্রয়োগের বিশেষাধিকার বিপজ্জনক

-

উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জের মুক্তির বিষয়ে ওয়াশিংটনে যারা তদবির করেছেন তাদের অন্যতম অস্ট্রেলিয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী বার্নাবি জয়েস বলেছেন, অ্যাসাঞ্জের মামলায় রাষ্ট্রের বাইরে কর্তৃত্ব প্রয়োগের বিশেষ অধিকারের দিকটি ‘উদ্বেগজনক’ বিষয় বলে তিনি বিশ্বাস করেন। গতকাল বুধবার বিবিসি নিউজডেকে তিনি বলেন, “তিনি (অ্যাসাঞ্জ) যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন, কখনোই যুক্তরাষ্ট্রে যান নাই। তারপরও একজনকে তৃতীয় একটি দেশের কারাগারে পাঠাচ্ছি আমরা।
“আমি মনে করি না তিনি যা করেছেন তা ঠিক। আমি এখানে তার চরিত্রের সনদ দিতেও আসিনি। কিন্তু আমি বলতে চাই, তিনি যা করেছেন অস্ট্রেলিয়ায় তা অবৈধ নয়। অস্ট্রেলিয়ায় তিনি কোনো আইন ভাঙেননি।” লন্ডনের বেলমার্শ কারাগারের ছোট্ট কক্ষে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতাকে যেভাবে রাখা হয়েছে তারও সমালোচনা করেন জয়েস। তিনি বলেন, “একদিন আমরা এই মামলাটির দিকে ফিরে তাকাব আর সবাই বিস্মিত হবো : সত্যি বলতে সে কাকে খুন করেছে যে দিনের মধ্যে ২৩ ঘণ্টা তাকে নির্জন কারাকক্ষে থাকতে হবে? কী অভিযোগ ছিল যে এমনটি করা হয়েছে?”
অ্যাসাঞ্জকে মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনতে অস্ট্রেলিয়ার পক্ষ থেকে ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালানো হয়েছে বলে খবর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপাঞ্চল নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী সাইপ্যানের যে মার্কিন আদালতে হাজির হওয়ার পর অ্যাসাঞ্জের মুক্তি মিলেছে সেখানে উপস্থিত ছিলেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড। রাড এখন যুক্তরাষ্ট্রে অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। একসময় তিনি দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীও ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সরকারের সাথে অ্যাসাঞ্জের চুক্তির ক্ষেত্রে যে আরেকজন প্রধান ভূমিকা রেখেছেন বলে মনে করা হচ্ছে তিনি ব্রিটেনে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার হাই কমিশনার স্টিভেন স্মিথ, তিনি ২০০৭ থেকে ২০১০ পর্যন্ত রাডের মন্ত্রিসভার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা বলেছেন, রাজনীতিবিদ হিসেবে রাডের শক্তির জায়গাটি হচ্ছে কূটনীতি ও পররাষ্ট্র সম্পর্কিত বিষয়, অ্যাসাঞ্জের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে তিনি তার এসব অভিজ্ঞতা সম্ভবত কাজে লাগিয়েছেন।
মার্কিন ‘গুপ্তচরবৃত্তি’ আইন লঙ্ঘনের দায় স্বীকার করে নেয়ার চুক্তিতে ব্রিটেনের কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ, যার মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণ এড়াতে তার দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের অবসান হল। যুক্তরাষ্ট্রের ‘জাতীয় প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত তথ্য ফাঁসের ষড়যন্ত্রের’ অভিযোগ আনা হয়েছিল ৫২ বছর বয়সী অ্যাসাঞ্জের বিরুদ্ধে। যুক্তরাষ্ট্র বলে আসছে, ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের নথি ফাঁস করে বহু মানুষের জীবনকে হুমকিতে ফেলেছে উইকিলিকস।
গত পাঁচ বছর ধরে ব্রিটেনের কারাগার বন্দী থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে আসছিলেন অ্যাসাঞ্জ। যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আপস রফায় পৌঁছানোর পর তিনি মুক্ত হয়ে যুক্তরাজ্য ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় পৌঁছেছেন বলে উইকিলিকস জানিয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement